somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

Azumanga Daioh! - হাইস্কুল কমেডি

২৮ শে এপ্রিল, ২০১২ রাত ১:২১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


এনিমে নিয়ে লেখার ইচ্ছা ছিল অনেক দিন থেকেই। কিন্তু লেখি লেখি করে হচ্ছিল না। আজকে লেখতে বসে পড়লাম। দেখা যাক।
যে এনিমেটা নিয়ে লেখার ইচ্ছা সেটার নাম Azumanga Daioh, কথাটির ইংরেজী অনুবাদ দাঁড়ায় Great King Aumanga. এনিমেটা এডাপ্ট করা হয়েছে একই নামের জাপানীজ কমিক বুক থেকে। কমিক বুক এর রাইটার Kiyohiko Azuma (কিওহিকো আজুমা)।


নামকরন
নামকরন কীভাবে হল সেটা একটু বলে নেয়া যাক। রাইটার এর নামের Azuma আর জাপানিজ কমিক বুক এর জেনেরিক নাম Mangaকে একত্র করে লেখক নিজেই কয়েন করেন Azumanga শব্দটি। আর Daioh নেয়া হয়েছে যে ম্যাগাজিনে এই মাঙ্গাটা সর্বপ্রথম সিরিয়ালাইজ করা হয় সেটা থেকে। ম্যাগাজিনটার নাম Dengeki Daioh। আর এনিমে এর একপর্বে গ্রেট কিং বুঝাতে Daioh শব্দটি ব্যাবহার করা হয়েছে। সেখান থেকে এই শব্দটির ইংরেজী অনুবাদ করা হয়েছে গ্রেট কিং। Azumanga Daioh এই আর্টিস্ট এর সবচেয়ে বিখ্যাত মাঙ্গা। এবং এই মাঙ্গা থেকেই এই লেখকের যেকোন মাঙ্গাকে Azumanga বলা হয়। আর যখন Azumanga Daioh উচ্চারন করা হয় তখন এই মাঙ্গাটিকে বুঝানো হয়। যাই হোক, আমার আসল টপিক হল এনিমেটা। সেটাতে ফেরত যাচ্ছি।

কাহিনী সংক্ষেপ
কাহিণী গড়ে উঠেছে কয়েকজন হাইস্কুল পড়ুয়া মেয়ে ও তাদের টিচারদের নিয়ে। শুরু হয় এভাবে, টিচার ইউকারি টার্মের প্রথমদিন ক্লাস নিতে যাওয়ার সময় লেট হয়ে যাচ্ছেন। এমন সময় তার সাইকেল এর চেইন পড়ে যায়। অন্যদিক এ আরেক স্টুডেন্ট তাকে দেখে ভাবে, সে যদি টিচার এর সাথে লেট করে তাহলে তার কোন সমস্যা হবে না। তাই টিচার কে চেইন ঠিক করে দেয়ার জন্য এগিয়ে আসে। সে যখন সাইকেল এর চেইন ঠিক করছিল, ততক্ষনে ইউকারি স্টুডেন্টের সাইকেল নিয়ে স্কুলের দিক এ রওনা হয়ে গিয়েছে। :)
এরকমই ছোট ছোট ক্লিপ দিয়ে গড়ে উঠেছে ২৪পর্বের এ কমেডি সিরিজটি। প্রতিটি ক্লিপের দৈর্ঘ্য ৫-৭ মিনিট। একটি পর্বে ৩-৫টি ক্লিপ থাকে। আচ্ছা এখন ক্যারেক্টারগুলোর বর্ননা দেয়া যাক কিছু। সেখানে কিছু ঘটনা যোগ করলে স্টোরি সম্পর্কে আরো জানা হবেঃ

Chiyo Mihama (চিও মিহামা)

একজন চাইল্ড প্রডিজি। যে ৫ম গ্রেড থেকে সরাসরি ১০ম গ্রেড এ প্রমোশন পায়। সব কাজেই তার সমান ইফিশিয়েন্ট আর কেউ নেই। ক্লাসের সবচেয়ে মেধাবী হিসেবে দ্রুতই ক্লাস রিপ্রেজেন্টেটিভ হিসেবে মনোনীত হয়। এক ক্লাসে সে স্যারের হোমওয়ার্ক না করায় সে প্রচন্ড ভয় পেয়ে যায়, তখন সে লখ্য করে ক্লাসের অন্য কেুও হোমওয়ার্ক করেনি কিন্তু কারো কোন চিন্তা নেই :P ; অন্যদিকে সে চিন্তায় অস্থির।

Tomo Takino (টোমো টাকিনো)

ক্লাসের হাইপারএক্টিভ আর এনার্জেটিক ক্যারেক্টার। পড়া ফাঁকি, ক্লাস ফাঁকি সবই তার মাধ্যমে হয়; যদিও সে স্বপ্ন দেখে যে সে চিও কে টপকিয়ে ফার্স্ট হবে আর সাকাকির (এর সম্পর্কে পড়ে আসা হবে) চেয়ে ভালো এথল্যাট হবে। তার সম্পর্কে একটা ঘটনা না বললেই নয়। একবার মিডটার্ম এক্সাম এর আগে সে কিছুই পড়েনি। পরীক্ষার দুইদিন আগে যখন দেখল পাহাড় পরিমাণ পড়া জমে গিয়েছে, তখন সে "Tomo's picks for exam" নাম দিয়ে বই এর যেগুলো ইম্পর্ট্যান্ট মনে হয় সেগুলো দাগিয়ে রাখল এবং পরীক্ষার আগের দিন তার কোন চিন্তা নাই বলে পুরো ক্লাসে চিল্লিয়ে তার পিকস থেকে একটা কোয়েশ্চেন বলল যেটা কালকে অবশ্যই আসবে। এরপর কি হল সেটা আর বলব না। :)

Koyomi "Yomi" Mizuhara (কোয়োমি "ইয়োমি" মিজুহারা)

পড়াশোনা নিয়ে অত্যন্ত সিরিয়াস এক ক্যার‍্যাক্টার। টোমো এর ছোটবেলার বন্ধু। কিন্তু দুইজনের ক্যারাক্টারিস্টিকস পুরাই আলাদা। সে চিন্তা করে পায় না, কীভাবে টোম তার সাথে একই হাইস্কুল এ চান্স পেল (জাপানে সম্ভবত হাইস্কুল ভর্তি পরীক্ষা আছে)। আবার এটা নিয়ে টোমো খুবই গর্ব করে। পুরো এনিমে জুড়ে টোমোকে নানা ধরনের উপদেশ দেয়াই ছিল এর প্রধান কাজ।

Sakaki (সাকাকি)

উচ্চতায় ক্লাসের সবচেয়ে বড়, তাই এথল্যাট হিসেবে স্কুলে খুব সুনাম। বিড়াল, স্টাফড এনিমেল খুব পছন্দ করে, কিন্তু তার মত কোন মেয়েকে এসব পছন্দ করতে দেখেনি, তাই সবসময়ই দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভুগে। ক্লাসে সবসময়ই কম কথা বলে। আর রাস্তার বিড়ালটাকে আদর করতে গেলেই বিড়াল্টি তার হাতে কামড় দেয়, তাই অনেকেই মনে করে সে কোন এক জায়গা থেকে মারামারি করে এসেছে।

Ayumu "Osaka" Kasuga (আইয়ুমু "ওসাকা" কাসুগা)

বলা হয়ে থাকে ক্লাসের সবচেয়ে ডাম্ব ক্যার‍্যাক্টার। ক্লাস করতে করতে ঘুমিয়া পড়া তার নিত্যদিনের স্বভাব। সবাই বলে সে "স্পেসি"-বা যে নিজের মধ্যে ডুবে যায়। কিন্তু ধাঁধা সমাধান করতে সবচেয়ে ফাস্ট। এবং অনেক উদ্ভট চিন্তা করতে তার জুড়ি নেই। এই এনিমেতে আমার ফেবারিট ক্যারাক্টার। এর নাম শুধু আইয়ুমু কাসুগা। কিন্তু ওসাকা থেকে মাইগ্রেটেড বলে ক্লাসের সবাই তাকে ওসাকা ডাকে। সে ক্লাসে যুক্ত হয় চিও এর কয়েকদিন পরে। আর সে আসার পরেই চিও স্পোর্টস এ শেষ এর দিক থেকে দ্বিতীয় হওয়া শুরু করল। :P
এর সম্পর্কে একটি ঘটনা বলা যায়, তার অনেক দিনের শখ যে সে ফ্রাইং প্যান এ চামচ দিয়ে বাড়ি দিয়ে সবাইকে ঘুম থেকে জাগিয়ে তুলবে, কিন্তু সে সবার শেষে ঘুম থেকে উঠে বলে তার এ শখটা কখনো পূরণ হয় না। একদিন, এক ট্রিপে যাওয়ার পর সে দেখতে পায়, সে জাগার পরও তাদের টিচার ইউকারি এখনো ঘুমে। তখনই সে তার শখটা পূরণ করার জন্য রান্নাঘরে যায়। কিন্তু ঘুমের ঘোরে ফ্রাইং প্যান এর বদলে একটা ছুড়ি নিয়ে আসে। এরপরের ঘটনা আর বললাম না। :)

Kagura (কাগুরা)

কাগুরা এই গ্রুপের সাথে যুক্ত হয় দ্বিতীয়বর্ষে। সে সুইমিং ক্লাব এর সদস্য। আর দ্বিতীয় বর্ষে স্কুল স্পোর্টস ফেস্টিভাল জেতার স্ট্র্যাটেজি হিসাবে ইউকারি তাকে তার ক্লাসে নিয়ে আসে। ক্যার‍্যাক্টারিস্টিকস এর দিক দিয়ে সে টোমো এর মত কিছুটা। টোমো, ওসাকা আর কাগুরা এই তিনজনকে ক্লাসে একসাথে ডাকা হয় "দ্যা নাকলহেডস"। :D

Kaorin (কাওরিন)

সাকাকিকে অত্যন্ত পছন্দ করে। এস্ট্রোনমি ক্লাবের সদস্য বলে সে কোন ছুটিতেই গ্রুপের সাথে বেড়াতে বের হতে পারে না। এজন্য তার দুঃখের অন্ত নেই। এনিমেতে যে কয়েকটি সিনে উচ্চস্বরে হেসে উঠবেন, তার অনেকগুলোতেই কাওরিন এর উপস্থিতি আছে।

এবার আসা যাক শিক্ষকদের কথায়। তিনজনকে নিয়মিত দেখা যায়ঃ
Yukari Tanizaki (ইউকারি তানিজাকি)

যে ক্লাস নিয়ে আমাদের কাহিনী সেই ক্লাসের ক্লাস টিচার, স্কুলের ইংরেজী টিচার হট হেডেড। কালচারাল ফেস্টিভাল এর সময় যখন শুধু হন্টেড হাউজ বা ক্যাফে এর কথা এসেছিল তখন সে স্টুডেন্টদের তিরস্কার করে যে, তাদের মাথায় কোন ক্রিয়েটিভ আইডিয়া নেই। কিন্তু একটু পরেই সে যখন দেখে যে নিজেও আইডিয়া দিতে পারছে না তখন বলে উঠে, হন্টেড হাউজ আর ক্যাফে খুবই সুন্দর আইডিয়া। কথায় কথায় বাজি ধরা তার স্বভাব, আর হেরে গেলে তাকে পাওয়াই যায় না।

Minamo "Nyamo" Kurosawa (মিনামো "নিয়ামো" কুরোসাওয়া)

মিনামো কুরোসাওয়া আর ইউকারি একই স্কুল থেকে বের হয়েছে। কিন্তু মিনামো P.E. টিচার আর এই কারনে ইংরেজি টিচার ইউকারি এর ভাব এর কমতি থাকে না। অন্যদিকে মিনামো এর দুঃখ হল তার কোন বয়ফ্রেন্ড নেই।

Mr. Kimura (মিস্টার কিমুরা)

এটা এনিমে এর একমাত্র নিয়মিত পুরুষ ক্যার‍্যাক্টার, আর এ হল পরিমল। ক্লাসিক্যাল জাপানীজ পড়ান। কিন্তু এনিমেতে এর উপস্থিতি থাকে সেমি-পার্ভার্টেড ডায়ালগ দিতে। যদিও বাসায় একজন বউ আছে, সে কাওরিন এর প্রেমে পাগল, এবং দ্বিতীয় বর্ষে সে কাওরিনকে নিজের ক্লাসে নিয়ে নেয়। আর কাওরিন এর কাছে এই লোক একটা জমের নাম।

এই তো গেল ক্যার‍্যাক্টারগুলোর কথা।
এই সিরিজটার ক্ষেত্রে যেটা সবচেয়ে ভালো লেগেছে, সেটা হল, সিরিজটা শেষ করার এক/দুই পর আমার নিজের হাইস্কুল/কলেজ লাইফের এর কথা অনেক মনে পড়ে গিয়েছে। যদিও সিরিজটা দেখার সময় সেটা কখনই মনে হয় নি।

সিরিজটার কিছু ভিডিও এখানে যোগ করে দিলাম।





এটার ডাউনলোড লিঙ্ক দিলাম। টরেন্ট। :)
Torrent


-------..-------

সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই নভেম্বর, ২০১২ রাত ১:৩০
২৩টি মন্তব্য ২৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেঘ ভাসে - বৃষ্টি নামে

লিখেছেন লাইলী আরজুমান খানম লায়লা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩১

সেই ছোট বেলার কথা। চৈত্রের দাবানলে আমাদের বিরাট পুকুর প্রায় শুকিয়ে যায় যায় অবস্থা। আশেপাশের জমিজমা শুকিয়ে ফেটে চৌচির। গরমে আমাদের শীতল কুয়া হঠাৎই অশীতল হয়ে উঠলো। আম, জাম, কাঁঠাল,... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×