“আমলকী” কথাটা শুনলে কেমন যেন জিবের মধ্যে জল চলে আসে।আমলকী আমাদের দেশের অতি প্রাচীন ফলের মধ্যে এটি একটি ফল ।আর আমার মনে হয় পৃথিবীর সবচেয়ে কম দামের ফল আমলকী ।এর গুণের কথা বলে শেষ করা যাবে না। প্রতিনিয়ত যে আমলকী ফল খায়,সে নিরোগ শরীরে ১০০ বছর বাঁচবে-একথা শাস্ত্রে বলে।তাই শাস্ত্রে আমলকী ফলকে অমৃত ফল বলা হয়ে থাকে। বিজ্ঞানীদের মতে, আমলকীতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘সি' আছে।কমলা লেবুর থেকে ২০ গুণ বেশি ভিটামিন ‘সি' এতে রয়েছে।মানব শরীরে এর প্রয়োজনীয়তা অনেক। শরীরের ক্ষত শুকাতে, খাদ্যনালি থেকে লৌহ শোষণ করতে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে কত কাজে দরকার ভিটামিন-সি। অনেক রোগ প্রতিরোধেও ভিটামিন-সি প্রয়োজন।
উপকারীতা
* আমলকী ডায়াবেটিস প্রতিরোধে সাহায্য করে। ডায়াবেটিসের রোগী দীর্ঘদিন ভিটামিন-সি গ্রহণ করলে তাদের চোখের জটিলতা রেটিনোপ্যাথি হওয়ার সম্ভাবনা কমে প্রায় অর্ধেকে নেমে আসে।
* আমলকীর টক ও কষটে ভাব মুখে রুচি ও স্বাদ বাড়ায়।
* আমলকী একটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসাবে মানব শরীরে কাজ করে। তাই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং মানসিক চাপ কমায়।
* বমি, কফ, অনিদ্রা, ব্যথা-বেদনায় আমলকী অনেক উপকারী।
* চুল,নখ ও দাঁত সুস্থ রাখে।
* ত্বক সুস্থ ও সুন্দর করে।পিত্ত জনিত যে কোন স্কিনের রোগ সারাতে ম্যাজিকের মত কাজ করে।আমলা পাউডার ব্রণ,র্যাশ ইত্যাদি সারায়।
* পুরুষের শারীরিক অক্ষমতায় আমলকী ভাল কাজ করে।
* আমলকীতে লৌহ তত্ত্বে ভরপুর। আর সে জন্যই শরীরে নতুন রক্ত তৈরি করার পক্ষে উপযুক্ত।আমাদের দেশের মা,বোনদের অ্যানিমিয়া প্রতিরোধে খুবই উপকারী।
* কৃত্রিম ভিটামিন ‘সি' না খেয়ে সরাসরি টাটকা বা শুকনো আমলকী খেলে ভালো ফল পাওয়া যাবে।
* আমলকী দিয়ে মোরববাও তৈরি করা যায়। এটি পায়খানা পরিষ্কার করে।
* আমলকী খেলে ক্ষুধা বাড়িয়ে দেয়। রুচির পরিমাণ বৃদ্ধি করে।
* শুকনো আমলকী গুঁড়ো করে চুলে মাখলে চুলের বৃদ্ধি ভাল হয়।চুলওঠা,অকালপক্কতা রোধ করা যায়।পাতিলেবুর রসের সাথে মাথায় মাখলে উকুন(LICES)দুর হয়। আমলকী গুঁড়ো করে চুলে মাখলে খুশকি(DANDRUFF) নিবারণ হয়।
* লিভারের সমস্যা থেকে রেহাই দিতে আমলকির তুলনা নেই। আমলকীর রসের মত লিভার টনিক আর নেই।
* অশের(PILES)সমস্যা থেকে রেহাই পেতে দুপুরে খাবার পর ৬ চামচ আমলারস ১০০গ্রাম দুধের সাথে ১/২ চামচ ঘি আর ১ চামচ মধু মিশিয়ে খেলে উপকার হবে।
* পেটের যে কোন সমস্যা,অম্বল,গ্যাস,থাকলে আমলকী গুঁড়ো চিনিসহ দুধের সাথে দিনে ২ বার খেলে উপকার হবেই হবে।
* অ্যালাজী জনিত শ্বাসকস্টে আমলকী খুবই উপকারী।
* মধুর সাথে আমলারস মিশিয়ে খেলে চোখের দৃষ্টিশক্তির উণ্নতি ঘটে।
* আমলকী হৃদয়ের মাংশপেশী মজবুত করে হার্টের অ্যাটাক রোধ করে। কোলেস্টেরল কমাতে ভীষনভাবে সাহায্য করে।
* টাটকা আমলকীর রস সকালে উঠে খেলে শরীর পুষ্ট হয় ও শরীরের ভেতর ফুর্তি ভাব জাগায়। শরীরে ঠান্ডা প্রভাব বিস্তার করে।
*স্মৃতিশক্তি, চিন্তা শক্তি বাড়াতে আমলকী ভীষন উপকারী।
আমলকী খাওয়ার নিয়মঃ
আমলকী ছোট, বড়, বৃদ্ধ সব বয়সের ব্যক্তিরাই খেতে পারেন। কাঁচা খাওয়াই সবচেয়ে ভালো। তবে শুকিয়ে এবং আচার বানিয়ে সংরক্ষণ করেও খাওয়া যেতেপারে।
সতর্কতাঃ
যাদের ঠান্ডা লাগার প্রবণতা আছে,কিডনির রোগ আছে তাদেরখেতে বাধা আছে। তবে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী খেতে পারবেন।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে এপ্রিল, ২০১৩ বিকাল ৫:০৩