somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

টুকরো অভিজ্ঞতাঃ ইন্টারভিউ

০২ রা এপ্রিল, ২০১৮ দুপুর ১:৩৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


উন্নয়ন একটা তুলনামূলক বিষয়। শিক্ষার উন্নতি মানে শুধুমাত্র সংখ্যার বিচার নয়। আবার সার্টিফিকেটধারীও নয়। একটা গল্প প্রচলিত আছে বাংলায় এম এ পাশ করে কোথাও চাকরি হচ্ছেনা। একের পর এক ইন্টারভিউ দিচ্ছে। আর চাকরি না পেয়ে হতাশ হচ্ছে। শেষে এক চিড়িখানার প্রধানের কাছে সমসস্যার কথা জানায়। চিড়িয়াখানা প্রধান তাকে জানায় আমার এখানে পদ খালি নাই। হতাশ হয় যায়। বাড়ি ফেরার জন্য পা বাড়ায়। চলতে আরম্ভ করে। পিছন থেকে একজন ডাক দেয়। ফিরে তাকায়। দেখে চিড়িয়াখানা প্রধান ডাকছে। আনন্দে চোখে জল আসে। ভাবে উপর ওয়ালা হয়ত তার কথা শোনেছে। কাছে আসতেই জানায় আমার এখানে একটা বাঘের খাঁচা খালি। কয়েকদিন আগে বাঘটি মারা গেছে। তুমি চাহত কয়েক দিন এখানে কাজ করতে পার। জটিল কোন কাজ না। বাঘের পোশাক পরিধান করে বাঘের অভিনয়। সকাল থেকে সন্ধা পর্যন্ত। ভাল বেতন,খাবার দাবার দেয়া হবে। এই কথা শোনে বেচারার চেহারা রাগে মাগে লাল হয়ে যায়। তবে হালত চিন্তা করে রাজি হয় পরের দিন এসেই কাজে যোগদান।যথারীতি বাঘের পোশাক পরিধান করে খাঁচার কাছে যায়। সকাল সকাল চলে আসে। কিন্তু খাঁচার কাছে গিয়ে হতভম্ব। কিরে খাঁচাত খালি নাই। এখানে আগে থেকেই বাঘ আছে। তবে যে কিউরেটর সাহেব বলল বাঘ নেই, খাঁচা খালি। তবে বাঘ কোথা থেকে এল। তবে কি আমাকে বাঘের খাঁচায় বাঘের খাবার হিসাবে পাঠাল। অস্তির, হতাশ, রাগান্বিত হয়ে চলে আসবে এমন সময় পেছন থেকে কে যেন ডাকে। ফিরে তাকায়। দেখে খাঁচার বাঘ ছাড়া আর কেউ নেই। আবার চলে আসতে চায়। এমন সময় খাঁচার বাঘে আস্তে আস্তে ডাকে ভাই ভয় নাই। আপনি কি বাংলায় এম এ তবে ভেতরে চলে আসেন।

শিক্ষার হাল হকিকত নিয়ে ব্যাখ্যা করার ভাষা আমার নেই। কাউকে ছোট করার অধিকারও আমার নাই। মাঝে মাঝে তরুণ চাকুরী প্রার্থীদের সাথে দেখা হয়। আমাদের ছোট প্রতিষ্ঠানে যারা নিয়ম মেণে আসে চাকুরীর জন্য। আমরা সেখানে সাধারণ মানের একটা লিখিত পরীক্ষার ব্যবস্থা করি। তারপর ভাইভা নেয়া হয়। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকুরী কি এত নিয়ম মেনে হয়। এই প্রশ্ন কেউ করতেই পারে। তবে নবাগত মেধাবীদের কাজের সুযোগ দিতে এই ব্যবস্থা। অনেক সময় দেখা যায় চাকুরী পাবার পর বেশিদিন কাজ করে না। বেসরকারি চাকুরী বদলালে কিছু বেতন বেশি পাবে এই প্রত্যাশা নিয়েই তা বদলায়। বাস্তবে তাই হয়। নবাগতকে কাজ নিয়োগ দেয়া বেশি কঠিন। আমরা এখানে তা করি। আমাদের এখানে কিছুদিন কাজ করে অনেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা কিংবা উচ্চতর গবেষণা করার জন্য দেশের বাইরে গেছে। এতে আমাদের সুনাম বাড়ে, কমে না। তাই এই কঠিন কাজটি আমরা করি। অনেক সময় দেখা যায় চাকুরী স্থায়ী হবার আগেই ছেড়ে দেয়। অনেকেই ব্যাংকে চলে যায়।অন্য প্রতিষ্ঠানে কাজ করে আবার আমাদের এখানে আসে কিংবা আসতে চায়। তবে এই কথা সত্য গার্মেন্টস শিল্পে মেধাবীরা থাকতে চায় না। আমার ব্যক্তিগত পর্যবেক্ষণ হচ্ছেঃ

১। গার্মেন্টস শিল্প সম্পর্কে পরিষ্কার ধারনা না থাকা।
২। অতি উচ্চাভিলাষ
৩। গার্মেন্টস শিল্পের পরিবেশের সাথে নিজেকে মানাতে না পরা
৪। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গার্মেন্টস সম্পর্কে একটা নেগেটিভ ধারণা
৫। বাড়তি শ্রম দিতে না পারা কিংবা চ্যালেঞ্জ নিতে না পারার মানসিকতা।

আরো অনেক সমস্যা আছে। অনেক মেধাবী ছেলে অনেক সময় আসে। অনেক কাজের সুযোগ আছে গার্মেন্টস শিল্পে। দরকার গার্মেন্টস শিল্প সম্পর্কে পজিটিভ ধারণা থাকা বা অর্জন করা। মাঝে মাঝে এমন সব অভিজ্ঞতা হয় যাকে সবাইকে লজ্জায় ফেলে দেয়। কয়েকদিন আগে রাষ্ট্র বিজ্ঞানে এম এ পাস করা একজন আমাদের এখানে চাকুরীর জন্য আসে। ভাইভা নেয়ার সময় তাকে প্রশ্ন করা হয় রাষ্ট্র কাকে বলে? আপনার নিজের ভাষায় বলেন। সে উত্তর দেবার আগে পানি চায়। তাকে পানি দেয়া হয়। এক গ্লাস পানি পান করে উত্তর দিতে আরম্ভ করে। তার প্রস্তুতি দেখে আমরা প্রাথমিকভাবে ভরকে যাই। না জানি কি কঠিন প্রশ্ন করা হয়েছে। কাজেই তাকে অনেক চিন্তা ভাবনাইদানিং সব সাবজেক্ট এ এম এ পাস, এম বি এ পাস বাড়ছে। চাকরি হচ্ছে না। অথচ কারিগরি বিষয়ে লোক দরকার সেখানে পাস করা লোক নাই। ইদানিং কিছু কাগজ নিয়ে হাজির হয় কিন্তু ভেতরে গোলমাল আছে। কাগজের কোণায় সিল নিয়ে হাজির। সেখানে অনেক বড় বড় নেতাদের সিল মারা থাকে। বিশেষ সুপারিশকৃত। উন্নয়ন চিন্তাবিদ যারা আছেন তাদের কাছে মিনতি আমাদের শিক্ষার দুর্বলতা চিহ্নিত করে তা দূর করুন। কাগজী শিক্ষিত লোকের সংখ্যা কমাতে হবে।কর্মির হাত শক্ত করতে হবে। তবেই আমাদের উন্নয়ন টেকসই হবে। পয়সা দিয়ে,প্রশ্ন কিনে কেউ যাতে বাড়তি সুবিধা না পায় তার দিকে নজর বাড়ান।প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজের প্রতি নজরধারি বাড়াতে হবে। এমন কি সরাকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মান কমে যাচ্ছে।করে উত্তর দিতে হবে।
উত্তরঃ রাষ্ট্র মানে রাষ্ট্র মানে! মানে! হল
বলেন ভাই রাষ্ট্র কি বলেন?
আবার উত্তরঃ রাষ্ট্র মানে ! মানে ! মানে ! বলেই মাথা ঘুরিয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। পরে তাকে মাথায় পানি ঢেলে বিশ্রাম নিতে দেয়া হয়। কিছুক্ষণ পর হুশ আসে। আমার অনেক বন্ধু আছেন যারা রাষ্ট্র বিজ্ঞানে পড়াশোনা করেছেন। অনেক ভাল ভাল পদে কাজ করেন। সরকারের অনেক উচুপদে আছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতা করছেন। যাদের কে চিনি জানি পরিচিত। তারা অনেকেই অনেক প্রজ্ঞাবান,মেধাবী। এই অভিজ্ঞতা শ্রেফ ব্যতিক্রম বলেই আমি বিশ্বাস করি। আগামীকাল অনেক মেধাবী মেধাবীর সাথে দেখা হবে। থাকবে নতুন কিছু অভিজ্ঞতা।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা এপ্রিল, ২০১৮ দুপুর ১:৩৭
৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×