somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

-বাংলায় একটি প্রবাদ আছে : অতি বাড়া বেড়োনা ঝড়ে পড়ে যাবে!-

১৩ ই আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৪:২৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



সংবিধান মোতাবেক আগামী সংসদ নির্বাচন হবে কিন্তু সংবিধান পরিবর্তন করে সবকিছু নিজের মতো করার পরেও সেখান থেকে একচুলও নড়বেন না বলে হুশিয়ারী দিচ্ছেন সরকারী দল। অবাক লাগে তাহলে তারা সংবিধান মানছেন তো!!!?

বর্তমান দেশের সর্বোচ্চ আদালত কর্তৃক ষোড়শ সংশোধনী বাতিল হওয়ার কারণে সংবিধান মোতাবেক তত্তাবধায়ক সরকার ব্যবস্থায় ফিরে আসার লক্ষণ স্পষ্ট হচ্ছিল এবং বর্তমান সরকার স্বঘোষিত বলেই প্রতিয়মান হচ্ছিল ঠিক সেই সময়ও সরকারী দল বলে আগামী নির্বাচন সংবিধান মোতাবেক হবে। তাহলে তারা সংবিধান মানছেন তো!!!?

সংবিধানে দেশের সর্বোচ্চ আদালতেকে দেশের তিনটি স্তম্ভ থেকে সম্পূর্ণরুপে আলাদা করে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিলো এবং দেশের গণমানুষের জন্য শেষ আশ্রয়স্থল হিসেবে অভিহিত করা হয়েছিলো। সংবিধানে কোনো সংসদকে কিংবা সংসদীয় দলকে শেষ আশ্রয়স্থল হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়নি। বর্তমান সরকারী দল সংবিধানের দোহায় দিয়ে দেশের সর্বোচ্চ আদালতের সম্মান নিয়ে এক রকম ছেলে মানুষী শুরু করেছে। তাহলে কি বিশ্বাস করতে হবে তারা সংবিধান মানছেন!!!? যেখানে প্রধান বিচারপ্রতিকে সংবিধান এর অভিবাবক বলা হয়ে থাকে।

প্রাত্তন প্রধান বিচারপ্রতি এবিএম খায়রুল হক মুন সিনেমা হলের মালিকানা নিয়ে একটি মামলার রায় দিতে গিয়ে তিনি দেশের তত্তাবধায়ক সরকার পরিবর্তন ব্যবস্থা বাতিল করলেন এবং বললেন আগামী দুই টার্ম এই ব্যবস্থার মাধ্যমে ইলেকশন হতে পারে বলেও পর্যবেক্ষণ দিয়েছিলেন। এখন প্রশ্ন হলো তিনি একটি সিনেমা হলের মালিকানা ফিরিয়ে দেয়া মামলা নিয়ে তো দেশের একটি প্রচলিত সরকার পরিবর্তন ব্যবস্থা বাতিল করতে পারেন না? আর ঐ মুন সিনেমা হলের মামলায় এজাতীয় কোনো এজেন্ডাও ছিলো না। তবে কেনো এবিএম খায়রুল হক অযাচিত কিছু এজেন্ডা ঐ মামলায় প্রবেশ করিয়ে দিয়েছিলেন, যাকে সংক্ষিপ্ত করে বলা হয় পর্যবেক্ষণ। তাহলে বর্তমান সরকার কি করে ষোড়শ সংশোধনী নিয়ে এতো কথা বলে এবং খায়রুল হক কিভাবে এই রায় নিয়ে ঊচ্চকন্ঠ প্রকাশ করলেন! তাহলে কি বলবেন, তারা সংবিধানে বিশ্বাস করেন!!!?

বর্তমান সরকার (আওয়ামীলীগ) তাদের প্রয়োজনে সেই সময়ে সরকারে (বিএনপি) থাকা দলকে একরকম কোনঠাসা করে এই তত্তাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা দেশের সংবিধানে চালু করেছিলেন এবং ঠিক একটি সুবিধাজনক সময়ে এসে আবার সেই সরকারী দল (আওয়ামীলীগ)ই আবার সেই তত্তাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা এই সংবিধান থেকে উঠিয়ে দিলেন। তবে সবচেয়ে আশ্বর্যজনক কথা হলো, যে প্রধান বিচারপ্রতি বর্তমান ষোড়শ সংশোধনী নিয়ে এত বড় কথা বললেন সেই তিনিই কিনা অপেন আদালতে মৌখিকভাবে ঘোষণা করেছিলেন যে, আগামী দুইটি ইলেকশন এই তত্তাবধায়ক ব্যবস্থার মধ্যে হতে পারে। কিন্তু অবসর গ্রহণের ১৬মাস পরে তার দেয়া রায়ে তত্তাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার অস্তিত্ত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। তাহলে আপনি কি বলবেন তারা আইনের শাসনে বিশ্বাসী কিংবা সংবিধানে বিশ্বাসী!!!? যে কিনা ঘোষণা করলো এক রকম আর রায় লিখলো আরেক রকম!!!

ষোড়শ সংশোধনী বাতিল হওয়ার পর বর্তমান সরকারে থাকা প্রায় সকলেই এক রকম বিষদগার শুরু করেছেন দেশের ঊচ্চ আদালতের বিচারপ্রতিদের নিয়ে। আমার মনে হয় এই রকম যদি অন্য কোনো দলের অনুসারীরা করতো, তাহলে নির্ঘাত জেল-জরিমানার শিকার হয়ে যেতেন। অথচ সরকারী দলের যে যেভাবেই পারছে, সে সেভাবেই বক্তব্য দিচ্ছে ঊচ্চ আদালত নিয়ে। যা অনাকাঙ্খিত ও অনভিপ্রেত। যদি অতীতের রেকর্ড দেখতে চাই তবে দেখবো ৫ম ও ১৩তম সংশোধনী বাতিল হওয়ার কারণে রাজনীতির মাঠে একটি শুন্যতার সৃষ্টি হয়েছিলো আর সেই অনাকাঙ্খিত শুন্যতা সৃষ্টির কারণও কিন্তু বর্তমান সরকার। তবুও কি বলবেন আমরা সংবিধানে বিশ্বাসী!!!?

বর্তমান সময়ে আদালত একটি চরম খারাপ সময় পার করতেছে। যার জন্য দায়ী হচ্ছে বর্তমান সরকারে থাকা কিছু ব্যক্তি। যাদের কিছু অংশ যেখানে সেখানে ঊচ্চ আদালত নিয়ে অপেন বক্তব্য দিয়ে ঊচ্চ আদালতের সম্মান নষ্ট করে চলেছেন। কিন্তু তাদের কে, তাদের বক্তব্যের ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে; তারা একটি কমন উত্তর দেন আর তা হলো আমরা আদালতের বিরোধীতা করছি না। আমরা কিছু পর্যবেক্ষণ মেনে নিতে পারছিনা। আসলে কি তাই? যারা আদালতের রায় নিয়ে সমালোচনা করেন, পরোক্ষভাবে তারাই আদালত অবমাননা করেন। তবুও কি বলবেন, আপনি সংবিধান অনুযায়ী কিছু করছেন!!!?

তাই বলবো-অনেক হয়েছে। এবার থামেন। আর বেশি দৌঁড়াইয়েন না। সম্মানিত আদালতের রায় মেনে নিন। এবং আদালতকে রায় বাস্তবায়নে সহায়তা করুন। যা দেশ ও জাতি উভয়ের জন্য মঙ্গল। তা না হলে অতীতের কর্মকান্ডের জন্য যদি বর্তমান সময়ে কোনো খারাপ দিক উম্মোচিত হয় তার জন্য, বর্তমান সরকারই দায়ী থাকবে। যার শেষ পরিণতি কিন্তু আমাদেরই (দেশের সকল সাধারণ মানুষকেই) ভোগ করতে হবে। আশা করছি, আপনাদের সকলের মাঝে শুভবুদ্ধির উদয় হবে। এমনটাই প্রত্যাশা।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৪:২৭
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×