somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

parvaj
জিবনটা আসলেই অনেক সুন্দর!এতো বেশি সুন্দর যে, মাঝে মাঝে অসহ্য লাগে।যাহা ভাবি তাহা কেন জানি হয়েও হয় না। স্বপ্ন পূরনে ব্যর্থ হয়ে ঘুরে ফিরি। কবে হবে এর শেষ মরন এলেই বুঝি।

ধর্ম যার যার, উৎসব সবার

২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সকাল ১০:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


- দাদা, পুজো দেখতে যাবেন না?
- না ভাই, সেটাতে আমার ধর্মে মানা আছে।
- কেন?
- আমরা যখন গরু কুরবানি করি, সেই জায়গায় আপনাদের যাওয়া নিষেধ না?
- হ্যাঁ নিষেধ। সে স্থানে ভগবানের অভিশাপ পরে।
- ঠিক তেমনি, অন্য ধর্মের ধর্মীয় অনুষ্ঠানের জায়গায় যাওয়া আমাদের জন্যও নিষেধ। আমার ধর্মমতে পুজোর স্থানে আল্লাহর গজব নাজিল হতে থাকে।
হজরত উমর (রা) বলেছেন, "তোমরা মুশরিকদের উপসনালয়ে তাদের উৎসবের দিনগুলোতে প্রবেশ করোনা। কারন সেই সময় তাদের উপর আল্লাহর গজব নাজিল হতে থাকে"। (বায়হাক্বী)
যে স্থানে আল্লাহর গজব নাজিল হয় আমার ধর্মমতে, সেখানে যাই কি করে?
- ঠিক আছে, পুজো উপলক্ষ্যে প্রসাদ খেতে তো পারবেন ?
- আপনার বাসায় অন্য যেকোনো সময় দাওয়াত খেতে যেতে পারব। এ বিষয়ে মানা নেই। কিন্তু পুজো উপলক্ষ্যে কিছু খেতে পারব না।
- ব্যাপারটা একটু অন্য রকম হয়ে গেল না?
- ধরুন, কুরবানি ঈদের দাওয়াত দিয়ে আমি আপনাকে গরুর মাংস খেতে বললাম। আপনি কি খাবেন?
- না, অবশ্যই খাব না।
- ঠিক তেমনি কিছু কিছু জিনিস আমাদের জন্যও ধর্মমতে খাওয়া নিষিদ্ধ (হারাম)। যেমন- মদ, শুকুরের গোশত, আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নামে জবেহ করা গোশত, অন্য ধর্মের ধর্মীয় উৎসবের খাবার ইত্যাদি। সব ধর্মেরই নিষিদ্ধ কিছু বিষয় থাকে যা মানতে হয়।
- কিন্তু ধর্ম যার যার, উৎসব সবার।
- ওটা হয়তো অন্যদের জন্য হতে পারে, কিন্তু আমাদের জন্য না। অন্য ধর্মের অনুষ্ঠানে গেলে যেখানে আমার নিজেরই ধর্ম থাকছে না, সেখানে যার যার ধর্ম কথাটা নিয়ে কি করব?
- বুঝিনি, একটু বুঝিয়ে বলুন।
- মানে হল, ইসলাম ধর্মের মূলনীতি অনুযায়ী অন্য কারো ধর্মের উৎসবে স্বেচ্ছায় আনন্দের সাথে যোগদান করার অর্থই হল আল্লাহর সাথে শিরকের কাজে নিজেকে জড়িয়ে ফেলা। আর আল্লাহ সব গুনাহই মাফ করে দিবেন, একমাত্র শিরকের গুনাহ ছাড়া।
আল্লাহ বলেন “নিশ্চয়ই আল্লাহ তা’আলা তার সাথে শিরক করার অপরাধ ক্ষমা করবেন না। এ ছাড়া অন্য সকল গুনাহ যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করে দিবেন।” (সুরা নিসা: ৪৮)
- তাহলে আপনি কি অন্যদের অপছন্দ করেন?
- সেটা করব কেন? যার ধর্ম তার কাছে। আর ইসলাম এটাও শিক্ষা দেয়, অন্যদেরকে তাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালনে কোন প্রকার বাধা না দিতে। আমি প্রয়োজনে আপনাদের নিরাপত্তা দিব, পাহারা দিব, কেউ বিপদগ্রস্থ হলে তাকে সাহায্য করার জন্য ঝাঁপিয়ে পরব, অসুস্থ হলে চিকিৎসা দিব। এতে আমার আপত্তি নেই।
কিন্তু সব ধর্মেরই কিছু বিধি নিষেধ থাকে। আপনার ধর্মেও আছে, আমার ধর্মেও আছে, সেগুলো তো মানা উচিত।
- তাহলে কি আপনি আমার বাসায় কখনো দাওয়াত খাবেন না?
- খাব না কেন? অন্য একদিন আপনার বাসায় দাওয়াত দিয়েন। আমি গিয়ে খেয়ে আসব। সেটাতে কোন বিধি নিষেধ নেই।
আমাদের নবীজিও (সা) অন্য ধর্মের লোকদের বাসায় গিয়ে খেয়ে এসেছেন। এক ইহুদী উনাকে দাওয়াত দিয়েছিল, উনি গিয়ে খেয়েছিলেন। আর অবশ্যই আমার বাসায় আপনারো নেমন্ত্রন থাকল।
- কিন্তু ব্যাপারটা একটু অসাম্প্রদায়িক হয়ে গেল না?
- অসাম্প্রদায়িকতা মানে এটা নয় যে আপনি আমার মসজিদে গিয়ে আমাদের নামাজ পরা দেখবেন, আর আমি আপনার পুজো মণ্ডপে গিয়ে পুজো করা দেখব। এটা অসাম্প্রদায়িকতা নয়, এটা অধার্মিকতা। এতে আপনার ধর্মও থাকবে না, আমার ধর্মও থাকবে না।
আমি আপনাকে সম্মান করি, আপনি আমাকে করেন, অথচ দুজন দু'ধর্মের। আমি আপনার কাছে নিরাপদ, আপনি আমার কাছে নিরাপদ। আপনার বিপদে আমি এগিয়ে আসব, আমার বিপদে আপনি এগিয়ে আসবেন। দেশের যেকোনো আপদ বিপদে একসাথে কাঁধে কাঁধ মিলে কাজ করব।
একজন মানুষ হিসেবে, একজন বাংলাদেশী হিসেবে একে অন্যের প্রতি এই যে সম্মান, এটাই হল প্রকৃত অসাম্প্রদায়িকতা।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সকাল ১০:৫১
১০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমিও যাবো একটু দূরে !!!!

লিখেছেন সেলিম আনোয়ার, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২২

আমিও যাবো একটু দূরে
যদিও নই ভবঘুরে
তবুও যাবো
একটু খানি অবসরে।
ব্যস্ততা মোর থাকবে ঠিকই
বদলাবে শুধু কর্ম প্রকৃতি
প্রয়োজনে করতে হয়
স্রষ্টা প্রেমে মগ্ন থেকে
তবেই যদি মুক্তি মেলে
সফলতা তো সবাই চায়
সফল হবার একই উপায়।
রসুলের... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দাদার দাদা।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৫৫

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী।

আমার দাদার জন্মসাল আনুমানিক ১৯৫৮ সাল। যদি তার জন্মতারিখ ০১-০১-১৯৫৮ সাল হয় তাহলে আজ তার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৮


আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×