somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সামনে যাবেন না এখানেই দাঁড়ান!

১২ ই অক্টোবর, ২০১৭ দুপুর ১২:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



গতকালকে মহাখালী থেকে বাসে উঠতে না পেরে পায়ে হেঁটে সৈনিক ক্লাব হয়ে মিরপুর ১৪ নং পর্যন্ত যাওয়ার নিয়ত করেই রওনা হয়েছিলাম। যদিও অনেক সময় বাসের জন্য দাঁড়িয়ে থেকে তারপর রওনা দিয়েছিলাম। সবকিছু ঠিকঠাক চলছিলো কিন্তু বিপত্তি বাঁধে কচুক্ষেতের ঠিক আগের এমপি চেকপোষ্টে পৌঁছলে। হঠাৎ বিভিন্ন দিক থেকে কিছু আর্মি এসে (সোলজার+অফিসার) রাস্তা ক্লোজ করে দিলো সাধারণ পথচারীদের জন্য। সবাইকে উদ্দেশ্যে করে বলতে লাগলেন, সামনে যাবেন না এখানেই দাঁড়ান! এমনকি সেই সময় ঐ রাস্তা দিয়ে চলতে থাকা আর্মিসহ ভিআইপি গাড়ীগুলোকেও উল্টো পথে চলে যাওয়ার নির্দেশ দিচ্ছিলেন দায়িত্বরত ট্রাফিক আর্মিরা। আমি অবাক হয়েছিলাম যখন দেখলাম, সোলজারদের কমান্ডিং এর সাথে আর্মি অফিসারদের গাড়ীও ঠিক উল্টো পথে চলে যেতে দেখে! মনে হচ্ছিল না এমনটা আমাদের অন্য কোনো বাহিনী মেনে নিতে পারতো। তবুও তারা এমন আইনের প্রতি শ্রদ্ধা ভালো লাগার মতো।

গতকালকে এমনিতেই সৈনিক ক্লাব থেকে ভেতরের রোড়ে সাধারণদের চলাচল চোখে পড়ার মতোই ছিলো কারণ তুলনায় গাড়ী ছিলো কম। যদি গতকালকে কেউ ঐ রাস্তায় সন্ধ্যার পর গিয়ে থাকেন তাহলে আমার লিখার সত্যটা বুঝতে পারবেন। যখন ঐ দায়িত্বরত আর্মি ট্রাফিকরা রাস্তা বন্ধ করে দিলেন অর্থাৎ সাধারণ পথচারীদের চলাচল স্থীমিত করে দিলেন তখন সময় প্রায় সন্ধ্যা ৬:১০মিনিট-৬:১৫ মিনিট হবে। কৌতূহলী পথচারীরা জিজ্ঞেস করতে লাগলেন, কি হয়েছে সামনে? কোনো সমস্যা নাকি? যারা সিগন্যালের সামনেই দাঁড়িয়ে ছিলেন তারা হয়তো ব্যাপারটা তাৎক্ষণিক বুঝতে পেরেছিলেন কারণ দায়িত্বে থাকা আর্মি ট্রাফিকরা বলছিলেন আমাদের প্রেসিডেন্ট মহোদয় যাবেন তাই সাময়িক সময়ের জন্য রাস্তা বন্ধ করতে হয়েছে। যাই হোক-

সময় যাচ্ছে কিন্তু আমাদের প্রেসিডেন্ট তো আসে না। মিনিটের পর মিনিট যায় এরপরও আসেনা দেখে কিছু পথচারী খুব আক্রমণাত্তক বাণী ছুঁড়তে শুরু করলো, যা এখানে প্রকাশ করা যাবে না। যদিও একজন আর্মি অফিসার গাড়ী থেকে নেমে দাঁড়িয়েছিলেন এমন সময় প্রেসিডেন্টের উদ্দেশ্যে গালিগুলো অফিসার মনোযোগ সহকারে শ্রবণ করতে লাগলেন। কিন্তু কোনো উপায় না দেখে তিনিও একটু ক্ষিপ্ত স্বরে সকলে মুখ বন্ধ রাখার নির্দেশ প্রদান করলেন। কিছুক্ষণের জন্য সকলে চুপ থাকলেও মাননীয় প্রেসিডেন্ট আরো সময় ক্ষেপন করার কারণে সাধারণ পথচারী আর ধর্য ধারণ করতে পারছিলেন না। তারা এরপর স্লোগান দিতে থাকেন খারাপ কথার মাধ্যমে।

যদিও সেখানে নারী-পরুষের সমান উপস্থিতি ছিলো। সবাই একরকম বিরক্তি প্রকাশ করতে লাগলেন। সবাই এও বললেন, প্রেসিডেন্ট চলে যাওয়ার পর আমরা কিন্তু ব্রিজে উঠতে পারবোনা, নিচ দিয়ে যাবো, পারলে ঠেকাবেন! আর্মিরা সদয় আবেগসহকারে পথচারীদের এই অনুরোধ রাখার চেষ্টা করবেন বলে আশ্বস্ত করার পর সাধারণ পথচারীরা একটু শান্ত হয়েছিলো। ঠিক ঐ সময়ের মধ্যে সৈনিক ক্লাব থেকে কচুক্ষেত পর্যন্ত সাধারণ পথচারীদের ভীড় লেগে গিয়েছিলো এবং কচুক্ষেত থেকে ১৪ নম্বর পর্যন্ত গাড়ীর তীব্র জ্যাম লেগে গিয়েছিলো।

পথচারীরা এবার শান্ত কন্ঠে দায়িত্বরত অফিসারকে জিজ্ঞেস করলেন, আর কত সময় আমরা দাঁড়িয়ে থাকবো? সারাদিন অফিস করে তারপর গাড়ী না পেয়ে পায়ে হেঁটে এখানে এসে এতো সময় একটানা দাঁড়িয়ে থাকা খুবই কষ্ট লাগতেছে। অফিসার সকলকে অনুরোধের সুরে বললেন আর ৩মিনিট সময় লাগবে, আপনারা ধর্যসহকারে অপেক্ষা করুন। ৫ মিনিট চলে যাওয়ার পর এবার আবার সাধারণরা বলতে শুরু করলো, হালাগোরে ভোট দেয় আমাগোরে কষ্ট দেওনের লাইগ্যা!!! হা হা হা। কেউ বলছেন, জনগণের টাকায় যখন সুখের বিলাসিতা তখন না হয় জনগণের আরো কিছু টাকা দিয়ে ওনাদের প্রত্যেকের জন্য একটি করে হেলিকপ্টার কিনা দরকার। যাতে করে কোথাও আসা-যাওয়ার জন্য যাত্রী সাধারণ কিংবা পথচারীদের এভাবে আর কষ্ট করতে না হয়। তাহলে সারাদিনের কর্ম ঘন্টাও নষ্ট হবে না আর অফিস শেষে বাসায় ফিরতে গেলে এমন নিষ্ঠুরভাবে দাঁড়িয়ে থাকবে হবে না।

অবশেষে আমাদের প্রেসিডেন্ট ৩৩ মিনিট পথচারীদেরকে দাঁড় করিয়ে রাখার পর মুক্ত পায়ে হেঁটে যাওয়ার সুযোগ প্রদান করিলেন। কিছু সময়ের জন্য আমরা উনাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করিলাম। যদিও আমরা আমাদের দেশীয় নেতা/উপনেতা/পাতি নেতাদের এমন কর্মকান্ডে যারপরনায় কষ্টপ্রাপ্ত এবং ব্যথিত!

ছবিঃ গুগল।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই অক্টোবর, ২০১৭ দুপুর ১২:৫৯
৯টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×