somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

লালু'র শহর দর্শন B-)

২৮ শে মার্চ, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৪৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



মায়ের সাথে জীবনে প্রথম শহর দেখতে এসেছে লালু । যা দেখে তাই ভাল লাগে। মনে বিস্ময় জাগে। বাইরের জগত এত সুন্দর। কোথাও দেখা যাচ্ছে গরু খাসীর মাংস, কোথাও ভাজা হচ্ছে কড়কড়ে পরটা। আশে পাশে ঘুরছে তাদের অনেক স্বজাতি, কিন্তু কেউ তাদের ওগুলো খেতে দিচ্ছেনা, তার পরও তারা আশে পাশে থেকে চোক চোক করছে।

শহরে তাদের স্বজাতির চেয়েও বেশি দেখা যাচ্ছে এক বিশেষ প্রজাতির প্রাণী । এদেরও চার পা, দু পায়ে চলে, আর দুটো পা নুলা। নুলা পা গুলি ঘাড়ের দু পাশে ঝুলে থাকে। হাটার সময় কেমন দুলতে থাকে। একবার কিছুদিন কষাই পট্টীর ধলা কাকুকে তিন পায়ে হাটতে দেখেছিল লালু। কারা যেন মেরে এক পা ভেঙ্গে দিয়েছিল। তিন পায়ে হাঁটতে তার সেকি কষ্ট!

এই প্রানীগুলার দেখছি আরো বেশি কষ্ট, হাঁটছে মাত্র দুই পায়ে আর দুটো পা অকেজো। তবে নুলা দুপা দিয়ে এরা টুকটাক নানা কাজ করতে পারে। কাজ করতে পারে বটে, হাঁটতে তো আর পারেনা! চার পায়ে হাঁটার মজাটাতো এরা পাচ্ছে না! আহারে কি দুঃখ, কি দুঃখ!!

বিষয়টা মাকে জিজ্ঞেস করবে কিনা ভাবছে লালু। কারন আসার সময় মা বেশি কথা বলতে বারন করেছে।বারন সত্ত্বেও বেশীক্ষণ কৌতূহল চেপে রাখতে পারেনা লালু।
- আচ্ছা মা, ধলা কাকুকে তিন পায়ে হাঁটতে দেখেছি। কিছুদিন পর তার পা ভাল হয়ে যায়, এখন সে চার পায়ে হাঁটে। শহরে এই যে এত এত জানোয়ার দু পায়ে হাঁটতে দেখছি,এদের সবার দু;টো করে পা এক সাথে কে ভাংলো?

মা হেঁসে গড়িয়ে পড়েন- আরে এদের সামনের দু;পা থাকেই এরকম। এরা সৃষ্টির সেরা জানোয়ার। এরা কত কত কাজ করতে পারে। নিজের খাবার নিজে বানায়, টুকটাক আমাদেরও খেতে দেয়। কেউ দু;পায়ে হাঁটে, কেউ দু;চাকার কি একটায় চড়ে কুর কুর করে চলে যায়। কিছু দু;চাকার কুর কুর আবার গরর গরর শব্দ করে। তিন চাকা, চার চাকা, হরেক চাকায় চড়ে এরা ঘুরে বেড়ায়।

মা, ছেলের সামনে হুশ করে ব্রেক করা এক ট্রাক দেখিয়ে বলে, এই যে দৈত্যটা দেখছিস, এগুলা খুব হারামী দৈত্য। সে বছর তোর মামাকে চাপা দিয়ে মেরে ফেলেছিল। এদের আসতে দেখলে রাস্তার পাশে সরে যাবি। আরেকটা বিষয় খুব তাজ্জবের! দৈত্য গুলার পেটের ভিতর থাকে দুপেয়েরা। প্রচন্ড শক্তি নিয়ে এরা রাস্তা কাপিয়ে আসে। চাকার সামনে যা পায় পিষে মারে। কিন্তু যখনি পেটের ভিতর থেকে দু;পেয়েটা বেরিয়ে যায় অমনি তাদের সব শক্তি শেষ! তখন তুই পা তুলে এদের গায়ে ছড় ছড় করে পিসাব করে দিলেও কিছু বলে না।

পিসাব করার কথা শুনে হি হি করে হেসে উঠে লালু, মাকে বলে- মা শিসু করবো ।
পাশের আবর্জনার স্তূপ দেখিয়ে মা সেখানে পিসাব করতে বলে। লালুর মনপুত হয়না।
- না মা, দৈত্যটার গোল ঠ্যাঙের উপর করবো।

মা বিরক্ত হয়- দেখছিস না দু;পেয়েটা পেটের ভিতর বসা, যে কোন সময় দৈত্যটা হুংকার দিয়ে উঠতে পারে। তাছাড়া এদের ঠ্যেঙ্গের উপর পিসাব করার না না কায়দা কানুন আছে, তোর ধলা কাকু তোকে শিখিয়ে দেবে। এখন যা ওখান থেকে কম্ম সেরে আয়।
- তাইলে আমার পিসাব নাই বলে কিছু একটা ভাবে লালু। মাকে বলে-
- মা আমিও সৃষ্টির সেরা জানোয়ার হব।
মা অবাক হন কি ভাবে হবি।
- আমি দু;পেয়ে হব। বলেই সে সৃষ্টির সেরা জানোয়ার হবার প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসাবে দু;পায়ে হাটতে শুরু করে। মাত্র দেড় দুই কদম গিয়েই দুদ্দাড় করে মাটিতে পড়ে যায়। সাথে সাথে গা ঝাড়া দিয়ে দেহের ধুলা সরিয়ে মাকে বলে- একদম ব্যাথা পাইনি। তুমি দেখে নিও, আমি ঠিকই শিখে নেব।

মা'র হাসি থামে না। পাগল ছেলে! দুপায়ে হাঁটতে পারলেই কি সৃষ্টির সেরা জানোয়ার হওয়া যায়?

(চলতেও পারে)



সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে মার্চ, ২০১৭ দুপুর ১:৪০
২৬টি মন্তব্য ২৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ডালাসবাসীর নিউ ইয়র্ক ভ্রমণ

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:৪৪

গত পাঁচ ছয় বছর ধরেই নানান কারণে প্রতিবছর আমার নিউইয়র্ক যাওয়া হয়। বিশ্ব অর্থনীতির রাজধানী, ব্রডওয়ে থিয়েটারের রাজধানী ইত্যাদি নানান পরিচয় থাকলেও আমার কাছে নিউইয়র্ককে আমার মত করেই ভাল ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×