somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

"ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে" আবারো বলি হইতে পারে নিরীহ ফেইসবুকার এবং ব্লগার ।

৩০ শে নভেম্বর, ২০১৭ রাত ৯:৫০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

"ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে" আবারো বলি হইতে পারে নিরীহ ফেইসবুকার এবং ব্লগার ।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের খসড়ার ২৭ ধারায় বলা হয়েছে, যদি কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী ইচ্ছাকৃতভাবে বা জ্ঞাতসারে ধর্মীয় মূল্যবোধ বা অনুভূতিতে আঘাত করার ইচ্ছায় ওয়েবসাইট বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক বিন্যাসে এমন কিছু প্রকাশ বা সম্প্রচার করেন বা করান, যা ধর্মীয় অনুভূতি বা ধর্মীয় মূল্যবোধের ওপর আঘাত করে, তাহলে ওই ব্যক্তির সেই কাজ হবে অপরাধ।

এই অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ ৫ বছর কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ড ভোগ করতে হবে। একই অপরাধ দ্বিতীয় বা তার বেশিবার করলে সর্বোচ্চ ৭ বছর কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ ২০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ড হবে। এই ধারার অপরাধ আমলযোগ্য ও অ-জামিনযোগ্য হবে।

--- কোন আলেম ওলেমা হুজুর নামধারী যদি কেউ ওয়াজ মাহফিলের নাম দিয়ে হিন্দু বৌদ্ধ খৃষ্টানদের ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাত দেয় অথবা ফেইসবুকে আর ব্লগে সংখ্যালগুদের ধর্মের বিরুদ্ধে কুটুক্তি করে চরম বিদ্বেষপূর্ণ লেখা প্রকাশ করে যা সংখ্যালগুদের ধর্মীয় মূল্যবোধকে চরম আঘাত করে তাহলে কি সেই আলেম ওলেমা হুজুর ২৭ ধারায় গ্রেফতার হবে ? নাকি শুধু ধর্মীয় অনুভুতি আঘাত কেবলমাত্র মুসলমানদের বেলায় প্রযোজ্য হবে ?

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের খসড়ার আরেকটি ধারায় বলা হয়েছে , যদি কোনো ব্যক্তি ডিজিটাল বা ইলেকট্রনিক মাধ্যমে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ বা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বা জাতির পিতার বিরুদ্ধে কোনো প্রকার প্রোপাগান্ডা ও প্রচারণা চালান বা তাতে মদদ দেন, তাহলে ওই ব্যক্তির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা অনধিক এক কোটি টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ড হবে।

--- এটাকি আদৌ কার্যকর হবে ? নাকি কাগজে লেখা থাকবে ? এই আইন কার্যকর করতে হলেতো একাত্তরের ঘাতক দালাল জামাত শিবির এবং উগ্রধর্মান্ধ তেতুলবাগী হেফাজতির সকল নেতা কর্মী সমর্থকদের গ্রেফতার করতে হবে । সেটা কি সরকার আদৌ করবে ? এই জামাত শিবির এবং তেতুলবাগী উগ্রধর্মান্ধ হেফাজতিরাই মুক্তিযুদ্ধ বা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বা জাতির পিতার বিরুদ্ধে অনলাইনে অফলাইনে প্রোপাগান্ডা চালায় । এই আইন কার্যকর করতে গেলেতো বাঁশেরকেল্লায় লাইক কমেন্টস এবং শেয়ার করা পাবলিকদের গ্রেফতার করতে হবে । সরকার কি তা করতে পারবে?

২৮ ধারায় বলা হয়েছে, যদি কোনো ব্যক্তি ওয়েবসাইট বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক বিন্যাসে মানহানি-সংক্রান্ত দণ্ডবিধির (১৮৬০) সেকশন ৪৯৯-এ বর্ণিত অপরাধ সংঘটন করেন, তাহলে তাঁকে সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ তিন লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ড ভোগ করতে হবে। আর ওই অপরাধ দ্বিতীয় বা তার বেশিবার করলে অনধিক পাঁচ বছর কারাদণ্ড বা অনধিক ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ড হবে। এই ধারার অপরাধ অ-আমলযোগ্য, জামিনযোগ্য ও আদালতের সম্মতি সাপেক্ষে আপসযোগ্য হবে।

--- যদি কোন ক্ষমতাধর ব্যাক্তির গোপন ইতিহাস যা ক্ষমতাধর ব্যাক্তিটি লুকিয়ে রেখেছিলো বা জনগনকে জানায় নাই এমন কোন কিছু যদি জনগনের কাছে সঠিক তথ্য উপাত্ত্য দিয়ে কেউ ফাঁস করে দেয় তাহলে এতে ক্ষমতাধর ব্যাক্তির মানহানি হইবে । কারণ জনগনের কাছে তার মান আর থাকবে না । সে মান হারাইবে । মানে তার মানহানি হইবে । এমতাবস্থায় সেই ক্ষমতাধর ব্যাক্তি যদি ২৮ ধারায় মামলা করে তাহলে সঠিক তথ্য উপাত্ত্য দিয়ে ফাঁস করে দেওয়া ব্যাক্তিটি ২৮ ধারার অপব্যবহারের কারনে গ্রেফতার হইতে পারে । মানে ক্ষমতাধররা চাইলেই এই আইনের যেকোন সময় অপব্যবহার করতে পারবে ।

"অনুভুতি" "মূল্যবোধ" 'মানহানি" এগুলো এমন কিছু শব্দ যে কেউ যেকোন সময় এই শব্দগুলোর আঘাত বা অপব্যবহার হয়েছে বলে অভিযোগ করে ফায়দা হাসিল করতে পারে ।

আমার কাছে মনে হয়েছে "ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন"টির অনেকগুলো ধারা যে কোন ক্ষমতাধর চাইলেই যেকোন সময় যে কারো বিরুদ্ধে অপব্যবহার করতে পারবে ।

(আইসিটি) কালো আইনের ৫৭ ধারার ঘা এখনো শুকায় নায় তার উপর যদি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনেও একই বিষয় রঙ পালটিয়ে একই ভাবে থাকে তাহলে ক্ষমতাধরদের বলি হইতে হবে নিরীহ ফেইসবুকার এবং ব্লগারদের যেকোন সময় যেকোন মূহুর্তে !
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে নভেম্বর, ২০১৭ রাত ৯:৫৭
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×