somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বন্ধুত্তের মাঝে অন্যকিছু

২৯ শে এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ৯:৩৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



ক্লাস থেকে বের হয়েই মিলা আসিফের পাশাপাশি হাটতে থাকল। মিলা বলল
-আমার নোটগুলো পুরোপুরি হয়নি।
-তো?
-তো মানে!! তুমি আমাকে হেল্প করবে।
-আজ সন্ধার পরে আমার ফ্ল্যাটে এস। দুজন আড্ডা দেওয়ার সাথে সাথে নোটগুলো করব।
-ফ্ল্যাটে!!
-ভয় পাও নাকি!
-আরে নাহ। বন্ধুর বাসায় যেতে ভয় কিসের!! আচ্ছা তুমি ফ্ল্যাটে একাই থাক?

আসিফ হাটতে কাম্পাসের ফাকা জায়গায় বসল। আসিফ বসে'ই বলল
-হ্যা। আমি একাই থাকি।
-তোমার রান্না,কাপড় কাচা এইসব কাজ কে করে দেয়?
-আমি নিজেই করি। নিজের কাজ নিজে করতেই ভাল লাগে।
-সত্যি তুমি পার বটে। চল এবার উঠি। দুপুর তো হয়ে এল
-চল যাই।

আসিফ মিলার জন্য রিক্সা ঠিক করে বলল
-আচ্ছা, যাও তাহলে। আমি ওইদিকটা গিয়ে রিক্সা নিয়ে নেব।
-আচ্ছা। সন্ধার পরে দেখা হচ্ছে।

আসিফ মিলাকে রিক্সায় তুলে দিয়ে নিজের জন্য রিক্সা খুঁজতে থাকল। আসিফ মিলার বিপরীত দিকে থাকে। তাই আসিফ আর মিলা দুজনকে দুদিকে থাকতে হয়।

আসিফ একটা রিক্সা পেয়েই সেটাউ উঠে বসল। আসিফ আর মিলা দুজন দুদিকে থাকলেও তাদের ঘনিষ্টতা কম নয়। মাত্র দুমাসে'ই দুজন খুব ঘনিষ্ট বন্ধু হয়েছে, এতটা ঘনিষ্ট অনেক প্রেমিক প্রেমিকাও হয়না।

রিক্সায় বসে থাকা অবস্থায় আসিফের ফোন কেঁপে উঠল। পকেট থেকে বের করে দেখল, মিলার ফোন। ফোন ধরতেই মিলা বলল
-তুমি কি বাসায় পৌঁছে গেছ?
-না, কেন?
-আমিত সন্ধার দিকেই তোমার বাসায় আসব। তাই আমি এসে তোমার জন্য রাতের খাবার রান্না করব। আমরা দুজন একসাথে ডিনার করতে পারব।
-তুমি রান্নাও জানো নাকি!!
-অবশ্যই।
-তা কিরকম রান্না জানো?
-ভালই জানি।
-তাহলে তো তোমাকে আমার বাসায় রান্নার জন্য রেখে দিতে হয়।
-শুধু রান্নার জন্য!!
-বিনা বেতনে রান্না ছাড়া আর কি করবে!!
-সেটা পরে দেখব। তুমি কিন্তু ভাল বাজার নিয়ে যাবে।
-আচ্ছা।

আসিফ ফোন রেখে রিক্সাওয়ালাকে বাজারের দিকে যেতে বলল। কিনতে হলে টাটকা মাছ,সবজি এইসব কিনতে হবে।

আসিফ বাজার করে আবার রিক্সায় উঠে বাসার দিকে যেতে থাকল। ভালই বাজার করা হয়েছে।



মিলা বাসায় এসে ফ্রেশ হয়ে একটু রেস্ট নেওয়ার জন্য বিছানায় গাএলিয়ে দিল। আজ গরমে যেন এ একটু হাপিয়ে গেছে সবাই।

বিছানায় শুয়ে কখন ঘুমিয়ে পরেছে মিলা, সেটা বুঝতেই পারেনি। যখন ঘুম ভাঙল তখন বিকেল হয়ে গেছে।

মিলা হাতমুখ ধুয়ে মায়ের কাছে বলতে এল। মিলার মা আসিফের কথা শুনে আর অমত করল না। আসিফের সম্পর্কে মিলার বাবা-মা খুব ভালভাবে জানে।

হাতে নোট নিয়ে মিলা রিক্সায় উঠল। আসিফের বাসায় যেতে বিশ মিনিটের মত লাগে। এই রাস্তায় তেমন জ্যাম না থাকায় ঝামেলা কম।

মিলা রিক্সা থেকে নেমে সিড়ি বেয়ে উপর তলায় উঠতে থাকল। এর আগে একবার আসিফের ফ্ল্যাট খুঁজতে ঝামেলা হয়েছিল। এবার আর সে ঝামেলা হওয়ার সুযোগ নেই।

কলিংবেল চাপতেই আসিফ দরজা খুলে দিল। আসিফ মুচকি হেসে বলল
-ভিতরে এস।
মিলা আসিফের সাথে ভিতরে যেতে থাকল। মিলা ভিতরে গিয়ে বলল
-রান্না সেরে ফেলি তাহলে।
-এখন!! আমার সাথে চা খাবে?
-না। আগে রান্না করি। তারপরে নোট করার সময় চা খাওয়া যাবে।
-তাহলে আমি কি করব?
-আমাকে সাহায্য কর।

আসিফের সাথে মিথিলা রান্না ঘরে চলে এল। ততক্ষণে দিনের সন্ধ্যা নেমে এসেছে। আসিফ মাছ বের করে মিলার কাছে এগিয়ে দিল।

মিলা মাছ কাটা দেখে হেসে বলল
-তুমিতো কাজ এগিয়ে রেখেছ।
-ভাবলাম পরে ঝামেলা হবে, তাই আগেই এগিয়ে রাখলাম।
-তোমার বউ এর জন্য সুবিধা হবে।
-কিভাবে!!
-তুমি মাছ কেটে সাহায্য করবে।
-সেটা পরে দেখা যাবে। আপাতত তোমাকে সাহায্য করি।

এক পাশে ভাত আর অন্যপাশে মাছ রান্না চাপিয়ে দিল। আসিফ ভাত, আর মিলা মাছ রান্না করতে থাকল।

আসিফের ভাত রান্না হয়ে গেলে আসিফ বলল
-আমি এখন কি করব?
-এখন গল্প কর।
-কি গল্প করা যায়?
-সেটা জানিনা।
-আচ্ছা এমনি কথা বলি।

কথা বলতে বলতে মাছা রান্না হয়ে গেল। মিলা বলল
-এবারে তুমি গিয়ে টেবিল গুছাও। আমি খাবার দিচ্ছি।

আসিফ টেবিলে এসে টেবিল ঠিক করল। মিলা ততক্ষণে খাবার নিয়ে এসেছে। মিলা বলল
-গরম গরম খাবে?
-হ্যা।
-আচ্ছা তাহলে আমিও বসি।

আসিফ আর মিলা ভাত খেতে একটু সময় লেগে গেল। গরমের সময় ফ্যানের বাতাস থাকার কারনে ঝামেলা কম হল। তবুও একটু সময় লাগল।

আসিফের আগেই মিলার খাওয়া হয়েছিল। তাই সে আগেই রুমে এসে নোট লিখতে শুরু করে দিয়েছে। আসিফ একটু পরেই রুমে আসল।

আসিফ চেয়ার টেনে বসে মিলার দিকে তাকিয়ে বলল
-আমাকেও হেল্প করতে হবে?
-হ্যা। অবশ্যই।
-তাহলে তুমি লিখতে থাক। আমার এই নোট থেকে কপি কর।
-আর তুমি!!
-আমি তোমার পাশে বসে থাকি।

মিলা নোট লিখতে লিখতে খেয়াল করল, আসিফ তার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। মিলা আসিফের দিকে তাকিয়ে মিষ্টি হেসে বলল
-কি ব্যাপার তাকিয়ে আছ কেন?
আসিফ একটুও বিব্রত না হয়ে বলল
-এমনি।

মিলা সেদিকে পাত্তা না দিয়ে আবার আসিফের দিকে তাকাল। এবারে আসিফের দিকে তাকিয়ে একটু অবাক হল। মিলা আসিফের দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বলল
-আমাকে এত দেখার কি আছে!!
কথাটি বলার পরে মিলার মুখে আর হাসি খুঁজে পাওয়া গেল না। আসিফের দৃষ্টিতে অন্যকিছু দেখা যাচ্ছে। আসিফের চোখ থেকে যেন আগুন ঝরছে।

আসিফের চাহনিতে মিলা এবার ভয় পেয়ে গেল। আসিফের দিকে তাকিয়ে বলল
-এই কি হয়েছে তোমার!!
কথাটি বলার সাথে সাথে আসিফ মিলাকে জড়িয়ে ধরল। মিলা আসিফের ব্যাবহারে যেন আরো বেশি অবাক হয়ে গেল। এবারে মিলা রেগে গিয়ে বলল
-কি করছ এসব!!

আসিফের মুখে এখনও কোন কথা নেই। আসিফ কোন কথা বলেই মিলাকে দেওয়ালের সাথে ঠেসে ধরল। মিলা ছোটাত চেষ্টা চালিয়েও ছুটতে পারছেনা। আসিফ মিলার মাথা সজোরে দেওয়ালের সাথে আঘাত করল। মিলা ততক্ষণে একটু চুপ হয়ে গেল।

মিলা এখনও ছোটার চেষ্টা করছে। কিন্তু ছুটতে পারছেনা। আসিফ এবার মিলাকে জোর করেই বিছানায় নিয়ে গেল। মিলা বুঝতে পারছে তার সাথে কিছু হচ্ছে, কিন্তু কিছু বলা বা করার মত শক্তি নাই।

আসিফ এবারে মিলার শরির থেকে কাপড় খুলতে থাকল। খুলতে সময় লাগবে বলেই ছিড়তে থাকল। মিলা শুধু ছোটার চেষ্টা করছে। কিন্তু পারছে না।

আসিফ এবার মিলার শরীর নিয়ে খেলতে শুরু করল। মিলা যেন শুধু একটি মাংসপিণ্ড, আর আসিফ ক্ষুধার্থ বাঘের মত তার সাথে খেলতে শুরু করেছে।

মিলার শরীরে যেন একটু শক্তি এল। ছোটার জন্য আসিফকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিল। কিন্তু আসিফ পরে গিয়েও থেমে গেল না। মিলাকে ধরে এবারে আরো জোরে আঘাত করল। এতক্ষণে মিলার জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছে।

প্রায় ত্রিশ মিনিট হয়ে গেছে....
মিলার এতক্ষণে জ্ঞ্যান ফিরল। মিলা এতক্ষণে বুঝতে পারছে তার সাথে কি হয়েছে। মিলা মাথা তুলতে চেষ্টা করেও পারছে না। এবারে যেন আসিফের দিকে তাকাতে পারল। আসিফের চোখে একটুও অনুতপ্তের চিহ্ন নেই, চোখের মাঝে এখনও আগুন ধরছে।

আসিফকে কিছু বলতে যাবে এমন সময়ে আসিফ বড় একটা ছুড়ি পেটের মধ্যে চালিয়ে দিল। মিলা কিছু বলার আগেই তার জীবন মৃত্যুর দিকে চলে যেতে থাকল।

মিলার পেট থেকে এখনও রক্ত ঝড়ছে। কিন্তু এতক্ষণে মিলার প্রানপাখিও ঝড়ে গিয়েছে। আসিফ সব রেখে দিয়ে বাথরুমে চলে গেল।

বাথরুম থেকে বেড়িয়ে ফোনটা পকেটে নিয়ে রুম থেকে বেড়িয়ে এল। ফ্ল্যাটের চাবিও নিয়ে নিল। সবকিছু একবার দেখে আসিফ ফ্ল্যাট থেকে বেড়িয়ে এল।

ফ্ল্যাটের তালাটা আটকে দিল। চাবিটা বের করে পকেটে নিল। তারপরে হাটতে থাকল সামনের দিকে। আর পিছনে রেখে গেল একজম মিলার গল্প। যে মিলা ফ্ল্যাটের মাঝেই থেকে যাবে।

আসিফ রাস্তায় এসে একটা মুচকি হেসে মনে মনে বলল "আসিফ তুই এগিয়ে চল "। মিলাকে দিয়েই শুরু হল আসিফের মত একজন সাইকোর মিশন।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ৯:৩৭
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

গণতন্ত্র আর বাক-স্বাধীনতার আলাপসালাপ

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:২৩


একাত্তর সালে আওয়ামী লীগের লোকজন আর হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা ছিল পাকবাহিনীর প্রধান টার্গেট। যদিও সর্বস্তরের মানুষের ওপর নিপীড়ন অব্যাহত ছিল। গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল। মুক্তিযোদ্ধা আর তাদের পরিবারের... ...বাকিটুকু পড়ুন

কাফের কুফফারদের দেশে বাস করা হারাম।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:১৩

ফেসবুকে বাঙালিদের মধ্যে ইদানিং নতুন এক ফতোয়া চালু হয়েছে, এবং তা হচ্ছে "দাওয়াতের নিয়্যত ছাড়া কাফের কুফফারদের দেশে বাস করা হারাম।"
সমস্যা হচ্ছে বাঙালি ফতোয়া শুনেই লাফাতে শুরু করে, এবং কোন... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ২:৫৯

বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×