somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ধর্মীয় তান্ডবের মুখে আমাদের মুখে আমাদের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি।

৩১ শে অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ১১:১৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



খবরঃ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ফেসবুকে ইসলাম-বিদ্বেষী ছবির জেরে হিন্দুদের বহু বাড়ি-ঘর, মন্দির, দেব-দেবীর মূর্তি ভাংচুর ।লিঙ্কঃ Click This Link

** গতকাল ব্রাক্ষণবাড়িয়ার নাসিরনগরে চলেছে তান্ডব লীলা। যেটা আমাদের দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির জন্য বিরাট হুমকি। আমরা বহু বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করে সামনের দিকে এগিয়ে চলেছি কিন্তু আমাদের এই অসুস্থ এবং অশুভ মন মানসিকতা থেকে আমাদের পরিত্রাণ পেতেই হবে।

** ঘটনার সারসংক্ষেপঃ রসরাজ দাস নামে এক হিন্দু যুবক ফেসবুকে পবিত্র কাবা ঘরের সংগে হিন্দুদের দেবতা মহাদেব/শিবের একটি ছবি জুড়ে পোষ্ট দেন। আর এর জের ধরে ওই এলাকার মুসলমানেরা মন্দির, মণ্ডপ ও প্রতিমা ভাংচুরে মেতে ওঠেন।

** বিস্তারিত বিশ্লেষনঃ এই ঘটনায় দুটি গর্হিত কাজ হয়েছে।

** প্রথমত, রসরাজ দাস কাবা শরিফের উপর শীবের ছবি ফটোশপের মাধ্যমে স্থাপন করে তার নিজের উগ্র ও নোংরা মন মানসিকতার প্রকাশ করেছেন। যেটা একই সাথে বাংলাদেশের বিধান মোতাবেক শাস্তিযোগ্য অপরাধ (ধারা: ২৯৮ দণ্ডবিধি) এবং তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি আইন অনুযায়ী অনধিক ১০ বছরের কারাদণ্ড এবং অনধিক এক কোটি টাকা অর্থদণ্ডে বিধান আছে। একই আইনের ৬৬ ধারা অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে কোনো কম্পিউটার, ই-মেইল বা কম্পিউটার নেটওয়ার্ক রিসোর্স বা সিস্টেম ব্যবহারের মাধ্যমে এই আইনের অধীন কোনো অপরাধ সংঘটনে সহায়তা করলে এ জন্যও একই দণ্ড হবে।


** দ্বিতীয়তঃ ঐ এলাকার মুসলমানেরা অতি উৎসাহী হয়ে যে তাণ্ডবলীলা চালিয়েছে সেটি ধর্মীয় দিক থেকে অগ্রহণযোগ্য ও আইনী দৃষ্টিকোণ থেকেও শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
এখানে আমি মুসলমানদের নেক্কারজনক কর্মকাণ্ড যে ইসলাম সমর্থন করে না সেটি পবিত্র কোরআন শরীফের ১০৯ নং অধ্যায়/সূরার (সুরা কাফিরুন) নাযিলের শানেনজুল এবং শেষ আয়াতের মহত্বের বাণীর মাধ্যমে আমার কথা শেষ করবো।
** সুরা নাযিলের শানেনজুলঃ হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বর্ণনা করেন, ওলীদ ইবনে মুগীরা, আস ইবনে ওয়ায়েল, আসওয়াদ ইবনে আবুদল মোত্তালিব ও উমাইয়া ইবনে খলফ প্রমুখ মক্কার বিশিষ্ট ব্যক্তিদের কয়েকজন একবার রসূলুল্লাহ্‌ (সাঃ)- এর কাছে এসে বললঃ আসুন, আমরা পরস্পরের মধ্যে এই শান্তিচুক্তি করি যে, একবছর আপনি আমাদের উপাস্যদের এবাদত করবেন এবং একবছর আমরা আপনার উপাস্যের এবাদত করব।
তিবরানীর রেওয়ায়েতে হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বর্ণনা করেন, কাফেররা প্রথমে পারস্পরিক শান্তির স্বার্থে রসূলুল্লাহ্‌ (সাঃ)- এর সামনে এই প্রস্তাব রাখল যে, আমরা আপনাকে বিপুল পরিমাণে ধনৈশ্বর্য দেব, ফলে আপনি মক্কার সর্বাধিক ধনাঢ্য ব্যক্তি হয়ে যাবেন। আপনি যে মহিলাকে ইচ্ছা বিবাহ করতে পারবেন। বিনিময়ে শুধু আমাদের উপাস্যদেরকে মন্দ বলবেন না। যদি আপনি এটাও মেনে না নেন, তবে একবছর আমরা আপনার উপাস্যের এবাদত করব এবং একবছর আপনি মাদের উপাস্যদের এবাদত করবেন।
আবু সালেহ্‌-এর রেওয়ায়েতে হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেনঃ মক্কার কাফেররা পারস্পরিক শান্তির লহ্ম্যে এই প্রস্তাব দিল যে, আপনি আমাদের কোন প্রতিমার গায়ে কেবল হাত লাগিয়ে দিন, আমরা আপনাকে সত্য বলব। এর পরিপ্রেহ্মিতে জিবরাঈল সূরা কাফিরূন নিয়ে আগমন করলেন। এতে কাফেরদের ক্রিয়াকর্মের সাথে সম্পর্কচ্ছেদ এবং আল্লাহ্‌ তা'আলার অকৃতিম এবাদতের আদেশ আছে। [ সূত্রঃ Click This Link ]
** এখানে বেধর্মীদের দেবতাদের ইবাদত/পুজার যে প্রস্তাব নবীজি (সঃ) বরাবরে দেওয়া হয়েছিল এবং তার প্রেক্ষিতে আল্লাহপাক সূরার মাধ্যমে মূর্তি সমূহ ভেঙ্গে ফেলার অদেশও তো দিতে পারতেন? কিন্তু আল্লাহ সুবাহা'নাহু তাআলা সেটি না বলে শেষ আয়াতে বলেছেন “لَكُمْ دِينُكُمْ وَلِيَ دِينِ”, উচ্চারণঃ “লাকুম দিনুকুম অলিয়া দিন”। অর্থঃ “তোমার ধর্ম তোমার কাছে, আমার ধর্ম আমার কাছে”
যেখানে বিশ্বনবীর (সঃ) এর কাছে অন্য ধর্মের দেবতাদের ইবাদত/পুজার প্রস্তাব তিনি গ্রহণ করেন নাই কিন্তু স্বাভাবিক ভাবে নিয়েছিলেন, নবীজি (সঃ) এর সাহাবীগণ উত্তেজিত না হয়ে স্বাভাবিক ছিলেন, আল্লাহ সুবাহা'নাহু তাআলা যেখানে সহিংশ না হয়ে বিনীতভাবে তাদের অগ্রহণযোগ্য প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছেন, সেখানে কেন আমরা সহিংশ হয়ে যাচ্ছি??
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে অক্টোবর, ২০১৬ দুপুর ১২:২১
৭টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অন্যায় অত্যাচার ও অনিয়মের দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ

লিখেছেন রাজীব নুর, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:৪০



'অন্যায় অত্যাচার ও অনিয়মের দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ'।
হাহাকার ভরা কথাটা আমার নয়, একজন পথচারীর। পথচারীর দুই হাত ভরতি বাজার। কিন্ত সে ফুটপাত দিয়ে হাটতে পারছে না। মানুষের... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্য অরিজিনস অফ পলিটিক্যাল জোকস

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১১:১৯


রাজনৈতিক আলোচনা - এমন কিছু যা অনেকেই আন্তরিকভাবে ঘৃণা করেন বা এবং কিছু মানুষ এই ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন। ধর্ম, যৌন, পড়াশুনা, যুদ্ধ, রোগ বালাই, বাজার দর থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×