কাশেম বিন আবু বকর কে নিয়ে ইদানিং কালে খুব সোরগোল পড়েছে অনলাইন মিডিয়াগুলোতে। আবার আমরা প্রমান করলাম, হুজুকে পাগল বাঙ্গালী! অনেকের মধ্যে এই নিয়ে খুব রস-রসিকতা খুব তুঙ্গেও দেখছি। অবাক লাগে, যারা ঐ লেখকের একটি লেখাও না পড়ে শুধু শুধু তাকে চটি লেখক উপাধি দিচ্ছে!!!
মূলত, তারাই এসব করে যারা এসবের দ্বারে-কাছেও কোনোদিন ছিলোনা এবং এখনো নেই। একজন লেখক তার মনে জমতে থাকা ভালো-মন্দ সব কিছু শেয়ার করে তার লিখনির মাধ্যমে। যদিও এই ভালো-মন্দ ব্যাপারগুলো আমাদের সবার মাঝে আছে। কিন্তু আমরা চাইলেই সেই ভালো-মন্দ খুব সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করতে পারিন না। এবং পারলেও দেখা যায় সেই লেখা সবাইকে আকৃষ্ট করতে পারে না। একজন লেখক তখনই সফল, যখন তার লেখা সকলে হৃদয় থেকে গ্রহণ করে এবং তার পরবর্তী লেখাটার জন্য অধির আগ্রহ ভরে অপেক্ষা করে। যেমনটা করেছিলো আমাদের হুমায়ূন আহমেদ এর বই এর জন্য।
হুয়ামুন আহমেদ ও এই রকম অজস্র বই লিখেছেন যেখানে নারী ঘটিত অনেক ব্যাপার ছিলো। কই হুয়ামূন আহমেদ কে তো কাউকে বলতে শুনিনি তিনি একজন চটি লেখক ছিলেন!?
আজকে আমি দেখলাম আমার বন্ধুদের মধ্যে বেশ আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে এই কাশেম বিন আবু বকর কে নিয়ে। এবং তার লেখা নিয়ে অনেক কটূক্তি করতে দেখলাম। যা আমার কাছে ভালো লাগেনি। কারণ কম বেশি তো আমরাও লেখি। হয়তো আমাদের প্রাতিষ্ঠানিক কোনো স্বীকৃতি নাই। কিন্তু অবাক হই, যাদেরকে কম-বেশি মানুষ গ্রহণ করেছে তাদের কে নিয়ে আবার কম-বেশি মানুষ অপবাদ দিতে দেখছি পিছপা হচ্ছে না। আমি বলবো, লেখকের লেখার ভালো-মন্দ নিয়ে আমাদের মন্তব্য দেয়া যেতে পারে। কিন্তু তা না করে যদি, লেখকেই অপরাধী বানিয়ে ফেলি এবং বিভিন্ন উপনামে (তিরষ্কারমূলক) তাকে ভূষিত করি সেটা নিশ্চয় সুরুচিবোধের পরিচয় বহন করে না। আর ঠিক আমরা সেটাই করছি!!!
ইদানিং জামাতী বলে সীল মারা এখন আমাদের একটা ইগো হয়ে গেছে। বিশেষ করে আমরা যারা বেশী নিজেকে আওয়ামীলীগার বলে দাবী করছি ঠিক তারাই এই কাজটি বেশি করে করছি! এই লেখকের একটি উপন্যাস আমি যতদ্দুর মনে পড়ে ৯৬-৯৭ সালে পড়েছিলাম। বাইটির নাম ছিলো ‘আবার ভালোবাসবো’। আমার কাছে খুব ভালো লেগেছিলো বইটির লেখাগুলো। একটা সময় আমি উপন্যাস পড়ার প্রতি বেশ মনোযোগীও হয়েছিলাম। নিশ্চয় ভালো লেখার জন্য তিনি প্রশংসিত হয়েছেন। যদি খারাপ লাগতো তবে হয়তো তার অন্য বইটি পড়ার জন্য মন চাইতো না। যেমনটি আমরা অন্য লেখকের বেলায়ও করি।
আমি বুঝি না এতো বছর পর হঠাৎ করে এই ব্যক্তিকে নিয়ে এতো টানাটানির কি আছে!? আর কেউ উপন্যাস লিখলে সে জামাতী হয়ে যাবে কিংবা তাকে জামাতী বলে শিরোনাম করা হবে, এগুলি ঐসব ব্যক্তিদ্বয়ের গোয়ারত্তোমি ছাড়া আর কিছু না। আমার মনে হয় না, যারা না বুঝে মন্তব্যগুলো করেছে তারা সারা জীবনে ঐ ব্যক্তির দুইটা বই পড়েছে? হুজুকে বাঙ্গালী বলে একটা কথা চালু আছে আমাদের দেশে। নিজেদেরকে অতি আওয়ামীলীগার হিসেবে বর্ণনা করতে গিয়ে নিজেরাই না আবার জামাতীর পরিচয়ে আর্বিভুত হন, সেটাই দেখার বিষয়। এখানে অনেকে বলেছেন ‘বেশ্যা’ কেউ বলেছেন ‘চটি লেখক’ কেউ বলেছেন ‘জামাতী ছাগু’ কেউ লিখেছেন ‘ডান্ডি পটাস’ এসব উপনাম-ছদ্মনাম কারো সাথে না জড়িয়ে, লিখনিতে ভালো-খারাপ নিয়ে সমালোচনা করা অধিকতর শ্রেয়। কারণ প্রতিটি মানুষের ন্যুনতম সম্মান থাকে আর তার প্রতি হেয়দৃষ্টি করা, কাউকে অনুমতি প্রদান করেনি ইসলাম।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে এপ্রিল, ২০১৭ দুপুর ২:০০