somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মৌলকণা সম্পর্কে বিজ্ঞান ও আল-কোরআনের মৌলিক তথ্য

০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১০ সন্ধ্যা ৭:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আল-কোরআন-
সূরা সাবা-আয়াত নং-৩
"বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম"

(৩৪ : ০৩) অ ক্কা-লাল্লাজীনা কাফারূ লা-তাতীনাছ্‌ছা-আহ; ক্কুল বালা-ওয়া রাব্বী লাতাতিয়ান্নাকুম আ-লিমিল গ্বাইব, লা-ইয়াযুবু আনহু মিছক্কা-লু যাররাতিন ফিছ্‌ছামা-ওয়া-তি ওয়ালা-ফিল আরদ্বি ওয়ালা-আছগ্বারু মিন জা-লিকা ওয়ালা-আকবারু ইল্লা-ফী কিতা-বিম মুবীন:

{যাররাতুন=(অর্থ)- অণু ,বস্তুর সূহ্ম অংশ
মিছক্কা-লুন=(অর্থ)- ওজন বিশেষ - (আল কাওসার)-(মদীনা-পাবলিকেশন্স)।
আছগারু=অর্থ- অনেক ছোট, ক্ষুদ্র - ৫৪পৃষ্ঠা- (কোরআনের অভিধান)- মুনির উদ্দীন আহমদ।
আকবারু=(অর্থ)- সর্বাপেক্ষা বড় -(আল কাওসার)- (মদীনা পাবলিকেশন)।}

(৩৪ : ০৩) অর্থ- অবিশ্বাসীরা বলে, আমরা সেই সময়ের (কিয়ামতের ) সম্মুখীন হব না। বল, কেন হবে না, নিশ্চয়ই তোমাদেরকে এটার সম্মুখীন হতেই হবে, আমার প্রতিপালকের শপথ, যিনি অদৃশ্য সম্বন্ধে সম্যক পরিজ্ঞাত, আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে তাঁর অগোচর নয় বস্তুর সূহ্মতম ওজন বিশিষ্ট অংশ কিংবা তা অপেক্ষা ক্ষুদ্র অথবা সর্বাপেক্ষা বড় কিছু! বরং এর প্রত্যেকটি লিপিবদ্ধ আছে সুস্পষ্ট কিতাবে।

বিজ্ঞান-
স্টিফেন ডব্লু হকিং-এর "A Brief History of Time"- "কালের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস"-অধ্যায়-৫-(মৌলকণা ও প্রাকৃতিক বল)- পরমাণুগুলির একটি আভ্যন্তরিন গঠন আছে। এতে রয়েছে একটি কেন্দ্রক ( Nucleus ), যা গঠিত হয় একটি বৈদ্যুতিক আধান যুক্ত কণিকা প্রোটন ও একটি আধান বিহীন কণিকা নিউট্রন সমন্বয়ে। কেন্দ্রকের চতুর্পাশে আবর্তিত হচ্ছে কতগুলো অপরা আধান যুক্ত কণিকা ইলেকট্রণ। প্রথমে মনে করা হতো প্রোটন ও নিউট্রনই মৌল কণা ( Elementary particle )| কিন্তু কতগুলো পরীক্ষায় নির্দেশ পাওয়া যায় আসলে এগুলিও ক্ষুদ্রতম কণা দ্বারা গঠিত। ক্যালটেক পদার্থবিদ মারে গেলম্যান এই কণাগুলির নাম দেন কার্ক ( Quark)| বলবাহী কণিকাগুলির একটি গুরুত্বপূর্ণ ধর্ম হল, তারা অপবর্জন নীতি (exclusion principle) মানে না।

প্রতিটি প্রোটন ও নিউট্রন তিনটি কার্ক দিয়ে গঠিত। একটা প্রোটনে রয়েছে দুটি উঁচু কার্ক (up quark) এবং একটি নিচু কার্ক (down) । নিউট্রনে রয়েছে দুটি নিচু (down) কার্ক আর একটি উঁচু কার্ক। শক্তিশালী কেন্দ্রকীয় বলকে ( Strong nuclear force ) বলা হয় চতুর্থ শ্রেণীর বল। এই বল প্রোটন ও নিউট্রনের কার্কগুলিকে একত্রে ধরে রাখে। তাছাড়া একত্রে ধরে রাখে পরমাণুর কেন্দ্রকের প্রোটন ও নিউট্রনগুলিকে। বিশ্বাস করা হয় গ্লুয়ন (gluon) নামক এক চক্রণ বিশিষ্ট আর একটি কণিকা এই বল বহন করে। বলবাহী কণিকাগুলিকে কণিকা অভিজ্ঞাপক যন্ত্রে বাস্তব (real) কণিকার মতো প্রত্যক্ষভাবে সনাক্ত করা যায় না। কিন্তু তাদের অস্তিত্ব আমরা জানতে পারি, তার কারণ তাদের একটি মাপন যোগ্য অভিক্রিয়া রয়েছে। তারা পদার্থ কণিকাগুলির অন্তর্বর্তী বল সৃষ্টি করে।

আলোচনা-
সূরা সাবা-এর (৩৪:৩) নং আয়াতে মিছক্কালুন অর্থ যার ভর আছে অর্থাৎ ওজন করা যায় এমন কিছু কে বোঝানো হয়েছে এবং যাররাতুন অর্থ বস্তু বা পদার্থের সূহ্মতম অংশ কে বোঝানো হয়েছে। সুতরাং মিছক্কালু যাররাতুন অর্থ বস্তুর সূহ্মতম ভরবিশিস্ট অংশ (the smallest weightable portion of the particle) অর্থাৎ পদার্থের যে অংশকে ওজন করা সম্ভব- এখানে সম্ভবত সেটার প্রতিই ইংগিত দেয়া হয়েছে। আমরা বিজ্ঞানের বর্ণনায় জেনেছি যে, কার্ক, নিউট্রিনো ইত্যাদি এ পর্যন্ত আবিষকৃত পদার্থের সবচেয়ে সূহ্মতম অংশ বা কণিকা এবং যেগুলোর ওজন কণিকা অভিজ্ঞাপক যন্ত্রের মাধ্যমে প্রত্যক্ষভাবে সনাক্ত করা সম্ভব। সুতরাং আদি পদার্থ কণিকা কার্ক, নিউট্রিনো ইত্যাদিকে মিছক্কালু যাররাতুন হিসেবে গ্রহণ করে নেয়া যুক্তিসংগত হবে। তাছাড়া আছগ্বারু মিন জা-লিকা অর্থ তা অপেক্ষা ক্ষুদ্র বলতে এমন কিছুকে হয়ত বোঝানো হয়েছে যেগুলোর ভর কণিকা অভিজ্ঞাপক যন্ত্রে বাস্তব কণিকা অর্থাৎ ভরবাহী কণিকার মত প্রত্যক্ষভাবে সনাক্ত করা সম্ভব নয়, তবে এগুলোর এমন একটা মাপনযোগ্য অভিক্রিয়া রয়েছে যার কারণে তাদের অস্তিত্ব সম্পর্কে আমরা অবগত হতে পারি। বিজ্ঞানের বর্ণনায় বলবাহী মৌল কণিকাগুলো যেমন ফোটন, গ্লুয়ন, গ্র্যাভিটন ইত্যাদি ভরবাহী মৌল কণিকা যেমন কার্ক, নিউট্রিনো থেকেও ক্ষুদ্র। তবে এগুলোর মাপনযোগ্য অভিক্রিয়া রয়েছে। সুতরাং তা অপেক্ষা ক্ষুদ্র বলতে সম্ভবত বলবাহী মৌল কণিকাসমূহের প্রতিই ইংগিত দেয়া হয়েছে। আবার অন্যদিকে আকবারু অর্থ সর্বাপেক্ষা বড় বলতে অণু ,পরমাণু- এমন কি পরমাণুর কেন্দ্রক-নিউক্লিয়াসে অবস্থিত -প্রোটন ও নিউট্রন- এবং নিউক্লিয়াসকে আবর্তনরত -ইলেকট্রনগুলোকেও- বোঝানো হতে পারে। এগুলো মৌল পদার্থ কণিকা কার্ক অপেক্ষা বড় হলেও আমাদের অগোচরে বিরাজ করে এবং বিশেষ উপায়ে অর্থাৎ কণিকা অভিজ্ঞাপক যন্ত্র ছাড়া এগুলোকে সনাক্ত করা সম্ভব নয়। এছাড়া এগুলোর চেয়েও হয়ত অনেক ক্ষুদ্র ও বৃহৎ এমন কিছু রয়েছে যেগুলো সম্পর্কে আমাদের জ্ঞান বেশ সীমিত, হয়ত বা আমাদের অজ্ঞাতেই বিরাজ করছে। কিন্তু এগুলো সবই সর্বজ্ঞ মহান স্রষ্টা আল্লাহতায়ালার গোচরীভূত ও নিয়ন্ত্রণাধীন।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১০ রাত ৯:০৬
১৭টি মন্তব্য ১৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×