somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গাউসে জামান, আল্লামা, হাফেজ, ক্বারী সৈয়্যদ মুহাম্মদ তৈয়্যব শাহ্ (রাঃ.)’র সংক্ষিপ্ত জীবন পরিক্রমাঃ

০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


ණএডভোকেট মোছাহেব উদ্দিন বখতিয়ার

#রাসূলে করিম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন-‘‘আমার আহলে বাইত (বংশধর) হলো নূহ্ আলায়হিস্ সালাম-এর জাহাজ এর মতো- যারা এতে আরোহণ করবে নাজাত পাবে, আর যারা অস্বীকার করবে ধবংস হবে’ [আল-হাদিস]
আরো এরশাদ হয়েছে, আমি তোমাদের জন্য দু’টি অবলম্বন রেখে যাচ্ছি, একটি আল্লাহর কিতাব (কুর’আন) অপরটি আমার বংশধর (হাদিস)। কুর’আনে করিমে তাদের প্রতি ভালোবাসার তাগিদ দেওয়ার সাথে সাথে তাদের পবিত্রতাও বর্ণিত হয়েছে সুস্পষ্টভাবে। কারণ, এ পবিত্র বংশধরগণ আমাদের দ্বীনের রক্ষা কবচ এবং আমাদেরও ত্রাণকর্তার দায়িত্ব পালন করে যাবেন কেয়ামত পর্যন্ত। হযরত ইমাম হোসাইন (র.) কারবালার ময়দানে সপরিবারে শাহাদাত বরণ করেছেন- কিন্তু পাপিষ্ঠ এজিদের সাথে হাত মেলাননি। তিনি প্রাণ দিয়েছেন কিন্তু দ্বীন রা করে গেছেন। তাইতো এ উপমহাদেশে ইসলামের প্রধান প্রতিষ্ঠাতা খাজা।গরীব নওয়াজ মঈনুদ্দিন চিশতি (রহ.) বলেন- ‘‘দ্বীন আস্ত হোসাইন-দ্বীন পানাহ্ আস্ত হোসাইন- সরদা’দ না দা’দ দস্ত দর দস্তে ইয়াজিদ, হক্বকে বেনাহ্ লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ্ হাস্ত হোসাইন’’ অর্থাৎ দ্বীন মানে হোসাইন, দ্বীনের রা কবচ হলো হোসাইন (তাইতো) মাথা উৎসর্গ করলেও হাত মেলাননি এজিদের সাথে- প্রকৃতঅর্থে হোসাইন তো ‘লাইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মদুর রাসূলুল্লাহ্’ এই কলেমার বুনিয়াদ। ৬১ হিজরির সেই মহান।আত্মত্যাগে ইসলাম পুনরুজ্জীবিত হয়েছিল বলেই ‘ইসলাম জিন্দা হোতা হ্যায়- হার কারবালাকে বা’দ’।কবিতাটি আজ চিরঞ্জীব হয়ে ওঠেছে ইসলামি জগতে। এর চারশ বছর পরে জন্ম নেন মুহিউদ্দীন আবদুল কাদের জিলানী (৪৭১-৫৬১ হিজরি) রহমাতুল্লাহি আলাইহি। তিনি বাহাত্তরটি বাতিল ফিরকার মূলোৎপাটন করে।ইসলামের মূলধারা সুন্নিয়তকে চিহ্ণিত করে দিয়ে দ্বীনের রা কবচ (মহী উদ্দিন) হিসেবে আবির্ভূত হন। সুন্নিয়ত ও সিলসিলায়ে আলীয়া কাদেরিয়ার যে মহান আদর্শ তিনি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন তা- পরবর্তীতে তাঁর খলিফা এবং বংশধর পরম্পরায় দুনিয়ার দেশে দেশে ব্যাপৃত হয়। হিজরি চতুর্দশ শতাব্দিতে পেশোয়ায়ে আহ্লে সুন্নাত, কুতুবুল আউলিয়া, গাউসে জামান আল্লামা সৈয়্যদ আহমদ শাহ্ সিরিকোটি পেশোয়ারী (রহ.)’র আবির্ভাব ছিল সেই ধারাবাহিকতায় এক নতুন দিগন্ত রূপে। তিনি আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য, বার্মা, পাকিস্তান এবং বাংলাদেশে গাউসুল আ’যম জিলানী (রাহ.)’র সিলসিলাহ’র মূলধারা এবং একই সাথে ইসলামের মূলধারা সুন্নিয়তের রা কবচ হয়ে এক বে-মেসাল অবদান রেখে গেছেন। শরিয়ত ত্বরিকতের কল্যাণে যে মহান সংস্কার আন্দোলনের বীজ তিনি বপন করেছিলেন তাকে ফলে-ফুলে প্রস্ফূটিত করে বিশাল-বটবৃক্ষে রূপ দিতে সম হয়েছিলেন তাঁরই সুযোগ্য শাহ্জাদা গাউসে জামান আল্লামা হাফেজ ক্বারী সৈয়্যদ।মুহাম্মদ তৈয়্যব শাহ্ (র.)

#জন্ম, বংশ ও দীক্ষা:
জন্ম তাঁর ১৩৪০ হিজরির দিকে (১৯১৬/১৯২০ খ্রিষ্টাব্দ) পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশস্থ হাজারা জেলার দরবারে আলীয়া কাদেরিয়া সিরিকোট শরীফে। শুধু তাঁর পিতা সিরিকোটি (রহ.) নন, বরং তাঁর আম্মাজান সৈয়্যদা খাতুন (রহ.)ও একজন সাহেবে কাশ্ফ অলিআল্লাহ্ হিসেবে সমগ্র সিরিকোট অঞ্চলে মশহুর ছিলেন। আব্বা-আম্মা উভয় দিক থেকেই তিনি ইমাম হোসাইন (রা.)’র বংশ ধারায় বিখ্যাত মাশওয়ানী’ গোত্রের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। [হা’লাতে মাশওয়ানী] শিখ-হিন্দু অধ্যুষিত এই গভীর পার্বত্য এলাকা (কোহে গঙগার) ইসলামের ছায়াতলের আসে তাঁরই ১৫তম ঊর্ধ্বতন পুরুষ সৈয়্যদ গফুর শাহ্ ওরসে আল ‘মারূফ কাপুর শাহ্ (রহ.)’র হাতে- তাই তাঁকে ‘ফতেহ্ সিরিকোট’ (সিরিকোট বিজয়ী) বলা হয়।
[local Govt act, Ref-15, Hazara 1871, Pakistan]
আর গফুর শাহ্ (রহ)’র ১২তম ঊর্ধ্বতন পুরুষ ছিলেন আফগান, বেলুচিস্তান, উত্তর পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশ, পাঞ্জাবসহ বিশাল ভারতীয় এলাকার ইসলাম প্রচারক মহান ঐতিহাসিক এবং আধ্যাত্মিক ব্যক্তিত্ব হযরত গাজী সৈয়্যদ মুহাম্মদ গীসুদারাজ (রহ.)। যিনি ইরাকের ‘আউস’ নামক অঞ্চল থেকে ইসলামের দাওয়াত নিয়ে এই অঞ্চলে এসেছিলেন এবং কোহে সোলায়মানী নামক স্থানে স্থায়ীভাবে বসতি স্থাপন করে সেখানেই ওফাত বরণ করেন (৪২১ হিজরী)। সৈয়্যদ মুহাম্মদ গীসুদারাজের
ঊর্ধ্বতন পঞ্চম পুরুষ ছিলেন সৈয়্যদ জালাল ওরফে আর।রিজাল (রহ.)। যিনি ছিলেন ইমাম জয়নুল আবেদীন (রা.)’র চতুর্থ অধঃস্তন পুরুষ এবং হুজুর করিম সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লামের সপ্তম অধঃস্তন পুরুষ। ইনিই জন্মভূমি মদিনা মুনাওয়ারা থেকে এজিদী জুলুমের কারণে হিজরত করে ইরাকের আউস অঞ্চলে বসতি স্থাপন করেছিলেন এবং এই আউস অঞ্চলকে দ্বীনি শিক্ষার এক গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলেছিলেন।
[কাজী আবদুল ওহাব, তরজুমান, জিলহজ্ব -১৪৩৩]

মোটকথা, বংশ পরম্পরায় গাউসে জামান তৈয়্যব শাহ্ (রহ.) রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লামের হোসাইনী ধারার বীরপুরুষ ইসলাম প্রচারক বুযুর্গদের বংশধর ছিলেন এবং নিজের কর্মজীবনে সেই কৃতিত্বের ধারাবাহিকতা রাকারী এক ক্ষণজন্মা সংস্কারক ব্যক্তিত্ব ছিলেন।তাঁর শরিয়ত ও ত্বরিকতেরহাতে খড়ি শিতি আম্মা হুজুরএবং আব্বা হুজুরের কাছে। অল্প বয়সেই কুর’আনের হিফজসহ ইলমী শরিয়তের যাবতীয় শাখায় তিনি বিচরণ করতে সম হয়েছিলেন। পারিবারিক ও প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা সমাপ্তির পর তিনি হরিপুরস্থ ইসলামিয়া রহমানিয়া মাদ্রাসায় (১৯০২ খ্রি.) শিক ও অধ্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। পাকিস্তানের বিখ্যাত আলেমে দ্বীন সরদার আহমদ লায়লপুরীর লয়াল (রহ.) তাঁর মাদরাসার সনদ ও পাগড়ি।বিতরণ অনুষ্ঠানে বরাবরই প্রধান অতিথি হিসেবে নিয়ে যেতেন হুযূর কেবলা তৈয়্যব শাহ্’ কে এবং তাঁর।বরকতময় হাতেই সনদপ্রাপ্ত ছাত্রদের পাগড়ি পরিধান করাতেন।

#মাতৃগর্ভের অলীঃ
শৈশব থেকেই তাঁর আচরণে আধ্যাত্মিকতার প্রভাব পরিলতি হবার কারণে ‘মাদারজাত অলী’ (মাতৃগর্ভের অলী) হিসেবে তিনি খ্যাতি লাভ করেছিলেন বাল্যকালেই। পরবর্তীতে স্বয়ং তাঁর আব্বা হুযূর ও চট্টগ্রামে বহুবার তাঁকে মাদারজাত অলী হিসেবে আখ্যায়িত করেন। একবার সিরিকোটি হুযূরের কোন এক মুরীদ শাহ্জাদা তৈয়্যব শাহ্ হুযূরের জন্য এক জোড়া জুতা বানাতে অনুমতি চান এবং পায়ের মাপ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে বলেন যে, তাঁর পায়ের একই সাইজে বানালে চলবে। জুতা তৈরী করে আনার পর ঐ জুতা মাপ মতো হয়েছে কিনা পায়ে দিয়ে দেখতে আরজ করেন সিরিকোটি হুযূরকে। তখনই তাঁর মেজাজ আর কে থামায়! তিনি বলেন, ‘খামোশ! মেরে হিম্মত নেহী হ্যায় তৈয়্যবকে জুতো পর পাও রাখে- উয়হ্ মাদারজাত অলী হ্যায়’। তাঁর আব্বা ও আম্মা হুযূরের পীর মুর্শিদ, গাউসে দাঁওরান, খলিফায়ে শাহে জিলান, খাজা আবদুর রহমান চৌহরভী (রহ.)’র সাথে তাঁর জন্মপূর্ব এবং পরবর্তী সময়ের তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনাসমূহ ওই প্রসঙ্গে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একবার সিরিকোটি সাহেব কেবলা তাঁর মুর্শিদে বরহক খাজা চৌহরভীর সম্মুখে বসেছিলেন। হঠাৎ খাজা চৌহরভী সিরিকোটি হুযূরের শাহাদাত অঙ্গুলিটি টেনে নিয়ে নিজের পৃষ্ঠদেশে ঘর্ষণ করতে করতে বলেন- ‘ইয়ে পাক চিজ তুম নে লে লো’- অর্থাৎ এই পবিত্র সত্তাটি তুমি নিয়ে নাও। আর, এরপরেই জন্ম হয় শাহজাদা তৈয়্যব শাহ্’র। জন্মের পর নাম রাখা হয় ‘আরবী শব্দ ‘তৈয়্যব’, অথচ এর স্থানীয় অর্থ হলো পাক বা পবিত্র। এই আকস্মিক উক্তির সাথে নবজাতক এ আহলে বাইত’র নামের মিল শুধু নয়- এর রয়েছে আরো অনেক রহস্যপূর্ণ মর্মার্থ। খাজা চৌহরভী (রহ.) জানতেন যে, তাঁর এই প্রিয় মুরীদ দম্পতির প্রথম শাহজাদা সৈয়্যদ মুহাম্মদ সালেহ শাহ্ (ওফাত: ১৯২৮খ্রি.) যৌবনের শুরুতেই ইহলোক ত্যাগ করবেন। সুতরাং শরিয়ত-ত্বরিকতের জন্য উৎসর্গিত এই প্রিয় দম্পতিকে এমন এক পবিত্র সন্তান দিতে হয় যার হাতে এই দ্বীনি মিশনের বে-মেসাল খিদমত হবে- যিনি নিজেই শুধু পূত- পবিত্র হবেন না- তাঁর হাতে হাত রেখে এবং তাঁর সান্নিধ্যে এসে জাহেরী-বাতেনী পবিত্রতা অর্জন করবে লক্ষ লক্ষ মানুষ। যেভাবে শাইখুল মাশায়েখ হযরত মুহীউদ্দীন ইবনুল আরাবীর সংস্পর্শে এসে অসংখ্য মানুষের অপবিত্রতা দূরীভূত হয়েছিল সেকালে। উল্লেখ্য, সন্তানহীন এক আরববাসী গাউসুল আযম জিলানী (রা.)’র কাছে এসেছিলেন সন্তানের জন্য। আর গাউসে পাক (রা.) তাঁকে বিমুখ না করে নিজের পৃষ্ঠদেশে সন্তান প্রার্থীর পৃষ্ঠদেশ ঘষে দিলেন এবং বললেন আমারই একটি সন্তান তোমাকে দান করলাম; জন্মের পর নাম রাখবে ‘মহীউদ্দীন’। আর এই সন্তানই ত্বরিকত জগতের উজ্জ্বল নত্র মুহীউদ্দীন ইবনুল আরবী- যাঁর জন্মের ঘটনার সাথে তৈয়্যব শাহ্’র জন্ম ঘটনা সাদৃশ্যপূর্ণ বটে। এই শিশু তৈয়্যব শাহ্’র বয়স যখন দুই, তখন একদিন খাজা চোহরভীর সম্মুখে উপবিষ্ট আম্মার বুকের দুধ পেতেনঅধৈর্য হয়ে মাকে বিরক্ত করছিলো অন্যান্য শিশুদের মতোই। কিন্তু খাজা চৌহরভীর দৃষ্টি এড়াতে পারেনি এই দৃশ্য। তিনি শিশুকে লক্ষ্য করে বললেন- ‘তৈয়্যব তুম বড়া হো গেয়া, দুধ মত পিউ’। আর সাথে সাথেই শান্ত হয়ে যায় এ অবুঝ শিশু- যেন এক বাধ্য মুরীদ এই শিশু। এমন কি বাড়িতেও আর দুধ খাওয়ানো সম্ভব হলো না তাঁকে অনেক চেষ্টা সত্ত্বেও। মা দুধ খেতে পীড়াপিড়ি করলে উত্তর দেন- ‘বা’জিনে মানা কিয়া, দুধ নেহী পিউঙ্গা’। তিনি জীবনেও আর দুধ পান করেননি- এমন কি পরবর্তি জীবনেও না। মাত্র চার বছরের শিশু তৈয়্যব শাহ্ তাঁর আব্বা হুজুরকে বলেছিলেন, ‘নামাজ মে আপ আল্লাহ্ কো দেখতা হ্যায়, মুঝেহ ভি দেখনা হ্যায়’। সাত/আট বছর বয়সের কিশোর তৈয়্যব শাহ্ যখন আব্বা হুজুরের সাথে আজমীর শরীফ জেয়ারতে যান- তখন স্বয়ং শাহেনশাহে আজমীর, খাজা গরীব নেওয়াজ (রাহ.)’র সাথে তাঁর শারীরিক সাাতের মতো বিরল ঘটনার অবতারণা হয়। এরূপ অসংখ্য অলৌকিক কর্মকাণ্ড ও আচরণ তাঁর শৈশব-কৈশোরে প্রকাশ। পায়- যা সত্যিই অসাধারণ। ছয় মাসের শিশুকে ফিরনি মুখে দিতে এসেছিলেন খাজা চৌরহভী (র.), গরম গরম ফিরনি রাখা হলো সম্মুখে। চৌহরভী।হুযুর বললেন, তৈয়্যব তুমি না।খেলে আমিও খাবো না, আর সাথে সাথেই এই উত্তপ্ত ফিরনিতে হাত মেরে ফিরনি।মুখে দিয়ে খেতে লাগলেন শিশু তৈয়্যব শাহ্ যা দেখে উপস্থিত সকলেই ভীত- সন্ত্রস্থ হয়ে পড়েছিলেন। অথচ শিশু তৈয়্যব শাহ্ ছিলেন অত এবং স্বাভাবিক। আর দেখে দেখে হাসছিলেন খাজা চৌহরভী (রহ.)।

#বাংলাদেশে আল্লামা তৈয়্যব শাহ্ (রহ.):
বাংলাদেশে তাঁর প্রথম শুভাগমন হয় ১৯৪২ খ্রিষ্টাব্দে, শা’বান মাসে। মূলতঃ এ বছর থেকেই তাঁর আব্বা হুজুর সিরিকোটি (রহ.)’র দ্বীনী আন্দোলনের রেঙ্গুন অধ্যায় স্থগিত করে, এ-কে পুরোপুরি চট্টগ্রামে নিয়ে আসেন, যদিও বা ১৯৩৫-৩৬ থেকেই তাঁর চট্টগ্রাম যাওয়া-আসা শুরু হয় এবং ১৯৩৭’র ২৯ আগস্ট আনজুমান এ সূরা-এ রহমানিয়া রেঙ্গুন’র চট্টগ্রাম শাখা প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৪২’র টগবগে তরুণ এই আল্লামা চট্টগ্রাম আন্দরকিল্লাহ শাহী জামে মসজিদে রমজান মাসের খত্মে তারাবীতে ইমামতি করেন। ১৯৫৮ ছিল বাংলাদেশে সিরিকোটি (রহ)’র শেষ সফর। এ বছরও তিনি বাংলাদেশে তশরিফ আনেন, সম্ভবতঃ দ্বিতীয়বারের মত। এ বছরই চট্টগ্রামের রেয়াজুদ্দিন বাজার শেখ সৈয়্যদ ক্লথ স্টোরে চলমান খতমে গাউসিয়া মাহফিলে তাঁকে আব্বা হুযূর কর্তৃক জনসমে খেলাফত দেয়া হয় আনজুমান-এ রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া’র সংবিধান সংশোধনী কমিটিতে তাঁকে প্রধান করে এ বছরই তাঁকে আনজুমান’র জিম্মাদারীতে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিষিক্ত করা হয়। সে থেকে সিরিকোটি হুজুরের ওফাত পরবর্তীকাল থেকে শুরু করে ১৯৮৬ পর্যন্ত তিনি এ বাংলাদেশ সফর করেন (মাঝখানে ক’বছর ছাড়া)। শরিয়ত-ত্বরিক্বতের যে আন্দোলনের প্রাতিষ্ঠানিক যাত্রা চট্টগ্রামকে কেন্দ্র করে ১৯৩৭ থেকে শুরু হয়েছিল- তা এক মহাস্রোতে রূপ লাভ করেছিল তাঁর নেতৃত্বে। এই সময়ে ম্রীয়মান সুন্নিয়াত লাভ করে পূণর্জীবন আর কাদেরিয়া ত্বরিকার মূলধারা পৌঁছে যায় বাংলাদেশের ঘরে ঘরে।

#সাচ্চা আলেম তৈরীর আন্দোলন:
আগেই বলা হয়েছে যে, আহলে বাইতগণ দ্বীনের রা কবচ হিসেবেই যুগে যুগে দায়িত্ব পালন করে গেছেন। ইমাম হোসাইন ও গাউসে পাক রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহুমার পদাঙ্ক অনুসারী শাহেনশাহে সিরিকোট বলেছিলেন- ‘কাম করো-দ্বীনকো বাচাও, সাচ্চা আলেম তৈয়ার করো।’ দ্বীন- ইসলাম’র মূলধারা রার জন্য কাজ করতে হবে এবং সাচ্চা আলেম তৈরী করতে হবে। আর এ কাজটাই ছিলো এই সিলসিলাহ’র একমাত্র উদ্দেশ্য- যা তৈয়্যব শাহ্ হুযূরের হাতে লাভ করে নতুন জীবন। তিনি ১৯৫৪ তে সিরিকোটি (রহ.) কর্তৃক চট্টগ্রাম ষোলশহরে প্রতিষ্ঠিত ‘জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া মাদরাসা’কে এশিয়ার অন্যতম শ্রেষ্ঠ ‘সাচ্চা আলেম’ তৈরীর কারখানাতে উন্নীত করেন- যা আজ ‘সুন্নিয়া মাদ্রাসা’ বা ‘জামেয়া’ নামে একক পরিচয়ে সমুজ্জ্বল। আজ এ মাদ্রাসার সাচ্চা আলেমদের নেতৃত্বেই দ্বীন রার আন্দোলন বেগবান আছে। শুধু এ মাদ্রাসার পরিচর্যা নয়, তিনি নিজে প্রতিষ্ঠা করে গেছেন অসংখ্য মাদ্রাসা, যা এ আন্দোলনের সহযোগি হয়ে সুন্নিয়তকে জীবিত রেখেছে। ১৯৬৮ সনে রাজধানী ঢাকার।মুহাম্মদপুরে প্রতিষ্ঠিত ‘কাদেরিয়া তৈয়্যবিয়া আলীয়া মাদ্রাসা (বিশ্ববিদ্যালয়) আজ রাজধানীতে সূফিবাদী সুন্নি মুসলমানদের একমাত্র অবলম্বন। এটা না থাকলে আজ বাংলাদেশের রাজধানী হয়ে থাকতো অরতি। চট্টগ্রাম হালিশহর তৈয়্যবিয়া (ডিগ্রী) মাদ্রাসা (১৯৭৫), চন্দ্রঘোনা তৈয়্যবিয়া অদুদিয়া (ডিগ্রী) মাদরাসা (১৯৭৬)সহ বাংলাদেশ, বার্মা, পাকিস্তান বিভিন্ন স্থানে রয়েছে অসংখ্য মাদ্রাসা- যা তাঁর ‘সাচ্চা আলেম’ তৈরীর আন্দোলনের মহাসড়কে মাইলফলক হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।

#জশনে জুলুছ’র রূপকারঃ
পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নী সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম বিরোধী ষড়যন্ত্র যখন এদেশের সুন্নিয়তের ভবিষ্যতকে অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিচ্ছিল- তখন এর আবেদনকে বাংলাদেশের ঘরে ঘরে পৌছিয়ে দিয়ে ষড়যন্ত্রের দাঁতভাঙ্গা জবাব হিসেবে তিনি এ অনুষ্ঠানে যোগ করলেন এক নতুন অনুষঙ্গ- যার নাম ‘জশ্নে জুলুছ’। এ ‘জশ্নে জুলুছ’ এর আগে এদেশে কেউ দেখেনি, শুনেনি আর উদ্যাপন তো দূরের কথা এবং প্রদত্ত রূপরেখা অনুসারে- আলহাজ্ব নূর মুহাম্মদ আলকাদেরী তাঁর নির্দেশে ১৯৭৪ এ ‘আনজুমান-এ রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া (ট্রাস্ট)’র ব্যবস্থাপনায় সর্বপ্রথম এই নতুন কর্মসূচী বর্ণাঢ্য মিছিল ১২ রবিউল আউয়াল তারিখে বলুয়ারদিঘী পাড়স্থ খানকাহ্ এ কাদেরিয়া সৈয়্যদিয়া তৈয়্যবিয়া হতে শুরু করে ষোলশহর জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলীয়া মাদরাসা ময়দানে এসে মিলিত হয়ে মীলাদ মাহফিল, মুনাজাত ও তবাররুক বিতরণের মাধ্যমে সমাপ্ত করে। ১৯৭৬ এ স্বয়ং হুযুর কেবলা তৈয়্যব শাহ্’ এতে নেতৃত্ব দেওয়ার ফলে এ জশ্নে জুলুছ দেখতে না দেখতে চট্টগ্রামের স্থানীয় উৎসবে রূপ লাভ করে এবং ১৯৮৬ সালের জুলুছটি ছিল ল ল মানুষের উপচেপড়া জোয়ারে ভাসা এক মহানন্দের বন্যা সদৃশ। ‘জশ্নে জুলুছ’ ‘বাংলাদেশের সংস্কৃতিতে এনেছিল এক বৈচিত্র্য এবং মীলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লামকে এনে দিল নতুন প্রাণ ও গ্রহণযোগ্যতা। দেখতে না দেখতে এ জুলুছ বাংলাদেশের অন্যান্য পীর-মাশায়েখ ও প্রতিষ্ঠানগুলোর নেতৃত্বেও বের হতে লাগলো। আজ বাংলাদেশে এমন কোন জেলা-থানা হয়তো নেই যেখানে ‘জশনে জুলুছে ঈদে মীলাদুন্নবী’ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম উদ্যাপিত হচ্ছে না। হুজুর কিবলা আমাদেরকে সাংস্কৃতিকভাবেও ঋণী করেছেন। অধিকন্তু এ জুলুছ চলমান পঞ্চদশ শতাব্দি হিজরির অন্যতম প্রধান সংস্কার হিসেবে সর্বজন গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে- যা গাউসে জামান তৈয়্যব।শাহ্কে সংস্কারক মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করেছে।

#সাংগঠনিক প্রয়াস:
সাংগঠনিক ঐক্য ও সংহতি ছাড়া কোন আদর্শকে টিকিয়ে রাখা যায় না। তাই তিনি বাংলাদেশের সুন্নি।জামা‘আত’র সাংগঠনিক ভিত্তিকে মজবুত করতে একেরপর এক উদ্যোগ নিয়েছিলেন। ১৯৭৬ এ বাংলাদেশে পদার্পণ করেই তিনি এ দিকে মনোনিবেশ করেন এবং সুন্নি আলেমদের ঐক্যবদ্ধ সংগঠন গড়ে তুলতে।ওলামাদের তাগিদ দেন। সে।তাগিদ অনুসারে জামেয়া-আনজুমান ওলামা সম্মেলনও আয়োজন করেছিল- যদিওবা আমরা সে মহান উদ্যোগের।সুফল ঘরে তুলতে ব্যর্থ হয়েছি। ভিনদেশী হুজুর কেবলা আমাদের ভাগ্য পরিবর্তনে যতটুকু আন্তরিক ছিলেন দুর্ভাগ্যবশতঃ আমরা স্বদেশী হয়েও তা উপলব্ধি করতে পারিনি। পরবর্তীতেও একই উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল জামেয়া ময়দানে ওলামা সম্মেলন আহ্বান করে আনজুমানের পৃষ্ঠপোষকতায়-এটাও গোল্লায় গিয়েছিল শেষ পর্যন্ত। সুন্নিয়াতের প্রতিনিধিত্ব জাতীয় সংসদেও নিশ্চিত করতে তিনি ওলামাদের নির্দেশ দিয়েছিলেন এবং তা তদারকি করেছিলেন কয়েকবছর ধরে, কিন্তু ‘যে জাতি নিজের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য নিজেরা সচেষ্ট নয়- আল্লাহ্ তাদের ভাগ্য নিজের গরজে পরিবর্তন করে দেন না’। [আল-কুরআন]
এই সত্যটিই শেষ পর্যন্ত প্রতিষ্ঠিত হলো। হুজুর কেবলার জীবদ্দশায় এ কাজটিও আমরা করে দেখাতে ব্যর্থ হয়েছিলাম। বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসেনাকে শুধু ঈমানী ফৌজ বলেননি; বরং এ সংগঠনকে আর্থিক পৃষ্ঠপোষকতা দিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন- ফলে এর গ্রহণযোগ্যতাও জনপ্রিয়তানমাত্র ক’বছরের মধ্যেই আকাশ ছুয়ে ফেলার উপক্রম হয়েছিল। কিন্তু তাও বেশিদিননটেকেনি স্বার্থান্বেষী, সুবিধাবাদী ও কুচক্রি ষড়যন্ত্রকারীদের কারণে। তবে এ সংগঠনের মূল শ্রোতধারা এখনও হুজুর কিবলার আশির্বাদে হুজুর কিবলার একেকটি উদ্যোগ যখন আমাদের হাতেই ধবংস হতে লাগলো-যখন সবাইকে নিয়ে চলার রাস্তায় অন্ধকার দেখা গেলো- তখন ‘গাউসিয়া কমিটি বাংলাদেশ’ গঠনের নির্দেশ দেয়া হলো আনজুমানকে ১৯৮৬ সনের শেষ সফরেরও পরে চিঠির মাধ্যমে। আজ এটি সুন্নিয়ত ও ত্বরিকতের জন্য এক মহা আর্শীবাদ হয়ে আবির্ভূত হয়েছে বাংলাদেশ, মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশে।।‘কাম করো, দ্বীনকো বাচাও, সাচ্চা আলেম তৈয়ার করো’- এই নির্দেশের এক বাস্তব প্রতিচ্ছবি হলো এই সংগঠন। আনজুমানের যাবতীয় নিয়মিত কর্মকাণ্ড ছাড়াও দ্বীন রার প্রয়োজনে এ সংগঠনের কর্মিরা অতন্দ্র প্রহরীর মতো সদা সতর্ক থেকে সক্রিয় রয়েছে। সুন্নিয়তের অনুর্বর ত্রেগুলোতে হানা দিয়ে এর উর্বরতা ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে আজ এরা ব্যাপক সফলতা অর্জনে সম হয়েছে। ইনশাআল্লাহ্, সেদিন বেশি দূরে নয়-যেদিন এ গাউসিয়া কমিটি বাংলাদেশ সমগ্র দেশে সুন্নিয়তের নেতৃত্ব দেবে, এমনকি বিদেশেও।

#প্রকাশনার উপর গুরুত্বারোপঃ
হুজুর কিবলার চিন্তাধারা ছিল সুন্নিয়তের ভবিষ্যতের জন্য অত্যন্ত সুদূর প্রসারী। আর প্রকাশনা হলো কোন আদর্শকে লম্বা হায়াত ও গ্রহণযোগ্যতা প্রদানের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। ১৯৭৬।এর ১৬ ডিসেম্বর তারিখে তিনি বাংলা ভাষায় সুন্নিয়াত ভিত্তিক সাহিত্য প্রকাশনার উপর গুরুত্বারোপ করে মাসিক ‘তরজুমান এ আহলে সুন্নাত’ প্রকাশের নির্দেশ দেন এবং জানুয়ারি ১৯৭৭ থেকে আনজুমান থেকে এ প্রকাশনার যাত্রা শুরু হয় এবং পরবর্তীতে নিবন্ধন লাভের পর অদ্যাবধি সুন্নিয়তের শীর্ষস্থানীয় মাসিক প্রকাশনার ক্ষেত্রে এখনো প্রধান এবং প্রাচীনতম।স্থানটি দখল করে আছে। বর্তমানে এটা সুন্নিদের নিয়মিত এবং সর্বজনীন প্রকাশনার ক্ষেত্রে প্রধান অবলম্বন হয়ে আছে। যা হুজুর কেবলার উক্তি ‘ইয়ে তরজুমান বাতেল ফেরকাকে লিয়ে মউত হ্যায়’ এর বাস্তবতা বটে। গাউসে দাঁওরা খাজা চৌহরভী (রহ.) কর্তৃক সংকলিত এ সিলসিলার মাশায়েখ হযরাতে কেরামের বরকতময় দৈনন্দিন অজিফাসমূহের বিরল গ্রন্থ ‘আওরাদুল কাদেরিয়াতুর রহমানিয়া’ প্রকাশনার মাধ্যমে সিলসিলার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন তিনি- যা বর্তমানে বাংলানভাষায় অনূদিত হওয়ার দাবী রাখে। খাজা চৌহরভী (রহ.) রচিত দুনিয়ার বুকে এক বিরলগ্রন্থ ‘মজমুয়ায়ে সালাওয়াতে রাসূল’ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যা সর্বপ্রথম সিরিকোটি (রহ.) কর্তৃক রেঙ্গুনে প্রকাশিত হয় ১৯৩৩ খ্রিষ্টাব্দে। পরবর্তীতে এর ব্যাপক প্রচার ও প্রকাশের ব্যবস্থা করেন গাউসে জামান তৈয়্যব শাহ্ (রহ.)। তিনি জীবদ্দশায় এই বিরল তাৎপর্যপূর্ণ ৩০ পারা বিশিষ্ট।দরূদ গ্রন্থের ২২ পারা পর্যন্ত উর্দু অনুবাদ নিজ তত্ত্বাবধানেই সম্পন্ন করেন- যা পরবর্তীতে বর্তমান হুজুর কিবলা আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ তাহের শাহ্ মাদ্দাজিল্লুহুল আলী কর্তৃক ৩০ পারা পর্যন্ত সম্পন্ন হয়ে বর্তমানে বঙ্গানুবাদসহ প্রকাশিত হচ্ছে। হুজুর কিবলা স্বনামধন্য আলেম, বিশিষ্ট সংগঠক ও লেখক মাওলানা মুহাম্মদ আবদুল মান্নানকে কুর’আনে করিমের বিশুদ্ধ তরজমা কানযুল ঈমান ও নূরুল ইরফানসহ সুন্নিয়াত ভিত্তিক।বাংলা সাহিত্য রচনার জন্য।দোয়া করেন এবং তাঁর দোয়ার। বরকতে আজ বাংলা।ভাষাভাষি সুন্নিরা। মাওলানা মান্নানের লেখনি।দ্বারা উপকৃত হয়েছেন। আনজুমান থেকে প্রকাশিত হয়েছে বহু মূল্যবান গ্রন্থ-যা হুজুর কিবলারই নির্দেশ ও প্রেরণার ফসল এবং সুন্নিয়তের জন্য রা কবচের ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে।

#অন্যান্য অবদানঃ
কাদেরিয়া ত্বরিকা এবং এর মূলধারা এ বাংলাদেশে বহুবছর ধরেই অনুপস্থিত ছিল বলে গবেষকদের অভিমত। কিন্তু আজ গাউসে পাক (রা.)’র এই মহান নি’মাত বাংলাদেশের ঘরে ঘরে পৌঁছে যাচ্ছে। তাঁর হাতে মুরীদ হয়েছে ল ল নারী পুরুষ। সে ধারা অব্যাহত আছে বর্তমান হুজুর কিবলা তাহের শাহ্’র মাধ্যমে- আরো বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়ে। বিশেষতঃ হুজুর কিবলা তৈয়্যব শাহ্ (রহ.) এই সিলসিলাহকে সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যে সমৃদ্ধ করে একে অধিকতর আকর্ষণীয় করে তোলেন মানুষের কাছে। চতুর্দশ শতাব্দির মুজাদ্দিদ,।আ’লা হযরতের নাতিয়া কালাম ‘সবসে আওলা ওয়া আ’লা হামারা নবী’ এবং সালামে রেযা ‘মুস্তফা জানে রহমত পে লাখো সালাম’সহ আরো বহু দোয়া-দরূদ-না’ত কাসিদার সংযোজন ঘটিয়েছেন খতমে গাউসিয়া ও গেয়ারভী শরীফে। ফলে আজ এগুলো ঘরে ঘরে সমাদৃত হচ্ছে- যা ইতোপূর্বে এরূপ ব্যাপকতা পায়নি। সিলসিলাহ্ সাজরা তথা মাশায়েখ পরম্পরা এবং বংশীয় সাজরা’র সুস্পষ্টতা ইতোপূর্বে ছিল বিরল। বিশেষতঃ সিলসিলাহর মুরীদদের সুন্নি আক্বিদার উপর অটল রাখা, নবী প্রেমে উজ্জীবিত করা, সর্বোপরি শরিয়তসম্মত জীবন-যাপনের সাথে দ্বীনি খেদমতে উৎসর্গিত হবার প্রেরণা যুগিয়ে তিনি দ্বীনের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় সূচনা করে গেছেন। তিনি সুন্নিয়তের পূনরুজ্জীবনদাতা এবং কাদেরিয়া ত্বরিকার মহান সংস্কারক হিসেবেও আবির্ভূত হয়েছিলেন বর্তমান হিজরি শতাব্দিতে। বাংলাদেশে মসলকে আ’লা হযরত’র রূপকার তিনি। তাঁর আব্বা হুজুর এই মসলকের উপর জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়ার ভিত্তি দেন ১৯৫৪তে, আর তিনি একে প্রাতিষ্ঠানিক ও সামাজিক রূপ দান করেন এদেশে অত্যন্ত সফলতার সাথে, যা আজ সর্বজন স্বীকৃত। আজ সুন্নিয়ত আর মসলকে আ’লা হযরত।একাকার হয়ে গেছে সুন্নি জগতে- এটি তাঁর অবদান। যদিওবা, এখনো সুন্নি নামধারী অনেকেই মসলকে আ’লা হযরত এবং এর আনুষাঙ্গিক অনেক উপাদানের বিরোধিতায় লিপ্ত রয়েছে। আবার কেউ কেউ এ জনপ্রিয় মসলকের ফায়দা তলবেও ব্যস্ত হয়েছে হঠাৎ করে। তাঁর চিঠিপত্রগুলো যেন দ্বীন ও ত্বরিকতের কল্যাণে মহামূল্যবান মলফুজাত। এগুলোর সংকলন বিরল মকতুবাত’র মর্যাদা পেতে পারে। তাঁর চিঠিতে শুধু উপদেশ নয়- কখনো কখনো করেছেন ভবিষ্যত বাণীও। সমগ্র মুসলিম জাহানের উত্থান-পতন তথা পরিবর্তনের গতিপ্রকৃতি নিয়েও মূল্যবান তথ্য রয়েছে। ‘সোভিয়েত ইউনিয়নের পতন হবে অতি শ্রীঘ্রই এবং এর গর্ভ থেকে বেরিয়ে আসবে কয়েকটি মুসলিম দেশ এবং এরপর কী কী ঘটবে তা অলি আল্লাহ ভালো জানেন’- এমন একটি রহস্যময় মন্তব্য ছিল তাঁর এক চিঠিতে। চিঠিটি চট্টগ্রাম এসেছিল ১৯৮৭ সালে। আর মাত্র তিন বছর যেতে না যেতেই ঘটনাটি ঘটে যায়। তাঁর চিঠিতে প্রদত্ত একটি মন্তব্য আজো রহস্যময় হয়ে আছে। এটাও একদিন পরিস্কার হয়ে ওঠবে নিঃসন্দেহে। আর সেটি হলো- ‘নীল সে কাশগর তক জুঢকারওয়ারি হোরাহা- হাম খোদ্ আঁখ সে দেখ রাহা- মগর জবান সে নেহী বোলতা।’ মিশরের নীল নদ থেকে চীনের দখলভুক্ত এক সময়ের খ্যাতনামা মুসলিম দেশনকাশগর পর্যন্ত যে ভয়াবহ পরিবর্তন আসন্ন- সে সম্পর্কে বলা হয়েছে এতে। সুতরাং হুজুর কেবলার চিঠিগুলো আমাদের জন্য ভবিষ্যত দিক-নির্দেশনা ও গবেষণার উপাত্তও বটে- এগুলোকে শুধুই তবারূক মনে করে ব্যক্তিগত সংরণ কাম্য নয়- এগুলো আনজুমানের সম্পদ হওয়া উচিত এবং এ নিয়ে প্রাতিষ্ঠানিক গবেষণা শুরু হওয়া উচিত। এ চিঠিগুলোর গবেষণা শেষ না করে তাঁর পূর্ণাঙ্গ জীবন-দর্শন রচনাও অসম্পূর্ণ থেকে যাবে। শুধু চিঠিপত্র নয়, তাঁর মূল্যবান ভাষণ এবং তাফসীরুল কুর‘আন মাহফিলের বিশ্লেষণগুলো ছিল বিশ্ব মুসলিমের জন্য পথ নির্দেশ সদৃশ, এতে ছিল জ্ঞানগর্ভ আলোচনা এবং আক্বিদা-আমল ও তাক্বওয়ার গভীর থেকে গভীরতর স্তরের স্বরূপ পর্যবেন, যেন দুধ থেকে ঘি আর মাখন বের করে এনে পরিবেশন করানো। তাঁর বক্তব্য ও দোয়ার মধ্যে একটি বিষয় খুব বেশী গুরুত্ব পেত, আর সেটি হলো-বিশ্ব মুসলিমের ঐক্যমঞ্চ। ‘ইয়া আল্লাহ্ আলমে ইসলামকো এক প্লাটফর্ম মে জমা ফরমা’-এই দোয়া সর্বদাই করতেন। সমগ্র দুনিয়ার মুসলমানদের ভবিষ্যত নিয়ে তিনি সদা-সর্বদা আলোচনা করতেন এবং চিন্তিত ছিলেন, যা তার গাউসিয়াত ও মুজাদ্দেদীয়াত মর্যাদার অন্যতম নিদর্শন।

মাইজভাণ্ডার দরবার শরীফ-গাউসিয়া হক মনজিলের দায়িত্বশীল কয়েকজনের সূত্রে জানা যায়, একদিন অলিয়ে কামেল হযরত সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডারী (রহ.) বলেছিলেন যে-হযরত তৈয়্যব শাহ্ ইসলামি জাহানের অনেক বড় হাস্তি- এবং তিনি ইসলামকে জিন্দা করতেই এসেছেন।

অলীরাই চেনেন অপর অলি আল্লাহকে- অন্যেরা করে অনুমান মাত্র। হাদিসে কুদসিতে স্বয়ং আল্লাহ পাক বলেন, ‘‘আমার অলীগণের অবস্থান আমার আস্তিনের অভ্যন্তরদেশে, তারাই একে অন্যকে চেনে মাত্র’’। যা হোক তাঁর অসংখ্য অবদানের কথা এবং কারামতের কথা এখানে ‘একত্রিত করা এই সংক্ষিপ্ত কলেবরে সম্ভব নয়। তিনি শরিয়ত আর ত্বরিকতকে পরস্পর অবিচ্ছেদ্য দেখেছেন এবং সে হিসেবে কাজ করে গেছেন। তাঁর সমগ্র কর্মময় জীবন ছিল সুন্নিয়তের জন্য নিবেদিত। যিনি স্বয়ং ছিলেন সুন্নাতের মূর্তপ্রতীক।

জিনকি হার হার আদা সুন্নাতে মুস্তফা- এয়সে পীরে ত্বরিকত পে লাখো সালাম’।

#উপযুক্ত উত্তরাধিকারঃ
একটি মিশনের ভবিষ্যত স্থায়িত্ব নির্ভর করে উপযুক্ত উত্তরাধিকার বিদ্যমান থাকার উপর। বিশেষতঃ আধ্যাত্মিক-জাগতিক এবং প্রাতিষ্ঠানিক উত্তরাধিকার।ক্ষেত্রে অতীব জরুরি। আল্লাহর মেহেরবাণীতে এই দ্বীনি মিশনে সবধরনের উত্তরসূরি বিদ্যমান বিধায়, ইনশাআল্লাহ্, শরিয়ত- ত্বরিকতের এ মিশনের।ভবিষ্যত উজ্জ্বল থেকে উজ্জ্বলতর হতে থাকবে। হুজুর কিবলা (রহ.)’র স্থলাভিষিক্ত হিসেবে দরবারে আলীয়া কাদেরিয়ার প্রতিনিধিত্বেআছেন রাহনুমায়ে শরীয়ত ও ত্বরিকত, আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ তাহের শাহ্ এবং পীরে বাঙ্গাল, আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ সাবির শাহ্ (মাদ্দাজিল্লুহুল আলী); উভয়ের ব্যাপারে রয়েছে দাদা হুজুর সিরিকোটি (রহ.)’র ভবিষ্যতবাণী- যে, ‘তৈয়্যব ও তাহের কাম সাম্বালেগা আউর সাবের বাঙ্গালকা পীর হোগা।’ সত্যিই সিরিকোটি (রহ.)’র দ্বীন রা আন্দোলন ঠিক মতই সামলিয়েছেন- গাউসে জামান তৈয়্যব শাহ্ (রহ.) এবং বর্তমানে সামলাচ্ছেন হুজুর কেবলা তাহের শাহ্ মাদ্দাজিল্লুহুল আলী। আর ‘বাঙ্গাল কা পীর’ সাবির শাহ্ মাদ্দাজিল্লুহুল আলীর সময়টা যে দ্বীন রার গুরুত্বপূর্ণ ‘টার্নিং পয়েন্ট হতে যাচ্ছে এবং সে সময়ে তিনি যে এক বিস্ময়কর রা কবচ হয়ে দ্বীনি মিশনের নেতৃত্ব দিয়ে যাবেন সে ইঙ্গিতই বহন করে- দাদা হুজুরের উক্ত মন্তব্য। শুধু তাই নয়, সিরিকোটি শরীফে প্রতিষ্ঠিত ‘জামেয়া তৈয়্যবিয়া’র অধ্যরে দায়িত্বে রত শাহজাদা আল্লামা হাফেজ সৈয়্যদ আহমদ শাহ্ মাদ্দাজিল্লুহুল আলীর কাশ্ফ কারামাতের কথা ইতোমধ্যেই সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে। ভবিষ্যতে তিনি নামে নয় কাজেও সিরিকোটি হুজুরের ভূমিকায় আবির্ভূত হবেন সে আলামত এখনই সুস্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে। সুতরাং এই সিলসিলার জন্য এটা বড় সুসংবাদ বটে। তারা আধ্যাত্মিক নেতৃত্ব থেকে কখনো বঞ্চিত থাকছে না ইনশাল্লাহ্। সুতরাং এ সিলসিলাহ ও উত্তরোত্তর ব্যাপকতর হতে থাকবে। এই সিলসিলাহ’র প্রাতিষ্ঠানিক উত্তরাধিকার বর্তমানে ঈর্ষণীয় স্তরে আছে। জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়া চট্টগ্রাম, কাদেরিয়া তৈয়্যবিয়া আলিয়া ঢাকাসহ দেশের অসংখ্য দ্বীনি প্রতিষ্ঠান মাদ্রাসা-খানকাসহ মসজিদ রয়েছে আন্জুমান ট্রাস্ট’র পরিচালনাধীন। আরো আছে, গাউসিয়া কমিটি বাংলাদেশ’র মতো শক্তিশালী সংগঠন ও এর দেশব্যাপী নেটওয়ার্ক। রয়েছে ল ল পীর ভাই-বোন। আছে হাজার হাজার সাচ্চা আলেম। যারা এ জাগতিক নেতৃত্বের জন্য যথেষ্ট। এখন শুধু দরকার, সময়ের চাহিদানুসারে এর প্রকাশনার বহুমাত্রিকতা ও ব্যাপকতা, দরকার মিডিয়ার সর্বাত্মক সহযোগিতা নিশ্চিত কর এবং জাগতিক নেতৃত্বের অপরিহার্য অপর নেতৃত্ব বুদ্ধিজীবী সম্প্রদায়েরনসাথে সমন্বয় করা হলে ইনশাআল্লাহ্, দ্বীন রার এনআন্দোলন’র আওতায় দেশের পিছিয়ে পড়া অংশগুলোকেও শামিল করা সময়ের ব্যাপার মাত্র। হুজুর কিবলা (রহ.) আমাদেরকে তাঁর উপযুক্ত উত্তরাধিকার দিয়ে রেখেছেন, এখন দরকার আমাদের গতিশীল চিন্তাধারা ও নিরবচ্ছিন্ন দায়িত্ব পালন। কারণ, এটা আমাদের ভাগ্য পরিবর্তনের বিষয়, আর কালামে পাক’র ঘোষণা- ‘যে জাতি নিজের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য চেষ্টা করে না- আল্লাহ্ নিজে তাদের ভাগ্য পরিবর্তন করে দেন না’। [আল-কুরআন]

#শেষকথাঃ
মুর্শিদে বরহক, গাউসে জামান, আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ তৈয়্যব শাহ্ (রহ.) ইন্তেকাল করেন ১৫ জিলহজ্ব ১৪১৩ হিজরি সোমবার সকালে (৭ জুন ১৯৯৩) দরবারে আলীয়া কাদেরিয়া সিরিকোট শরীফে। তাঁকে সেখানেই দাফন করা হয় পরদিন মঙ্গলবার। তাঁর ঐতিহাসিক জানাজায় উপস্থিত ছিলেন পাকিস্তানের তৎকালিন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফ, পররাষ্ট্রমন্ত্রী গওহর আইয়ুবসহ দেশের শীর্ষস্থানীয় রাজনীতিবিদ, বুদ্ধিজীবী বিশেষতঃ খ্যাতনামা ওলামা-মাশায়েখগণ। দেশ-বিদেশের শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যমগুলোতে তাঁর ইন্তেকাল, জানাযার সংবাদ’র সাথে সাথেনপ্রচারিত, প্রকাশিত হয়েছে। দ্বীন-মিল্লাতের জন্য তাঁর রেখে যাওয়া যুগান্তকারীন অবদান এবং শরিয়ত- ত্বরিকতের অগাধ জ্ঞানের কথা। যা হোক গাউসে জামান তৈয়্যব শাহ্ (রহ.)’র সমগ্র জীবন-কর্ম এবং আদর্শ ছিল দ্বীনের জন্য নিবেদিত।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৩০
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হালহকিকত

লিখেছেন স্প্যানকড, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:১২

ছবি নেট ।

মগজে বাস করে অস্পষ্ট কিছু শব্দ
কুয়াসায় ঢাকা ভোর
মাফলারে চায়ের সদ্য লেগে থাকা লালচে দাগ
দু:খ একদম কাছের
অনেকটা রক্তের সম্পর্কের আত্মীয় ।

প্রেম... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×