somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমও গেলো ছালাও গেলো! =p~

২৭ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ৮:০১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
* আমও গেলো ছালাও গেলো!



আমার জন্মের আগের কথা। আমাদের ছিল গরু মহিষের বিশাল বাথান। এক কোরবান ঈদের দিন সকালে চর থেকে পুরা বাথান বাড়ীর দরজায় আনা হল। কোন গরুটা কোরবান করা হবে সেটা দাদাজান নির্বাচন করবেন।
বাথান আর রাখালদের কাজের তদারকি করতেন আমার জেঠাতো ভাই নুর আলম (পরবর্তিতে হাজী, বর্তমানে মরহুম)। তিনি লড়াইএর জন্য একটা ষাঁড়কে খুব যত্ন করে লালন পালন করছেন। ইতিমধ্যে ষাঁড়টি দুইটা ফাইট জিতেছে। (এই সব দাদা জানে না, দাদার দৃষ্টিতে ষাঁড়ের লড়াই হারাম) পাছে দাদার নজর এই ষাঁড়ের উপর পড়ে তাই তিনি ষাঁড়টাকে দলের পিছনে রাখলেন।

এক সময় খড়মে খট খট শব্দ তুলে বাথানের সামনে হাজির হলেন রূপা গাজী ভুঁইয়ার উত্তর পুরুষ আবদুল হামিদ ভুঁইয়া। রাশভারী আর মেজাজি মানুষ তিনি, তাঁর কথার উপর কেউ কথা বলেছে এরকম নজির নাই। তিনি বাথানের উপর একপলক তাকিয়ে লড়াইয়ের ষাঁড়টাকে দেখিয়ে বললেন, এইটা হালাল করে দে।

মনে মনে হাহাকার করে উঠলেন নাতি নুর আলম। দাদাজানের কথার উপর কথা চলে না। তবুও বুকে সাহস সঞ্চয় করে গায়ে গতরে সেকেন্ড পজিশনে থাকা গরুটাকে দেখিয়ে বললেন, দাদাজি আমার ইচ্ছা ছিল এই গরুটা কোরবানী করার।
নাতির আবদার বলে কথা! নাতী একটা আবদার করেছে এইটা তিনি রাখবেন না, এত বড় অবিবেচক তিনি নন।
- তাহলে এইটাও কোরবানী করে দে, বলে দাদা খড়মে শব্দ তুলে বাড়ীর পথ ধরলেন।

*হুলাল তেলের গন্ধে-

ক্লাশ এইটে পড়ি। আমাদের ক্লাসে ছাত্রী ছিল ৪ জন। একদিন আকাশ মেঘলা, ক্লাস অন্ধকার। লেইজারের সময় শেখ ওয়ালী উল্যাহ নামে এক ছাত্র মেয়েদের বেঞ্চে বসার স্থানে ঘুমিয়ে পড়েছে।
লেইজারের পরের ক্লাস এনামুল হক স্যারের, উনার পিছে পিছে ছাত্রীরা এল। আগেই বলেছি ক্লাস রুম ছিল অন্ধকার, তারা হুড়মুড় করে বেঞ্চে ঢুকে কেউ বসলো ওয়ালী উল্যাহর মাথার উপর, কেউ বুকে, কেউ তলপেটে।

কয়েক সেকেন্ড! ঘটনার আকস্মিকতায় ওয়ালী উল্যাহ উয়াউ উয়াউ করে বিকট চিৎকার করে উঠলো। তার সাথে মেয়েরা 'গেছিরে', 'খাইছেরে', আল্লারে বলে চিৎকার! এ যেন চিৎকার প্রতিযোগিতা! কে কাকে হারাতে পারে তাই সমানে পাল্লা দিয়ে জেতার চেষ্টা, সাথে লাফ! কারো ফাটলো মাথা, কারো হাঁটু।
স্যার ওয়ালী উল্যাহকে পাকড়াও করলেন, কিরে বেটা মেয়েদের 'হুলাল তেল'এর গন্ধে ঘুম এসে গেছে না? এই সালাউদ্দিন বেত আন!!
(হুলাল তেল- সুগন্ধি তৈল)

* অভিনব আজান

আমাদের কাছারী ঘরটা ছিল বিশাল। এক রুমে তালেবে এলেম হুজুর, খোলা অংশে কাজের লোক, আরেক রুমে আমি আর লজিং মাস্টার।
হুজুর নতুন এসেছেন। আগের হুজুরের মত এই হুজুরের উপরও আমার জেঠার নির্দেশ ছিল, ফজরের আজান দিয়ে সকলকে নিয়ে জামাতে নামাজ পড়তে হবে। একদিন আজান না শুনলে আমার জেঠা কৈফিয়ত চাইতেন। হুজুর যথারীতি কাছারির মাঠে দাড়িয়ে আজান দেন, আমরা যথারীতি জামাতে শামিল হইনা। হুজুরকে বলে দেয়া হয়েছে আমার জেঠা জিজ্ঞেস করলে যেন বলা হয় আমরা জামাতের সহিত সালাত আদায় করেছি।
একদিন আজানের বিকট শব্দে আমার ঘুম ভেঙ্গে গেল! বিষয় কি ? আজ আজানের সাউন্ড এত বেশি কেন?
বিছানা থেকে উঠে খেয়াল করলাম আজানটা হুজুরের রুম থেকে আসছে। ভাবলাম হুজুর মনে হয় আজ আজানের জন্য বাইরে মাঠে যায়নি, রুমে থেকেই আজান দিচ্ছে। তার পরও রুমে উঁকি দিয়ে দেখলাম, দেখি হুজুর শোয়া অবস্থায় লেপের ভিতর থেকে মুখটা বের করে বিকট শব্দে আজান দিচ্ছে। আজান শেষ হলে লেপমুড়ি দিয়ে যথারীতি ঘুম!


সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ৮:০১
৬৫টি মন্তব্য ৬৫টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×