তবে এসবের অর্থ এই নয় যে কেউ
আত্মহত্যা করলে তার জন্য ক্ষমা ও
রহমতের দু‘আ করা যাবে না যেমনটি
আমাদের সমাজের অনেকে মনে করেন।
এসব বরং অধিক পাপী হওয়ার দরুণ
ওই ব্যক্তির জন্য আরো বেশি বেশি দু‘আ
করা উচিত। আত্মহত্যা কোনো কুফুরী
কাজনয়, যার মাধ্যমে মানুষ ঈমান থেকে
খারিজ হয়ে যায়। দু‘আ করা যাবে না
কেবল ওই ব্যক্তির জন্য যে ঈমানহীন
অবস্থায় মারা যায়।
এদের সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿ﺳَﻮَﺍٓﺀٌ ﻋَﻠَﻴۡﻬِﻢۡ ﺃَﺳۡﺘَﻐۡﻔَﺮۡﺕَ ﻟَﻬُﻢۡ ﺃَﻡۡ ﻟَﻢۡ ﺗَﺴۡﺘَﻐۡﻔِﺮۡ ﻟَﻬُﻢۡ ﻟَﻦ
ﻳَﻐۡﻔِﺮَ ﭐﻟﻠَّﻪُ ﻟَﻬُﻢۡۚ ﺇِﻥَّ ﭐﻟﻠَّﻪَ ﻟَﺎ ﻳَﻬۡﺪِﻱ ﭐﻟۡﻘَﻮۡﻡَ ﭐﻟۡﻔَٰﺴِﻘِﻴﻦَ ٦
﴾ [ ﺍﻟﻤﻨﺎﻓﻘﻮﻥ: ٦ ]
‘তুমি তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা কর
অথবা না কর, উভয়টি তাদের ক্ষেত্রে
সমান। বআল্লাহ তাদেরকে কখনো ক্ষমা
করবেন না। অবশ্যই আল্লাহ পাপাচারী
সম্প্রদায়কে হেদায়াত দেন না।’
{সূরা আল-মুনাফিকূন, আয়াত : ০৬}
অন্য আয়াতে তিনি বলেন,
﴿ﭐﺳۡﺘَﻐۡﻔِﺮۡ ﻟَﻬُﻢۡ ﺃَﻭۡ ﻟَﺎ ﺗَﺴۡﺘَﻐۡﻔِﺮۡ ﻟَﻬُﻢۡ ﺇِﻥ ﺗَﺴۡﺘَﻐۡﻔِﺮۡ ﻟَﻬُﻢۡ
ﺳَﺒۡﻌِﻴﻦَ ﻣَﺮَّﺓٗ ﻓَﻠَﻦ ﻳَﻐۡﻔِﺮَ ﭐﻟﻠَّﻪُ ﻟَﻬُﻢۡۚ ﺫَٰﻟِﻚَ ﺑِﺄَﻧَّﻬُﻢۡ ﻛَﻔَﺮُﻭﺍْ
ﺑِﭑﻟﻠَّﻪِ ﻭَﺭَﺳُﻮﻟِﻪِۦۗ ﻭَﭐﻟﻠَّﻪُ ﻟَﺎ ﻳَﻬۡﺪِﻱ ﭐﻟۡﻘَﻮۡﻡَ ﭐﻟۡﻔَٰﺴِﻘِﻴﻦَ
٨٠ ﴾ [ﺍﻟﺘﻮﺑﺔ 80 : ]
‘তুমি তাদের জন্য ক্ষমা চাও, অথবা তাদের
জন্য ক্ষমা না চাও। যদি তুমি তাদের জন্য
সত্তর বার ক্ষমা চাও, তবুও আল্লাহ তাদেরকে
কখনো ক্ষমা করবেন না। কারণ তারা
আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের সাথে কুফরী করেছে,
আর আল্লাহ ফাসিক লোকদেরকে হিদায়াত
দেন না।’
{সূরা আত-তাওবা, আয়াত : ১১৩-১১৪}
একই সূরায় অপর এক আয়াতে আল্লাহ বলেন,
﴿ﻣَﺎ ﻛَﺎﻥَ ﻟِﻠﻨَّﺒِﻲِّ ﻭَﭐﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺀَﺍﻣَﻨُﻮٓﺍْ ﺃَﻥ ﻳَﺴۡﺘَﻐۡﻔِﺮُﻭﺍْ ﻟِﻠۡﻤُﺸۡﺮِﻛِﻴﻦَ
ﻭَﻟَﻮۡ ﻛَﺎﻧُﻮٓﺍْ ﺃُﻭْﻟِﻲ ﻗُﺮۡﺑَﻰٰ ﻣِﻦۢ ﺑَﻌۡﺪِ ﻣَﺎ ﺗَﺒَﻴَّﻦَ ﻟَﻬُﻢۡ ﺃَﻧَّﻬُﻢۡ
ﺃَﺻۡﺤَٰﺐُ ﭐﻟۡﺠَﺤِﻴﻢِ ١١٣ ﻭَﻣَﺎ ﻛَﺎﻥَ ﭐﺳۡﺘِﻐۡﻔَﺎﺭُ ﺇِﺑۡﺮَٰﻫِﻴﻢَ ﻟِﺄَﺑِﻴﻪِ ﺇِﻟَّﺎ
ﻋَﻦ ﻣَّﻮۡﻋِﺪَﺓٖ ﻭَﻋَﺪَﻫَﺎٓ ﺇِﻳَّﺎﻩُ ﻓَﻠَﻤَّﺎ ﺗَﺒَﻴَّﻦَ ﻟَﻪُۥٓ ﺃَﻧَّﻪُۥ ﻋَﺪُﻭّٞ ﻟِّﻠَّﻪِ ﺗَﺒَﺮَّﺃَ
ﻣِﻨۡﻪُۚ ﺇِﻥَّ ﺇِﺑۡﺮَٰﻫِﻴﻢَ ﻟَﺄَﻭَّٰﻩٌ ﺣَﻠِﻴﻢٞ ١١٤ ﴾ [ﺍﻟﺘﻮﺑﺔ 114-113 :]
‘নবী ও মুমিনদের জন্য উচিত নয় যে, তারা
মুশরিকদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করবে। যদিও
তারা আত্মীয় হয়। তাদের নিকট এটা
স্পষ্ট হয়ে যাওয়ার পর যে, নিশ্চয় তারা
প্রজ্বলিত আগুনের অধিবাসী। নিজ পিতার
জন্য ইবরাহীমের ক্ষমা প্রার্থনা তো ছিল
একটি ওয়াদার কারণে, যে ওয়াদা সে তাকে
দিয়েছিল। অতঃপর যখন তার নিকট স্পষ্ট
হয়ে গেল যে, নিশ্চয় সে আল্লাহর শত্রু, সে
তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করল। নিশ্চয় ইবরাহীম
ছিল অধিক প্রার্থনাকারী ও সহনশীল।’
{সূরা আত-তাওবা, আয়াত : ১১৩-১১৪}
অতএব আমাদের উচিত আত্মহত্যাকারীর
জন্য বরং আরও বেশি বেশি দু‘আ করা। তার
মাগফিরাত ও ক্ষমার জন্য এবং তার ওপর
রহমত ও দয়ার জন্য আল্লাহর কাছে অধিক
পরিমাণে প্রার্থনা করা। হতে পারে আল্লাহ
তা‘আলা এসব দু‘আ কবুল করে তাকে মাফ
করে দেবেন।
সর্বপ্রথম প্রকাশিত আমার ব্লগে http://ibnezahan.mywapblog.com