somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

‘গোলমাল’ না হলে ফুটবল খেলা কঠিন হত। =p~ =p~

২০ শে আগস্ট, ২০১৯ দুপুর ১:৫৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

রঙ্গ ভরা অঙ্গনে মোর – ৬



লিখাটা যখন ‘রঙ্গ ভরা অঙ্গনে মোর’ সিরিজে লিখছি তাই শুরতেই ফুটবল নিয়ে একটা কৌতুক-
প্রেমিকার বাড়িতে বসে নতুন কেনা থ্রিডি টিভিতে ফুটবল ম্যাচ দেখছিল ফুটবল-ভক্ত ভৃগু। হঠাৎ টের পেল, তার হবু শ্বশুর বাড়িতে এসে হাজির। তাও আসছে একেবারে ড্রইংরুমের দিকেই। প্রাণ বাঁচাতে আর কোথাও পালানোর জায়গা না পেয়ে ভৃগু শেষে টিভির পেছনেই ঠাঁই নিল। এদিকে প্রেমিকার বাবাও এসে বসল টিভির সামনে খেলা দেখতে, নড়াচড়ার নাম নেই। ভৃগু দেখল, মশা বড্ড কামডাচ্ছে তাছাড়া এখানে বসে থাকলে ম্যাচটা আর দেখা হবে না। তাই আর সহ্য করতে না পেরে সে টিভির পেছন দিক থেকে বের হয়েই এল। তাকে দেখে হবু শ্বশুর তো ভীষণ অবাক। বলল, ‘আরে!খেয়ালইতো করলাম না!রেফারি একে কখন লাল কার্ড দিল?'

এ প্রজন্ম ক্রিকেট অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানকে যে রকম চিনে, ৮০ সাল পরবর্তি তরুণরা সেরকম চিনতো ফুটবল সুপারস্টার সুদর্শন ও অকালপ্রয়াত ফুটবলার মোনেম মুন্নাকে। ঘরোয়া লিগে দলবদলের সময় এক একজন খেলোয়াড়ের দর উঠতো সে আমলে ৩০ থেকে ৮০ হাজার টাকা। টাকাটা এ যুগের হিসাবে কম মনে হলেও তখনকার সময়ে ছিল বিশাল এমাউন্ট।

মুন্না কিরূপ খেলোয়াড় ছিল তা বুঝানোর জন্য একটা ঘটনা বলছি। একবার আবাহনীর ঘরের ছেলে মোনেম মুন্নাকেদলে ভিড়াতে চাইছে মোহামেডান। কানাঘুষা চলছে মুন্না নাকি চলেও যাচ্ছেন। দলবদলের শেষ দিন ভক্তরা মুন্নাকে গৃহবন্ধী করে রাখে। দুএকবার ঘর থেকে বেরুতে চাইলে আবাহনী ভক্তরা তাকে লাঠিসোটা নিয়ে বেদম দৌড়ানী দেয়। শেষ পর্যন্ত ঘরের ছেলেকে ঘরে রেখে দেয় আবাহনী। মুন্নার সাথে তারা ১৮ লক্ষ টাকায় চুক্তিবদ্ধ হয়।

সে সময় আওয়ামীলীগ বিএনপির চল ছিল না। দেশের তরুণরা দুদলে বিভক্ত ছিল-আবাহনী,মোহামেডান। দুদলের ভিতর মধুর রেষারেষি ছিল। স্টেডিয়ামে এটা কখনো কখনো ভয়ংকর মারামারিতেও রূপ নিত। তাই দুদলের সমর্থকদের জন্য স্টেডিয়ামে আলাদা আলাদা গ্যালারী ছিল। এক দলের দর্শক অন্য গ্যালারিতে বসে গেলে তাকে নানা হেনস্তার শিকার হতে হত। দুদলে ছিল নামকরা কিছু খেলোয়াড়- কায়সার হামিদ,সাব্বির,আসলাম মহসিন, কানন। অনেক বিদেশি খেলোয়াড়ও এ দু দলে খেলতেন যেমন- চিমা,এমেকা,ইরানের নালজাকের ও নাসির হেজাজি, রাশিয়ান রহিমভ, কুজনেসভ, আন্দ্রে কাজাকভ প্রমুখ। আবাহনীর রিক্রুটের মধ্যে রাশিয়ান স্ট্রাইকার পলিনকভ ও উজবেক মিডফিল্ডার ভ্লাদিমির, শ্রীলঙ্কান পাকির আলী ও প্রেমলাল, ইরাকি নজর আলী প্রমুখ উল্লেখযোগ্য ছিলেন।

দর্শক ও ক্রীড়ামোদীরাই কোনো একটি খেলার প্রাণ। সমর্থকদের উন্মাদনা না থাকলে সে খেলাটি কিন্তু উৎকর্ষতা পায় না। স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশে ফুটবলের সেই স্বর্ণযুগের সূর্য আজ অস্তমিত প্রায়। এখন কারা ফুটবল খেলছে তা জাতী জানেনা। জানেনা কোন খেলোয়াড়ের কি নাম।
বছরখানেক আগে দেখলাম ‘কলসুন্দরের’ মেয়েরা নাকি ফুটবলে কি একটা কান্ড ঘটিয়ে বসেছে। দেশ জুড়ে সেকি উত্তেজনা। এরকম উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছিল এরশাদের আমলে। ডানা ও গোথিয়া কাপে অনুর্ধ ১১তে বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা ফুটবলের বাঘা বাঘা দেশকে ১০/১৫ গোল করে দিয়ে বসেছে। সংসদ থেকে চায়ের দোকানজুড়ে এই আলোচনা। এরশাদের আমলে প্রথম কোন ইতিবাচক কান্ড যাতে দেশ জুড়ে চাঞ্চল্য। এ চাঞ্চল্য দির্ঘস্থায়ী করতে তিনদিন পরে রেকর্ডকৃত খেলাটি টিভিতে দেখায়। দেখা যায় অন্য দেশের খেলোয়াড়রা বাস্তবেই ১১ বছরি হলেও আমাদের খেলোয়াড়দের বয়স ১৭থেকে ২৩ বছর!

আবাহনী মোহামেডান এখনো আছে কিনা জানিনা, ফুটবলে জাতীয়দল বলে একটা কিছু আছে বলে জানি, আরো জানি এরা মন মন মধু খেয়ে নেপাল,ভুটানের সাথে বেশুমার গোল খেয়ে ব্যাপক অভিজ্ঞতা(?) অর্জন করে দেশে ফেরে। এই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে আগামী বার ভাল খেলার প্রতিশ্রুতি দেয়। দেখা যায় ‘আগামী’ বার আগের বারের চেয়ে চার গোল বেশি খেয়েছে।

ফুটবল খেলার সাথে মারামারি তথা গোলমালের একটা সম্পর্ক সকল সময়েই ছিল।দর্শকে দর্শকে মারামারিতো ছিলই খেলার উপসংহার ছিল রেফারীকে মাইর। অনেক স্থানে খেলার আগেই রেফারীর জন্য হাসপাতালে বেড রিজার্ভ করে রাখা হত।
পরীক্ষায় এসেছে গোলমাল শব্দের অর্থ সহযোগে বাক্য রচনা কর। এক ছাত্র লিখেছে-
গোলমাল = যে মাল বা বস্তু গোল। উদাহরণ- ‘গোলমাল’ না হলে ফুটবল খেলা কঠিন হত।
‘গোলমাল’ না হলে ফুটবল খেলা কঠিন হত কিনা জানিনা তবে চামড়া না হলে ফুটবল খেলা কঠিন হত এ কথা বিলক্ষণ বলা যায়। কারন চামড়া দিয়েই তৈরি হয় ফুটবল। চামড়া দিয়েই খেলে দেশের আপামর ফুটবল খেলোয়াড়। হালে এই ফুটবলারদের বিষয়ে আমি চিন্তিত। আশংকা করছি অচিরেই তারা বিপদে পড়তে যাচ্ছেন। কারন পরশু আমাদের রাষ্ট্রের এক দায়িত্বশীল ব্যক্তি বলেছেন-‘চামড়া নিয়ে যারা খেলছে তাদের সকল কে ধরা হবে।‘

সর্বশেষ এডিট : ২০ শে আগস্ট, ২০১৯ দুপুর ১:৫৫
২১টি মন্তব্য ২১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আপনি কি বেদ, উপনিষদ, পুরাণ, ঋগ্বেদ এর তত্ত্ব বিশ্বাস করেন?

লিখেছেন শেরজা তপন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫২


ব্লগে কেন বারবার কোরআন ও ইসলামকে টেনে আনা হয়? আর এই ধর্ম বিশ্বাসকে নিয়েই তর্ক বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে সবাই? অন্য ধর্ম কেন ব্লগে তেমন আলোচনা হয় না? আমাদের ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

দুলে উঠে

লিখেছেন সাইফুলসাইফসাই, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৫৬

দুলে উঠে
সাইফুল ইসলাম সাঈফ

মন খুশিতে দুলে দুলে ‍উঠে
যখনই শুনতে পাই ঈদ শীঘ্রই
আসছে সুখকর করতে দিন, মুহূর্ত
তা প্রায় সবাকে করে আনন্দিত!
নতুন রঙিন পোশাক আনে কিনে
তখন ঐশী বাণী সবাই শুনে।
যদি কারো মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

তরে নিয়ে এ ভাবনা

লিখেছেন মৌন পাঠক, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩০

তরে নিয়ে এ ভাবনা,
এর শুরু ঠিক আজ না

সেই কৈশোরে পা দেয়ার দিন
যখন পুরো দুনিয়া রঙীন
দিকে দিকে ফোটে ফুল বসন্ত বিহীন
চেনা সব মানুষগুলো, হয়ে ওঠে অচিন
জীবনের আবর্তে, জীবন নবীন

তোকে দেখেছিলাম,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আপনি কি পথখাবার খান? তাহলে এই লেখাটি আপনার জন্য

লিখেছেন মিশু মিলন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩৪

আগে যখন মাঝে মাঝে বিকেল-সন্ধ্যায় বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতাম, তখন খাবার নিয়ে আমার জন্য ওরা বেশ বিড়ম্বনায় পড়ত। আমি পথখাবার খাই না। ফলে সোরওয়ার্দী উদ্যানে আড্ডা দিতে দিতে ক্ষিধে পেলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

×