তখন জীবনের প্রথম পাঠ চলছে। স্বরবর্ণের শিক্ষা শেষে শুরু হয়েছে ব্যঞ্জনবর্ণে প্রবেশ। প্রথম "ক" দিয়ে শব্দ তৈরি করা। "কলা", "কলম", "কমলা"-র সাথে শিখেছিলাম আরও একটা শব্দ। শিখেছিলাম, "কবিতা"!
তারপর থেকে কবিতা জীবনের একটা অংশই হয়ে গেছে। রবীন্দ্রনাথ, নজরুল থেকে শামসুর রাহমান, বা জয় গোস্বামী। মাঝখানে সুকান্ত, সুকুমার বা রুদ্র, আরো কত দ্বীপে যে ভিড়িয়েছি ভালোবাসার তরী, হিসেব দিতে পারব না!
আজও সুযোগ পেলে কবিতায় পড়ে থাকি। কবিতায় শ্বাস নেই। নয়ত এই ঘিঞ্জি শহরের শহুরেপনা আর স্বার্থপরতায় ডুবে আমার দম বন্ধ হয়ে আসে!
আমি চলে যেতে চাই!
যতদূর যায় দুচোখ, আমি পালিয়ে যেতে চাই।
এই শহরে চোখটাও যায় না বেশি দূর। একটু দূরের বড় দালানটায় বাধা পেয়ে যায়। তাড়াতাড়ি দালানটার পাশ কাটিয়ে আমি আরেকটু দূর দেখার চেষ্টা করি।
তারপর আরেকটু, তারপর আরেকটু, তারপর আরও একটু!
তারপর হঠাৎ দেখি, চারপাশ সব অচেনা ঠেকছে। কোন পথে এসেছিলাম, মনে পড়ছে না। এটা প্রায়ই হয়। রিকশাওয়ালাদেরও মওকা! ত্রিশ টাকার রাস্তা তারা চল্লিশ টাকা বানিয়ে আনে!
ফেরার পথে যখন পথঘাট আবার পরিচিত হতে শুরু করে, মনটা বিষিয়ে ওঠে আমার।
ফিরে আসছি আবার।
ফিরেই আসতে হয়।
আজও সময় পেলে কবিতা নিয়ে বসি।
কবিতায় পড়ে থাকি, কবিতায় শ্বাস নেই।
এই শহরে শ্বাস নিলে বুক ভর্তি হয় ধুলায়, ধোঁয়ায়, কংক্রিটে, সিসায়।
আমার দম বন্ধ হয়ে আসে............