পায়ে ফ্যাক্টচার হওয়ার পর ডাক্তার বল্ল,কিছুদিন হাসপাতালে ভর্তি হয়ে আমাদের অবজার্ভেশানে থাকতে হবে।কথা মত ভর্তি হলাম হাসপাতালে।সরকারি হাসপাতাল হওয়ায় কেবিন পাওয়া গেলনা।ওয়ার্ডে থাকতে হোল।পরিবেশটা তেমন খারাপ না।বেডের নাম্বার দেখে সেখানে ব্যাগগুলো রেখে বসলাম।হঠাৎ চোখ পড়ল একটা মেয়ের দিকে।ঠিক আমার সামনের বেডে বসে পা দোলাচ্ছে।গায়ে লাল রঙের জামা।চুল গুলো ছেড়ে দেয়া।গায়ের রং ফর্সা।চোখ গুলো টানাটানা আর পাতলা গোলাপী ঠোট।দেখেই শরীরে একটা শিহরন বয়ে গেল।এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকলাম মেয়েটার দিকে।কিন্তু সেটা আর বেশিক্খন হলনা।এই ছেলে এই তোমার নাম কি ফাহিম?দেখলাম ডাক্তার এসে ডাকছে।তার সাথে আমার রোগ বিষয়ে কথা বলছিলাম।কিন্তু আমার চোখ বার বার মেয়াটার দিকেই যাচ্ছিল।ওর সাথেও এরকম একজন ডাক্তার কথা বলছিল।মেয়েটাকে দেখে খুব বিষন্ন মনে হচ্ছিল।অনেক চুপচাপ।আমি আবার অস্থির টাইপ।একটানা বেড থাকতে পারিনা।শুধু প্রয়োজনে আসি।এরকমই একবার হাতের নিচে স্ক্রেচ নিয়ে করিডোরে হাটছিলাম।হঠাৎ মেয়েটাকে দেখলাম রেলিঙের উপর ভর দিয়ে দাড়িয়ে আছে।আমার অফুরন্ত মন থাকার কারনে নার্স আন্টিদের সাথে ভাল জমেছিল।একজনের কাছে ওই মেয়েটার সম্পর্কে জিজ্ঞাস করলাম
কাহিনীটা বলা শুরু করে ছিলাম! আজকে সেটা শেষ
করতে চাই। (আগের বলা কথা গুলোর লিংক প্রথম
কমেন্টেই আছে) নার্স আন্টি বল্ল, মেয়েটার
জন্মের সময় থেকেই একটা মারত্নক ভাইরাস
চেপে বসেছে ওর উপর। যেটা ধীরে
ধীরে ওর আয়ু কমিয়ে আনছে। প্রতিদিন ৩০ হাজার
টাকার ইনজেঙ্কশান দেয়া হচ্ছে বাচিয়ে রাখার জন্য।
কিন্তু তাতেও মনে হয় কাজ হবেনা। ভাইরাসের
কারনে ওর লাঙ ফুটো হয়ে গেছে। একটা কিডনিও
নষ্ট হয়ে গেছে। আর পায়ে প্যরালাইস্ড। এই কথা
গুলো শুনে কান নিস্তব্ধ হয়ে গেল আমার। আমি
নিজের ব্রেইন এ্যাটাক আর পায়ে ফ্যাক্টচার নিয়ে
নিজেকে খুব আনলাকি মনে করতাম। এত দেখি
আমার রেকর্ড ভাইঙ্গা দিছে। আমি ধীরে ধীরে
মেয়েটার পাশে গিয়ে দাড়ালাম। 'হাই, তোমার নাম কি'
মেয়েটা শুধু শুষ্ক মুকে আমার দিকে তাকিয়ে
থাকল। আমি আবার বল্লাম, তোমার নাম কি? মাহি! শুধু এটা
বলেই ও দ্রুত ওর ওয়ার্ডে চলে গেল। আমিও
আমার বেডে গিয়ে বসলাম। কানে হেডফোন
লাগিয়ে জাব্রা সং ছারলাম। আর মেয়েটার দিকে
চোখ পড়তেই পরতেই দেখলাম ওর চোখ
দিয়ে টপটপ পানি পড়ছে। বিচিত্র ব্যাপার একটা
ওয়ার্ডের মাঝামাঝি সিটে একটা মেয়ে কাদছে আর
কেউ দেখছেনা! নার্স আন্টিকে জিজ্ঞেস
করলাম, সে বল্ল সিচুয়েশান খুব খারাপ। বেচে থাকার
চান্স ১৫%। আমি শুধু তার দিকে চেয়ে থক্লাম নিরবাক
হয়ে। আবার ওই বেদের দিকে তাকিয়ে দেখলাম
ও নেই। ন্নারস বল্ল, তাকিয়ে থেকে লাভ নেই
হাস্পাতাল থেকে ছুটি দিয়ে দিয়েছে। দাক্তারদের
আর কিছু করার নেই............
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১২:৫৩