শ্রীমতি গীতা দত্ত,
আপনার কালজয়ী গানে কত যে চিত্ত
হয় অহর্নিশি উদ্বেলিত,
জানিনা সে হিসেব আছে কিনা কারো করায়ত্ত!
তবে এটুকু জানি,
কিশোর বয়সে যখন প্রথম এ গান শুনি,
সেই থেকে ছোট এক আশা বেঁধেছিল বাসা
বিরাণ এ বুকে,
কেউ একজন বলুক ডেকে,
নাই বা থাকলো কন্ঠে তার সুর, এত সুমধুর,
তবু কাছে এসে একান্তে বলুক, এ গান তোমার
'তুমি যে আমার, ওগো তুমি যে আমার’!
শ্রীমতি গীতা দত্ত,
যদিও আজ আপনি পরলোকগত,
আপনার কিন্নরী কন্ঠে আজও শুনে যাই
হৃদয় বিদীর্ণ করা সেই বিষাদের সানাই।
আপনি শুনিয়েছেন প্রেমাষ্পদকে কাছে পাবার
এক আদুরে আবদার; নিটোল ভালোবাসার
এ যেন এক চিরন্তন অধিকার তাকে শোনাবার
'তুমি যে আমার, ওগো তুমি যে আমার'!
(২৩শে নভেম্বর শ্রীমতি গীতা দত্তের জন্ম তারিখ। প্রায় চার বছর আগে ওনার জন্মবার্ষিকীতে তাঁর গাওয়া বহুল শ্রুত, আমার অতি প্রিয় এই কালজয়ী গানটির কথা স্মরণ করে এ কবিতাটি লিখেছিলাম। গানটির একটা লিঙ্ক নীচে দেওয়া হলো।)
তুমি যে আমার, ওগো তুমি যে আমার
গীতা দত্ত সম্পর্কে কিছু তথ্যঃ
গীতা দত্ত (জন্ম নাম গীতা ঘোষ রায় চৌধুরী) আমাদের ফরিদপুরের ইদিলপুরে ১৯৩০ সালে জন্মেছিলেন, বর্তমানে তা শরীয়তপুর জেলার গোসাইরহাট উপজেলায় অবস্থিত। চল্লিশ শতকের গোড়ার দিকে তার পরিবার এখানে সহায় সম্পত্তি ফেলে রেখে ভারতের বোম্বেতে চলে যান। ১৯৫৩ সালে তিনি ভালবেসে চিত্র পরিচালক গুরু দত্তকে বিয়ে করেন। তার বড় ছেলে তরুণ দত্ত মাত্র ৩১ বছর বয়সে মারা যান। মেজ ছেলে অরুণ দত্তও কম বয়সে (৫৫) দেহত্যাগ করেন। ছোট মেয়ে নীনা দত্ত এখনো জীবিত আছেন, তার বয়স এখন ৫৪ বছর। তার স্বামী গুরু দত্ত যখন চিত্রাভিনেত্রী ওয়াহিদা রেহমানের সাথে প্রেম প্রণয়ে জড়িয়ে পড়েন, তখন থেকে তার জীবনে নেমে আসে দুঃখ ও অশান্তির কালো ছায়া। অবশেষে তাদের বিয়েটা যখন ভেঙে গেল, সেই সাথে শেষ হয়ে গেল একজন সঙ্গীত শিল্পী হিসেবে তার বিকাশমান ক্যারীয়ার। তিনি ক্রমে ক্রমে মাদকতায় আসক্ত হতে থাকেন। ১৯৬৪ সালে গুরু দত্ত অতিরিক্ত মদ্যপান এবং ঘুমের বড়ি সেবন জনিত কারণে মৃত্যুবরণ করেন। এর আগে তিনি দুইবার আত্মহত্যার প্রচেষ্টা নিয়েছিলেন বলে তার এ মৃত্যুকেও আত্মহত্যা বলেই ব্যাপকভাবে মনে করা হয়। তার মৃত্যুতে গীতা দত্ত মুষড়ে পড়েন এবং ধীরে ধীরে তার নার্ভাস ব্রেকডাউন হয়। তিনি কঠিন আর্থিক সমস্যায় নিপতিত হন। ১৯৬৭ সালে তিনি বধূ বরণ নামে একটি বাংলা চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত সঞ্জীবকুমার-তনুজা অভিনীত হিন্দী ছবি অনুভব এর বেশ কিছু গানে তিনি শেষবারের মত কন্ঠদান করেন। ১৯৭২ সালে তিনি অতিরিক্ত মদ্যপানের কারণে লিভার সিরোসিস রোগে আক্রান্ত হয়ে মাত্র ৪২ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন।
(তথ্যসূত্রঃ উইকিপিডিয়া)
ঢাকা
২৩ নভেম্বর ২০১৪
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১:৪৯