somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আজ মুমুর বাসর রাত , পারিবারিকভাবেই ওর বিয়ে হয়েছে । :P :P :P

৩০ শে মে, ২০১৪ বিকাল ৪:৩৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আজ মুমুর বাসর রাত , পারিবারিকভাবেই ওর বিয়ে হয়েছে । ও গুটিশুটি মেরে খাঁটের মাঝখানে বসে আছে , এইমাত্র ওর বর রিয়াদ রুমে প্রবেশ করলো . .
রিয়াদ : কেমন আছ মুমু ?
মুমু : দেখুন আমি আপনাকে বিয়ের আগেই সব কিছু বলতে চেয়েছি , কিন্তু আপনি আমাকে বলার কোন সুযোগ দেননি ।
রিয়াদ : ঠিক , কিন্তু আমি বলেছিলাম বাসর রাতে সব শুনবো । এখন বল তোমার কি সেই জমে থাকা কথা ।
মুমু : আমি জানিনা আমার সব কথা শোনার পর আপনি আমার দিকে তাকাতে পারবেন কিনা ।
রিয়াদ : আমার উপর বিশ্বাস রাখতে পার . .
মুমু ফিরে গেল এক বছর আগে . .
মুমু মফস্বলের এক কলেজ থেকে HSC দিয়ে ঢাকায় এসেছে কোচিং করতে , উঠেছে এক দুসর্ম্পের আত্মীয়ের বাসায় । সেখান থেকে ও কোচিং করতো নিয়মিত , আস্তে আস্তে ঐ কোচিং সেন্টারের এক বড় ভাইয়ের সাথে ওর কিছুটা ঘনিষ্টতা হয় , যে কিনা ওকে বিভিন্ন বিষয়ে হেল্প করতো , ছেলেটির নাম ছিল রতন । আস্তে আস্তে ওদের সম্পর্ক আরও গভীর হল , আপনি থেকে তুমিতে গড়াল । যেদিন কোচিং শেষ হল সেদিন রতন মুমুকে বলেছিল কালকে আমরা একটা ছোটখাট অনুষ্ঠান করবো , তোমাকেও আসতে হবে । পরের দিন মুমু গিয়ে দেখে কেউ নেই , রতন তাকে বলেছিল সবাই এখনি চলে আসবে তুমি ভিতরে গিয়ে বস , টেবিলের উপর জুস রাখা আছে ইচ্ছে করলে খেতে পার । মুমু এক গ্লাস জুস পান করলো , কেমন যেন খারাপ লাগছে ওর মাথাটা ঝিমঝিম করছে , এরপর আর ওর কিছুই মনে নেই . .
হুশ ফিরে পাওয়ার পর ও বুঝতে পারলো কি হয়েছে ওর সাথে । তারপর রতনকে সে অনেক খুঁজেছে , কোন ভাবেই আর রতনের দেখা পেলনা ।
এই ঘটনার পর মুমু খুব ভেংগে পড়ে , ভার্সিটি পরিক্ষা না দিয়েই বাড়িতে ফিরে আসে । মা বাবাকে সে বলেছিল তাদের চেড়ে ওর পক্ষে ঢাকায় থাকা সম্ভব না , তারপর সেই মফস্বল কলেজেই অনার্সে ভর্তি হয় ও ।
মুমুর নিজেকে খুব হালকা মনে হচ্ছে এখন , রিয়াদকে সে কথাগুলো বলতে পেরেছে । আবার পরক্ষনেই ওর মনটা ভারী হয়ে গেল , কারন এসব কথা শুনার পর রিয়াদের রিএ্যাকশন ভালো হবার কথা না ।
রিয়াদ : তোমার কথা শেষ ?
মুমু : হুম ।
রিয়াদ : তুমি এতক্ষন যা যা বললে সবই আমি জানি ।
মুমু : মানে ?
রিয়াদ : মানে রতন আমার আপন বড় ভাই ! !
(মুমুর মনে হচ্ছে , ও হাজার ভোল্টের একটা বৈদ্যুতিক শক খেল) ! !
মুমু : আপনি এসব কি বলছেন ? ?
রিয়াদ : আমি তখন লন্ডনে , বিবিএ শেষ হয়নি তখনো । জানতে পারলাম ভাইয়্যা রোড এক্সিডেন্ট করেছে , এর তিনদিন পর আবার খবর এল ভাইয়্যা মারা গেছে । এর কয়েক মাস পর আমার বিবিএ শেষ হয়ে যায় এবং আমি দেশে ফিরি । ভাইয়্যা মারা যাবার আগে মা বাবার কাছে তোমার ছবি এবং ঠিকানা দিয়ে যায় আর তোমার সাথে সে যা যা করেছে সব মা বাবার কাছে স্বীকার করে ।
মারা যাওয়ার ঠিক আগ মূহুর্তে সে বলছিল মুমুর সাথে আমি যে অপরাধ করেছি তার জন্য আল্লাহ আমাকে এই শাস্তি দিয়েছে , তোমরা পারলে ওর জন্য কিছু করো ।
মুমু : আপনি এসব কথা আগে বলেননি কেন ?
রিয়াদ : আমার ভয় ছিল যদি তুমি সব কিছু শুনে বিয়েতে রাজি না হও ।
মুমু : একটা প্রশ্ন করতে পারি ?
রিয়াদ : অবশ্যই ।
মুমু : দুনিয়াতে এত মেয়ে থাকতে আপনি আমাকে কেন বিয়ে করলেন ?
রিয়াদ : প্রায়শ্চিত্ত করতে , আর মা বাবাও চায় তোমার সাথে আমার বিয়ে হোক ।
মুমু : অপরাধ করেছে আপনার ভাই আপনি কেন প্রায়শ্চিত্ত করবেন ?
রিয়াদ : বিশ্বাস কর মুমু সব ঘটনা শুনার পর আমার মনে হতে লাগলো যেন আমি নিজেই এর জন্য দায়ী , আমি নিজেই অপরাধটি করেছি ! আমি মানতে পারছিলাম না কি করে আমার ভাই এমন একটি কাজ করতে পারলো ! ভাই হারানোর শোকও তখন তুচ্ছ হয়ে গিয়েছিল আমার কাছে ।
রিয়াদ আবেগাক্রান্ত হয়ে পড়েছে , সে মুমুর হাত ধরে বলল " আমি তোমার কাছে ক্ষমা চাচ্ছি আমার ভাইয়ের পক্ষ থেকে " আমি জানি তোমার সাথে যে অন্যায় করা হয়েছে তার কোন ক্ষমা নেই , প্রায়শ্চিত্ত নেই ।
মুমু অবাক হয়ে ভাবছে , কি বৈপরীত্য দুটি মানুষের মাঝে একজন তার সাথে কি নির্মম ব্যাবহার করেছে , আর একজন এসেছে সেই নির্মমতার দায়ভার নিজের কাঁদে তুলে নিতে , তার পাশে থাকতে , তার সুখ দুঃখের অংশীদার হতে ।
একদিন একজনকে বিশ্বাস করে সে প্রতারিত হয়েছে , কিন্তু আজ আরেকজন তাকে বিশ্বাস করে তার দিকেই হাত বাড়িয়ে দিয়েছে ।
" মুমুর পক্ষে এই বিশ্বাসের হাতকে ফিরিয়ে দেওয়া সম্ভব না , কখনোই না "
১৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

চুরি করাটা প্রফেসরদেরই ভালো মানায়

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৩


অত্র অঞ্চলে প্রতিটা সিভিতে আপনারা একটা কথা লেখা দেখবেন, যে আবেদনকারী ব্যক্তির বিশেষ গুণ হলো “সততা ও কঠোর পরিশ্রম”। এর মানে তারা বুঝাতে চায় যে তারা টাকা পয়সা চুরি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিব নারায়ণ দাস নামটাতেই কি আমাদের অ্যালার্জি?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৫:৫৭


অভিমান কতোটা প্রকট হয় দেখেছিলাম শিবনারায়ণ দাসের কাছে গিয়ে।
.
গত বছরের জুন মাসের শুরুর দিকের কথা। এক সকালে হঠাৎ মনে হলো যদি জাতীয় পতাকার নকশাকার শিবনারায়ণ দাসের সঙ্গে দেখা করা সম্ভব... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতি মাসে সামু-ব্লগে ভিজিটর কত? মার্চ ২০২৪ Update

লিখেছেন জে.এস. সাব্বির, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০৮

মার্চ ২০২৪ সালে আমাদের প্রিয় সামু ব্লগে ভিজিটর সংখ্যা কত ছিল? জানতে হলে চোখ রাখুন-

গত ৬ মাসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভিউ ছিল জানুয়ারি মাসে। ওই মাসে সর্বমোট ভিজিট ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরান-ইজরায়েল দ্বৈরথঃ পানি কতোদূর গড়াবে??

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:২৬



সারা বিশ্বের খবরাখবর যারা রাখে, তাদের সবাই মোটামুটি জানে যে গত পহেলা এপ্রিল ইজরায়েল ইরানকে ''এপ্রিল ফুল'' দিবসের উপহার দেয়ার নিমিত্তে সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেট ভবনে বিমান হামলা চালায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×