somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

parvaj
জিবনটা আসলেই অনেক সুন্দর!এতো বেশি সুন্দর যে, মাঝে মাঝে অসহ্য লাগে।যাহা ভাবি তাহা কেন জানি হয়েও হয় না। স্বপ্ন পূরনে ব্যর্থ হয়ে ঘুরে ফিরি। কবে হবে এর শেষ মরন এলেই বুঝি।

নায়ক রাজ রাজ্জাক

২৩ শে আগস্ট, ২০১৭ দুপুর ২:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


বাংলা সিনেমায় তার আগমন প্রয়াত জিনিয়াস জহির রায়হানের হাত ধরে। কলকাতা থেকে এসে জহির রায়হানের এসিসট্যান্ট ডিরেক্টর হিসেবে কাজ করতেন। নিজেই বলেছেন
জহির রায়হান। তিনি আমাকে আশ্বাস দিয়েছিলেন। আমি তখন চলচ্চিত্র জগতে বারবার রিফিউজড হচ্ছি। কেউ আমাকে নিয়ে ভাবছে না। তখন তিনিই একমাত্র মানুষ, যিনি আমাকে বলেছিলেন, “আমি আপনাকে ব্রেক দেব।” তখন তিনি “বাহানা” ছবিটি করছিলেন। সেটা শেষ হলে “হাজার বছর ধরে” করবেন ভেবেছিলেন। কিন্তু তা আর করা হয়নি। তবে আমাকে স্নেহ দিয়ে, উপদেশ দিয়ে এই জগতের উপযোগী করে তুলেছিলেন তিনি।’
জন্ম কলকাতায়। বাংলাদেশে তিনি এসেছিলেন ৬৪ এর দাঙ্গায় শুন্য হাতে পরিবার নিয়ে। কমলাপুরের এক সাধারণ বাসায় ভাড়া থাকতেন। বাকিটা ইতিহাস।
নিজেই বলেছিলেন
" এই শহরে আমি এসেছিলাম একজন রেফিউজি হয়ে। "
এরপরের গল্পটা একজন রেফিউজির নিজ হাতে একটা দেশের সিনেমা ইন্ড্রাস্ট্রিকে দাড় করানোর ইতিহাস। তার মুখেই শুনুন
" তখন ছিল উর্দু সিনেমার রাজত্ব। জহির রায়হান , শবনম ,ফতেহ লোহানি , খান আতা ,আনোয়ার হোসেন আমরা কয়েকজন মিলে সিদ্ধান্ত নিলাম গড়তে হবে বাংলা সিনেমা ইন্ড্রাস্ট্রি "
এ দেশের হলে তখন উর্দু মুভি চলত। কিসের কি? একের পর এক সুপারহিটে উর্দুকে সড়িয়ে হলে রাজ স্থাপন করলেন রাজ্জাক।
দুই ভাই, আবির্ভাব, বাঁশরী, এতটুকু আশা, নীল আকাশের নীচে, যে আগুনে পুড়ি, পায়েল, দর্পচূর্ণ, যোগ বিয়োগ, ছদ্মবেশী, জীবন থেকে নেয়া, মধুর মিলন প্রতিটা ছবি সুপারহিট।
বলিউডে এংগ্রি ইয়াং ম্যান বলা হয় অমিতাভ বচ্চন কে। রোমান্টিক হিরোর চিরাচরিত ইমেজ ভেঙ্গেছিলেন যিনি। হলিউডের এংগ্রি ইয়াং ম্যান আরেক জিনিয়াস ক্লিন্ট ইস্টউড।
কিন্তু কেউ জানেনা অমিতাভ বচ্চন সত্তরের শেষ দিকে এংগ্রি ইয়াংম্যান চরিত্রের প্রতিষ্ঠার বহু আগে রংবাজ মুভিতে রাজ্জাক উপমহাদেশীয় সিনেমায় প্রথম এংগ্রি ইয়াংম্যানের ইমেজ প্রথমবারের মত এনেছিলেন।
বুঝতে হবে তার হাতেখড়ি কিন্তু মঞ্চে। মঞ্চ থেকে যারা আসে তারা বানানো হয় ,তারা জানা এক্টর হয়।
অভিনয় তাদের রক্তে থাকে।
রাজ্জাক স্যারের সিনেমা হলে গিয়ে দেখার ভাগ্য আমার হয়নি। তার সাথে আমার পরিচয় ৩.২০ এর বাংলা সিনেমায়।
আমাদের একটা ২১ ইঞ্চি ন্যাশনাল কালার টেলিভিশন ছিলো। শুক্রবারে রাজ্জাকের সিনেমা মানে টিভির রুমে
আশেপাশের দশ বাড়ির মা খালা চাচী আপুরা জড়ো হয়ে হা করে রাজ্জাক কবরিকে দেখা।
এদিকে এই উপমহাদেশে উত্তম সুচিত্রার পর রাজ্জাক কবরিই ছিলো প্রথম জুটি প্রথার প্রবর্তক। রাজ্জাক কবরি মানেই অন্যকিছু ছিলো।
এই যে শুক্রবারে রাজ্জাকের সিনেমা ,তাই মা খালাদের সব রেখে টিভির সামনে বসে যাওয়া টা না।
দিস ইজ কল্ড ট্রু স্টারডম। দিস ইজ কল্ড ট্রু সেলেব্রেটি।
এই দুনিয়াতে আমি চারজন মানুষ কে শুধু অভিনেতা ,বরং ইনস্টিটিউশন অফ এক্টিং মনে করি।
রাজ্জাক স্যার তার মধ্যে একজন।
মার্লোন ব্র্যান্ডো ,ক্লিন্ট ইস্টউড ,মেরিল স্ট্রিপ আর রাজ্জাক স্যার্।
আমার কেন জানি মনে হয় তাকে আমরা কাজে লাগাতে পারিনি। বয়স হয়ে যাওয়ার পর হলিউড যেভাবে জ্যাক নিকোলসন ,রবার্ট ডি নিরো ,মাইকেল কেইন আর বলিউড দিলিপ কুমার আর অমিতাভ বচ্চন কে কাজে লাগিয়েছে রাজ্জাক স্যারের জিনিয়াস কে আমরা কাজে লাগাতে পারিনি।
এ দেশের না হয়ে অন্য দেশের হলে রাজ্জাক স্যার আর ফরিদি স্যার অবশ্যই অস্কার পেতেন।
আজ সেই মহানায়ক আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন। আমি জানিনা একজন রাজ্জাকের গুরুত্ব নতুন প্রজন্ম কতটুকু বুঝতে পারে।
হলিউড কে আজকের অবস্থানে আনতে লরেন্স অলিভিয়ের আর বলিউডকে দাড় করাতে রাজ কাপুরের যে অবদান বাংলা মুভি ইন্ড্রাস্ট্রি কে দাড় করাতে রাজ্জাক স্যারের সেই অবদান।
দা ফার্স্ট এন্ড ট্রু সুপারস্টার অফ বাংলা সিনেমা।
বাংলা সিনেমা হয়ত একদিন অনেক উপরে যাবে। আয়নাবাজি ,মনপুরার মত মুভি দিয়ে সেই যাত্রা শুরু হয়েছে।
কিন্তু প্রথম সবসময় প্রথমই থাকে।
৬৪ তে রেফিউজি হিসেবে এ শহরে আসা রাজ্জাক নামের সুদর্শন ছেলেটি সবসময়ই বাংলা সিনেমার নায়করাজ থেকে যাবেন।
Thank you sir. Thank you for one of the greatest cinematic journey in the history of motion pictures.
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে আগস্ট, ২০১৭ দুপুর ২:৪২
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জীবনের গল্প

লিখেছেন ঢাকার লোক, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৩৫

মাত্র মাস দুই আগে আমার এক আত্মীয়ের সাথে দেখা আমার এক বোনের বাড়ি। তার স্ত্রী মারা গেছেন তার সপ্তাহ দুই আগে। মক্কায় উমরাহ করতে গিয়ে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমান

লিখেছেন জিনাত নাজিয়া, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:১২

" অভিমান "

তোমার ঠোঁটে বোল শিখেছি
তুমি আমার মা, কেমন করে
ভুলছ আমায় বলতে
পারিনা। এমন করে চলে
গেলে, ফিরে ও এলেনা। হয়তো
তোমার সুখেই কাটছে দিন,
আমায় ভাবছ না।

আমি এখন সাগর... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার কিছু ভুল!

লিখেছেন মোঃ খালিদ সাইফুল্লাহ্‌, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮

১। ফ্লাস্কে চা থাকে। চা খেতে টেবিলে চলে গেলাম। কাপে দুধ-চিনি নিয়ে পাশে থাকা ফ্লাস্ক না নিয়ে জগ নিয়ে পানি ঢেলে দিলাম। ভাবছিলাম এখন কি করতে হবে? হুঁশ ফিরে এল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×