খুব একা আমি,
একাকিত লাগে আমাকে।
এই শহরে, এই উচু দালানে।
এই পিচ-ঢালা রাস্তা,
আমাকে খুব একা করে দিয়েছে।
আমার কিচ্ছু ভালো লাগেনা।
দম বন্ধ হয়ে যায় এই শহরে।
এখানে কিচ্ছু নেই,
সবটাই নকল।
আমার গঞ্জে, অনেক কিছু আছে।
কুঁড়ের ঘর আছে, মাটি আছে।
পুকুর আছে, খাল আছে।
বিল আছে, ক্ষেত আছে।
গোলা ভরা ধান আছে,
সোনালী আঁশ আছে।
সবার ভালোবাসা আছে।
আমার গঁঞ্জ আমাকে;
খুব.... সুখে রাখে।
আমি আমার গঞ্জে যাবো।
পুকুরে মাছ ধরবো,
চাষাদের চাষ করা দেখবো।
রাখালের বাশিঁর সুরে
উদাসীন হবো।
দৌড়িয়ে, দৌড়িয়ে মাঠে-ঘাটে,
গ্রাম-গঞ্জে, সাথিদের নিয়ে খেলবো।
বুড়িমাকে পান পিশে দিবো।
বুড়িমা এক গাল পান মুখে নিয়ে।
থু-থু ছিটিয়ে রুপকথার,
গল্প শুনাবে আর-
মাথায় বিলি কেটে দিবে।
আমি গল্প শুনতে শুনতে,
বুড়িমার কোলে ঘুমিয়ে যাবো।
আমাদের গাঁয়ের পাশ দিয়ে।
পালকি করে বৌ-বর নিয়ে যাবে।
আমরা মেয়ে-ছেলেরা দৌড়িয়ে যাবো।
বর-বৌকে উকি মেরে দেখবো,
আর হাসবো।
আমি ফিরে যেতে চাই,
আমার ছোট্ট সোনার গাঁয়ে।
আমি এই শহের খুব একা।
আমাকে খুব একা করে দিয়েছে
এই শহর-
আমার গাঁয়ে-
বসন্ত এলে কোকিল ডাকে।
গ্রীষ্ম এলে আম কুঁড়াই।
বর্ষা এলে পাল উড়াই।
কোথায় আমার সেই গঞ্জ?
এই কবিতার লেখাটি আমার গ্রাম নিয়ে লেখা। আমার গ্রামটি অনেক সুন্দর। এখনও আমার গ্রামের ছেলে-মেয়েরা আমার কবিতায় যে লেখা ফুটে তুলেছি তাই করে করে ওরা। কিন্তু আমি পারিনা এই শহরে থেকে, এই শহর আমার গ্রামের মতো নয়। এই শহর কখনো মানুষকে সুখে রাখেনা, রাখতে পারেও না, এই শহর বড়ই নিষ্ঠুর। আজ থেকে ৬/৭ বছর আগেও আমি ছোট্ট একটি মেয়ে ছিলাম। একদিন আমার জীবনেও এই কবিতার মর্মগুলো সত্যি ছিলো। কিন্তু আজ আমি অনেক বড় হয়ে গেছি। আমি এখন ভার্সিটিতে পড়ি তাই সেই দিনগুলো আমার কাছে অমর হয়ে আছে। আজ গ্রামের একটি ছবি দেখে খুব মনে পড়েছিলো ছোট্টবেলার সেই দিনগুলোর কথা। তাই এই কবিতাটি লিখলাম।
তারিখঃ- ১৫-০৩-২০১৮
ছবিটি নেট থেকে নেওয়া।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই মার্চ, ২০১৮ বিকাল ৩:৫৯