somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রোজা নামক উৎসবের গোঁজামিল (প্রমাণসহ )

২২ শে জুন, ২০১৬ রাত ১:২৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

রমজান একটি অমুসলিম পৌত্তলিক প্যাগানদের আরব উৎসব ছিল।

প্রাক ইসলামী রমজান ও ইসলামী রমজান মধ্যে পার্থক্য হল, প্রাক ইসলাম আরবে রমজান একটি পৌত্তলিক গোত্রের রেওয়াজ ছিল এবং ইসলামী রমজান সারাবিশ্বের সকল মুসলিমদের দ্বারা চর্চা করতে হয়। রমজানের সময় পৌত্তলিকরা খাদ্য, পানি ও যৌন সংগম থেকে বিরত থাকত, এবং মুসলিমরা ঠিক সেই একই কাজ করে। এটা স্পস্ট যে, মুসলিমরা প্যাগানদের এই উৎসবকে কপি করেছে এবং তার প্রমান মেলে সহিহ বুখারীতে।

সহিহ বুখারী 5: 58: 172 - থেকে আয়েশা দ্বারা বর্ণিত,'' আশুরার দিনে প্রাক ইসলামিক যুগে অজ্ঞ কুরাইশ গোত্র উপবাস করত. নবী এই দিনে রোজা রাখতেন, অতঃপর যখন তিনি মদীনায় হিজরত করলেন, তিনি উপবাস করলেন এবং মুসলমানদের উপর রমজান ফরয করা হয়েছিল, তখন আশুরার দিনে রোজা রাখা বা না রাখা ইচ্ছার উপর নির্ভর করত''। আশুরার রোযা (মহররম এর দশম) একটি কুরাইশ পৌত্তলিক অনুশীলন থেকে অনুকরণকৃত। রমজানের রোযা পরবর্তীতে সেবিয়ান ঐতিহ্য থেকে এসেছিল। সেবিয়ানদের কুরআন [সূরা আল-বাকারাহ 2:62], [আল-হাজ্ব 22:17], [আল মায়েদাহ্; 5:69] এর মধ্যে কয়েক আয়াতে খ্রিস্টান ও ইহুদি সহ উল্লেখ করা হয়। সেবিয়ানরা, একটি অমুসলিম ইরাকি উপজাতি যারা একেশ্বরবাদের প্রতি বিশ্বাস করত, বছরের ৩০ দিন রোজা রাখত এবং প্রতিদিন ৫ ওয়াক্ত প্রার্থনা করত।

শুধু রমজানের রোযাই নয়, অন্যান্য পৌত্তলিক ধর্মানুষ্ঠান যা ইসলামে ছিল না, পরবর্তীতে ইসলামে চালু করা হয়। মক্কায় কাবা মূর্তিপূজার একটি কেন্দ্র ছিল, যার ভিতরে ৩৬০টি মূর্তি কাবা রাখা হয়েছিল। সহিহ বুখারি থেকে হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (3:43:658) থেকে বর্ণিত, মুহম্মদ মক্কা প্রবেশ করলেন এবং (যে সময়ে) কাবায় ৩৬০ টি মূর্তি ছিল. তিনি একটি লাঠি দিয়ে যা তাঁর হাতে ছিল তা দিয়ে প্রতিমায় আঘাত করা শুরু করেন এবং বলতে থাকেন, " সত্য (ইসলাম) এসেছে এবং মিথ্যা (অবিশ্বাস) বিলুপ্ত হয়েছে"। তখন কালো পাথর বা আল-হাজর আল-আসওয়াদ কাবার কেন্দ্রীয় বস্তু হয়ে ওঠে, এটা অনেক পাথরগুলির একটি যা প্রাক ইসলামী মুশরিকদের দ্বারা স্থাপন করা হয়েছিল, এই কালো পাথরে প্রাক ইসলামী যুগে পৌত্তলিক পূজার সময় মানুষ চুমো দিত। মুহাম্মদ সম্পূর্ণরূপে মূর্তিপূজা বন্ধ করেননি, কিন্তু তিনি হাজরে আসওয়াদকে রাখতে দেন যাতে লোকেরা পাথরে চুমো খেতে পারে।এটাই সেই প্রাক ইসলামী পৌত্তলিক পাথর যে পাথরে মুসলমানরা হজ্ব ও ওমরাহের সময় চুমু খায়। মুসলিম ঐতিহাসিকগণ এও বিশ্বাস করেন যে এই কালো পাথর একটি পৌত্তলিক দেবতা 'লাত', যে তৎকালীন দেবতা আল্লাহ্‌র (পৌত্তলিক চাঁদ-দেবতার) তিন মেয়ের এক মেয়ে ছিল।

একুশ শতকের মুসলিমরা বিশ্বাস করে যে ব্ল্যাক স্টোন আদম এবং ইভ এর আমলে স্বর্গ থেকে পতন হয়েছিল, তারা এও বিশ্বাস করেন এই পাথর মূলত সাদা ছিল, কিন্তু পরবর্তীতে মানুষের পাপ শুষে কালোতে পরিনত হয়েছে।

প্রাক ইসলামী মুশরিকদের প্রতিদিন পাঁচবার মক্কামুখী হয়ে প্রার্থনা করত। পার্সি জোরাওস্ট্রিয়ান জাতিও পাঁচবার প্রার্থনা করত সূর্য বা আগুন মন্দিরের দিকে মুখ করে। নামাজের আগে, অগ্নি উপাসকরা নিজেদের পানি দিয়ে পরিষ্কার করে ৫ বার প্রার্থনা করত সুতরাং আজকাল যে নামাজ পড়া হয় তা ইসলামের উদ্ভাবন নয়, শুধু অগ্নি উপাসকদের প্রার্থনার একটি মডার্ন রুপ মাত্র। সহীহ বুখারী হাদিস (বই ৮,হাদিস নং ৩৪৫) পড়লে জানা যায়, যখন মুহাম্মদ স্বর্গে আল্লাহর সাথে সাক্ষাত করতে যায়, আল্লাহ দিনে ৫০ বার নামাজের দাবি জানান, কিন্তু নবী মুসার সাহায্যে মুহাম্মদ আল্লাহর সঙ্গে দরকষাকষি করে শেষে তিনি সফল হয়েছিলেন ৫০ ওয়াক্ত নামাজকে ৫ ওয়াক্তে নামিয়ে আনতে। কুরআন (4:28) বলে, 'আল্লাহ তোমাদের বোঝা হালকা করতে চায়, কারণ মানুষকে দুর্বলভাবে তৈরি করা হয়েছে।

কুরানে বলা হয়েছে,''আর তোমরা পানাহার করো, যতক্ষণ না কালো রেখা থেকে ভোরের সাদা রেখা পরিষ্কার দেখা যায়। অতঃপর রাত পর্যন্ত রোজা পূর্ণ করো।'' (সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ১৮৭)। কিন্তু পৃথিবীর অনেক অঞ্চলে কখনো সূর্য ডোবে না, সেক্ষেত্রে কি করা হবে তার বর্ণনা কুরআন হাদিসে কোথাও বলা নেই। ইসলাম জ্ঞানীরা কেউ মক্কার টাইম ফলো করতে বলেন অথবা পার্শ্ববর্তী দেশের টাইম ফলো করতে বলেন। তাহলে প্রশ্ন হল, আল্লাহ অথবা মুহম্মদ কি জানতেন না, এমন কোন দেশের অঞ্চল আছে যেখানে বছরের ৬ মাস সূর্যাস্ত হয় না?

কোন দেশে কেউ ৯ ঘন্টা রোজা রাখছে আবার কেউ ২১ ঘন্টা। এই বৈষম্য কেন? যে ২১ ঘন্টা রোজা রাখছে তার পুন্য কি ৯ ঘণ্টা রোজাদারের সমপরিমান?

অনেক অ-ইসলামিক পৌত্তলিক ধর্মানুষ্ঠান এখন ইসলামী ধর্মানুষ্ঠান হিসাবে পরিচিত হয়। পৌত্তলিকদের ক্রিসেন্ট মুন, চন্দ্র দেবতার সিম্বল, তাওয়াফের প্রতীক, ইহরামের প্রতীক ইসলাম দ্বারা কপি অথবা চুরি করা হয়েছে। মুসলমানরা এখন আকাশে একটি চাঁদের উপর নির্ভর করে দেখে তাদের রোজা শুরু করে যেটা পৌত্তলিকদের অনুরুপ। রমজান মুসলমানদের জন্য একটি এক ধরনের মাসব্যাপী খাদ্য উৎসব, যেখানে মুসলমানদের এই মাসে সংযম করবে অথবা কম খাবে বলে আশা করা হয়. কিন্তু বাস্তবে, মুসলমানরা অন্য কোন মাসের তুলনায় রমজান মাসেই বেশি খায়।

রমজান মাসে স্ত্রীদের আদর করা নিয়ে অনেক হাদিস আছে, যার মধ্যে একটি ইন্টারেস্টিং হাদিস হল, রোজার সময়ে বয়স্ক স্বামীরা তার কম বয়স্কা স্ত্রীকে আদর করতে পারবে যেখানে যুবকদের স্ত্রীকে আদর করতে মানা করা হয়েছে। বলার অপেক্ষা রাখেনা, মুহম্মদ সেই সময়ে বৃদ্ধ ছিলেন।

বুখারী হাদিস, আয়েশা দ্বারা বর্ণিত, খন্ড ৩, ১৪৯ , ''মুহাম্মদ রোজাকালীন সময়ে স্ত্রীদের চুমু দিতেন এবং আলিঙ্গন করতেন এবং তোমাদের মধ্যে যে কারো চেয়ে তার ইচ্ছাশক্তি নিয়ন্ত্রিত ছিল''।

বুখারী হাদিস, খন্ড ৩, ১৫১তে বর্ণিত, তিনি জয়নবের সাথে ( উম্মে সালমার কন্যা) একই পাত্রে গোসল করতেন, এবং তাকে চুমু খেতেন রোজা থাকা সত্ত্বেও।

হাদিস গ্রন্থ ১৩, হাদিস নাম্বার ২৩৮১ তে আবু হুরায়রা দ্বারা বর্ণিত, এক ব্যাক্তি প্রশ্ন করে রোজা থাকা অবস্থায় স্ত্রীকে আলিঙ্গন করা যাবে কিনা। মুহম্মদ তাকে অনুমতি দেন। কিন্তু যখন আরেকজন ব্যাক্তি একই প্রশ্ন করেন, তাকে মানা করেন। যাকে অনুমতি দেন, সেই লোক বৃদ্ধ ছিলেন, এবং যাকে মানা করলেন সে ছিল তরুন।

হাদিস গ্রন্থ ১৩, হাদিস নাম্বার ২৩৮০ তে আয়েশা দ্বারা বর্ণিত, মুহম্মদ তাকে চুমু দিতেন এবং তার জিহ্বা চুষতেন, রোজা থাকা অবস্থায়।

না খেয়ে থাকলে অথবা যৌনক্রিয়া না করলেই যদি গরিবের কষ্ট বোঝা যেত, তাহলে পৃথিবীতে এখনো এত গরিব, ক্ষুধার্ত মানুষ কেন না খেতে পেয়ে মারা যাচ্ছে সেই প্রশ্ন কিন্তু রয়েই যাচ্ছে। আর যদি ইসলামকে দোষ না দিয়ে মুসলিমদের ঈমানের দোষ দিয়েই থাকেন, তবে রমজান নামক ভোজের উৎসব পালনের সার্থকতা কোথায়?

আমার নিজস্ব ব্লগ সাইট
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে জুন, ২০১৬ সকাল ৮:৪১
১৬টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ২:৫৯

বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×