আজ সারাদিনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ খবর ছিলো নাইক্ষ্যংছড়ি সংলগ্ন বাংলাদেশ-মায়ানমার সীমান্তে চলমান উত্তেজনা। আসুন জানি পূরো ঘটনা।
গত কিছুদিন আগে রোহিংগা সলিডারিটি অর্গানাইজেশন (আরএসও) রাখাইন প্রদেশে মায়ানমার সেনাবাহিনীর (স্থানীয়ভাবে Tatmadaw নামে পরিচিত) উপর অতর্কিত হামলা চালায় এবং এই হামলায় মায়ানমার সেনাবাহিনীর ৪ সদস্য নিহত হয়। এরপর মায়ানমার কর্তৃপক্ষ নিজেদের অক্ষমতাকে অন্যদিকে নিতে অভিযোগ করে আরএসও বাংলাদেশী ভূ-খন্ড ব্যাবহার করে এই হামলা চালিয়েছে। এরপর তারা সীমান্তে শক্তিবৃদ্ধি শুরু করে। গত ২৯শে জুন তারিখে মায়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি) বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) একটি সীমান্ত টহল দলের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। হামলার পর নায়েক মিজান নামক একজন বিজিবি সদস্য নিখোঁজ হয়। এরফলে উভয় পক্ষ সীমান্তে শক্তিবৃদ্ধি করে। ৩০শে জুন ২০১৪ তারিখে খবর পাওয়া যায় যে নায়েক মিজান নিহত হয়েছে এবং তার মৃতদেহ বিজিপি'র কাছে আছে। পরবর্তীতে উভয় পক্ষের মধ্যে যোগাযোগে সিদ্ধান্ত হয় ৩০শে জুন তারিখে উভয় পক্ষের মধ্যে পতাকা বৈঠক হবে এবং নায়েক মিজানের মৃতদেহ বিজিবি'র কাছে হস্তান্তর করবে। কথা অনুযায়ী বিজিবি'র একটি টহল দল ৫০ নং সীমান্ত পিলারের কাছে গেলে বিজিপি বিজিবি'র টহল দলকে ৫২ নং সীমান্ত পিলারের দিকে যেতে বলে। সে অনুযায়ী বিজিবি'র টহল দল ৫২ নং সীমান্ত পিলারের কাছে গেলে বিজিপি ও মায়ানমার সেনাবাহিনী বিজিবি'র টহল দলটির উপর এ্যাম্বুশ করে। আত্মরক্ষার্থে বিজিবিও পাল্টা গুলিবর্ষন শুরু করে। দুপুর আড়াইটা থেকে বিকাল ৫টা ১০ পর্যন্ত গোলাগুলি চলে। এরপর উভয় পক্ষ সীমান্তে আরও শক্তি বৃদ্ধি করে। মায়ানমার আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি বৃদ্ধাংগুলি প্রদর্শন করে সীমান্তে সেনা মোতায়েন করেছে। পাল্টা জবাবে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষও সীমান্তের কাছাকাছি আন্তর্জাতিক আইন ভংগ না করে স্বল্প পরিসরে সেনা মোতায়েন করেছে। তবে আগামীকাল নাগাদ একটি পদাতিক ব্রিগেডকে মুভ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এদিকে মায়ানমার সেনাবাহিনী বেশ কিছু আর্টিলারী গান সীমান্তের দিকে মুভ করানো শুরু করেছে। আগামী কাল নাগাদ ২ পক্ষই ভালো সামরিক শক্তি নিয়ে মুখোমুখি অবস্থান নেওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
আমরা যখন ব্লগ লিখছি, টিভি দেখছি, গান শুনছি, আড্ডা দিচ্ছি, তখন বাংলার মাটির কিছু সন্তান রাতের অন্ধকারে ক্রল করে শত্রুর নিকটে যাচ্ছে। হয়ত যুদ্ধ হবে না, কুটনৈতিক তৎপরতায় উত্তেজনা প্রশমিত হবে। কিন্তু Military deterrence সঠিকভাবে প্রদর্শন না করতে পারলে উত্তেজনা প্রশমিত হলেও হয়ত লজ্জাজনক কূটনৈতিক হার হবে।
আসুন প্রার্থনা করি সেনাবাহিনী ও বিজিবি'র সেই ছেলেদের জন্য যারা দেশের সম্মানজনক কূটনৈতিক জয়ের ক্ষেত্র প্রস্তুত করতে ও দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে। Let’s support our troops