ইরাকে ধারাবাহিক আগ্রাসন ও যুদ্ধপরাধ
সাম্রাজ্যবাদী আমেরিকার প্রত্যক্ষ প্ররোচনায় ইরাকের সাদ্দাম হোসেন কুয়েত আক্রমন করলে তাকে শেষ করার জন্য প্রথম উপসাগরীয় যুদ্ধে আমেরিকান ও তার সহযোগী বাহিনীর গণহত্যা মিশনে ১ লাখ ৩৫ হাজার ইরাকীর গণহত্যার শিকার, মাকিন সাম্রাজ্যবাদের দশ বছরের অবরোধে ইরাকে দশ মিলিয়ন যার অধিকাংশই নারী ও শিশু গণহত্যার শিকার, ইরাক-কুয়েত ও ইরাক-ইরান যুদ্ধের প্ররোচনা, সবশেষ ২০০৩ সালে ইরাকে গনতন্ত্র উদ্ধারের নামে ২৭ লাখ ইরাকীকে গণহত্যা । শুধু তাই নয় ইরাকে মার্কিন বাহিনীর আগ্রাসনের ফলে ১০ লাখ নারী বিধবা এবং ৪০ লাখ শিশু এতিম হয়েছে। মার্কিন বাহিনীর ইরাক আগ্রাসনের পর থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত ২৫ লাখ মানুষ হতাহত হয়েছে। এ ছাড়া, ইরাকের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০০৮ সালের জানুয়ারি মাস পর্যন্ত আট লাখ ইরাকি নিখোঁজ হয়েছে। ইরাকের মানবতাকে তারা বিপন্ন করেছে। কুখ্যাত বুশের দীর্ঘ আট বছরের কৃতিত্বের মধ্যে অন্যতম প্রধান কৃতিত্ব হচ্ছে ইরাক দখল। কি দিয়েছে বুশ সাহেবরা ইরাককে গত পাঁচ বছরে? ইরাক দখলের গত পাঁচ বছরে প্রাণ হারিয়েছে ১৩ লক্ষ মানুষ । যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। সংখ্যার দিক থেকে এ প্রাণহানিকে ব্যাপক গণহত্যা বলা হয়। ইরাকে এমন কোন পরিবার নেই যাদের ঘনিষ্ট কেউ প্রাণ হারায়নি। সহিংসতা,নৃশংসতা ও বর্বরতার আতংকে দেশ ত্যাগ করেছে ২৫ লক্ষ ইরাকী । অভ্যন্তরীণ উদ্ধাস্তু হয়েছে আরো ২০-৩০ লক্ষ। আহত ও বন্দী হয়েছে হাজার হাজার ইরাকী। বন্দীদের রাখা হয়েছে ইরাকজুড়ে ছড়িয়ে থাকা মার্কিন বাহিনী পরিচালিত কারাগার ও নির্যাতন কেন্দ্রে। ফাঁস হয়ে কিছু নির্যাতন কাহিনীও জেনে গেছে বিশ্ববাসী। কি নির্মম নির্যাতন! যা বনের পশুকেও হার মানায়।
একই রকম নির্যাতন ও মানবাধিকার লংঘনের ঘটনা ঘটছে অহরহ। এছাড়া নিঁখোজ হয়েছে হাজার ইরাকী । দখলদারীত্বের পাঁচ বছরে ইরাকের অবস্থা হয়েছে ভয়াবহ। মানুষের জীবনের কোন নিরাপত্তা নেই। নেই খাদ্য,পানি ও বিদ্যুৎ এর নিরাপত্তা। মানবাধিকার সংগঠন অ্যামেনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল আর্ন্তজাতিক রেডক্রস এবং বিভিন্ন বেসরকারী সংস্থা সেখানকার পরিস্থিতি বিপর্যস্ত বলে মন্তব্য করেছেন। ইরাকের শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের তথ্য মতে,৭০ শতাংশের বেশি বালিকা ও তরুণী স্কুল,কলেজ,বিশ্ববিদ্যালয় যায় না ,ধর্ষনের ও অপহরনের কারণে। দেশ ছেড়ে পালিয়েছে হাজার হাজার শিক্ষক। গত পাঁচ বছরে উদ্ধাস্তু হয়েছে ১০ লাখ নারী । বিধবা হয়েছে আরো ১০ লাখ। চলমান সহিংসতায় ও বর্বরতায় পাঁচ বছরে ৪৫ লক্ষ শিশুকে এতিম বানিয়েছে। তাছাড়া মার্কিন বাহিনীর সাথে প্রবেশ করেছে অপরাধ ,দূর্নীতি ও পশুত্বের সংস্কৃতি,যা আগে ছিল না। ইরাকী পুতুল সরকারও জনগণের স্বার্থ রক্ষায় ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। আর দেশটি দখল করে রেখেছে এক লাখ ৬০ হাজার মার্কিন কুত্তা বাহিনী এবং এক লাখ ৮০ হাজার বিদেশী ভাড়াটে সেনা। সব ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয় বিদেশী বাহিনী ও ওয়াশিংটন। ইরাক সরকার দখলদারদের পক্ষে দালালী করছে এবং তাদের উপস্থিতিকে যৌক্তিক প্রমাণেও বৈধতা দানের চেষ্টা করছে। তাছাড়াও ইরাক ও আফগানিস্তান জুড়ে তৈরি করা হয়েছে হাজার হাজার বেশ্যা পল্লী । যেখানে মার্কিন কুত্তা বাহিনী ও ন্যাটোর কুখ্যাত পশু বাহিনীরা রাত কাটায়। পার্শ্ববর্তী দেশে আশ্রয় নেয়া লক্ষ লক্ষ আফগান ও ইরাকী নারীরা বেশ্যাবৃত্তিতে বাধ্য হচ্ছেন। নুরেমবার্গ চার্টার অনুযায়ী যুদ্ধ শুরু করা সর্বোচ্চ আর্ন্তজাতিক অপরাধ। বিনা প্ররোচনায় আফগানিস্তান ও ইরাক দখল করে ওই চার্টার লংঘন করেছেন কুখ্যাত বুশ ও তার দোসররা। কিন্তু এ দানবের বিচার কে করবে? বিশ্বের সব কিছুর বিচার যে তারা করেন? (তথ্যসুত্র-প্রথম আলো) এভাবে ধারাবাহিকভাবেই মাকিন সাম্রাজ্যবাদ ইরাকে যুদ্ধপরাধ সংগঠিত করেছে এবং এখনো তার ধারাবহিকতা বজায় রয়েছে। বতমানে ইরাককে ছিন্নভিন্ন করার জন্য শিয়া ও সুন্নী বিরোধকে কাজে লাগানো হচ্ছে।
ইরাক যুদ্ধ নিয়ে উইকিলিকস এর সত্য উদঘাটন
ইরাকে মার্কিন সেনাদের দ্বারা সংঘটিত একটি হত্যাকান্ডের এটি। ২০০৭ সালে বাগদাদে একটি মার্কিন অ্যাপাচি হেলিকপ্টারের ককপিট থেকে তোলা ৩৮ মিনিট দৈর্ঘ্যের ভিডিও ফুটেজ। ফুটেজটি মার্কিন সেনাদেরই তোলা, এতে দেখানো হয়েছে মার্কিন সেনাদের হাতে রয়টারের দুজন সাংবাদিকসহ ১৮ জন বেসামরিক মানুষ হত্যার দৃশ্য। ফুটেজগুলো বিশ্লেষণ ও সম্পাদনা করে তিনি তৈরি করলেন একটি স্বল্পদৈর্ঘ্য প্রামাণ্যচিত্র, যার নাম দিলেন কোল্যাটারাল মার্ডার। তিনি সেটি ছাড়লেন অনলাইনে, এবং এমন ব্যবস্থা নিশ্চিত করলেন যেনো কেউ প্রামাণ্যচিত্রটি সরিয়ে ফেলতে না পারে।
এই ঘটনায় হৈ চৈ পড়ে গেল সারা দুনিয়া জুড়ে। ঘুম হারাম হয়ে পড়লো মার্কিন প্রসাশনের সামরিক ও গোয়েন্দা ব্যাক্তিদের। ইরাক যুদ্ধের গোপন দলিল ফাঁস করে দিয়ে গোটা বিশ্বে আবারও তোলপাড় তুলল উইকিলিকস৷ ইরাক যুদ্ধের সময় মার্কিন বাহিনীর নৃশংসতার কাহিনী বর্ণিত হয়েছে এইসব ফাঁস হওয়া দলিলে৷ এক সংবাদ সম্মেলনে উইকিলিকস এর প্রতিষ্ঠাতা জানিয়েছেন এর মাধ্যমে আসলে সত্য উদঘাটিত হয়েছে৷ এর আগে আফগানিস্তান যুদ্ধের ৭৭ হাজার গোপন দলিল ফাঁস করে দিয়েছিল উইকিলিকস৷ এবার তারা ইরাক যুদ্ধের চার লাখ গোপন দলিল প্রকাশ করে দিল৷
লন্ডনের এই সংবাদ সম্মেলনে উইকিলিকস ছাড়াও উপস্থিত ছিল বডি কাউন্ট নামে একটি সংগঠনের প্রতিনিধিরা, যারা ইরাক যুদ্ধে নিহতদের সংখ্যা ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতো৷ তবে মূল নজর ছিল উইকিলিকস এর প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান আসানজে কি বলেন তাঁর দিকে৷ তিনি বলেছেন, ইরাক যুদ্ধের আগে থেকেই সত্যকে আড়াল করার চেষ্টা করা হয়েছে এবং সেটি এখনও চলছে৷ এবং এই দলিল ফাঁস করে দিয়ে সেই সত্যটিকেই মানুষের সামনে তুলে ধরা হয়েছে৷ তিনি জানিয়েছেন যে ২০০৪ সাল থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত মার্কিন সেনারা এক লাখ নয় হাজার মানুষের মৃত্যুর ঘটনা লিপিবদ্ধ করেছে যার মধ্যে ৬৬ হাজার হচ্ছে বেসামরিক নাগরিক৷ মার্কিন সেনাদের হাতে এত হতাহতের ঘটনা ঘটলেও সেসব চেপে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল পেন্টাগন৷
মার্কিন বাহিনীর নৃশংসতা
যুদ্ধ ছাড়াও আরও নানাভাবে ইরাকিদের জীবন দিতে হয়েছে বিদেশি সেনাদের হাতে৷ মার্কিন সেনাবাহিনীর ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ফাঁস হওয়া এই দলিলে দেখা গেছে, জেলের মধ্যে ইরাকিদের কিভাবে নির্যাতন এবং পরে হত্যা করা হয়েছে৷ পথচারীদের রাস্তার পাশে গুলি করে মেরে ফেলা হয়েছে৷ চেক পয়েন্টগুলোতে তল্লাশি চালানোর সময় ইরাকিদের ওপর গুলি চালানো হয়েছে৷ বিশেষ করে ৩৫ বছরের অন্তঃসত্ত্বা নাবিহা জসীম, যিনি হাসপাতালে যাচ্ছিলেন সন্তান জন্ম দেওয়ার জন্য, তাঁকে কিভাবে চেক পয়েন্টে গুলি করে হত্যা করেছিল মার্কিন বাহিনী সেই কাহিনীও জানা গেছে এই গোপন দলিল ফাঁস হওয়ার মাধ্যমে৷
বডি কাউন্ট সংগঠনের বক্তব্য
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির প্রধান জন স্লোবোডা৷ তিনি জানিয়েছেন, ইরাক যুদ্ধে এখন পর্যন্ত দেড় লাখেরও বেশি মানুষ জীবন দিয়েছে যার মধ্যে শতকরা ৮০ ভাগ বেসামরিক নাগরিক৷ তিনি জানিয়েছেন, মার্কিন বাহিনীর অনেক সেনা সদস্যই এইসব ঘটনার দিন ক্ষণ লিখে রাখতো৷ কিন্তু এই ধরণের অনেক ঘটনাই পরে চেপে যাওয়া হয়েছিল৷ জন স্লোবোডা আরও জানিয়েছেন যে এই ধরণের অন্তত ১৫ হাজার হত্যাকান্ড ফাঁস হয়েছে গোপন দলিল প্রকাশের মাধ্যমে৷ এবং এইসব হত্যাকান্ড প্রতিদিনই একাধিকবার ঘটেছে৷
যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ
উইকিলিকস এর প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসেঞ্জ সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন যে তারা ব্রিটেনের আইনজীবীদের সঙ্গে ইতিমধ্যেই এই নিয়ে কথা বলছেন৷ তারা অন্তত ৪০ টি হত্যাকান্ডের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করেছেন৷ এইসব হত্যাকান্ডের মাধ্যমে দেখা যাচ্ছে যে মার্কিন বাহিনী ইরাকে যুদ্ধাপরাধের সঙ্গে যুক্ত ছিল৷
এছাড়া মার্কিন বাহিনীর অপকর্মের কিছু তথ্যও প্রকাশ পেয়েছে এই দলিলে৷ যেমন, ২০০৭ সালে মার্কিন অ্যাপাচি হেলিকপ্টারের হামলায় প্রাণ হারায় দুই জঙ্গি৷ গোপন দলিলে দেখা যাচ্ছে, এরা আত্মসমর্পণ করতে চেয়েছিল৷ কিন্তু উড়োজাহাজের কাছে আত্মসমর্পণ সম্ভব নয়, তাই তাদেরকে ক্ষেপণাস্ত্রের লক্ষ্যবস্তু বানানো সঠিক সিদ্ধান্ত বলে মত দিয়েছেন, সামরিক আইনজীবী৷
মার্কিন বর্বরতা ও নৃশংসতার সাক্ষী 'মাইলাই-গণহত্যা'
আজ থেকে ৪৪ বছর আগে ১৯৬৯ সালের এই দিনে ভিয়েতনামের মাইলাই গ্রামে গণহত্যায় জড়িত ২২ জন মার্কিন সেনার মধ্যে মাত্র একজনকে ১০৬ জন নারী, পুরুষ ও শিশু হত্যার পরিকল্পিত ঘটনায় জড়িত থাকার জন্য দায়ী করা হয়।লেফটেন্যান্ট উইলিয়াম ক্যালি নামের এই মার্কিন সেনা ছয়টি হত্যাকাণ্ডের জন্য অভিযুক্ত হন।মাইলাই গ্রামে ওই গণহত্যা সংঘটিত হয়েছিল ১৯৬৮ সালের ১৬ ই মার্চ। কিন্তু এই গণহত্যার খবর ফাঁস হয় এক বছর পরে। নিহতদের কারো কারো লাশ বিকৃত করা হয়েছিল এবং হত্যা করার আগে বহু নারীকে ধর্ষণ করেছিল বর্বর মার্কিন সেনারা। মার্কিন সেনাসূত্র মতে এ গণহত্যায় নিহত হয় ৩৪৭ জন। আর অন্য সূত্র মতে নিহত হয়েছিল ৪০০ জনেরও বেশি ভিয়েতনামী নাগরিক। এ ছাড়াও মাই খি গ্রামে নিহতরাসহ এ দুই গ্রামে মার্কিন সেনাদের পরিচালিত গণহত্যায় নিহতের মোট সংখ্যা ৫০৪ জন বলে ভিয়েতনাম সরকার উল্লেখ করেছে। ওই গণহত্যার খবরে বিশ্বব্যাপী নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। খোদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভেতরেই যুদ্ধ-বিরোধী আন্দোলন জোরদার হয়।তিন জন মার্কিন সেনা ওই গণহত্যা ঠেকানোর এবং আহতদের রক্ষার চেষ্টা করেছিলেন বলে কয়েকজন কংগ্রেস সদস্য তাদেরকে বিশ্বাসঘাতক বলে উল্লেখ করেন যাতে ওই গণহত্যার ঘটনাটি ধামাচাপা পড়ে। তাদের কাছে নিন্দাবাদ জানানো চিঠি পাঠানো হয় এবং দেয়া হয় হত্যার হুমকী।পরে এই তিন সেনার ব্যাপক প্রশংসা করা হয় এবং খোদ মার্কিন সশস্ত্র বাহিনী তাদেরকে সম্মান জানায়।মাইলাই গণহত্যার প্রধান হোতা উইলিয়াম ক্যালিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হলেও বাস্তবে তাকে মাত্র সাড়ে তিন বছর গৃহবন্দী রেখে মুক্তি দেয়া হয়। আর এ থেকে মার্কিন বিচার বিভাগের দুর্বলতা ও অসঙ্গতিও সবার কাছে স্পষ্ট হয়ে যায়।(সূত্র-রেডিও তেহরান)
নিষ্ঠুর সন্ত্রাসের উদাহারণ গুয়ান্তানামো ও আবু গারিব কারাগার
মাকিন সাম্রাজ্যবাদের নিকৃষ্ঠ যুদ্ধাপরাধের ভয়াল অবস্থা প্রকাশ পেয়েছে ইরাকে আবু গারিব কারাগার আর গুয়েন্তানামোবে কারগারে। মানবতাকে কিভাবে পদদলিত করা হয় তাই প্রকাশ পেয়েছে এতে।মাকিন সাম্রাজ্যবাদের নিষ্ঠুরতার প্রমাণ মেলে কুখ্যাত বুশের আট বছরের শাসনকালে।তাদের সন্ত্রাসবাদের জঘন্য মানসিকতার পরিচয় পাওয়া যায় গুয়েন্তানামো কারাগার ও আবু গারিব কারাগার-এ। আধুনিকতার এ যুগে মানবতার বিরুদ্ধে কিভাবে নিষ্ঠুরতা চালানো হয় তাই প্রকাশ পেয়েছে গুয়ান্তনামো কারগারে।যা পশুত্বের পাশবিকতাকেও ম্লান করে দেয়।আমেরিকার বাইরে কিউবায় গুয়ান্তানামো কারাগারটি অবস্থিত। কড়া সশস্ত্র পাহারায় কারাগারটি ঘেরাও করা। বন্দীরা যেন একজনের সাথে অন্যজন কোন প্রকার যোগাযোগ করতে না পারে, সেজন্য কারা প্রকোস্ট ঘিরে আছে কাঠের তৈরি ওয়াচ টাওয়ার। যার ফলে বন্দীরা দেখতে পায় না। বাইরের কারো পক্ষেও বাধা ডিঙ্গিয়ে বন্দীদের দেখা অসম্ভব। আন্তজাতিক কোন সংস্থা ও সাংবাদিকদের পযন্ত সেখানে ঢুকতে দেওয়া হয় না। এখানে বন্দীদের কি রকম নিযাতন চালিয়েছিলো তা কয়েকজন মুক্তি প্রাপ্ত বন্দীর ভাষ্য থেকে বুঝা যায়। এদের মধ্যে একজনের নাম মারুফ। মাকিন কুত্তা বাহিনী আল মারুফকে মমান্তিক শাস্তি দিতে থাকে। বেধেঁ ফেলে তার হাত পা, টেপ এটে দেয় মুখে। উপড়িয়ে ফেলে তার চুল, দাড়ী, গোফ, চোখের পাপড়ি। চোখে সিসার কালি লাগিয়ে চোখে পরিয়ে দেয় রাবারের তৈরি শক্ত মোটা বেল্ট। নাকে পরিয়ে দেয় বিশেষ ধরণের মাস্ক, কানে ফিট করে দেয় অত্যাধুনিক যন্ত্র, যা বিলোপ করে দেয় শ্রবনশক্তি। হাতে পায়ে পরিয়ে দেয় লোহার শিকল, গলায় ডান্ডাবেড়ী এবং মাথায় লোহার ভারী ক্যাপ। এই সমস্ত নিযাতন যন্ত্রের ফলে মারুফ এখন আর দেখতে পায় না, শুনতে পায় না, শুকতে পারে না, পারে না কিছু স্পশ করতে, সবদিক থেকে এভাবেই পঙ্গু করে ফেলা হয় বন্দীদের। দুই মিটার দৈঘ্য ছোট একটি লোহার খাচাঁয় পুরে হাতে পিছমোড়া বাধঁ দিয়ে পায়ের উপর বসিয়ে রাখে সপ্তাহের পর সপ্তাহ, মাসের পর মাস। অজু করা, নামাজ পড়া, এবং অন্যান্য ইবাদাত বন্দেগী করতে দেওয়া হত না তাদের। উপরন্তু চরিত্রহীনা নারীকে লেলিয়ে দেয়া হয়। উলঙ্গ করে রাখা বন্দীদের উপর। তরুণীটি পুরোপুরি বিবস্ত্র হয়ে বিভিন্ন অঙ্গ লেলিয়ে দিয়ে বিভিন্ন ভঙ্গি করতে থাকে উত্তেজনা সৃষ্টির জন্য এবং এক সময় নিজেই উত্তেজিত হয়ে ক্ষুধাত হিংস্র বাঘের মতো ঝাঁপিয়ে পড়ে ইলেক্ট্রনিক মেশিনের মধ্যে হাত পা আটা চিৎকরে শুইয়ে বন্দীদের উপর। বন্দীদের কাছ থেকে কোন প্রকার ছাড়া শব্দ না পেয়ে উত্তেজিত উলঙ্গ তরুণীটি যৌন উত্তেজনায় বন্দীদের শরীরের বিভিন্ন স্থান এবং পুরুষাঙ্গ কামড়ে ছিড়ে ফেলে। উলঙ্গ নারীদের অঙ্গ ভঙ্গীতে যদি কোন বন্দী লজ্জিত হয়ে চোখ বন্ধ রাখে তাহলে তার চোখের উপর সূচালো লোহার কাটা দিয়ে খোঁচা মারে। মেরে মেরে মাসের পর মাস উলঙ্গ বন্দীদের দিয়ে নষ্ট নারীর দেহ লেহন করায়। এরপর আরো যা করা হয় তা এতো পণোগ্রাফী যে তা বণনা করা সম্ভব নয়। পিপাসার জ্বালায় পানি চাইলে বন্দীদের মুখে প্রস্রাব করে দেয় মাকিন জানোয়ারেরা। প্রস্রাব পায়খানার মতো অতীব জরুরী প্রয়োজনেও শিথিলতা পযন্ত না তারা। প্রচন্ড ক্ষুধায় তাদের খেতে দেওয়া হয় কুকুর, শুকরের মাংস, ঝলসান ব্যাঙ ও সাপ। সস্তা বিয়ার ক্রাউন হান্টার ইনজেকশন দিয়ে তাদের দেহকে কংকালের মতো শুকিয়ে ফেলা হয়। এমন চরম নিযাতনে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে বন্দীরা। কখনো মাকিনীদের ঐ কসাইখানা থেকে বের হতে পারলেও যাতে করে তাদের অন্যায় অত্যাচারের বিরুদ্ধে জীবনে আর প্রতিবাদ করতে না পারে এ জন্য তাদেরকে আঘাত করে ও বিভিন্ন ইনজেকশন মেরে তাদেরকে মানসিক ভাবে পঙ্গু করে ফেলে আর পরিবারের জন্য গ্লানিকর বোঝা হয়ে দাড়ায় সেই রকম করেই ছেড়ে দেওয়া হয়। এভাবে বিনা বিচারে আটক কারীদের উপর শতাব্দির ভয়াবহ নিষ্ঠুর নিযাতন চালায় তথাকথিত মানবাধিকারের ফেরিওয়ালা খ্যাত কুখ্যাত মাকিন সাম্রাজ্যবাদ।
* বাগদাদে অবস্থিত ইরাকের যে কয়েকটি মাকিন নিয়ন্ত্রিত কারাগার রয়েছে তাদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে আবু গারীব কারাগার। এখানে কুখ্যাত মাকিন সাম্রাজ্যবাদ দ্বিতীয় গুয়েন্তানামো বে কারাগার খুলেছিল। ২০ই মাচ ২০০৩ সালে ইঈ-মাকিন বাহিনী ইরাক আক্রমণ করে দখল করে নিলে সেখানকার বিদ্রোহীদের ধরে এই কারাগারে বন্দী করা হতো। এপ্রিল ২০০৪ সালের শেষের দিকে যুক্তরাষ্ট্রের সি বি এস টেলিভিশনে ইরাকের আবু গারীব কারাগারে বন্দী নিযাতনের ছবি প্রকাশ করলে বিশ্ববাসী আবু গারীব কারাগার সম্পকে জানতে পারে। এ কারাগারে অত্যাচারের কাহিনী ইতিহাসের ববরতাকেও ছাড়িয়ে যায়। টেলিভিশনে দেখানো হয়, ইরাকী বন্দীদের বিবস্ত্র করে মাথায় থলি পরিয়ে নগ্নভাবে দৈহিক অত্যাচার করত। ফলে বিশ্বব্যাপী এর বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। এমনকি মাকিন প্রশাসনেও এ নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। এই কারাগারে নিযাতনের মধ্যে অন্যতম চরিত্র হচ্ছে মাকিন নারী সেনা লিন্ডি। লিন্ডির কাছে বন্দী নিযাতন ছিল একটি দৈনন্দিন স্বাভাবিক কাজের মতো। যা করে তারা আনন্দ উপভোগ করতো।আবু গারীব কারাগারে নিযাতনের চিত্রগুলো হচ্ছেঃ-
১. বন্দীদের উপর যৌন নিযাতন।
২. বিবস্ত্র করে ছবি তোলা।
৩. বন্দীদের গলায় দড়ি বেধেঁ টেনে নেয়া।
৪. হামাগুড়ি দিতে বাধ্য করা।
৫. বন্দীদের বুকে ও মুখে নিদয়ভাবে আঘাত করা।
৬. শুকরের মাংস ও মদ খেতে বাধ্য করা।
৭. টয়লেটে ফেলে দেয়া খাদ্য তুলে খেতে বাধ্য করা।
৮. থলের ভেতরে মাথা ঢুকিয়ে ঘুমানো।
৯. রাসায়নিক লাইট দিয়ে অনেক সময় বন্দীদের সঙ্গে মানসিক গেমস খেলা ইত্যাদী।
মাকিন প্রত্যক্ষ মদদে বণবাদী ইসরাঈলের অব্যাহত যুদ্ধাপরাধ
মাকিন সাম্রাজ্যবাদ মূলত আরব বিশ্বকে দূবল ও পদানত করে রাখার জন্য আরব বিশ্বের বুকে বিষফোড়া হিসাবে ইসরাঈলকে প্রতিষ্ঠা করে। তাইতো ইসরাঈলের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই তাদের সকল সন্ত্রাসী কমকান্ড, জঙ্গীবাদী নিমমতা, আগ্রাসন ও মানবতা ধ্বংসমূলক কমকান্ড বিনা দ্বিধায় সমথন দিয়ে গেছেন। শতাধিক জাতিসংঘের প্রস্তাব লংঘন করেছে মাকিণীদের ইন্ধনে। মাকিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইসরাঈলের দহরম মহরম সম্পক ছিলো। মাকিন প্রত্যক্ষ তত্বাবধানে কুখ্যাতে ইসরাঈলকে আধুনিক অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত করা হয়। পারমাণবিক প্রযুক্তি দিয়ে পারমানবিক ক্ষমতা সমৃদ্ধ দেশ হিসাবে গড়ে তোলা হয়, আরব বিশ্বকে টেক্কা দেওয়ার জন্য। মাকিনীদের প্রত্যক্ষ তত্ববধানে ফিলিস্তেনের হামাস সরকারকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। পরবতীতে প্রেসিডেন্টকে দিয়ে হামাস সরকারকে বরখাস্ত করা হয়।
জারজ রাষ্ট্র ইসরাঈল প্রতিষ্ঠার পর থেকেই ফিলিস্তিনীদের উপর যুদ্ধাপরাধ সংগঠিত করে যা ধারাবহিকভাবে এখনো চলছে। এব্যাপারে মাকিন সাম্রাজ্যবাদ এবং আন্তজাতিক মহল নিলজ্জভাবে ইসরাইলী সন্ত্রাসীবাহিনীর গণহত্যাকে সমথন দিয়ে যাচ্ছে।যুগে যুগে তাদের কৃত কিছু যুদ্ধাপরাধের বিবরণ নিন্মে পেশ করা হলো।
১. জারজ রাষ্ট্র ইসরাঈল প্রতিষ্ঠারে আগেই ১৯৪১ সালের দিকে ‘হেগনা’ ও ‘ইরিগুন’ নামের দুটি গুপ্ত সশস্ত্র সংগঠন করে শত শত ফিলিস্তিনকে গণহত্যা, বাড়ী ঘর থেকে উচ্ছেদ করে।
২. দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের পর থেকেই ইসরাইল এক লাখের অধিক ফিলিস্তিনকে হত্যা করেছে।
৩. কোন কারণ ছাড়াই ১৯৫৬, ১৯৬৭, ১৯৭৩, ১৯৮২ সালে আরবদের সাথে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে মাকি©নীদের সহযোগীয়। এসব যুদ্ধে হাজার হাজার আরবকে হত্যা করে ইসরাইল।
৪. অবৈধভাবে আগ্রাসন চালিয়ে গোলান মালভূমি, জেরুজালেম ও ফিলিস্তিন দখল করে।
৫. এ পযন্ত জাতিসংঘের শতাধিক প্রস্তাব লংঘন।
৬. জাতিসংঘের অনুমতি ছাড়া সিরিয়া, ইরাক, লেবানন ও তিউনিসিয়ায় হামলা।
৭. মোসাদের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি শীষ নেতৃবৃন্দসহ মুসলিম দেশের বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ হত্যা, নানা ষড়যন্ত্র, চক্রান্ত অব্যাহত।
৮. ৮২ সালে লেবাননে সামরিক আগ্রাসন চালিয়ে ১৭ হাজার ৫শ নিরীহ মানুষ কে গণহত্যা।
৯. বছরের পর বছর জোর করে মিশর, সিরিয়া ও লেবাননের অঞ্চল দখল করে রাখা।
১০. ১৯৯৪ সালে হেবরণ শহরে ইব্রাহীম মসজিদে সিজদারত অবস্থায় মুসল্লীদের উপর হামলা চালিয়ে ৬০জনকে হত্যা এবং ৩০০ জনকে আহত করে।
১১. ২০০১ সালে ১০ই আগস্ট পি এল ও সদর দপ্তর দখল করে নেয়।
১২. বিষাক্ত উপাদান প্রয়োগে ফিলিস্তিনের অবিসম্ভাদিত নেতা ইয়াসির আরাফাত কে হত্যা।
১৩. ২০০২ সালের ১১ জানুয়ারী বুলডোজার দিয়ে গাজা আন্তজাতিক বিমান বন্দর হত্যা।
১৪. ২০০২ সালের ১৯শে জানুয়ারী ডিনামাইট দিয়ে ফিলিস্তিনি বেতার কেন্দ্র ধ্বংস করা।
১৫. ২০০২ সালে এপ্রিল মাসে জেনিন শরানাথী শিবিরে হামলা চালিয়ে শত শত ফিলিস্তিনীকে হত্যা, আহতদের চিকিৎসা প্রদানকারী নাসদের হত্যা, ১০-১২ বছরের বালকদের ট্যাংকের গোলা মেরে হত্যা, হুইল চেয়ারে বসা ফিলিস্তিনি কে বুলডোজার চালিয়ে পিষে ফেলা এবং ট্যাংকের নীচে ফেলে ফিলিস্তিনি বিভিন্ন পরিবারকে জীবন্ত হত্যা করা।
১৬. ২০০৩ সালে ফিলিস্তিনে সামরিক আগ্রাসন চালিয়ে ১০০০ ফিলিস্তিনিকে গণহত্যা।
১৭. ২০০৯ সালের দীঘ ২৩ দিন সামরিক আগ্রাসন চালিয়ে ফিলিস্তিনের ১৩০০ বেসামরিক নারী ও শিশুকে হত্যা। জাতিসংঘ পরিচালিত স্কুল ও মসজিদসহ সবকিছু গুড়িয়ে দেয়া।নিষিদ্ধ ঘোষিত ফসফরাস বোমা নিক্ষেপ গাজাবাসীদের উপর।
১৮. ২০১২ সালে সামরিক আগ্রাসন চালিয়ে ১৬০ অধিক নিরীহ ফিলিস্তিনীকে হত্যা।
১৯. ২০১৪ সালের ৮ জুলাই থেকে অব্যাহত বিমান হামলা, স্থল আক্রমন করে হাজার হাজার নিরীহ ফিলিস্তিনীকে হত্যা। হাজার হাজার বাড়ীঘর ধ্বংস করে দেয়া। আর এসব গণহত্যায় মাকি©ন সাম্রাজ্যবাদের অব্যাহত সমথন। এগুলো সামগ্রিক চিত্র নয়, জারজ রাষ্ট্রের আংশিক যুদ্ধপরাধের ঘটনা মাত্র।
প্রতিকী ট্টাইবুনালে বুশের যুদ্ধাপরাধ প্রমাণিত
২০০৪ সালে ইন্টারন্যাশনাল এ্যাকশান সেন্টার বুশের যুদ্ধপরাধের জন্য এক আন্তজাতিক গণআদালতের আয়োজন করে। ২০০৪ সালের মে মাসে প্রথম দফা এবং ২৬ শে আগস্ট নিউইয়ক সিটির ম্যানহাটানের একটি মিলনায়তনে দ্বিতীয় দফা বসে আন্তজাতিক গণআদালত। এ আন্তজাতিক গণআদালতে ১৯টি গুরুতর অপরাধ সংঘঠনের দায়ে মাকিন প্রেসিডেন্ট জজ বুশ, ভাইস প্রেসিডেন্ট ডিক চেনী, পররাষ্টমন্ত্রী কলিন পাওয়াল, প্রতিরক্ষামন্ত্রী ডোনাল্ড রামসফেল্ড এবং এটনি জেনারেল জন এ্যাশ ক্রাফটকে দোষী সাব্যস্ত করেছেন। গণ আদালত তাদের অপরাধকে ‘যুদ্ধ অপরাধ’ হিসাবে সাব্যস্ত করেছেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের ২ নাম্বার ধারার ৪ নং উপধারা মোতাবেক অবিলম্বে তাদের ইমপিচ করে শাস্তি প্রদানের আহবান জানিয়েছে। সাবেক মাকিন এটনি জেনারেল রামসে ক্লকের প্রস্তুতকৃত ১৯ দফার অভিযোগ নামাটি আদালতে বিস্তারিতভাবে উপস্থাপন করা হয়। উপস্থাপিত অভিযোগ গুলি হলো-
১. আফগানিস্তানে মানবতাকে বিপন্ন করে হামলা চালানো, যা আগ্রাসনে পরিপূণ।
২. ইরাকের নিরস্ত্র অসহায় লোকেদের হত্যা।
৩. ইরাকীদের হত্যায় সবাধুনিক অস্ত্র সামগ্রী ব্যবহার।
৪. অপহরণ, নিযাতন, ও বিচার ছাড়া হত্যা।
৫. নিবিচারে হত্যায় আধা সামরিক বাহিনীর ব্যবহার।
৬. অথনীতি সমাজ ব্যবস্থা, কুটনৈতিক ব্যবস্থা, হাসপাতাল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ধ্বংস।
৭. সাম্প্রদায়িক সম্প্রতিতে ফাটল সৃষ্টি।
৮. ইরাকে সামরিক আগ্রাসনের মাধ্যমে বহিবিশ্বে যুক্তরাষ্ট্রের ভাবমযাদা নষ্ট করা।
৯. জাতিসংঘকে অবজ্ঞা করা।
১০. যুদ্ধ জনিত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ইতিপূবে প্রণীত আন্তজাতিক আইন লংঘন।
১১. হাইতির নিবাচিত প্রেসিডেন্ট জীন বাটলেন্ডকে উৎখাত করে মাকিন তাবেদার সরকার প্রতিষ্ঠা এবং এর ফলে সেখানে গৃহযুদ্ধে হাজার হাজার লোকের মৃত্যু।
১২. বিভিন্ন দেশে আক্রমনের হুমকি, অথনৈতিক অবরোধ ও নিরীহ ফিলিস্তিনি হত্যায় ইসরাঈলকে ইন্ধন দান।
১৩. সংবিধান লংঘন করে যুক্তরাষ্ট্রকে যুদ্ধে লিপ্ত করা।
১৪. বিভিন্ন দেশে আগ্রাসন ও যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের মৌলিক অধিকার হরণ।
১৫. ইরাকে স্থায়ীভাবে তাবেদার সরকার প্রতিষ্ঠার ষড়যন্ত্র।
১৬. স্বাধীন দেশের নাগরিকদের গ্রেফতার করে বছরে পর বছর ধরে নিযাতন, আইনগত সহযোগিতার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে জাতিসংঘের চাটার লংঘন।
১৭. ব্যাকসায়িক স্বাথে জাতিকে যুদ্ধে লিপ্ত করা।
১৮. ইরাকের প্রকৃত খবর প্রকাশে বাধা দিয়ে গণতন্ত্র ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ।
১৯, অপরাধ ঢেকে রাখার জন্য অবিরাম মিথ্যাচার।
গণআদালতে উপস্থাপিত অভিযোগ সম্পকে© যুক্তরাষ্ট্র সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের খ্যাতিমান আইনজীবি, মানবাধিকার সংগঠক, কবি, সাহিত্যিক, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, শিক্ষক, কুটনৈতিক, শ্রমিকনেতা, যুদ্ধে অংশগ্রহনকারী সৈনিক, যুদ্ধে নিহতদের আত্মীয় স্বজন ও রাজনীতিবীদরা সাক্ষ্য দিয়েছেন। আদালতে উপস্থাপিত সাক্ষীদের সকল প্রমাণ বিশ্লেষন করে যুদ্ধে তাদের যুদ্ধাপরাধ প্রমাণিত হয়েছে। এবং এরই ভিত্তিতে বিচার কায সম্পাদান করে জাতিসংঘসহ আন্তজাতিক আদালতকে নিরপেক্ষতার প্রমাণ দিতে হবে। কিছু মানুষ হত্যার অপরাধে যদি প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনের ফাঁসি হয় তাহলে তাহলে ১৭ লাখ মানুষকে গণহত্যার অভিযোগে পৃথিবীর শীষ যুদ্ধাপরাধী বুশের ১৭ লাখবার ফাঁসির দন্ড হওয়া প্রয়োজন।