১) ঈশ্বর এবং পরকালীন বিশ্বাসের ব্যাপারে বুদ্ধিমানরা স্মার্টলী সাধারনত সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে যে- যদি ঈশ্বর এবং পরকালীন এসব ব্যাপার সত্যিই না থাকে তবে কিন্তু বিশ্বাসি এবং অবিশ্বাসি সকলেই মৃত্যুর পর জবাবদিহীতা হতে রক্ষা পেয়ে যাবে, আর যদি সত্যিই তা থেকে থাকে তবে কিন্তু বিশ্বাসিরা মুক্তি পেলেও অবিশ্বাসি ও নাস্তিকরা পরবে মহাবিপদে । তাই যেকোন সময়ে মৃত্যুর ফলে রিস্কি অবস্থা হতে পরিত্রান পেতে বিশ্বাসি থাকাই বুদ্ধিমানের কাজ এবং পাশাপাশি ধর্ম নিয়ে নেগেটিভ ভাবে গবেষনা না করে নিরপেক্ষভাবে গবেষনা করা উচিত যাতে প্রকৃত সত্য ভালভাবে বুঝে মানা যায়।
২) ঠিক একই ভাবে মুসলিমদের মাঝে যারা বুদ্ধিমান শ্রেনীর তারাও স্মার্টলী বুঝতে সক্ষম হয়েছে যে- বর্তমান যুগ খুবই পাপাচার মুলক এবং মিথ্যার জয় চতুর্দিকেই, তাই অনেক ইসলামিক স্কলারগন কুরান-সুন্নাহ নিঃস্বার্থভাবে গবেষনা করে বের করেছেন যে- হয়ত এইটাই দাজ্জালের যুগ বা দাজ্জাল বলতে আসলে ইহুদি-খ্রিষ্টান ধোকাবাজ জাতিকেই বুঝানো হয়েছে আবার অনেকের মতে এটা দাজ্জালের আবির্ভাবে যুগ বা অল্প কয়েক বছরের মধ্যেই দাজ্জাল আত্মপ্রকাশ করবে, এখন তার চরম প্রেক্ষাপট তৈরী হচ্ছে। এছারাও অনেকে গবেষনা করে এটাও বের করেছে কুরান- হাদিস হতেই যে, দাজ্জালের ফেতনার এন্টিভাইরাস ইমাম মাহদীও অল্প কিছুদিনের মাঝেই আত্মপ্রকাশ করবেন কেননা বিভিন্ন হাদিস এবং বর্তমান সকল পরিস্থিতি তাই বলছে এমনকি এক দূর্লভ হাদিসে তার জন্মসাল ১৪০২/১৯৮২ বলে সরাসরি উল্লেখই আছে এমনকি অন্নান্য সহী হাদিসেও এরকমই ইংগিত পাওয়া যায় । সুতারাং এর অর্থ দাড়াল যে, আমরা বর্তমানে দাজ্জালী যুগে বাস করছি কিছুদিনের মাঝেই হয়ত সে বেড়িয়ে পড়বে আর তার হতে রক্ষার জন্য ইমাম মাহদীও অনেক বছর পূর্বেই জন্মগ্রহন করেছেন সুতারাং দাজ্জালকে মারতে ঈসা আঃ এর আগমনও খুবই কাছেই। যেহেতু অতীতের আলেম সমাজ আমভাবে এ ব্যাপারে একেবারেই বেখবর ছিল আর হাদিসেও কিন্তু তাদের এরকম বেখবর থাকার কথাই এসেছে তাই গতানুগতিক আলেম সমাজ এই তথ্যকে মেনে নিতে তো পারছেই না বরং রিতিমত এসবের বিরুদ্ধে লেগেছে যে এগুলো ঠিক নয় বা এগুলো ঘটতে অনেক দেরী যদিও তারাও কিন্তু হাদিস দিয়ে কোন প্রমানও দেখাতে পারছে না যে ঠিক কত দেরীতে এগুলো ঘটবে? ইত্যাদি বিভিন্ন কারনে স্মার্ট বুদ্ধিমান মুসলিমরা লক্ষ্য করে দেখছে যে- দিন দিন মাদ্রাসায় পড়ুয়া এসব হুজুরদের সংখ্যা বৃদ্ধিই পাচ্ছে এমনকি লক্ষ লক্ষ আলেম-অলামা বর্তমান পৃথিবীতে বিদ্যমান, যারা সবাই বলছে আমরা ইসলাম ধর্মের সেবা করছি অথচ এদের ধর্মের এত সেবাদানের পরও বর্তমান পরিস্থিতি এমন মনে হচ্ছে যে আর কিছুদিন পরে ধার্মিক মানুষ প্রকাশ্যে আর ধর্মই পালন করতে পারবে না। এছারাও অধর্ম, পাপ আর অশ্লীলতা তো সীমা ছারিয়েছে অনেক আগেই এমনকি ধর্মীয় লেবাছসহ হুজুরদের দ্বাড়ি টুপিও আজ হুমকির মুখে।
মোটকথা হুজুরদের ধর্মের সেবা করার পরও যেহেতু পরিস্থিতি আরো দ্রুতবেগে খারাপের দিকে মোর নিচ্ছে তাই বুদ্ধিমান মুসলিমরা ধরেই নিয়েছে যে এসব আলেম ওলামারাও আসলে বিপথে আছে এবং হাদিসে জাহান্নামের দিকে আহব্বানকারী বলতে যেসব আলেমদের বুঝানো হয়েছে তারাই বর্তমান যুগের হুজুর সম্প্রদায়গণ। তাই বুদ্ধিমান মুসলিমরা বুঝতে পেরেছে যে এরা সত্যিকারের ধর্মের কথা বলছে না এবং বলবেও না । তারচেয়ে নিরপেক্ষভাবে বিভিন্ন ইসলামিক স্কলাররা যেসব বিষয় তুলে ধরছে সেগুলোই সত্য হবার সম্ভাবনা বেশি। এছারা তারা এও বুঝতে পেরেছে যে দাজ্জাল, ইমাম মাহদির নিকটবর্তীতা এসব বিষয়ে যদি কেউ ভুল করেও বিশ্বাস করে তবুও সে পথভ্রষ্ট না হয়ে বরং আরো সচেতন এবং বেশী ধর্মভীরু হবে কেননা তারা কেউ যদি সত্যিই না এসেও থাকে তবু তো আর কেউ মুসলিমদের মাঝে এসে নতুন ধর্ম নিয়ে বিভ্রান্তি ফলাচ্ছে না যে মুসলিমরা বিপথে যাবে। কিন্তু সত্যি সত্যি যদি এসেই যায় তখন যারা পূর্ব হতে অবিশ্বাস করছে লোভী আলেমদের সাথে, তারা কিন্তু ঠিকই ঈমানী পরীক্ষায় টিকতে পারবে না কারন আল্লাহ সুবঃ সর্বকালেই ত্রানকর্তাদের চিনাতেও পরিক্ষায় ফেলেন যেমনটি নবী সাঃ সহ সকল নবীদের ক্ষেত্রেই হয়েছিল কেননা আল্লাহ সুবঃ কখনও এমন ব্যাবস্থা করেননি যে তিনি কোন নবী-রাসুলকে প্রেরন করলেন আর সমস্ত বিশ্ববাসিকেই তা বিশ্বাস করাতে বাধ্য করলেন, সাধারনত এমনটা করা তাঁর নীতি পরিপন্থি কারন তাহলে পরিক্ষা বলতে কিছু থাকে না সবাইকে যদি বিশ্বাসে বাধ্য করা হয়।
সুতারাং বুদ্ধিমানরা তাই স্মার্টলী চিন্তাভাবনা করে দেখছে যে- যদি দাজ্জাল, ইমাম মাহদি এগুলো নাও ঘটে তবু আমাদের তেমন ক্ষতি হচ্ছে না বরং আরো ধর্মীয় সচেতনতার সৃষ্টি হচ্ছে যা অবশ্যই উপকারি বর্তমান ধর্মবিমুখ বিশ্বের পরিপ্রেক্ষিতে। তাছারা দাজ্জাল মানে যেহেতু ধোকাবাজ, প্রতারক তাই বর্তমান সমাজ ব্যাবস্থাকে শাব্দিক অর্থে আরবীতে এমনিতেই তো দাজ্জালী সমাজ বলা যায়। কিন্তু যদি সত্যি সত্যি আমরা দাজ্জাল আর ইমাম মাহদির যুগে থেকে থাকি অথচ বিশ্বাস করতে থাকি যে- ইমাম মাহদি দাজ্জাল এগুলো আসবে আরো শত শত বছর পরে তবে সাধারন বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন যে কেউ ই বলতে পারবে যে এই আশায় থাকা মানুষেরা দাজ্জালের অনুগতদের সাথে জাহান্নামে চিরকাল অবস্থান করবে। শুধু তাই না, কে জানে জাহান্নামের সেই স্তরটা হবে কত নিম্ন-স্তরের? তাই এরকম রিস্কি পরিস্থিতি হতে বাঁচতে স্মার্ট মুসলিমরা দাজ্জাল , ইমাম মাহদির যুগই এটা, এমন বিশ্বাসকেই বুদ্ধিমানের বিশ্বাস মনে করে। এর পরেও তারা কিন্তু বসে নেই বরং এ বিষয়ে তারা পার্টটাইম হলেও গবেষনা চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু সমাজে সর্বদা বুদ্ধিমান শ্রেনীর সংখ্যা কম হবে এটা ঈশ্বরেরই একটি নিয়ম তাই এদের সংখ্যাও খুবই কম দেখা যায় ।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই মার্চ, ২০১৮ রাত ৮:৪২