somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এ যেন এক ভালবাসার এক চন্দ্রগ্রহন ।

২৪ শে অক্টোবর, ২০১৪ রাত ৩:৪১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

## বেলা শেষে ফিরে এসে হয়তো অনেকেই দেখা পায়না রাঁধাচূড়ার । কিন্তু কেউ কেউ আসলেই আবার অবেলার শেষ স্নিগ্ধ আলোকছটায় ফিরে পায় তার রাধাকে। সত্যিই ভালোবাসার রয়েছে সেই অসীম ক্ষমতা ।
গত দুই সপ্তাহ আগে আমার এক প্রিয় বড় ভাইয়ের সাথে গল্প করতে করতে তেমনি এক ভালবাসার গল্প শুনতে পেলাম । যেন এক রাসায়নিক বন্ধন, এক প্রেম উপাখ্যান । যদিও এই রকম হাজার হাজার প্রেম উপাখ্যান রয়েছে আমার এই প্রিয় রসায়ন বিভাগের পরতে পরতে যার হয়তো অনেক আদ্যোপান্ত আমি নিজেও দেখেছি এবং জানিও । তবুও সেই দিনের এই ভালবাসার গল্প শুনে আমি নিজেই খুব আনমনে হয়ে গিয়েছিলাম। ইচ্ছে হচ্ছিলো , যাদের কে নিয়ে গল্প তাদের কাছে ছুটে যাই।

# সেই দিন ব্যস্ত বিকেলের কোন এক মুহূর্তে কিভাবে যেন গল্পের মাঝেই এইরকম এক বাস্তব গল্প চলে এসেছিলো । এমনিতেই আমি আর আমার সেই প্রিয় সিনিয়র ভাই সময় পেলেই বিশ্ববিদ্যালয়ের গল্প শুরু করে দেই , আমাদের প্রিয় রসায়ন বিভাগের গল্প শুরু করে দেই । যে গল্পের সমস্ত সময় জুড়ে থাকে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় জীবন । । আর নবীন ভাই, যার গল্প তিনি হচ্ছেন উনারোও সিনিয়র ।

নবীন ভাই খুব শান্ত টাইপ্স একজন । যার চিন্তা ভাবনা এবং প্রতি মুহূর্তেই হেমা আপু । কখনোই অন্য কিছু ভাবনার কোনোও সময় হয়তো ছিলো না । কিন্তু তারপরও উনার এত টুকুন ভালবাসার কথাও বলবার সাহস হয়ত ছিলো না। আমি এটাকে সাহস বললে ভুল হতে পারে। অন্য কিছু এই মুহূর্তে মাথায় আসছে না । নবীন ভাই সব সময় হেমা আপুর হলের সামনে দাড়িয়ে থাকতেন । দূর থেকে দেখতেন । কিন্তু কখনো কিছুই বলতেন না। কিনবা একটা শব্দও করতেন না । জাস্ট দেখে চলে আসতেন । এভাবে যত টুকু পারা যেত নবীন ভাই দেখতেন । কিন্তু কখনোও কিচ্ছু বলেন নি । মাঝে মাঝে উনার পেছনে পেছনে আসতেন । এটাই হয়তো ছিলো উনার ভালবাসা । দূর থেকে হয়তো ভালবেসে যেতে চাইতেন । এভাবে ভাই, তার বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪ বছর সমাপ্ততের পর্যায় চলে এছেছেন । হয়ত, বের হয়ে যাওয়ার ও সময় হয়ে এসেছিলো ।
তেমনি , একদিন নবীন ভাই, হেমা আপুর পেছনে পেছনে আসছিলেন । হঠাত -
হেমা আপু - নিজেই পেছনে ফিরে খুব কঠিন ভাষায় বললেন -
- আপনি , পেয়েছেনটা কি? দিনের পর দিন আমাকে ফলো করছেন । আমাকে আমার মত থাকতে দিচ্ছেন না কেন । কি পেয়েছেন , যত্ত সব -------------------
উনার মনে তখন যা এসেছিলো তাই , এক এক করে বলতে শুরু করেছিলেন । অনেক ভয়ংকর এবং খুব কঠিন রাফ ভাষায় সে দিন নবীন ভাইকে ঝাড়ি বোধহয় দিচ্ছিলেন ।
নবীন ভাই , শুধু শুনে যাচ্ছিলেন আর তার দু নয়ন গড়িয়ে পরছিলো অস্রুজল ।
তারপর উনি বললেন -
- আমি তো কখনোও তোমাকে ডিস্টার্ব করিনি কিনবা তোমাকে কখনো কিচ্ছু আজে বাজে বলিও নি। শুধু তোমাকে দেখে যেতাম । শুধু দেখেই যেতাম । এই দেখাটাই আমার ভালবাসা ছিলো। এটা তো কোন অন্যায় হতে পারে না । যে মানুষটাকে দিনের পর দিন, বছরের পর বছর হৃদয়ের যে মনি কোঠায় রেখেছি , সে মানুষটা তুমি হয়ে আমাকে আজ এই সব বলতে পারলে ।
- আচ্ছা, ঠিক আছে, আজ থেকে আর কখনো আমি তোমার পেছনে পেছনে আসবোনা , তোমাকে দেখবো না । তোমার পাশে ফিরেও তাকাবোনা ।

নবীন ভাই অশ্রু সিক্ত দু নয়েনে কথাগুলো বলে ফেললেন একনাগারে । এবং চলে আসলেন আর ফিরেও তাকালেন না একবারোও পেছনের দিকে ।

এর পরের টুকু জানার জন্য আমি আমার সেই সিনিয়র ভাইকে জিজ্ঞেস করলাম, - ভাই এর পর কি হলো নবীন ভাইয়ের । কি করলেন তিনি ??
ভাই বললেন - নবীন ভাই হলে চলে আসলেন । কিছুতা অসুস্থ হয়ে পরেছিলেন । কারন উনি ভাবতেও পারেন নি এভাবে উনাকে কথা গুলো বলবেন ।

কিন্তু অবাক করা বিষয় জাস্ট কয়েক দিন পরেই হেমা আপু , হাতে ফুল নিয়ে নবীন ভাইয়ের কাছে চলে আসলেন । চলে আসলেন সারা জীবনের জন্য । অতপর তাহারা হ্যাপিলি জীবন যাপন শুরু করলেন ।

এ যেন এক ভালবাসার এক চন্দ্রগ্রহন ।

০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অন্যায় অত্যাচার ও অনিয়মের দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ

লিখেছেন রাজীব নুর, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:৪০



'অন্যায় অত্যাচার ও অনিয়মের দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ'।
হাহাকার ভরা কথাটা আমার নয়, একজন পথচারীর। পথচারীর দুই হাত ভরতি বাজার। কিন্ত সে ফুটপাত দিয়ে হাটতে পারছে না। মানুষের... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্য অরিজিনস অফ পলিটিক্যাল জোকস

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১১:১৯


রাজনৈতিক আলোচনা - এমন কিছু যা অনেকেই আন্তরিকভাবে ঘৃণা করেন বা এবং কিছু মানুষ এই ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন। ধর্ম, যৌন, পড়াশুনা, যুদ্ধ, রোগ বালাই, বাজার দর থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×