তূর্য কখনোই মুখ ফুটে তন্বীকে বলতে পারেনি, ‘ভালবাসি’। বরং মাঝে মাঝে সে তন্বীর নিছক সৌজন্যমূলক কথাবার্তাকেও অতি আগ্রহ গণ্য করে নিজেকে দূরে সরিয়ে রেখেছে। অথচ ভেতরে ভেতরে সে অনুভব করেছে, তার সকল চিন্তা চেতনা, ধ্যান ধারণা তন্বীকে ঘিরেই। তন্বী বুদ্ধিমতী মেয়ে। সে জানতো, দুটো সমান্তরাল রেখা একে অপরের দিকে তাকিয়ে থাকতে পারে, এক হতে পারে না।
কিন্তু প্রখর বুদ্ধিমতী হলে কী হবে, তন্বীও তো আজন্ম অন্তর্মুখী। সে পরিস্থিতি অনুধাবন করতে পারে, কিন্তু ঘটানোর উপক্রম করতে পারেনা। তারও ভেতরে সে এক অনির্বচনীয় আকর্ষণ অনুভব করে তূর্যের প্রতি, কিন্তু নানা ছলা কলার আশ্রয়ে সে সেই অনুভূতি ঢেকে রাখতে পারঙ্গম। তাই ওদের জীবন বয়ে চলে সামান্তরিকের সমান্তরাল রেখার মত।
দিনশেষে ওরা উভয়ে একান্ত অবসরে সঙ্গীতাশ্রয়ী হয়। প্রতিদিন গানের কথা থেকে একটিমাত্র চরণ বেছে নিয়ে ভাবতে থাকে.... অবাক হয়ে ভাবে ওদের নিজের কথাটা গীতিকবি কি করে এত সুন্দর করে বলে গেলেন! কাকতালীয়ভাবে, ওরা আজ দু’জনেই শুনছে দ্বিজেন্দ্রলাল রয় এর গান, আজি তোমার কাছে ভাসিয়া যায়..... আজ ওরা শেষ লাইনটি শোনার জন্যই গানটি বারবার শুনছে!!!
(শব্দ সংখ্যাঃ ১৬০)
ঢাকা
২৮ মার্চ ২০১৯
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে মার্চ, ২০১৯ বিকাল ৪:৫১