somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমাদের সংস্কৃতি জগতে পরিবারতন্ত্র ! - ৯

২৩ শে জুন, ২০১১ বিকাল ৩:৫৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আগের পর্ব-
Click This Link

ড. মুহাম্মদ ইউনুস নোবেল পুরস্কার জিতে দেশের গৌরব কতোটা বাড়িয়েছেন সেটা বিদেশে না গেলে অনুভব করা যাবে না। ২০০৮ সালে ২১ দিন চীনে ছিলাম। এই একুশ দিনে চীনের ইংরেজী দৈনিকগুলোতে একবারই বাংলাদেশের কথা পড়েছি। সেটার উপলক্ষ ইউনুস। এক চীনা লেখিকা ইউনুসের আত্মজীবনী ''গরীবের ব্যাংকার'' চীনা ভাষায় অনুবাদ করেছেন। বইটি নিয়ে আলোচনা আর অনুবাদকের সাক্ষাৎকার। এ ছাড়া মিডিয়ায় বাংলাদেশের কোন সংবাদ দেখিনি। তখন আমাদের সাথে ছয় মহাদেশের ৪৩টি দেশ থেকে ৭২ জন সেমিনারে গিয়েছিলেন। নেপাল আর পাকিস্তানের প্রতিনিধি ছাড়া কেউ বাংলাদেশ সম্পর্কে জানেন না। কিন্তু গ্রামীন ব্যাংক এবং ইউনুস সম্পর্কে অনেকেই দেখলাম উচ্ছ্বসিত। মালয়েশিয়ার উন্নতির সুনাম বিশ্ব জুড়ে। সেই মালয়ীদের যখন ইউনুসের নোবেল প্রাইজের কথা বললাম তখন বললো এখানে তোমাদের চেয়ে আমরা পিছিয়ে আছি। ইউনুসের ভাই ড.মুহাম্মদ ইব্রাহীম টিভি উপস্থাপক, বিজ্ঞান সাময়িকী'র সম্পাদক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞানের অধ্যাপক। তাদের ছোট ভাই মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর সাংবাদিক ও টিভি উপস্থাপক। ইউনুসের প্রথম সংসারের কন্যা মনিকা সংগীত শিল্পী।

ড.শহীদুল্লাহর পর বহুভাষায় (১৬/১৭টি) পণ্ডিত ছিলেন ড.সৈয়দ মুজতবা আলী। (মজার বিষয় মুজতবা আলীর কাছে থেকে বগুড়া আজিজুল হক কলেজের অধ্যক্ষের দায়িত্ব নিয়েছিলেন ড.শহীদুল্লাহ) দুই বাংলায় লেখক হিসাবে মুজতবা আলীর খ্যাতি প্রবাদতুল্য। দুই বাংলা থেকেই তাঁর রচনাবলী প্রকাশিত হয়েছে। মুজতবা আলী যখন সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র তখনই রবীন্দ্রনাথকে চিঠি লিখে জানতে চেয়েছিলেন, আকাঙ্খা উচ্চ করিতে হয় কি প্রকারে ? রবীন্দ্রনাথ নীল খামে সে চিঠির জবাবও দিয়েছিলেন। পরে শান্তি নিকেতনে পড়তে যান তিনি। তাঁর ভাই মুর্তজা আলী ছিলেন প্রশাসনের উচ্চ পদে কর্মরত। মুজতবা যখন বগুড়া আজিজুল হক কলেজের অধ্যক্ষ তখন তার ভাই মুর্তজা ছিলেন বগুড়ার জেলা প্রশাসক। তিনি ছিলেন একজন ভালো গদ্য লেখকও। আরেক ভাই মোস্তফা আলীও লেখক ছিলেন। এরা আলী ভ্রাতৃত্রয় নামে খ্যাত। মোস্তফা আলীর ছেলে এম এম আলী ছিলেন ডন-এর সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার, হংকং স্টান্ডার্ড এবং ব্যাংকক টাইমসের (থাইল্যাণ্ড) নির্বাহী সম্পাদক। তিনি ডেইলী স্টারের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক। লেখক হিসেবেও তিনি ছিলেন উঁচু দরের। ডেইলী স্টার আমাদের ইংরেজী সাংবাদিকতার ধারাই বদলে দিয়েছিলো। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজীর অধ্যাপক, বিটিভির ইংরেজী সংবাদ পাঠক ও লেখক ড.সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলাম মুজতবাদের ভাগ্নে।

তুষার গায়েন স্থপতি ও কবি। তার ভাই তাপস গায়েন কবি। দুজনেই এখন দূর প্রবাসে। তাদের বোন ড.কৃষ্ণা গায়েন সরকারের উপসচিব। আরেক বোন ড. কাবেরী গায়েন লেখক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক। আরেক বোন অদিতি ফাল্গুনী লেখক ও কবি।

স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের অন্যতম আকর্ষন ছিলো চরম পত্র। চরম পত্রের লেখন ও উপস্থাপক ছিলেন মোহাম্মদ রওশন আকতার ওরফে এম আর আকতার মুকুল। তিনি পরে এক জন লেখক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। তার সাগর পাবলিশার্স বেইলী রোডের অন্যতম আকর্ষন। তার ভাই মোস্তফা নূরুল ইসলাম সম্প্রতি জাতীয় অধ্যাপক হয়েছেন। মননশীল লেখক, গবেষক, সম্পাদক ও উপস্থাপক হিসাবে তিনি দারুন প্রিয় মানুষ।

আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের বাবা বি এম ইলিয়াস ছিলেন মুসলিম লীগের নেতা এবং পাকিস্তান সরকারের মন্ত্রী। অথচ ইলিয়াস পাঁড় বাম। তার চিলে কোঠার সেপাই বা খোয়াব নামা বহুল পঠিত উপন্যাস। তার ভাই খালেকুজ্জামান ইলিয়াস লেখক ও অধ্যাপক।

অধ্যাপক মাজহারুল ইসলাম বিশিষ্ট ফোকলোর বিশেষজ্ঞ, লেখক ও গবেষক। ছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। তার ভাই অধ্যাপক আবদুল খালেকও ফোকলোর বিশেষজ্ঞ ও লেখক। তিনিও ছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। মাজহারুল ইসলামের ছেলে চয়ন ইসলাম রাজনীতিবিদ ও রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী।
(চলবে)

পরের পর্ব-
Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে জুন, ২০১১ দুপুর ১:০৫
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদী নামের এই ছেলেটিকে কি আমরা সহযোগীতা করতে পারি?

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১০:০৪


আজ সন্ধ্যায় ইফতার শেষ করে অফিসের কাজ নিয়ে বসেছি। হঠাৎ করেই গিন্নি আমার রুমে এসে একটি ভিডিও দেখালো। খুলনার একটি পরিবার, ভ্যান চালক বাবা তার সন্তানের চিকিৎসা করাতে গিয়ে হিমশিম... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্য অরিজিনস অফ পলিটিক্যাল জোকস

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১১:১৯


রাজনৈতিক আলোচনা - এমন কিছু যা অনেকেই আন্তরিকভাবে ঘৃণা করেন বা এবং কিছু মানুষ এই ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন। ধর্ম, যৌন, পড়াশুনা, যুদ্ধ, রোগ বালাই, বাজার দর থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভালোবাসা নয় খাবার চাই ------

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৯ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:০৬


ভালোবাসা নয় স্নেহ নয় আদর নয় একটু খাবার চাই । এত ক্ষুধা পেটে যে কাঁদতেও কষ্ট হচ্ছে , ইফতারিতে যে খাবার ফেলে দেবে তাই ই দাও , ওতেই হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাতীয় ইউনিভার্সিটি শেষ করার পর, ৮০ ভাগই চাকুরী পায় না।

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৯ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৭



জাতীয় ইউনিভার্সিটি থেকে পড়ালেখা শেষ করে, ২/৩ বছর গড়াগড়ি দিয়ে শতকরা ২০/৩০ ভাগ চাকুরী পেয়ে থাকেন; এরা পরিচিত লোকদের মাধ্যমে কিংবা ঘুষ দিয়ে চাকুরী পেয়ে থাকেন। এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×