somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গণমাধ্যমের দর্শন থাকতে হবে

২৬ শে নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৪:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাংলাদেশে এই মুহূর্তে ২৬টি টেলিভিশন চ্যানেল অনএয়ারে আছে।এর মধ্যে প্রায় সবগুলো চ্যানেলেই সংবাদ প্রচার করে।৫৫ হাজার বর্গমাইলের ছোট্ট একটি দেশে এত গুলো টিভি চ্যানেল সত্যি অবাক করার বিষয়।এরমধ্যে আবার চ্যানেলগুলোর ঢাকা থেকে অনুষ্ঠান প্রচারের প্রবণতার ফলে সংবাদের কেন্দ্রবিন্দুও ঢাকাকেন্দ্রীক। ফলশ্রুতিতে ঢাকায় যেকোনো ঘটনা ঘটলেই টিভিচ্যানেলের সংবাদকর্মীরা ক্যামেরা নিয়ে যুদ্ধের মাঠে ঝাপিয়ে পড়ে।যার ফলে মাঝেই মাঝেই সংবাদকর্মীদের বিভিন্ন আচরণ অডিয়েন্সের কাছে খুব দৃষ্টিকটু লাগে।একজন সংবাদকর্মীর কাছে যেকোনো সংবাদ হচ্ছে প্রোডাক্ট। তাই সে অবশ্যই প্রত্যাশা করবে ভোক্তাদের কাছে তার প্রোডাক্ট সেল করতে।কিন্তু সমস্যা হচ্ছে একজন পাঁচতারকা হোটেলের ওয়েটার যদি ফুটপাতের হোটেল ছালাদিয়ার মেচিয়ার( তাদের পেশাকে ছোট করছি না , তুলনা করার জন্য শব্দটি ব্যবহার করছি) এর মত আচরণ করে তবে পাঁচতারকা হোটেলে আগত অতিথিরা বিরক্ত হয়। ঠিক তেমনি টিভিতে কর্মরত সংবাদকর্মীরা যখন গ্রামের হাটবাজারে ঔষধ বিক্রেতার মত আচরণ করে তখন তা অডিয়েন্সের মাঝে চরম বিরক্তির উদ্রেক করে।তাছাড়া টিভি সাংবাদিতার একটা দর্শন থাকা চাই। কারণ টিভি সকলের জন্য অবারিত একটি গণমাধ্যম। যা ছেলে বুড়ো, সবাই উপভোগ করে। তাই এ ধরনের একটি সর্বজনীন গণমাধ্যমে অনুষ্ঠান প্রচারের ক্ষেত্রে অনেক বেশি দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে। যেকোনো অনুষ্ঠান প্রচারের ক্ষেত্রে তাদেরকে অবশ্যই বিভিন্ন বয়সের দর্শকদের বিষয়টি গুরুত্বের সাথে বিবেচনায় নেওয়া উচিৎ
অথচ বাংলাদেশের টেলিভিশন চ্যানেলগুলিকে এই বিষয়ে সম্পুর্ণরুপে উদাসীন। সাম্প্রতিক সময়ে প্রচারিত কিছু সংবাদ প্রচার টিভি মিডিয়ায় এথিকসের লংঘণের বিষয়টি আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে । যেমন , মানবতাবিরোধী অপরাধে দন্ডিতদের ফাঁসী কার্যকরের সংবাদ টিভি চ্যানেলগুলি যেভাবে ঘন্টার ঘন্টা ধরে প্রচার করছে তা কোনোভাবেই একটি সুস্থ গণমাধ্যমের দর্শন হতে পারে না।তারা কি একবারের জন্যেও কি ভেবে দেখে না ঘন্টার পর ঘন্টা ধরে ফাঁসীর সংবাদ প্রচার শিশুর সুস্থ মনোবিকাশের উপর প্রভাব বিস্তার করতে পারে। আমাদের মনে রাখতে হবে একটি সুস্থ জাতি গঠন দীর্ঘ প্রক্রিয়ার বিষয়। আজকের ইউরোপ যে সারা বিশ্বে সভ্যসমাজের প্রতিনিধিত্ব করছে এ পর্যায়ে আসতে তাদের দীর্ঘ পথ পরিক্রম করতে হয়েছে। এর পিছনে সমাজের সকল দায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠানসমূহগুলো ভূমিকা রেখেছে। গণমাধ্যমগুলোও এর বাইরে ছিলো না। প্রতিক্রিয়াশীল গণমাধ্যম একটি সমাজকে ধীরে ধীরে প্রতিক্রিয়াশীলতার দিকে ধাবিত করে। অনেকে হয়ত ভাবতে পারেন আমি স্বাধীন সংবাদ প্রচারের বিরুদ্ধে।

বস্তুতঃপক্ষে আমি যেকোনো সংবাদ স্বাধীনভাবে প্রচারের পক্ষে কিন্তু আমার ব্যক্তিগত রিজার্ভেশন হচ্ছে , স্পর্শকাতর সংবাদ প্রচারের একটি মাত্রা থাকতে হবে। কিভাবে তা আমরা দর্শকদের সামনে উপস্থাপন করব , তা সমাজের বিভিন্ন শ্রেণীর , বিভিন্ন বয়সের দর্শকদের মনোবিকাশের উপর কোনো ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে কিনা সে বিষয়টি অবশ্যই ভাবতে হবে।

এপ্রেক্ষিতে আর একটি উদাহরণ দিলে আরো পরিস্কার হবে। হত্যার অভিযোগে সম্প্রতি শাস্তিপ্রাপ্ত ঐশীর সংবাদ প্রচারের ক্ষেত্রে আমরা দেখেছি কিভাবে টিভি চ্যানেল গুলি হুমরি খেয়ে পড়েছে। একটি টিনএজ মেয়ের সংবাদ প্রচারের ক্ষেত্রে যে আরো সচেতন হওয়া উচিৎ ছিলো তা আমরা তাদের কাছ থেকে দেখেনি। বরং মাঝে মাঝে মনে হয়েছে ঐশীর শরীরের অংশ দেখানোতেই যেনো অধিক আগ্রহ। তাই বার বার তারা একই সংবাদ ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখায়।অথচ যখন নাগরিক হিসেবে ঐশীর শিশু অধিকার পুলিশ বাহিনীর প্রভাবে কেড়ে নেয়া হলো তখন কিন্তু টিভি মাধ্যমগুলোকে জোরালো কোনো ভূমিকা রাখতে।
পূণশ্চঃ একটি সমাজ সামনে এগিয়ে যায় একটি দর্শনের মাধ্যমে , আর সমাজের সেই দর্শন বিকাশে প্রধান ভূমিকা রাখে গণমাধ্যম। তবে গণমাধ্যম তখনই সমাজের দর্শন বিকাশে ভূমিকা রাখবে যখন সে নিজে তার জন্য প্রযোজ্য দর্শন লালন করবে।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৪:০৭
১৬টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হালহকিকত

লিখেছেন স্প্যানকড, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:১২

ছবি নেট ।

মগজে বাস করে অস্পষ্ট কিছু শব্দ
কুয়াসায় ঢাকা ভোর
মাফলারে চায়ের সদ্য লেগে থাকা লালচে দাগ
দু:খ একদম কাছের
অনেকটা রক্তের সম্পর্কের আত্মীয় ।

প্রেম... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×