somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভুল - শেষপর্ব ( কিঞ্চিত ১৮+ B-)

০৮ ই নভেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১২:৫৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এমন সময় ফাহিমের মনে দুষ্টমি চেপে বসল। ঘোর লাগা চাঁদের আলোয় আমি প্রশ্রয়ের হাসি হাসলাম। শিশির ভেজা ঘাসের চাদরে ভেংগে গেল সব বাঁধ। একে অন্যতে বিলীন হয়ে গেলাম আমরা । তীব্র আবেগে। একজনের আংগুলের ফাঁকে অন্যজনের আংগুল আটকে গেল। ঠোঁটগুলো একে অন্যকে পিষে ফেলতে চাইল।
হুট করে একটা আলোর ঝলকানিতে আমরা হুঁশ ফিরে পেলাম। একটা ক্যামেরারা ফ্ল্যাশ। তারপরই একজোড়া পায়ের দৌড়ে যাওয়ার শব্দ। তাড়াতাড়ি নিজেদের সামলে নিলাম।বুকের ভেতরে যেন ঢোল পেটানো শুরু হয়ে গেল।আত্মগ্লানিতে মন ভরে গেল।ছি! নিজের উপর এতটুকু নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারলাম না। এখানে বাগানে খোলা আকাশের নিচে ।সব কিছুর দোষ এখন ফাহিমের বলে মনে হতে লাগল।কি হবে যদি এই ছবি ছড়িয়ে পরে।ভাবতেই ভয়ে আমার শরীর কেঁপে উঠতে লাগল।দ্রুত ফিরে এলাম ঘরে। বাকিরাত আমার ঘুম হল না। পাশে ফাহিম ও নির্ঘুম রাত কাটালো। কিন্তু কেন জানি ওর গায়ে সামান্য ছোঁয়া লাগাতে ও আমার ঘেন্না করতে লাগল। নিজের উপর ঘেন্না হতে লাগল।যদি এই ছবি কোনভাবে ইন্টারনেটে আসে তবে ভার্সিটিতে আমার আর মুখ দেখানোর কোন উপায় থাকবে না ।আত্মীয়স্বজন, বাবা-মা এদের কথা ভাবতেই আমার আত্নহত্যা করার ইচ্ছে জাগল।সকালবেলা দাদি দেখেই বুঝল যে আমাদের দুজনেরই ঘুম হয় নি।দুজনেরই চোখ লাল। নাস্তা শেষে দাদী বলল, যাহ তোরা আরো কিছুক্ষন বিশ্রাম নে।ফাহিম বলে উঠল,নাহ দাদী,ভাবছি যে কয়টাদিন আছি একটা ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প করব। গ্রামের মানুষকে চিকিৎসা দেব।দাদী বলে উঠল ,কি দরকার এত ঝামেলা করার! আছিস তো মাত্র আর কটা দিন। বিশ্রাম নে। আমি বলে উঠলাম , নাহ দাদী ,ঠিকই আছে ।আমি কিছু যাকাতের টাকা ও নিয়ে এসেছি। ফ্রি তে ওষুধ দেয়া যাবে।দাদী বোধহয় আমাদের কথায় খুশিই হল। বলল ক্যাম্পটা তর দাদার নামে করিস।
এ কয়দিনে আমরা দাদিবাড়ির সেই গ্রাম আর আশেপাশের গ্রামের হাজারখানেক রোগী কে চিকিৎসাসেবা দিয়েছি। পাঁচশ র মত রোগিকে ফ্রিতে ওষুধ দিয়েছি। যাদের সার্জারি বা আরো পরীক্ষা- নিরীক্ষার প্রয়োজন তাদের ঢাকা মেডিকেলে আসার পরামর্শ দিয়েছি। ফাহিম ওখানে কাজ করে।বিগত পাঁচদিন ফাহিম আমাকে একটিবার ও ছুঁয়ে দেখেনি । সারাটা সময় আমরা ভয়ে ভয়ে ছিলাম এই বুঝি কেউ এসে খবর দিল যে আমাদের ছবি ইন্টারনেটে পাওয়া গেছে। আজ আমরা চলে যাব।ঘন্টা দুই পরে আমাদের স্টিমার ছাড়বে।পুর গ্রাম যেন ভেংগে পড়েছে আমাদের বিদায় জানাতে। আমরা যখন বের হব তখন ইয়াং একটা ছেলে ফাহিম কে একপাশে ডেকে নিয়ে গেল কথা বলার জন্য। দূর থেকে আমি দেখতে পেলাম ছেলেটা পকেট থেকে একটা মোবাইল ফোন বের করে কি যেন দেখাচ্ছে। তারপর হাতজোড় করে কান্নায় ভেংগে পড়ল। ফাহিম ও ওকে বুকে জড়িয়ে ধরল। একটু পর ফাহিম এসে জানালো ছেলেটার মা অনেকদিন অসুস্থ্য ছিল। আমার চিকিৎসায় ওর মা ভাল হয়েছে। ছেলেটা আমার সামনে ছবিগুলো ডিলিট করল। আর এমনটা করার জন্য মাফ চাইল। এ কথা শোনার পর আমার মাথা থেকে যেন একটা হাজার মণের বোঝা নেমে গেল। বিগত পাঁচদিনের মধ্যে আমি প্রথমবারের মত স্বস্তির নিঃশ্বাস নিলাম। আমি এতদিনের টেনশন থেকে মুক্তি পেয়ে আর নিজেকে ধরে রাখতে পারলাম না।ফাহিম কে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেংগে পরলাম। ফাহিম আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে রইল।
************************************************************************************
দুইজন গ্রাম্যবধু একে অন্যকে বলাবলি করতে লাগল, চৌধুরীর নাতবৌটা কত ভালা দেখ। এই দশদিনেই দাদী শাশুড়ির জন্য কত মায়া পইরা গেছে তাঁর। যাইবার কালে খালি কানতাসে.........
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই নভেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১২:৫৯
৪টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পরিণতি - ৩য় পর্ব (একটি মনস্তাত্ত্বিক রহস্য উপন্যাস)

লিখেছেন সাখাওয়াত হোসেন বাবন, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১২:২৮



( পরিণতি ৬১ পর্বে'র একটি মনস্তাত্ত্বিক রহস্য উপন্যাস ।)

তিন


আচানক ঘুম ভেঙ্গে গেলো ।

চোখ খুলে প্রথমে বুঝতে পারলাম না কোথায় আছি । আবছা আলোয় মশারির বাহিরে চারপাশটা অপরিচিত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইফতার পার্টি মানে খাবারের বিপুল অপচয়

লিখেছেন রাজীব নুর, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:৫৩



গতকাল সরকারি ছুটির দিন ছিলো।
সারাদিন রাস্তাঘাট মোটামুটি ফাকাই ছিলো। ভাবলাম, আজ আরাম করে মেট্রোরেলে যাতায়াত করা যাবে। হায় কপাল! মেট্রো স্টেশনে গিয়ে দেখি গজব ভীড়! এত ভিড়... ...বাকিটুকু পড়ুন

গণতন্ত্র আর বাক-স্বাধীনতার আলাপসালাপ

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:২৩


একাত্তর সালে আওয়ামী লীগের লোকজন আর হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা ছিল পাকবাহিনীর প্রধান টার্গেট। যদিও সর্বস্তরের মানুষের ওপর নিপীড়ন অব্যাহত ছিল। গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল। মুক্তিযোদ্ধা আর তাদের পরিবারের... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×