আমাদের দেশের বিচার ব্যবস্থা কি মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় সঠিক ভাবে কাজ করছে?! নাকি সরকারের দেয়া রুটিন বাস্তবায়ন করার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকছে?! দেশের সাধারণ বিচার ব্যবস্থায় আমরা মাঝে মাঝে দেখতে পাই, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রায়গুলোকে উদাহরণ হিসেবে ব্যবহার করতে। তাহলে বাংলাদেশের প্রাত্তণ প্রধানমন্ত্রীর ক্ষেত্রে আমাদের আদালত কেনো মামলার রায়ের বিষয় নিয়ে কেনো বিভিন্ন দেশের আ্ইনী কাঠামোকে অনুসরণ করলেন না?! খালেদা জিয়ার মামলা এবং তৎপরবরতীতে সাজা নিয়ে সরকার এবং আদালত যা করলো সেই বিষয়টাকে সামনে নিয়ে বিশ্ব থেকে দুই-তিনটি উদাহরণ টানবো।
প্রসঙ্গ একঃ মনিকার ঘটনায় তৎকালীন আমেরিকান প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের বিরুদ্ধে আনা সকল অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। কিন্তু সে যেহেতু রাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট এবং তাঁর অনেক কর্ম দেশ ও জাতীর জন্য অনুসরণ করার মতো ছিলো সেহেতু আদালত তাঁকে রাষ্ট্রের কথা বিবেচনা করে সকল প্রকার অভিযোগ থেকে মুক্তি দিয়ে দেয় এবং প্রেসিডেন্ট হিসেবে বহাল থাকার সুরক্ষা প্রদান করেন। কিন্তু আমাদের দেশের আদালত সাধারণ ২কোট টাকার সাজানো মামলায় একজন প্রাত্তণ প্রধানমন্ত্রীর ব্যাপারে কি সুরক্ষা প্রদান করলেন???!!!
প্রসঙ্গ দু্ইঃ ইতালির প্রধানমন্ত্রী বারলুসাকোনি’র বিরুদ্ধে আয়কর ফাঁকি মামলায় ১৩ বছরের জেল হয়েছিলো কিন্তু আদালত ঐ প্রধানমন্ত্রীর জেল বিষয়ক নিদের্শনায় বলেছিলেন, যেহেতু তিনি একজন প্রাত্তণ প্রধামন্ত্রী ছিলেন সেহেতু তিনি যেখানে থাকতে সস্তিদায়ক মনে করবেন সেখানেই থাকবেন। তবে যদি এমন কোনো জরুরী কাজের দরকার হয়ে যায়, যার কারণে তিনি দেশের বাহিরে কিংবা দেশে থাকলেও অন্য কোথায় যেতে হবে; সেহেতু তিনি তখন পুলিশের কাছ থেকে জানিয়ে যাবেন। অথার্ৎ ইতালিয়ান প্রাত্তণ প্রধানমন্ত্রী সকল প্রকার পুলিশী ঝামেলা থেকে মুক্ত থাকলেন এবং তিনি যখন যেথায় যা খুশি করতে পারবেন। আদালত তাঁর সেই অধিকারের সুরক্ষা দিয়েছেন কিন্তু বাংলাদেশের আদালত এবং আইন একজন প্রাত্তণ প্রধানমন্ত্রীর ক্ষেত্রে কি আইন দেখালেন আর কি সুরক্ষা দিলেন???!!!
প্রসঙ্গ তিনঃ সেদিন দেখলাম বলিউডের নায়ক সালমান খানকে ৫ বছরের জেল দিয়েছেন সে দেশের আদালত। তিনি কৃষ্ণসার হরিণ হত্যা করার দায়ে এই দন্ড পেয়েছেন বলে জানতে পারি। কিন্তু কথা হলো একই সাজা পেয়ে তিনি আইনী সুরক্ষা পেলেন অরথাৎ জামিনে মুক্তি পেলেন আর সমান অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়ে আমাদের প্রাত্তণ প্রধানমন্ত্রী মাসের পর মাস জেল খেটে যাচ্ছেন! তাহলে স্বাভাবিক ভাবে সাধারণের মনে প্রশ্ন জাগবে, পৃথিবীর সকল দেশের প্রচলিত ফৌজদারী আইন কি সমান ভাবে কাযর্কর?! এই থেকে আমরা বলতেই পারি আমাদের আদালত একজন জনপ্রিয় জননেত্রীর ক্ষেত্রে তাঁকে আইনী সুরক্ষা দিতে পুরোপুরি ব্যরথ হয়েছেন!!!
যেহেতু আইন সকলের জন্য সমান নয় সেহেতু রাষ্ট্রের জন্য যার যত বেশি অবদান আছে তার সেই মূল্য রাষ্ট্র যাতে আদায় করে, এটাই প্রত্যাশা।