somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সুন্দরি গাছের আগা মরা রোগ ও আমাদের শিক্ষা

১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১১:৪৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


আমার বন্ধু সাজেদুল করিম তার ফেইসবুক পোস্টে শিক্ষা নিয়ে একটি সুন্দর লেখা লিখেছে। আজ সকালে লেখাটি পড়ে আমার প্রতিক্রিয়া জানানোর ইচ্ছা ছিল। সকালে লিখতে পারিনি। বিকালে ফারুক আবার তাঁর লেখাটির কথা উল্লেখ করেছে। ভাবলাম কিছু লিখি। লিখতে গিয়ে একটি রোগের কথা মনে পড়েছে। আমি সেই রোগের কথাটিই এখানে সংক্ষিপ্ত আকারে লিখলাম

সুন্দর বন নিয়ে একটি লেখা পড়েছিলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র থাকাকালীন। আমরা তখন ৩য় বর্ষে পড়ি। পরিবেশ বিষয় একটি অধ্যায় আমাদের পাঠ্যসূচির অন্তরভূক্ত ছিল।আমাদের স্যার বাংলাদেশের পরিবেশ, প্রতিবেশ নিয়ে অনেক বক্তব্য রাখেন। অনেকগুলো ক্লাশের শেষে আমাদের কে বলে ছিলেন, তোমরা সুন্দর বনের পরিবেশ নিয়ে একটি অ্যাসাইনমেন্ট জমা দিবে। সেই জন্য কিছু পত্র পত্রিকা নিয়ে ঘাটাঘাটি করেছিলাম। সেখানে একটি রোগের নাম পেয়ে ছিলাম।

রোগটির নাম আগা মরা রোগ, মানে টপ ডাইং ডিজিজ। সুন্দরি গাছ এই রোগে আক্রান্ত হয়, হচ্ছে। রোগের অন্যতম কারণ হচ্ছে, সুন্দরবনের ভেতর দিয়ে বয়ে চলা নদীর পানি প্রবাহ কমে যাওয়া। ফারক্কা বাধের কারনে দক্ষিন- পশ্চিমাঞ্চলের প্রায় সব নদীতেই পানির প্রবাহ কমে গেছে। কিংবা অনেক নদী মারা গেছে। নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ কমে যাওয়ায় ব্যাপক হারে লবণাক্ততা বেড়ে গেছে। আর আমাদের বিশ্ব ঐহিত্য আক্রান্ত হয়েছে আগা মরা রোগে। পরিবেশ বিজ্ঞানীরা এর ব্যাপক অনুসন্ধান করতে পারে।

আমি এখানে রোগের নামটি ব্যবহার করার জন্যই শুধু প্রসংগটি যোগ করলাম। আমার বন্ধু সাজেদুল হকের লেখাটি চমৎকার বাস্তবতা। আমি শিক্ষাবিদ নই। যতসামান্য জ্ঞান দিয়ে শিক্ষার মত এক মহৎ কর্ম নিয়ে লেখা আমার সাধ্যের বাইরে। তবে কর্ম ক্ষেত্রে অনেক নবীন কর্মকর্তার দেখা পেয়েছি। আমার কর্মের অংশ হিসাবে অনেক তরুণ তরুণীর সাক্ষাৎকার নেয়ার আমার সুযোগ হয়েছে। সেই সুবাদে যে অভিজ্ঞতা তা নিয়ে হয়তো কিছুটা আলোকপাত করা যাবে। এখানে তার অবতারণা করা করছিনা। সে আলাদা এক লেখায় লিখব।

এখানে সাজিদুলের কথার সাথে আমি কয়েকটি কথা লিখেতে চাই তা হচ্ছে- আমাদের দেশে অনেক বছর ধরেই আগা মরা রোগে ধরেছে। এর ব্যাপ্তি বেড়েছে। শিক্ষার ক্ষেত্রেও ধরেছে সেই একই পচন। আমাদের গোটা সমাজ আগা মরা রোগে আক্রান্ত। ধীরে ধীর শরীরের শিরা, উপশিরা থেকে পায়ের পাতা পচে যাবে। আগা মরা আক্রান্ত হলে উপরের সবুজ পাতা মরে যায়। ধুসর হয়ে খসে পড়ে। গাছের শুকনো ডালপালা ভেংগে যেতে থাকে আস্তে আস্তে তা গাছে নীচ পর্যন্ত চলে যায়। প্রকৃতির সবুজ বন এভাবেই হারিয়ে যাচ্ছে।


সমস্যা হল মানুষের আগা মরা রোগে আক্রান্ত হলে আগে মরে তার চিন্তা চেতনা। আগা মরা রোগে আক্রান্ত দেশে শিক্ষার মত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মরে যাবে তাইত স্বাভাবিক। বেকার, অর্ধবেকার, কুশিক্ষিত জাতি হিসাবে আমাদের নাম চারদিকে ছড়িয়ে যাবে। আমাদের থাকবে বিশাল জনগোষ্ঠীর চাপ।বাইরের দাদাদের পরামর্শ, ফরমায়েশ মোতাবেক চলতে হবে। যারা শিক্ষা পরিকল্পনা, উন্নয়ন, শিক্ষাদাতা, গ্রহিতা, অভিভাবক সবাইকে ভাবতে হবে আমাদের জাতির ভবিষ্যত কে বাঁচানোর জন্য। শিক্ষা কোন পণ্য নয়। মোড়কজাত করে তা বিক্রি করা যাবে না। টাকা দিলেই শিক্ষা পাওয়া যাবে। কাগজে লেখা সার্টিফিকেটের কি মূল্য আছে?
আজকাল কাগজের সনদ নিয়ে চাকুরির বাজারে অনেক বেকার হাজির হচ্ছে। আগা মরা রোগে আক্রান্ত।

এই দায় কার? জাতি হিসাবে আমারা কি চাই তা কি ঠিক করতে পেরেছি? যদি আমাদের লক্ষ্য থাকে একটা উন্নত জাতি হিসাবে বিশ্ব মানচিত্রে ঠিকে থাকব, তবে তা হচ্ছে উন্নত শিক্ষা, মান সম্মত শিক্ষা; এই মান অর্জনের জন্য অবশ্যই সরকারের নীতি, পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের জন্য কঠোর আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে। শিক্ষার মানদন্ড ঠিক করতে হবে। যত্রতত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার অনুমতি বন্ধ করতে হবে। শিক্ষদের মান নির্ধারণের জন্য শক্ত আইনি কাঠামো থাকতে হবে। সর্বোপরি শিক্ষাবিদের দ্বারা প্রণীত নীতিমালা তৈরি ও বাস্তবায়ন করতে হবে। প্রাথমিক থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত শিক্ষক নিয়োগের জন্য যদি উন্নত মানদন্ড থাকা আবশ্যক।

আগার মরা রোগ থেকে দেশ জাতি মানুষ কে বাঁচানোর জন্য এখনই সময়।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১১:৪৬
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি করাটা প্রফেসরদেরই ভালো মানায়

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৩


অত্র অঞ্চলে প্রতিটা সিভিতে আপনারা একটা কথা লেখা দেখবেন, যে আবেদনকারী ব্যক্তির বিশেষ গুণ হলো “সততা ও কঠোর পরিশ্রম”। এর মানে তারা বুঝাতে চায় যে তারা টাকা পয়সা চুরি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরান-ইজরায়েল দ্বৈরথঃ পানি কতোদূর গড়াবে??

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:২৬



সারা বিশ্বের খবরাখবর যারা রাখে, তাদের সবাই মোটামুটি জানে যে গত পহেলা এপ্রিল ইজরায়েল ইরানকে ''এপ্রিল ফুল'' দিবসের উপহার দেয়ার নিমিত্তে সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেট ভবনে বিমান হামলা চালায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×