হাহাহাহাহ সব শেষ তাই না! আমি হাসসি না! আমি পাগল? হ্যা আমি পাগল| শুধু আমি একা নই আমার মতো আরো পাগল আছে। আমার মতো হাজার হাজার, লক্ষ লক্ষ পাগল এই দেশে আছে। তারা কিছুক্ষণ হাসে, আবার কিছুক্ষণ কাদে। কিন্তু আমার তো পাগল ইচ্ছে করে হইনি, আমাদের তো পাগল ইচ্ছে বানানো হয়েছে, বানিয়ে রেখেছে।আমরা পাগল না আমরা সুস্থ, সুন্দর, এবং স্বাভাবিক নাগরিক।
তবুও আমাদেরকে ওরা পাগল বানিয়ে রেখেছে, আমরা নাকি পাগল। আসল পাগলে যেমন কিছু না পেলে পাগলামী বেড়ে যায়, ঠিক আমাদের অবস্থাও ঐ রকমই। যখন আমাদের কিছু হারিয়ে ফেলি তখন আমাদেরও রক্ত গরম হয়ে যা। আমরা পাগল হয়েছে যাই, পাগলামী শুরু করে দেই। তারপর পাগলের যেমন পাগলামী বন্ধ করার জন্য পাগল কে পিটানো হয় আচ্ছ মতো, পাগল শান্ত হয়ে যা পানির মতো। আমাদেরও লাঠিওয়ালা, ডান্ডাওয়ালা, রানদাওয়ালারা পিটিয়ে ঠান্ডা করে দেয়। তারপর সব শেষ হয়ে যায়, সব শেষ।
তবে সব শেষ হয় না কিছু থেকেও যায় ঐ যে গোমরে কান্নার শব্দ, হাহাকার, মনের কষ্ট। শেষ হয় না তনু, রুপা, আয়েশা, ফাতেমা, রাজিব, দিয়া, করিমদের মতো শত মানুষের আহাজার আর হাহাকার। ওরা মৃত্যুর পরও শান্তি পায় না, উপরে যেয়ে আহাজার আর আহাকার করে।
সবাই তো ওদের জন্য মিটিং, মিছিল, প্রেস, মিডিয়া সংবাদপত্র, কলামলিস্ট করি। ওদের জন্য কত কি করি। আহ কি শান্তি লাগে এই সব দেখে আমার। এসব দেখে মনে হয় এই বুজি শুরু হলো, এই বুজি শান্তি মিলবে, এই বুজি ন্যায্য আদায় হবে। মনে হয় ওরা একটু শান্তি পাবে। হাহাহাহাহা কিন্তু না কিচ্ছু শেষ হয় না, শুরুর আগেই সব শেষ হয়ে যায়, এক্কেবারের শেষ হয়ে যায়। সাড়ে চার হাত মাটির নিচে সব কিছু পুতে রেখে দেয়, আর সাড়ে তিন হাত মাটির নিচে তনু, রুপা, আয়েশা, ফাতেমা, রাজিব, দিয়া, করিমদের মতো শত মানুষের প্রাণ জ্যান্ত পুতে রাখে।
এর পর মিটিং-মিছিল, আন্দলোনকারীরা ডন্ডার ব্যর্থায় হয় হাতপাতালের বিছানায় কাতরায়, না হয় ঘরের বিছানায় কাতরায়, না হয় জেলের বিছানায় কাতরায়। কলামলিস্টদের মনে হয় কলমের কালি ফুরিয়ে যায় তাই আর লিখতে পারে না, সংবাদিকদের ক্যামেরার মেমোরি মনে হয় ফুল হয়ে যায় এতো এতো ফুটেজ তোলার কারণে, পত্র-পত্রিকাদের কাগজ শেষ হয়ে যায় এতো এতো নিউজ ছাপাতে। আর আইনের লোকেরা হাপিয়ে পরে বেচে যায়। দু’দিন হয়তো দৌড় ঝাপ করে তারপর সব শেষ করে দেয় এক নিমেশেই। আর অন্যায়কারীরা বুক ফুলিয়ে, বুকের উপর পাটা দিয়ে হেটে বেড়ায় বাপকে বেটা সাব্বাস! কিচ্ছু পারলাম না আমরা কিচ্ছু না। সব শেষ হয়ে যায় এই ভাবেই, একটা একটা অন্যায়, পার পেযে যায় অন্যায়কারীরা। এরপর মন্ত্রী-এমপি সাহেবরা এক-কাপ গরম গরম কফি, সোফার উপর বসে পায়ের উপর পা তুলে রিমট চেপে দেখে আবার নতুন কোন আফডেড নিউজ আছে কি না! আবার নতুন কোন ঘটনা ঘটলো কি না দেশে। এই রকম প্রতিনিয়ত আফডেড তাদের খুব আনন্দ দেয় মনে হয়? আর তারা মনে মনে হয়তো বলতে থাকে এই সব পাগল-ছাগলের কান্ডরী আর কত দিন থাকবে! ডান্ডার পিটানি দিযে ওরা সব পানির মতো সহজ আর ঠান্ড করে দেয়।
আমরা পাগল, তাই না! হ্যা আমরা পাগল। সত্যিই কি আমরা পাগল? সত্যিই কি আমরা সাধারণ মানুষেরা পাগল? আমাদের জীবনের কি কোন মূল্য নাই? হায়রে রাজনৈতি, হায়রে ক্ষমতা, হায়রে টাকা, কোথায় আজ দেশ। এই সবের কাছে সাধারণ মানুষ আজ আমরা জীম্ম হয়ে গেলাম।
থাকতে ইচ্ছে করে না আর এই দেশে। ইচ্ছে করে না এই দেশে বাস করি। ইচ্ছে করে অন্য কোথাও চলে যাই, ঘৃর্ণা হয় এই দেশের মানুষের প্রতি ঘৃর্ণায় ঘৃর্ণায় আজ জজরিত করে ফেলেছি মনটাকে। যবের থেকে সব কিছু বুঝতে শিখেছি তবের থেকেই সব অন্যায়, মিথ্যা, বেআইনি, অবিচার, লুট-পাট, খুন-ধর্ষণ। যতই বোঝার ক্ষমতা হয় ততই এগুলোর সাথে পরিচিত হচ্ছি। বের হতে পারছি না এই সব থেকে। আমি আমার বন্ধ-বান্ধবী আমার ভাই-বোন আশেপাশের সব এককথায় আমরা প্রজন্মরা এসব থেকে বের হতে চাই, মুক্তি চাই এই সব থেকে। কেউ কি আছে এমন যে আমাদের কে এই অবরুদ্ধ থেকে মুক্তি দিবে? মুক্তি চাই, আমরা প্রজন্ম মুক্তি চাই।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৩:৫৬