প্রথম যেই মেয়েটিকে ভালোবাসার কথা বলেছিলাম, তার Reply টা অসাধারণ ছিল! "খাইয়া-দাইয়া আর কাজ পাও না তুমি? এইসব ফালতু ফাইজলামি আমার সাথে করবা না। রাস্তা মাপো গা, যাও!" 'রাস্তা মাপো' Phrase টার সাথে আগে পরিচয় থাকলেও তার Practical প্রয়োগ দেখা এই প্রথম। যেই দেশে ভিক্ষুকদের কাছেও মাফ চাওয়া হয়, সেই দেশে 'রাস্তা মাপো' বেশ বিপদজনক Level এর কথা!
রাস্তায় অযথা ঘোরাঘুরি ছাড়া আমার আর এখন কাজ নাই কোনো। মেয়েটাকে আবার কোনোদিন সামনে পেলে তাকে বলা যেত, "দেখ, আমি এখন রাস্তা মাপি!"
বাসা থেকে মুদি দোকান, দূরত্ব ৫৫ পা। একটা চুইংগাম খাওয়া দরকার। দোকানে যেয়ে চুইংগাম চাইলাম। চুইংগাম নিয়ে হাঁটা ধরতেই পেছন থেকে ডাক আসল :
-অই ছেলে, টাকা কই?
-টাকা তো নাই চাচা, মানিব্যাগ বাসায়। কালকে দিয়া যাব।
-টাকা নাই তো চুইংগামও নেয়া যাইব না, কালকে নিও।
অগ্যতা মিষ্টিমুখ করা ছাড়াই হাঁটা ধরলাম।
অযথা হাঁটাহাঁটি করা মানুষগুলোর দিকে সবাই তাকায় থাকে। উদ্দেশ্যহীন মানুষগুলোর এইটা একটা ঝামেলা! তাদেরকে দেখলেই বোঝা যায় তাদের এই হাঁটাহাঁটির কোনো গন্তব্য নাই। তার উপরে শার্টটাও নতুন!
প্রথমেই যে কথাটা মাথায় আসবে, তা হল, "পোলা শিওর ছ্যাঁক খাইছে!" কেউ কেউ ভাববে "ভাব লয়" অথবা "হিমু সাজতে চায়!"
আমাকে দেখলেই সবাই ইদানিং "হিমু-হিমু" করে! আজ প্রোফাইল পিকচারেও একজনের কমেন্ট, আমি নাকি হিমু হইতে চাই! আমার সাথে হিমুর আদৌ কোনো মিল পাওয়া যায় কিনা, কে জানে? আমি তো দুনিয়ার অমিলই খুঁজে পাই!
হিমু হলুদ পাঞ্জাবি পড়ত। আমার হলুদ পাঞ্জাবি দূরে থাক, ব্রাজিলের জার্সিটাও হলুদ রঙে নাই। পুলিশের সাথে ফাইজলামিটা তও বাদই যাক! দাঁড়ি রাখার শখের কারণে হরতালে পুলিশ দেখলেই আমার গলা শুকায় যেত! সেই পুলিশের সাথে আরর যাই করি, মশকরা করতে পারব না!
তবে অযথা হাঁটাহাঁটিটা হয়ত আসলেই মানায় না। বিশেষ করে দৌড়াতে থাকা রাস্তার পাশে হাঁটাটা হয়ত একটু বেশিই বেমানান। তার উপর সেই হাঁটার যদি কোনো গন্তব্য না থাকে।
ধুর, যত্তসব ফালতু কথা-বার্তা! একটা চুইংগাম খাওয়া দরকার।
ইদানিং মাথাটা খুব বেশি ব্যাথা করে। না, মাথাব্যথা ভালো হওয়ার সাথে চুইংগাম চিবানোরর কোনো সম্পর্ক নাই। এমনেই খাওয়া দরকার। সকালে দেখেছি মোবাইলে ৬ টাকা আছে। এখনও তাই থাকার কথা। ৬ টাকায় কি কথা বলা যাবে? বলবই বা কার সাথে?
মুদি দোকানের চাচার দিকে ফোনটা এগিয়ে দিলাম,
-চাচা, এইটা দিয়া দুই মিনিট কথা বলেন। আমি একটা চুইংগাম খাই!
চাচা হাসে। হাতে একটা চুইংগাম ধরায় দিয়ে বলে,
-দিয়া যাইও টাকা, কালকে।
আমার হঠাৎ করে হোসেন মিয়ার কথা মনে পড়ে গেল! মুখে চুইংগাম পুরে হাঁটা দিলাম বাসার উদ্দেশ্যে।
বাসা থেকে মুদি দোকান, দূরত্ব ৫৫ পা..........