somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

-শর্ত পূরণ করেছেন কিন্তু ট্রেড ইউনিয়ন নাই!-

২৪ শে জুলাই, ২০১৭ বিকাল ৪:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



বাংলাদেশের উৎপাদিত পণ্য বিশেষ করে তৈরি পোষাক+পাটজাত বস্তু+প্রক্রিয়াজাত চামড়া+চিংড়ি ইত্যাদি রাপ্তানি নিজ দেশে বিক্রি ছাড়াও বিভিন্ন দেশে শুল্কমুক্ত প্রবেশের যে সুবিধা এতোদিন বাংলাদেশের ব্যবসায়ী/সরকার এবং পরবর্তীতে দেশের জনগণ ভোগ করে আসছিলো তা হঠাৎ করে যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্রদেশগুলো শুধুমাত্র বাংলাদেশের জন্য শুল্কমুক্ত বিশেষ সুবিধা বন্ধ করে দিয়েছে! যদিও এমন সুবিধা দেয়া-নেয়া বিভিন্ন রাষ্ট্র একে অপরের সাথে একটি সমযোতার মাধ্যমে করে থাকে। কিন্তু আমরা হঠাৎ করে এমন কি করলাম, যার জন্য যুক্তরাষ্ট্র এবং মিত্র ইউরোপীয় ইউনিয়নের পক্ষ থেকে আমাদের ব্যাপারে শুল্কমুক্ত সুবিধা বা জিএসপি সুবিধা বাতিল করা হলো?

আমার জানা মতে সেটি হচ্ছে, বাংলাদেশের প্রতিটি সরকারী/বেসরকারী এবং সায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানে (সর্বক্ষেত্রে) ট্রেড ইউনিয়নের কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া। বলা যায় বাংলাদেশে এক রকম অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে ট্রেড ইউনিয়নকে। যদিও অনেক প্রতিষ্ঠানে ট্রেড ইউনিয়ন আছে কিন্তু তাদের কার্যক্রম চোখে পড়ার মতো নেই কিংবা যাদের প্রতিষ্ঠানে আছে তারা খুব একটা ভালো কিছু করার সুযোগ পাচ্ছেন না। সেদিন পত্রিকায় দেখলাম বাংলাদেশ রুপালী ব্যাংকের ট্রেড ইউনিয়নের কয়েকজন সদস্যকে, ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বহিষ্কার করেছেন কিংবা বাধ্যতামূলক অবসর দিয়েছেন, কিন্তু কেনো? বলা হয়েছে, তারা নাকি অতি মাত্রায় কর্তৃপক্ষের কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করতেন কিংবা কোন কাজ খুব সহজে পাইয়ে দিতে কিংবা করে নিতে বাধ্য করতেন। যার ফলে কর্তৃপক্ষ তাদের ওপর এক রকম বিরক্ত হয়ে বহিষ্কার কিংবা বাধ্যতামূলক অবসর গ্রহনের জন্য চিঠি দিয়েছেন।

ব্যাংক কর্তৃপক্ষ যা বলছেন, আসলে কি তাই? এটি একদম সত্যি না। ট্রেড ইউনিয়ন একদম শ্রমিক স্বার্থের বাহিরে কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ করিবে না কিংবা করতে পারে না।

ট্রেড ইউনিয়ন এমন একটি সংস্থা, যারা কর্তৃপক্ষ এবং কর্মচারীর মাঝে সেতু বন্ধন হিসেবে কাজ করে থাকেন। আর এতে করে ব্যক্তির চেয়ে দেশেরই বেশি লাভ হয়। বলতে পারেন কিভাবে? কারণ, কোনো প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে যদি কোনো ঘোষণা আসে আর তা সেই প্রতিষ্ঠানের কাজের সাথে জড়িত শ্রমিক স্বার্থের পরিপন্থি হয় তবে সেখানে ট্রেড ইউনিয়নের কাজ হচ্ছে তা বাধা দেয়া কিংবা আলোচনার মাধ্যমে শ্রমিক বান্ধব পরিবেশ তৈরি করে উভয় পক্ষের জন্য লাভ হয় তেমন পন্থা অবলম্বন করা। আর এতে করে প্রতিষ্ঠানেরও কোনো ক্ষতি হয় না বরং শ্রমিকদের স্বার্থ টিকিয়ে কাজ করে গেলে সেই প্রতিষ্ঠান দিনকে দিন ভালো অবস্থানে যাবে এমনটাই প্রতিয়মান। যদিও আমাদের দেশের ব্যবসায়ী সমাজ কিংবা সরকার তা করতে অপারগ।

আজকে আমাদের দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানগুলি দিনকে দিন বন্ধ হয়ে যাচ্ছে কিংবা লোকসানের মুখে পতিত, তার কারণ হচ্ছে যথাযথ শ্রমিক বান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি না করা। তাদের যথাযথ সম্মানী না দেয়া। তাদের দৈনিক শ্রমের বিনিময় সঠিকরুপে নিরুপন না করা। এবং শ্রমের বিনিময় যথাযথ পক্রিয়ায় মাধ্যমের পরিশোধ না করা। যার ফলশ্রুতিতে শ্রমিকেরা প্রতিষ্ঠানের কাজের প্রতি মনোযোগ দিয়ে কাজ করতে পারেন না। সঠিক সময়ে কাজটি সমাধা না হওয়ার কারণে ডেলিভারী দিতে পারা যায় না অর্থাৎ সময়ের কাজ সময়ে শেষ না হওয়াতে বায়ার অর্ডার বন্ধ করে দিতে বাধ্য হন। তাতে করে যেমন-দেশের ক্ষতি তেমনি ব্যবসায়ীর ক্ষতি সবচেয়ে বড় ক্ষতিটি হয় অল্পে সন্তুষ্ট থাকা কম বেতনের ঐ শ্রমিকের।

বারংবার বিভিন্ন দেশে থেকে বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষের প্রতি ট্রেড ইউনিয়ন চালু রাখার ব্যাপারে অনুরোধ করার পরেও আমরা আমাদের দেশে প্রতিটি সেক্টরে ট্রেড ইউনিয়নের কার্যক্রম পরিচালিত হতে দেখিনা। বিশেষ করে আমাদের নৌ-সেক্টরে এর অবস্থান শুন্যের কোটায়। বলা যায় কর্তৃপক্ষের যচ্ছে-তাই অবস্থা। যেখানের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে দেশ। অথচো সরকার গুটি কয়েক ব্যক্তির স্বার্থ রক্ষা করতে গিয়ে লক্ষ-কোটি জনতার স্বার্থকে উপেক্ষা করে যাচ্ছেন। এটি কোনো মতেই সঠিক হতে পারে না। আমরা লক্ষ্য করেছি, মাননীয় মন্ত্রী জনাব তোফায়েল আহম্মদ সাহেব অনেকবার বলতে শুনেছি-যুক্তরাষ্ট্র থেকে বেঁধে দেয়া শর্তগুলো পূরণ করার পরেও নাকি যুক্তরাষ্ট্র তাদের দেশে আমাদের দেশের পন্যকে শুল্কমুক্ত সুবিধা দিচ্ছেনা। মাননীয় মন্ত্রী মহোদয় বলছেন, কেয়ামত পর্যন্তই নাকি দেবে না। আসলে কি শর্ত পূরণ করেছেন তা শুধু তিনিই জানেন আর তাঁর অনুসারীরা জানেন। আমরা সে শর্ত পূরণের কোনো অংশের মধ্যেই নিজেদের অংশ দেখতে পায়নি।

যদি শর্ত পূরণ করেই থাকেন তবে কেনো দীর্ঘ ছয় বছর যাবৎ একটি কল্যাণমুখী প্রতিষ্ঠানে গড়ে ওঠা ট্রেড ইউনিয়ন কিংবা সংগঠন আজো তাদের অধিকার আদায়ের ব্যাপারে দুয়ারে দুয়ারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন!? যে সংগঠন স্বপ্ন দেখে দেশের একটি বৃহত্তম জনগোষ্ঠী ঐ প্রতিষ্ঠানের কাজের সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে চাকুরী করে দেশের জন্য বিরাট অবদান রাখতে পারবেন। কিন্তু সেটা তো কর্তৃপক্ষ হতে দিচ্ছেন না বরং গুটি কয়েকজন লোকের স্বার্থ রক্ষা করে চলেছেন প্রতিনিয়তই! তাই বলবো, গয়েবলসীয় তথা বালখিল্য কথাবার্তা না বলে দেশের প্রয়োজনে দেশের উন্নয়নের স্বার্থে প্রতিটি সেক্টরে ট্রেড ইউনিয়ন প্রথা চালু করে কর্মবিমুখ লোকগুলোকে কর্মমুখী করার জন্য বিশেষ উদ্দ্যেগ গ্রহণ করবেন। এবং প্রতিটি সেক্টর থেকে দুর্ণীতি রোধে বিশেষ ট্রাস্কফোর্স টিম গঠন করে কাজের গতির সঞ্চারণ করতে বিশেষ উদ্দ্যেগ গ্রহণ করিবেন।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে জুলাই, ২০১৭ বিকাল ৪:৩০
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহমিকা পাগলা

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১৪


এক আবেগ অনুভূতি আর
উপলব্ধির গন্ধ নিলো না
কি পাষাণ ধর্মলয় মানুষ;
আশপাশ কবর দেখে না
কি মাটির প্রণয় ভাবে না-
এই হলো বাস্তবতা আর
আবেগ, তাই না শুধু বাতাস
গায়ে লাগে না, মন জুড়ায় না;
বলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩




তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×