somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

যারে খাওয়াতে পার ঘাস, তারে ইচ্ছে মত দাও বাঁশ।।

১১ ই জানুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৫:৩৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



লেখাঃ-এফ.ইউ.শিমুল(ছায়া মনুষ)

অনেকদিন আগের কথা কোন একটি গ্রামের ইউনিয়ন পরিষদ অফিসটি সব সময় ব্যাস্ত থাকে চোর, ডাকাত, বিয়ে ভাঙ্গা, জালিয়াতি ইত্যাদি বিষয়ের বিচার নিয়ে প্রায়ই ব্যাস্ত থাকে।
মাঝেমাঝে চেয়ারম্যান, মেম্বারগন বিচার করতে করতে হাপিয়ে যান, অনেক সময় বিচার প্রত্যাসীরা পরিষদে এসে বসে থাকেন কিন্তু বিচারক গন আসেন না অনেকটা বিরক্ত হয়ে। এতেই বুঝে নিন কতটা ব্যাস্থ থাকে ইউনিয়ন পরিষদটি।

প্রতিদিনের মত আজো একটি বিচারকার্য সম্প্রদনের জন্য ইউনিয়ন পরিষদটি অপেক্ষা করছে। সবাই দল বল নিয়ে পরিষদে যাচ্ছে, লোকজন বলাবলি করছে চোরের বিচার হবে আজকে, একজন কে জিঙ্গেস করে জানা গেল মনু মিয়ার দোকানে চুরি হইছে চোর পাশের গ্রামের মনা, মনা পেশায় একজন রিক্সাচালক কিন্তু মনা, চুরিটাকেই পেশা হিসেবে নিয়েছে।
তাই মনাও বিচারকদের সকল রুলস, নিয়ম, কানুন সবই জানে।
মানে বিচার কার্যের সময় বিচারকদের হুজুর বলে সম্মোদন করা, বিড়ালের মত যত পারা যায় আচরন করা, একটু কান্নার স্বরে প্রশ্নের উত্তর দেওয়া, মোটামুটি এগুলাই নিয়ম। এসব সবই রপ্ত করা হয়ে গেছে মনার, কারণ এই মিলিয়ে মনা অষ্টমবারের মত ইউনিয়ন পরিষদে।
যাক, বিচার কার্য শুরু হবে এখন চেয়ারম্যান এবং মেম্বার সাহেব পরিষদে ডুকলেন। এসেই মেম্বার সাহেব এবং চেয়ারম্যান সাহেব মনার সালাম গ্রহন করলে।
এখন মনু মিয়া কেঁদে কেঁদে তার আর্জি পেশ করছে।
এদিকে চেয়ারম্যান সাহেব সিগারেটের ফিল্টারটা টেনে টেনে মাথা নাড়িয়ে কথা শুনছেন।
অবশেষে মনু মিয়ার শেষ কথা আমি এর সঠিক বিচার চাই হুজুর...

কিরে মনা তোর কিছু বলার আছে?(মেম্বার)
-হুজুর মা বাবা কেউ নাই এই অনাতের শুধু আল্লহ আছে।আপনারা যা রায় দিবেন তা মাথা পেতে নিব।

চেয়ারম্যান সাহেব আপনি কিছু বলেন(মেম্বার)

ভাইয়েরা শুনলেন তো দুইজনের কথা, তবে চোরের বিচার তো করতে হবে। আর মনা অনেক পরিচিত চোর অনেক বিচারই এ জীবনে পেয়েছে ও তো মানুষ, ওর দিকটাও তো দেখতে হবে কি বলেন সবাই?

চেয়ারম্যান সাহেব ও কিন্তু বারবার একই অপরাধ করে আসছে।(মেম্বার)

হুম,তাহলে ওরে একঘরে করে দিই?

পেছন থেকে তিন ছেলে মেয়ে নিয়ে চেয়ারম্যানের পায়ে এসে পড়লো মনার বউ। এমনটি করবেন না গো হুজুর আমরা না খেয়ে মরবো।

চেয়ারম্যান সাহেব মনার বউকে ধমক দিয়ে বললো অ্যা..সর..

চৌকিদার তোর বেতটা নিয়ে আয় তো(চেয়ারম্যান)
ওরে গুনে গুনে ৫০টা বেত্রাঘাত কর.

ওই বল সবার সামনে আমি আর চুরি করবো না বল..(মেম্বার)

যেমন কথা তেমন কাজ মনাও ঠিক তেমনটাই বললো।

করবেনা বলে তো, দশটা বেত মাপ করে দি কি বলেন সবাই।( চেয়ারম্যান)

চৌকিদার ৪০টা দাও গুনে গুনে।(মেম্বার)

হুজুর আমি আর জীবনে চুরি করবোনা আমারে দোহাই মাপ করে দেন।

এভাবে প্রতি কাকুতি মিনতিতে ১০টা করে কমতে থাকে, এক পর্যায়ে বেত্রাঘাত এসে থামে ১০টাতে।
তখন মনু তার তিন ছেলে মেয়ের মাথায় হাত রেখে ওয়াদা করে আর চুরি করবে না।
ব্যাস সব মাপ।
প্রতিবারের মত ইমাম সাহেব ওরে তাওবা করিয়ে দেন।(চেয়ারম্যান)

ইমাম সাহেব মনার গালে আলতো করে দুইটা থাপ্পর দেয়। মিটিয়ে গেল বিচার।

এরকমই ভাবে চিনে আসছি বাংলার বিচার। কিন্তু আজ যখন রাজন হত্যা হয়, ছবিতে থাকা এই দুটি মাছুম রুটি চোর বাচ্চাদের এমন বিচারের সম্মুখীন হতে হয় তখন আমার একটু ইচ্ছে জাগে ঐ ইউনিয়ন পরিষদটিতে একবার ঘুরে আসতে, তারাও কি এমন কিছু করে?

বাদ দিলাম এসব তবে একটা প্রশ্ন এই ভালো মানুষের দেশে কিভাবে ব্যাংক ডাকাতি হয়? কিভাবে শেয়ার কেলেঙ্কারি হয়?
এসবেরই যখন খবর নাই তখন রুটি চোরের বিচার করাটা কি খুব জরুরী।?

কথায় আছে না?-
যারে খাওয়াতে পার ঘাস
তাকে ইচ্ছে মত দাও বাঁশ।।

সর্বশেষ এডিট : ১১ ই জানুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৫:৩৯
২টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অন্যায় অত্যাচার ও অনিয়মের দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ

লিখেছেন রাজীব নুর, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:৪০



'অন্যায় অত্যাচার ও অনিয়মের দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ'।
হাহাকার ভরা কথাটা আমার নয়, একজন পথচারীর। পথচারীর দুই হাত ভরতি বাজার। কিন্ত সে ফুটপাত দিয়ে হাটতে পারছে না। মানুষের... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্য অরিজিনস অফ পলিটিক্যাল জোকস

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১১:১৯


রাজনৈতিক আলোচনা - এমন কিছু যা অনেকেই আন্তরিকভাবে ঘৃণা করেন বা এবং কিছু মানুষ এই ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন। ধর্ম, যৌন, পড়াশুনা, যুদ্ধ, রোগ বালাই, বাজার দর থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×