একটি দেশ উন্নত হয় একটি সুশীল সমাজ পেলে, একটি সুশীল সমাজ উপহার দেয় একটি সুশীল জাতি। আর একটি সুশীল জাতি উন্নত হয় একটি দেশের শিক্ষার উপর নির্ভর করে। কিন্তু সেই শিক্ষাই যদি ধ্বংস করে দেয় দেশের জাতিরা। তাহলে সেই দেশটি ধ্বংস হতে আর কি কিছু প্রয়োজন আছে?
কথায় আছে “শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড” এই কথাটির অর্থ আমাদের দেশের জাতির কাছে কতটুকো সত্য তা আমার জানা না। যেখানে একটি জাতির উন্নতির কারণ হয় যদি শিক্ষা, তাহলে সেই শিক্ষাকে কেনো জাতি ধ্বংস করে দিচ্ছে ধিরে ধিরে? এটা হলো আমার দেশের অর্থ্যৎ বাংলাদেশের শিক্ষা এবং জাতির কথা বলছি। আমি গত কয়েক বছর যাবৎ দেখে আসতেছি প্রশ্ন ফাঁস, প্রশ্ন ফাঁস, প্রশ্ন ফাঁস। পাবলিক পরিক্ষাগুলোতে প্রশ্ন ফাঁস হচ্ছে, জেএসসি, এসএসসি, এইচএসসি পরিক্ষায়, পাবলিক কলেজ, ইউনিভার্সিটির ভর্তি পরিক্ষায়, সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে পাবলিক প্রতিষ্ঠান গুলোতে লিখিত পরিক্ষায়, সবখানে প্রশ্ন ফাঁস হচ্ছে। কিন্তু কেনো? এর উত্তর কোথায়? কোথায় পাবো এর উত্তর, কাদের কাছে পাবো এর উত্তর?
কারা এই ধ্বংসকারী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান, তাদেরকে জাতির কাছে কেনো মুখোস টেনে বের করে আনা হচ্ছে না। কেনো আজকের প্রজন্মের জাতিগুলোকে ধ্বংস দিচ্ছে। অন্যান্য জাতি থেকে কেনো এ জাতিকে নিচের দিকে নামানো হচ্ছে। অন্যান্য জাতিরা কখনোই নিজারা নিজেদেরকে ধ্বংস করে না এই ভাবে। “যে জাতি যত বেশি শিক্ষিত সে জাতি তত বেশি উন্নত”। কিন্তু আমাদের স্বাধীন দেশে, স্বাধীন জাতিরা আজকে কি করছেন? উন্নত তো দূরের কথা আরো অবনতির দিকে ঠেলে দিচ্ছে। প্রতিবারের মতো এবারও এসএসসি পরিক্ষার প্রশ্ন ফাঁস হচ্ছে। কেউ ঠেকাচ্ছে না এই ধরনের অকর্ম কাজ। না আইন, না প্রশাসন, না দেশের সরকার, না মন্ত্রীমহোদয়। দেশের ডিজিটাল হচ্ছে বেশ ভালো কথা, তাই বলে এমন ডিজিটাল। যে ডিজিটাল মানুষের জীবন ধ্বংস করার রাস্তা বের করে দিচ্ছে, যে ডিজিটালের কারণে ধ্বংস হচ্ছে শিক্ষা। ডিজিটাল ছাড়া কি মানুষ বিখ্যাত হয়নি? হয়েছে। আগেকার দিনে এই রকম ডিজিটাল লেখাপড়া থেকে ভালো লেখাপড়া করেছে মানুষ। কিন্তু ইতিহাসের কোন পাতায় নাই এই রকম প্রশ্ন ফাঁসের কথা, এই রকম ডিজিটাল পড়ালেখার কথা। বিদ্যা যদি শিখতেই হয় তাহলে কেনো চুরি করে শিখবো বা শিখাবো। বিদ্যা যদি শিখতে হয় তাহলে, শিখার মতো শিখবো, যাতে একটি জাতি অর্জন করে একটি দেশের সুন্দর ভবিষৎ। আসল বিদ্যা যদি শিখতে না পারি তাহলে মুখস্ত আর নকল বিদ্যা দিয়ে নিজেকে আর দেশকে কেনো মিথ্যের আশ্রয় দিবো। গাছে ফুল ফোটার আগে যদি কলিটাকে ছিড়ে ফেলে দেওয়া হয়, তাহলে সে গাছে ফুল ফুটবে কি করে, আর তার সৌদর্য্যই বা ছড়াবে কি করে।
যে শিক্ষার জোড়েই ধরে রাখে একটি দেশের উন্নত, সেই জোড়টাকেই তো ধ্বংস করে দিচ্ছে দিনে দিনে দেশের শত্রুরা। “দেশের জাতি দেশেরি শত্রু” পরিনত হচ্ছে।শিক্ষাই হলো জাতির বেচে থাকার ভিত্তি। যদি সেই ভিত্তিটাকে উগলিয়ে ফেলে দেয় তাহলে দেশ বাচবে কি করে? কেনো এমন হচ্ছে আজ দেশে, কেনো এর বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না। আর ব্যবস্থা করলেই বা তা জোড়পূর্বক হচ্ছে না কেনো? নাকি ক্ষমতার অপব্যবহার করছে। নাকি দেশ থেকে শিক্ষা ব্যবস্থা উঠিয়ে দিয়ে ব্রিটিশদের মতো ক্ষমতা চালাবে। তারা হবে রাজা আর সাধারণ মানুষ হবে প্রজা।যাদের ক্ষমতা আছে তারাই কি টাকা নিয়ে খেলা করবে আর দর্শক হবে সাধারণ মানুষ, তাদের টাকার খেলা দেখবে। তাহলে কি আমরা ধরে নিবে যারা টাকার খেলা দেখাবে তারাই শিক্ষাকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। আর আগামী প্রজন্মরা যাতে টাকা নিয়ে খেলতে না পারে সেই জন্য ধ্বংস করা হচ্ছে শিক্ষাকে। এখন যারা টাকা খেলার প্লেয়ার তারাই আগামীতে হবে প্লেয়ার, দ্বিতিয় অন্য কেউ হতে পারবেনা। বাকিরা হবে সব তাদের খেলা দেখার দর্শক। যাতে জাতি শিক্ষিত না হতে পারে সেই ব্যবস্থাই কি করছে আমাদের গুরুজনরা?
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৩:০১