বাংলাদেশ যে একটি প্রাচীন জনপদ তা আজ সর্বজনস্বীকৃত। রামায়ণ, মহাভারতসহ প্রাচীন অনেক কাব্য/রচনায় বঙ্গ ও তার নিকটবর্তী জনপদগুলোর নামের উল্লেখ পাওয়া যায়। বঙ্গ ও সংযুক্ত জনপদগুলো
(পুণ্ড্রবর্ধন, সমতট, হরিকেল, রাঢ় ইত্যাদি) নিয়েই আজকের বাংলাদেশ গঠিত। ১৯০৭ সালে নেপালের রাজদরবার গ্রন্থাগার থেকে পণ্ডিত হরপ্রসাদ শাস্ত্রী ( প্রকৃত নাম স্বর্গীয় শরৎনাথ ভট্টাচার্য) চর্যাপদ উদ্ধার করে প্রমান করেছেন বাংলা কাব্যকলাও হাজার বছরের ঐতিহ্য সমৃদ্ধ।
বাংলাদেশের আরেক নাম নদীমাতৃক/ নদীমেখলা
বাংলাদেশ।নদী বাংলাদেশের জীবনধারায় ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে। বাংলাসাহিত্যের রথীমহারথীরা নদী নিয়ে বিস্তর কবিতা/গান/উপন্যাস লিখে বাংলার মানুষের নদীসংল্গনাতাকেই তুলে ধরেছেন। রবিঠাকুরের 'রূপনারাণের কূলে' (গঙ্গার প্রাচীন নাম), নজরুলের 'পদ্মার ঢেউ রে..", মধুসূদনের 'কপোতাক্ষ নদ', মানিকের 'পদ্মা নদীর মাঝি,, অদ্বৈতমল্ল বর্মনের 'তিতাস একটি নদীর নাম' আহসান হাবীবের 'মেঘনাপারের ছেলে' ইত্যাদি।
আর হূমায়ুন কবীর তাঁর 'বাঙলার কাব্য' নামক বইয়ের প্রথম লাইনেই লিখেছে, "বাঙলা চিরকালই কবিতার দেশ।"
বাংলাদেশের মানুষের নদী আর কাব্যপ্রিয়তার যুগল স্বাক্ষর হয়ে উঠেছে বাংলাদেশের বেশিরভাগ নদীর অসম্ভব সুন্দর কাব্যময় নামগুলো। কোন কোন নাম না জানা কবিমনের পূর্বসূরীরা এসব নদীর সুন্দর কাব্যময় নাম দিয়ছেন তা আর জানার কোন উপায় নেই। সেই নাম না জানা কবিদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বাংলাদেশের সুন্দর কাব্যময় কিছু নাম তুলে ধরলাম-
পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা এ তিনজনতো নদীজগতের শীর্ষনাম। তারপর ধরুন তিতাস(ব্রাক্ষণবাড়িয়া), শীতলক্ষা( নারায়ণগঞ্জ), করতোয়া
( দিনাজপুর,রংপুর,বগুড়া), তিস্তা (লালমণিরহাট) দুধকুমার, ধরলা(কুড়িগ্রাম), চিত্রা(নড়াইল), ধানসিড়ি,জলসিড়ি,জলাঙ্গী(বরিশাল), কর্ণফুলী,সাংগু/শঙ্খ(পার্বত্য চট্টগ্রাম ও চট্টগ্রাম), কপোতাক্ষ(যশোর), গোমতী, সালদা (কুমিল্লা), আত্রাই, নাগর (নওগাঁ,বগুড়া), মালঞ্চা, রূপসা (খুলনা), মহানন্দা(চাঁপাই), সুরমা,কুশিয়ারা,পিয়াইন (বৃহত্তর সিলেট), ইছামতি(পাবনা), ধলেশ্বরী(মানিকগঞ্জ), খোয়াই, সোনাই, সুতাং(হবিগঞ্জ)
আরো অনেক সুন্দর নাম আছে যা আপনারা জানেন, আমার এ মুহূর্তে মনে পড়ছে না। আপনারা যদি অংশ নেন তাহলে হাজার নদীর বাংলাদেশের একটা হালনাগাদ তালিকা হয়ে যেতে পারে। গদ্যকবিতাময় নামগুলোরও একটা আলাদা তালিকা হতে পারে।
সবার সহযোগিতা চাইছি।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই মে, ২০০৯ দুপুর ১২:২৫