প্রেসিডেন্টের সাথে রংপুরে খাল কাটার প্রোগ্রামে গিয়েছিলাম। ঠিক আড়াইটা পর্যন্ত খাল কাটার কাজ চললো, ফলে প্রচন্ড- ক্ষুধা পেয়েছিল। রংপুর সুগার মিলের গেস্ট হাউজে ছিল প্রেসিডেন্ট ও সংগীদের খাবারের আয়োজন।
ডাইনিং এ পোলাও, মুরগি, রেজালা, জর্দা, টিকিয়া, কাবার সহ ৬/৭ রকম খুব ব্যয়বহুল খাবার সামনে দেয়া হয়েছে। ডাইনিং এ ঢুকার সময় প্রেসিডেন্ট সবে মাত্র খাবার টেবিলের আয়োজন দেখে
ভ্রুকুটি কেটে তাকিয়েছেন এমন সময় বিয়ের বাড়ির মত মাথাতে পাগড়ি ও শেরওয়ানি পরা এক বেয়ারা মুরগির রোস্ট নিয়ে ডাইনিং এ এলো সার্ভ করার জন্য।
এটা দেখে প্রেসিডেন্ট তেলে বেগুনে ক্ষেপে উঠে এডিসি সাহেবকে জিজ্ঞেস করলেনঃ
এত খাবারের আয়োজন কেন করা হয়েছে, আগে খাবারের মেনু পাঠানো হয়নি কেন?
এডিসি সাহেব কিছু না বুঝেই বিগলিত হয়ে বললেন, মিলের জেনারেল ম্যানেজার সাহেব এসব ব্যবস্থা করেছেন স্যার।
Call GM Right now প্রেসিডেন্ট খেঁকিয়ে উঠলেন। GM ডাইনিং হলেই ছিল, পড়িমরি করে এবার সামনে আসলেন।
জিয়া, GM কে জিজ্ঞাস করলেন গতবার মিলের কত টাকা যেন লাভ হয়ে ছিল ম্যানেজার সাহেব?
স্যার গতবার মিলের দেড় কোটি টাকা লোকসান হয়েছে। আমতা আমতা করে জিএমের উত্তর।
প্রেসিডেন্ট এসব দামি খাবারগুলো আঙুল তুলে দেখিয়ে বললেনঃ
এত খাবার তৈরি করা হয়েছে কার টাকায়?
আপনার বাবার টাকায় নাকি?
একথা বলে না খেয়েই প্রেসিডেন্ট সাহেব ডাইনিং থেকে বাহির হয়ে হেলিকাপ্টারে চলে আসলেন। কারো আর খাওয়া হলো না। জিয়াকে আবার খাবার জন্য অনুরোধ করা সাহসও ছিল না কারো। সারা ডাইনিং-হল নিশ্চুপ। এডিসি সাহেব অবশ্য ক্ষানিক পরেই পরিস্থিতির ভয়াবহতা টের পেলেন।
ঢাকা পৌঁছে হেলিকপ্টার থেকে নামার সময় আমার কাঁধে চাপড় দিয়ে প্রেসিডেন্ট বললেন, সরি মাঈদুল আজকে তোমার খাওয়া হলো না।
আমি বললাম, স্যার আপনি খেলেন না। আমি আর কি খাব।
কাহিনী সুত্র
আত্বসত্তার রাজনীতি