অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে ঠকবাজের তুলকামাল সব থেকে বেশি। ধরতে গেলে বাংলাদেশে 100 জনের মথে 50 জনই ঠকবাজ। এই 50 জন হলো ব্যবসায়ী বা বিভিন্ন চাকরুজীবি। আর বাকি 50 জন হলো সাধারণ জনগণ, মানি ভোক্তভূগী। প্রতিদিনই এই 50 জন মানুষ এই 50 জনের ঠকবাজদের কবলে পড়তে হয়। কিন্তু এদেরকে মাথায় উঠেচ্ছে কারা? আমরাই তো এদের মতো ঠকবাজদের মাথায় উঠাচ্ছি। দেশের সোনার টুকরো ছেলে-মেয়েরা ভয় পায় এদের বিরুদ্ধে কথা বলতে। এইসব পাবলিকরা একটুও ভাবেনা এই সব ঠকবাজদের কারণে আগামী ভবিষৎ কি হবে, এর পরিনাম কোন দিকে যাবে আগামী প্রজন্মদের জন্য? আজি আমি কিছু পয়েন্ট দিচ্ছি, এই সব ঠকবাজদের। যা দেখে জনগণ হয়তো কিছু নড়ে উঠবে, তবে সচেতন বা দায়িত্ববাণ হবে না।
1. প্রথমই আমি বলবো খাদ্যের কথা। যা মানুষ প্রতিদিন খায়, আর বেচে থাকে এই খাবারের উপর।পৃথিবীতে সৃষ্টিকর্তা সব থেকে বেশি সৃষ্টি করেছেন খাদ্য, যা মানুষের জীবন নির্ভর করে বেচে থাকার জন্য। তাই খাদ্য ছাড়া মানুষ কখনোই বেচে থাকতে পারে না। কিন্তু এই খাদ্যতেই যদি মিশানো হয় মরণ নামক কোন বিষক্ত মেডিসিন, তাহলে মানুষ কিসের উপর নির্ভর করে বেচে থাকবে।প্রতিদিন মানুষ ভাত, ডাল, মাছ-মাংস, শাক-সবজি, ফল-মূল এমনকি শুকনো খাবার। এগুলোই তো মানুষের বেচে থাকা নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্য।এগুলোতেই যদি ভেজাল থাকে তাহলে মানুষ তো মৃত্যুর পথচারী হবেই।আমি সামান্য একটু উদাহরণ দিচ্ছি- একদিন এক দোকানে ফল কিনার জন্য গিয়েছি। কি সুন্দর দেখতে শক্ত- সমার্থ্য ফল, মনে হয় যেন এই মাত্রই গাছ থেকে পেরে এনেছে।কিন্তু এর মধ্যে যে এক জাতীয় বিষ দিয়ে আমাদের ঠকাচ্ছে! আমি দোকানদার কে মুখের উপর বলে দিলাম, আপনারাতো এগুলোতে ফরমালিন দিয়ে রাখেন কি করে খাবো আমরা, খেতেও ভয় হয়।“কি কন না মা, ফরমালিন তো এখন সব খাবারেই দেয় ব্যবসায়ীরা”।এমন কোনো খাবার নাই যে খাবারে ফরমালিন নাই রে মা। তয় মা খাইলে এতো তারাতারি মরবেন না। আস্তে আস্তে মরবেন। চাচার কথা শুনে হাসলাম, তারপর জিজ্ঞেসা করলাম কেনো দেন চাচা এই বিষ? মারে আমরা দেই না দেয় তো আমাগো থেকে বড় বড় ব্যবসায়ীরা। যাতে না পচে যায়।
তাহলেকি জনগণ এমন করেই বসে থাকবে এদের বিরুদ্ধে কিছু না করে? শুনিছি এর বিরুদ্ধে নাকি কিছু চাপাবাজরা কিছু করছেন কিন্তু কই আমরা তে কিছুই দেখিনা। আমরাতো প্রতিদিনই বিষ খাচ্ছি। আগেকার দিনেও তো এই সব খাবার ছিলো কই তারা তো কেউ বলে না আগেও এমন ফরমালিন দিতো খাবারে। তাহলে এখন কেনো দেয়?
2. 2য় বলবো পোশকা-আশাক- পোশাক-আশাকের ব্যবসায়ীরা হলো আরেক ঠকবাজ। পোশাক আামাদের নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস। তাই এখানেও ঠকবাজদের খপ্পর। এরা পাইকারি দরে 500/400 টাকার থ্রিপিছ কিনে কিন্তু তারা বিক্রি করে একেকটি থ্রিপিছ 2000/2500 টাকায়। ধরে নিলাম, তাদের সংসার আছে, দোকান ভাড়া দিতে হবে, নিজেদের চলতে হবে ইত্যাদি ইত্যাদি। আমি এখানে শুধু থ্রিপিছের কথাই বলি অন্য গুলো না হয় বাদই দিলাম। কিন্তু ব্যবসার কাজও যদি হয় লোক ঠকানো তাহলে মনের দুঃখ কোথায় রাখবে জনগণ। ধরুন কিনে নিলাম 500/400 টাকার থ্রিপিছ 2000/2500 টাকায়। এখন আমি এই পোশাকটি 15 দিনও যদি পড়তে না পারি তাহলে কি লাভ হলো। গরিবেরা তো এক/দু’বছর না পড়ে ফেলতে পারেনা। তাই গরিব কিংবা মধ্যবিত্ত মানুষদের কষ্ট তো হবেই। শুনেছি ধনিরা একটি পোশাক 5/6দিন গায়ে জড়িয়ে ফেলে দেয়। কিন্তু গরির বা মধ্যবিত্তরা তারা কি করবে? এখন আমাকে দিয়ে ছোট্ট একটি উদাহরণ দেই। আমি একটি থ্রিপিছ কিনেছি, আজ থেকে 3 বছর আগে একজন মহিলার কাছ থেকে, মহিলা বাসায় বাসায় বিভিন্ন ধরনের পোশাক বিক্রি করেন তার কাছ থেকে কিনেছি থ্রিপিছটি । বেচারি সেই থ্রিপিছটি এখনো নষ্ট হয়নি ভাতের মার দিয়ে ধুইলে আবার নতুন হয়ে যায় 3 বছর আগে যেমন রংয়ের কিনেছিলাম সেই এইক রং হযে যায় মার দিয়ে ধুলে। দাম ছিলো মাত্র 600 টাকা! এই জামাটির সাথে আরো কত যে জামা কিনে গায়ে দিয়ে ফেলে দিয়েছি তার কোনো ইয়াত্তা নেই। কারণ একটাই 600 টাকার পোশাক হলেও “কোয়ালিটি আছে বসের”। দুঃখের বিষয় হলো 600 টাকার পোশাকটি এখনও টিকে আছে কিন্তু 2000/2500/3000/4000 টাকার পোশাকগুলো আমি এক মাসও গায়ে জড়াতে পারিনি শোরুম থেকে কিনা সেগুলো পনেরো দিন পর রং উঠে সাদা হয়ে গিয়েছে। টাকার জন্য দুঃখ লাগে না লাগে সেই সব ঠকবাজদের জন্য। টাকা নিস ভালো কথা, ভালো কোয়ালিটির তো দিবি। যাতে মানুষ না ঠকে। কি দরকার আছে এই রকম ঠকবাজি করার। আল্লাহ বলেছেন- “তোমরা ব্যবসা করো মানুষ ঠকিও না, ওজন ঠিক মতো দিও, ওজন কমিয়ে দিয়েও না, তাহলে এর হিসাব আমি কিয়ামতের দিন নিবো”
এই ঠকবাজরা আর কত ঠকাবে আমাদের মতো সাধারণ জনগণদের, জানা নাই আমার। তারা কি কখনো পরিবর্তন হবে, নাকি হবেনা? এদের বিরুদ্ধে কেউ কি কখনো দাড়াবে, নাকি দাড়াবে না? এদের শাস্তি কি হবে, নাকি হবেনা।
3. আমাদের বিভিন্ন জায়গায় যাত্রা পথে আমাদের ভোগান্তরিত হতে হয়। সেখানে হয় গাড়িওয়ালা না হয় টেক্সিওয়ালা, আবার রিক্সাওয়ালারাও কম নয় এই বিষয় থেকে পিছিয়ে। সরকারি কর্মকর্তা/কর্মচারীদের বেতন বেড়েছে তাই তাদেরও বেতন বাড়বে এটাই তো কথা তাইনা। মাজ খান থেকে বেতন বাড়লো না সাধারণ বেসরকারি, কর্মকর্তা/কর্মচারীর, গরিব, দুঃখিনীদের। প্রতিটি বাস-গাড়িওয়লারা পাঁচ টাকা করে বেশি বেশি ভাড়া নেয় জনগণ থেকে এতে জনগণ কিচ্ছু বলে না, কারণ তারা ভদ্রলোক। ভদ্রলোকিপানা দেখিয়ে পকেট খালি করে আর পকেট ভরে য়েয়ে গাড়ির মালিক-সমিতি আর মন্ত্রী-এমপিদের। সেটা না হয় গেলো, রিক্সাওয়লারা 20 টাকার ভাড়া নেও 30/40 টাকা। বুঝলাম তারাও খেটে খাওয়া মানুষ, তাদের নিজেদের পেট, চামচা-চাঁদাবাজিদের পেট ভরাতে হবে, আর পুলিশের তো পেট ভরে রাখতেই হবে। তা না হলেতো আবার ডান্ডার বারি খেতে হবে। সব দিক থেকে সবাই ছাড়া পেলো পেলামনা শুধু আমরা সাধারণ জনগণ। এই ভাবেই প্রতিদিন ভি আইপিদের পেট ভরা থাকে, থাকেনা শুধু সাধারণ আর গরিব-দুঃখী জনগণদের। আমার কথা হলো এই ভাবে আর কতদিন ভিআইপিদের পকেট ভরে রাখতে হবে সাধারণ জনগণদের? আর কত ঠকবে জনগণ, এর থেকে বাচার কি কোন পথ নেই?
আমি এখানে সব টকবাজদের কথা উল্লেখ্য করতে পারিনি। তবে প্রতিটি মানুষেরই জনা আছে প্রতিদিন-প্রতিনিয়তি জনগণ কি পরিমাণ ঠকছে, আর ঠকবাজরা ঠকাচ্ছে। আমার প্রশ্ন কখনো কি এর থেকে মুক্তি পাবো আমরা?
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৪:৩৫