শুক্রবারে ছুটি, কিন্তু অধিকাংশ বেসরকারি সংস্থায় ছুটি থাকে না। ওই দিন হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর দিতে হয় না মাত্র। তাই সেদিন খুব সকালে বাজার সেরে অফিসে গিয়েছি। শনিবার রানিশংকৈল যেতে হবে। এম সেভেন ভিএইচএস ক্যামেরা ঠিক করছি, ব্যাটারির চার্জ, ভিডিও ক্যাসেট ইত্যাদি। এমনসময় সংস্থার নির্বাহী বললেন, -
'কী করছেন? একটু হরিপুর যান তো, কেউ নেই যে পাঠাই। ম্যানেজারকে বলবেন দুই তিনটা গ্রুপ ঠিক করে রাখবে। নোভিব-নেদারল্যান্ড থেকে ভিজিটর আসছেন, তারা দেখবেন।'
অগত্যা কাজ ফেলে দৌড়তে হলো। রানিশংকৈল হয়ে হরিপুর। কাজ শেষে ফিরতে ফিরতে সন্ধ্যে। হিমশীতল বাতাস। উত্তরের শীত অসহ্য। কিন্তু উপায় কি! অফিসে সকল প্রস্তুতির বার্তা দিয়ে বাসায় পৌছতে পৌছতে রাত আট-নয়টা। শরীর-মন ক্লান্ত-অবসন্ন। বিধ্বস্ত চেহারা দেখে মিলা জিজ্ঞেস করল, -
'দুপুরে খেয়েছ?'
মনে পড়ল, আজ সকলে একসঙ্গে খাওয়ার কথা ছিল। আমরা অনেকদিন একসঙ্গে খেতে বসার সুযোগ পাই না। সে একটি দীর্ঘশ্বাস ফেলে জানিয়ে দিল, অনেক অপক্ষোর প্রহর গুনেছে। জিজ্ঞেস করলাম, -
'তুমি খাওনি না?'
'তুমি আসতে চাইলে...।'
মিলার দিকে সে-সময় আমার দৃষ্টি কেমন হয়েছিল, জানি না। সে সার্ট-প্যান্ট হ্যাঙ্গারে তুলে রাখতে রাখতে টুপ করে বলল, -
'তোমাকে ছেড়ে আমি খেতে পারি!'
আহা সে-সময় আমার কোনো মোবাইল ছিল না। অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে রইলাম। জীবনে এত সুখ আর হয় না।