somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

"জমিদারবাড়ির একদিনের গল্প" - এফ ইউ শিমুল(ছায়া মনুষ)

১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ৮:১৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




ঘোরটা কাটছিলোনা, পড়ালেখার ঘোর।কারণ,সামনে সেমিষ্টার ফাইনাল; এসময় কেউ ব্যাস্ত ক্লাসপার্টিতে কেউবা ব্যাস্ত পরিক্ষার পূর্ব প্রস্তুতিতে। আমি এর দুটোর একটাতেও নেই, আমি শুধু চোখে খাঁটি সরিষার তেল দিয়ে কাঁদছি। কান্নার দোষারোপটা কাউকে দিতে চাই নাই তবে কিছুটা আমার কপালের দোষ।

চারিদিকে বলাবলি হচ্ছে কারাকারা নাকি জমিদারী হাওয়া গায়ে লাগানোর জন্য কোন এক জমিদারের আস্তানায় যাবে। বিষয়টা আমার ঘোরটা ভেদ করে ভেতরে ডুকছিলোনা, তাই আমি আমার কাজে ব্যাস্ত,
--কারণ একটা কথা আমি সবসময় মাথায় রাখি
""যে যাহাই বলুক যত
আমি আামার মত।।""

হঠাৎ, একটা কথা মনে পড়লো, কোন এক কুমারী আমাকে বলেচিল "যেহেতু আপনার কপালের দোষ সেহেতু আপনি কোন একটা পুরনো দিনের রাজবাড়ি বা জমিদার বাড়িতে গিয়ে কপালটা ঘষেন দেখবেন দোষ কেটে যাবে।"

এই সুযোগ হাতছাড়া করি কিভাবে?
নিজ দায়িত্বে জমিদার বাড়ির গাড়ী ধরলাম। উৎফুল্ল মন; আমার কপালের দোষ কাটবে। এর ইঙ্গিত আমি যাওয়ার সময়ই পেয়েছিলাম,
প্রমান-
যাওয়ার সময় ভাবছিলাম কোন একটা মুঁড়ির টীন বা টমটম দিয়ে যাওয়া লাগবে কিন্তু না গাড়ীটা বেশ ছিল।
এই ক্ষেত্রে উদয়, নাফিস প্রশংসার দাবিদার।

অভাবনীয় একটা জার্নি পথে টি ব্রেক সবমিলিয়ে কিছু ছোট্র ছোট্র খুনসুটিতে অবশেষে জমিদার বাড়ি।

ভেতরে ঢুকতে সবাই কেমন জানি মডেল হয়ে গেছে। আনকোরা সব পোস গুলো ক্যামেরা বন্ধি করছেন জহির।
হঠাৎ, পুরনো বাড়ির ঝরঝরে দেয়াল গুলো কি যেন বলচে একটু মনযোগ দিয়ে শুনচি-
""বোবা হয়ে দাড়িয়ে আছি
হৃদয়ে লালন করে শত বছরের ইতিহাস
এই জামানায় এসে শুধু কুঁড়িয়ে যাচ্ছি
নব জোয়ানের পরিহাস।।""

ঐদিকে, সবাই প্রকৃতিটাকে উপকরন হিসেব ব্যাবহার করে ক্যামেরাবন্ধি হচ্ছে। হাঁটতে হাঁটতে পুকুর ঘাঁটের সন্ধান পেলাম, পশ্চিমের সিঁড়িটায় মিষ্টি রোদ পড়ছে একটু জমিদারী স্টাইলে সিঁড়িটাতে বসলাম, মনে মনে একাট কালো শেওলা জমা দেওয়াল খুঁজতেছিলাম কপালটা ঘষবো, কিন্তু হঠাৎ যেন খুশবুর ঘ্রান পেলাম চোখটা বন্ধ করে নাক দিয়ে টেনে টেনে ঘ্রানটাকে আরো কাছে আনলাম। চোখ খুলতেই পুরনো এক সুন্দরীকে দেখতে পেলাম তার মোঘলীয় কথাবার্তায় মুগ্ধ হয়ে বর্তমানটাকে হারিয়ে পেলেছিলাম। তার একটা কথা আমার খুব মনে ধরেছে,
বলবো?
হ্যা বলেই পেলি-
ঘষিলে যদি পরিবর্তন হতো
কপালের ভাগ্য
তাহলে এই জামানার মানুষ গুলার
আলাদীনের চেরাগ পাওয়ার হতো যোগ্য।।

একটু হেসে দিলাম, কথায় কথায় একটু আমরা দু'জন বন্ধু সুলভ হয়ে গেলাম। হঠাৎ আমার কান ঘেষে একটা শব্দ আসতে লাগলো তবে ততোটা স্পষ্ট না.
-এ্যাই তোমায় কেন যেন ডাকছে।
-কোই কে? ও, নাদিম? এই তো আসতেছি দোস্ত।
আচ্ছা এতো কথা বললাম আমরা দুজন কিন্তু তোমার নামটাই আমার জানা হলো না। তোমার নাম কি?
-আমার নাম "অন্নপূর্ণা "
-বাহ্, নামটা আমার খুব পরিচিত লাগছে।
-আচ্ছা তোমার সঙ্গীদয় ডাকছে তাদের কথায় সাড়া দাও।
-তুমিও চল আমার সাথে?
- এখন না পরে যাব।
-তাহলে তোমার সাথে আমার দেখা হবে না?
-হবে।
-কিভাবে?
-নাম ধরে ডেকো আমায়। ঠিক তোমার পাশে হাজির হবো।
-বলচো তো?
-হ্যা,বলচি বলচি বলচি।
-তুমি না আসলেও তোমার ঘ্রাণ শুকে শুকে তোমায় আমি ঠিক খুঁজে নিব।

অবশেষে বন্ধু মহলে হাজির হলাম, ছোট্র একটা খুনসুটি চলছে তাদের মধ্যে ভালোই উপভোগ করছি তাদের হাসি ঠাট্রা। কিন্তু মনটা আমার পড়ে আছে সেই পুকুর ঘাঁটে।
মনে মনে তারে খুঁজছি।
এদিকে সবাই ছবি তুলছে আমি দাড়িয়ে দাড়িয়ে দেখছি।
হঠাৎ একটা হাসির শব্দ পেলাম মাথাটা নাড়িয়ে বাম দিকের দালানের চার নাম্বার বেলকুনিটায় দাড়িয়ে সে হাসছে।

-ও তুমি? হাসছো কেন?
-ওরা এমন করছে কেন?
-কোই কি করছে ওরা তো ছবি তুলচে।
-আমি তো ওদের মাঝে আমাদের নাট্য মঞ্চের মনু জোয়ারদার, সেফালী খানম, রনজন সরকার, সুনীল, মনি রায় দের দেখতে পাচ্ছি।
-কি বলচো এসব? আমি হাসতে লাগলাম।
-সত্যি বলচি ওরা যখন মঞ্চে উঠতো তাদের অঙ্গবঙ্গীমা দেখেই সবাই হাসতো।
-ভাবছিলাম আমিও একটি ছবি তুলবো, কিন্তু তোমার হাসির ভয়ে আর হবে না দেখছি।
-কি? তুমিও এমন করবো? দাড়াও দাড়াও আমি আসতেছি।

এদিকে উদয় বলচে দোস্ত ছবি তুলবি না আয়।

-যাও যাও দেখি তোমাকেও নাট্য মঞ্চের কার মত লাগে।

অবশেষে উদয় জোর করা শর্তেও ছবি তুলি নাই...

অন্নপূর্ণার পাশে এসে দাড়ালাম। এবার দুজন মিলে একসাথে হাসছি। তার হাসাহাসির মাঝে একটু ব্যাগাত দিলাম একটা আবদার করে।
সে আমার আবদারে সাড়া দিল, সে আমায় আশপাশটা ঘুরিয়ে দেখাচ্ছে, আর মাঝে মাঝে বলচে সূর্য ডুবতে আর কতক্ষন বাকি?
বুঝতে পারলাম না কেন এটা বলচে, আমি এই কথাটা কানে না নিয়ে শুধু ঘুরছি।
হঠাৎ তাকে আর আমার পাশে পেলাম না, তখন দেখলাম সূর্যটাও লালচে হয়ে গেছে।
আমারো বাড়ি ফেরার সময় হয়ে গেছে।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ৮:২২
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×