somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

-সুশিক্ষিত সুশীলদের সময়ের সাতকাহন-

২১ শে জুন, ২০১৭ দুপুর ২:৪৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



গত পরশুদিন হঠাৎ করে আমাদের সবার পরিচিত এবং কারো কাছে শ্রদ্ধাভাজন শিক্ষক ‘জাফর ইকবাল’ স্যার একটি প্রবন্ধ লিখেছেন “পদ্মা ব্রিজ দিয়ে কি হবে”? এই পরই তার এই পোষ্টে বৃষ্টির মতো মন্তব্য পড়তে শুরু করে। এর মধ্যে যা দেখলাম, কে কাকে কি বলছে, কার মন্তব্যে কে প্রতিত্তর করছে; কিছুই বুঝতে পারতেছিলাম না। কারণ, সব কথার শেষে দেখি সারমর্ম শুন্য। অহেতুক একে অপরকে ভুল বুঝতেছে নচেৎ ভুল বুঝাচ্ছে। আর এতে, মিঃ শিক্ষক মৌঁচাকে ঢিল মেরে শুধু মৌমাছির উড়াউড়ি দেখছেন!

তারপর একটি অনলাইন পত্রিকা তার পেজে কভারিং করেছিলো : জাফর ইকবাল কে নিয়ে আমরা কি করিবো? পত্রিকার ভেতরের লেখায় দেখলাম, মিঃ শিক্ষক; তিনি রাষ্ট্রের ভালো এবং খারাপ থাকাটা সংখ্যালঘুদের জীবনমান এর ওপর ভিত্তি করে বিবেচনা করেছেন এবং সংক্ষেপে তাঁর যুক্তি দিয়েছেন। মিঃ শিক্ষকের যুক্তির প্রেক্ষিতে আমারও একটি প্রশ্ন জাগলো মনে; তথাকথিত সংখ্যালঘুদের ভালো কিংবা মন্দ থাকার উপর কি দেশের ভালো কিংবা মন্দ থাকার বিচার করা যায়?

এর বাইরে হাজারো প্রশ্ন তিনি উপেক্ষা করে গেছেন। সত্যিকার অর্থে আজকের দেশের খারাপ থাকার পিছনে আরো মোটাদাগে যেসব যুক্তি ছিলো মিঃ শিক্ষক কিন্তু সেগুলো এড়িয়ে গেছেন। তাহলে, তাকে আপনি কোন গোষ্ঠীর সমর্থক বলে মনে করবেন কিংবা করছেন?

মূলতঃ
মিঃ শিক্ষক, জনাব জাফর ইকবাল একজন সুনামধন্য শিক্ষক তা ‘মেনে নিলাম’ কিন্তু তিনি একজন চেতনাবাজ ব্যক্তিও বটে ‘মেনে নিন’।

* তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা এবং মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে কথা বলেন ‘মেনে নিলাম’ কিন্তু মুসলমানের জন্য ঐতিহাসিক সত্য তার ধর্ম ইসলাম কে নিয়ে মাঝে মাঝে কটূক্তি করতেও তিনি পিছপা হন না ‘মেনে নিন’।

* প্রতিটি দেশ তার ধর্মের অনুসারীর সংখ্যার উপর নির্ভর করে দেশের সরকার তার মেনুপেষ্টু তৈরি করে অর্থাৎ রাষ্ট্র পরিচালনা করে, এটা ‘মেনে নিলাম’ কিন্তু ওনাদের মতো সুশিক্ষিত ব্যক্তিদের মনের খায়েশ প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষে প্রতিটি রাষ্ট্রে তাদের কর্তৃপক্ষ সংখ্যালঘু এবং সংখ্যাগুরু শব্দটি স্থান করে দিয়েছেন এইসব সুশীলদের ফায়দা লুঠার জন্যে অথচো এই সংখ্যালঘু কিংবা সংখ্যাগুরু শব্দের কোনো যায়গা কোনো ধর্মে নেই ‘মেনে নিন’।

* কোনো দেশ যখন সংকটময় মুহুর্তে এসে দাঁড়ায় তখন উনাদের মতো সুশিক্ষিত সুশীলদের কে হারিকেন দিয়েও খুঁজে পাওয়া যায় না কারণ জীবনের মায়া সকলের আছে, ‘মেনে নিলাম’ কিন্তু আবার যখন দেশ সংকট কাটিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে তার অবয়অব নির্ধারণ করেন ঠিক সেই মুহুর্তে কিছু একটা বলে জাতিকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করতে এনাদের মতো সুশীলরা ভুল করেন না ‘মেনে নিন’।

* সারা বিশ্বে যখন খাদ্য সংকট তখন আমাদের বলতে শুনা যায় আমরা খাদ্যে স্বয়ং সম্পূর্ণ তখন ওনাদের মতো সুশিক্ষিত সুশীলরা সব সত্য জেনেও প্রতিবাদ না করে চুপ করে থাকেন এবং কর্তৃপক্ষের সাথে গলা মিলান ‘মেনে নিলাম’ কারণ নিজের ভালো পাগলেও বুঝে, কিন্তু যখন উনাদের দেয়া উপাধি সংখ্যালঘু কিংবা সংখ্যাগুরু উভয় একই বাজারে গিয়ে ৩০টাকার চাল ৬০টাকায় কিনে আনেন, তখন আপনি এই সুশিক্ষিত সুশীলদের কে কি বলবেন? অতএব এনারা যে এক একজন সুশিক্ষিত চাটুকার সুশীল তা ‘মেনে নিন’।

* ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা যখন ঠুনকো বিষয় নিয়ে একজন বাস ড্রাইভারের সাথে ঝগড়ার এক পর্যায়ে বলেন, আমরা রাস্তার না/ঢাকার মাস্তান ‘মেনে নিলাম’ রাগের মাথায় বলেছেন কিন্তু এই শিক্ষকরাই আবার তাদের প্রয়োজনে চরমপন্থীদের আগ্নেয়াস্ত্র প্রশিক্ষণ দিতেও পিছপা হন না ‘মেনে নিন’ এটা নাকি যুগের চাহিদা!

এতদিন জেনে আসছি, শিক্ষা জাতির মেরুদন্ড আর শিক্ষক হচ্ছে সেই মেরুদন্ড তৈরির কারিগর। আগের দিনে দেখেছি, গরু মার্ক/মুরগী মার্কা ঢেউটিন লাগিয়ে যুগের পর যুগ ঘরের কাজে হাত দিতে হয়নি; আর এখন ইস্পাত মার্কা ঢেউটিন লাগালেও কয়েকদিন পর ছিদ্র হয়ে ঘরে পানি পড়তেও দেখি! তার কারণ হচ্ছে, এখনকার শিক্ষকরাই জাতির মেরুদন্ড তৈরি না করে ব্যবসা বান্ধব মেরুদন্ড তৈরি করে চলেছেন প্রতিনিয়তই। তার চাহিদা পূরণ করতে গিয়ে এই শিক্ষা ব্যবস্থার মধ্যেও লবন মিশিয়ে দিয়েছেন।

অতএব, আজকের দিনের শিক্ষকরা যতই যার চোখে ভালো বলে প্রতিয়মান হোক না কেনো, উনারা ভালো আর খারাপের মাঝে, যেই লাউ; সেই কদু! বলা যায়, এরা সুবিধাবাদীদের এপিঠ আর ওপিঠ। এরা একটি সুন্দর দেশ কিংবা একটি সুন্দর জাতি গঠনে ভুমিকা রাখার চেয়ে; সেই দেশ কিংবা জাতিকে বিভক্ত করতেই বেশি মেধা বিনিয়োগ করেন। এরা কখন কোন কথা রাষ্ট্রের প্রয়োজনে কিংবা জাতির প্রয়োজনে বলা উচিত, কিংবা করা উচিত; সেসবের দিক-পাশ ভেবে কখনো বলেন না কিংবা করেন না। যার ফলশ্রুতিতে ওনাদের মতো সুশিক্ষিত সুশীলদের কারণে সারা বিশ্ব আজ এক অন্ধকার যুগের দিকে ধাবিত হচ্ছে বলে আমার কাছে মনে হয়।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে জুন, ২০১৭ দুপুর ২:৪৭
৭টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

গণতন্ত্র আর বাক-স্বাধীনতার আলাপসালাপ

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:২৩


একাত্তর সালে আওয়ামী লীগের লোকজন আর হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা ছিল পাকবাহিনীর প্রধান টার্গেট। যদিও সর্বস্তরের মানুষের ওপর নিপীড়ন অব্যাহত ছিল। গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল। মুক্তিযোদ্ধা আর তাদের পরিবারের... ...বাকিটুকু পড়ুন

কাফের কুফফারদের দেশে বাস করা হারাম।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:১৩

ফেসবুকে বাঙালিদের মধ্যে ইদানিং নতুন এক ফতোয়া চালু হয়েছে, এবং তা হচ্ছে "দাওয়াতের নিয়্যত ছাড়া কাফের কুফফারদের দেশে বাস করা হারাম।"
সমস্যা হচ্ছে বাঙালি ফতোয়া শুনেই লাফাতে শুরু করে, এবং কোন... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ২:৫৯

বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×