somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

কাইকর
অনেক বড় মাপের একজন মানুষ হতে চাই। কারণ- ভালোবাসার মানুষটির নাম ছোট্ট কোন মঞ্চে দাঁড়িয়ে থেকে বলতে চাইনা, ভালবাসার মানুষটির নাম বড় কোনো মঞ্চে দাঁড়িয়ে থেকে বলতে চাই।আই লাভ ইউ (মা)

স্বপ্ন-(ছোট গল্প)

২৫ শে মে, ২০১৮ সকাল ১১:৫০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :





জীবনটা কেমন যেন ম্যাড়মেড়ে হয়ে যাচ্ছে। জীবনটা আকাশের চরিত্রের মতো হয়ে যাচ্ছে। শীতের সকালে ঘাসের কুয়াশার মতো। কেমন যেন! এই ক্ষণেই সব আছে আবার ক্ষণেই কিছু নেই! সবকিছু কেমন জানি ঘোলাটে লাগছে।

রাস্তার নেড়ি কুকুরটার সাথে আমার খুব মিল খুঁজে পাচ্ছি। পারলে ওর সাথে হামাগুড়ি দিয়ে জিহবা বের করে কিছুটা সময় হাঁটতাম রাস্তায়। প্রশান্তি বলে যে একটা কথা আছে তা একেবারে নেই। সবকিছু অগোছালো। ইদানিং চাকরি করি না দেখে বাসায় বেশি থাকা হয়।মাঝেমধ্যে মাজায় গামছা কষে বেঁধে কবিতা লিখি, গল্প বুনি।
রুমের মধ্যে সুবোধ ঘোষের ছবি টানানো। আব্বা হঠাৎ করে এসেই ছবিটা টেনে ছিড়ে ফেলল। বড় বড় চোখ করে আমার দিকে কিছু সময় তাকিয়ে থেকে বিদায় নিল।যা বলার আমাকে বলতো। সুবোধ ঘোষ তাকে কি করেছে? তাকে দেখেই তো জীবনের পথ আঁকছি আমি! বেচারার মনে কষ্ট দিয়ে কি সুখ পেল বাবা একমনে তা বুঝলাম না। আমি তারপরেও কবিতা বিড়বিড় করছি। রুমের এক কোণে রবিঠাকুর গান গাইছে আপন মনে।আহা........জীবনটা এখন শান্তির চাইতেও শান্তিময় লাগছে।

মিছেমিছি মনকষাকষি ওসব প্রেম-ভালোবাসায় আমার জুড়ি নেই। তারপরেও কেন জানি ভালোবাসি অপ্সরাকে।সে আমাকে আদর করে গুড্ডি বলে শুধায়। মেয়েটা আমাকে আদর সোহাগ দিয়ে ভরিয়ে রাখে সবসময়। আমার শ্যামলা রংয়ের গালটা চুমু খেয়ে লাল করে রাখে। মাঝেমধ্যে ঠোঁট বাকিয়ে বাকিয়ে রবীন্দ্রসঙ্গীত শুনায়।
এক বিকেলে রিক্সা করে আমি আর অপ্সরা যাচ্ছিলাম। হঠাৎ করে কি মনে করে আমার শ্যামলা রংয়ের ময়লাযুক্ত হাতে চুমু খেয়ে ঠোঁট গোল করে বললো, লাভিউ। আমি উপলব্ধি করলাম, আর যাইহোক এমন ভালোবাসা আমার কপালে আর কোনো সময় জুটবেনা। তাই আমার কালচে ঠোটখানা বাকিয়ে তাকে আদুরে গলায় বললাম, ভালোবাসি তোমাকে ভালোবাসি। রিক্সার মধ্যে তাকে জড়িয়ে ধরে নগরের সমস্ত নিস্তব্ধতা ভেঙে উচ্চস্বরে আবারো বলে উঠলাম, ভালোবাসি তোমাকে আমি। এক পৃথিবী ভালোবাসি। রিকশাচালক মামা মুখের মধ্যে হাত দিয়ে জোরে-শোরে শিষ বাজিয়ে ভাটিয়ালি গান ধরে আপন-মনে টানতে থাকলো রিকশা।

বাসার ব্যালকনিতে ইজি চেয়ারে বসে বুদ্ধদেব গুহের "মাধুকরী" উপন্যাস টা পড়ছি। আকাশে গোল একটা চাঁদ উঠেছে। খুব জ্বলজ্বল করছে। মাঝেমধ্যে জানালার গ্রিলের ফাঁক দিয়ে মিছেমিছি চাঁদের বুড়ির সাথে কথা বলছি।মনগড়া সব কথাবার্তা।হঠাৎ করে অপ্সরা ফোন করে নিষিদ্ধ এক প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে বসলো। সে নাকি তার শরীরের সমস্ত গন্ধ আর ভালোবাসা দিয়ে কফি বানিয়ে আমাকে খাওয়াবে।ঘোলাটে প্রস্তাবে আমি সাদামাটাভাবে রাজি হয়ে গেলাম।

আজ আমার জীবনের মত আকাশের রংটা পালটাচ্ছে! আকাশটা ঘন কালো হয়ে রিমঝিম আওয়াজ তুলবার তোড়জোড় করছে। অপ্সরা তার সমস্ত শরীরে গন্ধটুকু দিয়ে কফি বানিয়ে খাওয়াবার জন্য আমার কাছে এসেছে। বাতাসে কেমন জানি একটা প্রেম প্রেম গন্ধ পাচ্ছি। জ্যোৎস্নার আলো গায়ে মেখে গোসলের অভ্যেস এক মানবী আমার সামনে এসে বসেছে।কিছুটা বুনো আদর করবার জন্য। শরীরের এখানে সেখানে সে বিলাসীগন্ধি বোতল কাত করে এসেছে।সম্ভবত তার চাচা প্যারিসে থাকেন। আমরা দুজন খুব কাছাকাছি। আদর পর্ব শুরু হবে।
হুট করে আমার ঘুমটা ভেঙ্গে গেল। দেখি আব্বা ঘরে ঢুকে আমার চুল ধরে ঝাঁকাচ্ছে। চেঁচিয়ে চেঁচিয়ে বলছে," কোলবালিশকে ধরে এত জড়াজড়ি কিসের? কি বোঝাতে চাচ্ছিস? হারামজাদা বদ। আমি দীর্ঘশ্বাস গোপন করে বিছানা ছাড়ি। ব্যালকনিতে গিয়ে হাই তুলে বুড়ো বরই গাছটাকে চোখ মারি। বাবা পাশের রুম থেকে তখনো বলছে, "শোন- আজ থেকে তোর হাফপ্যান্ট পড়ে ঘুমানো নিষিদ্ধ। বিচ্ছিরি পায়ের লোম দেখা যায়। আজ থেকে আমার মত কুচি দিয়ে লুঙ্গি পড়বি।ঘরে মধ নেই। আমি বাসার নিচে টং দোকানের দিকে পা বাড়াই এক কাপ চা খাবো বলে। স্বৈরচারী তবু নির্বিরোধী চা।






সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে মে, ২০১৮ সকাল ১১:৫০
১৬টি মন্তব্য ১৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আপনি কি বেদ, উপনিষদ, পুরাণ, ঋগ্বেদ এর তত্ত্ব বিশ্বাস করেন?

লিখেছেন শেরজা তপন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫২


ব্লগে কেন বারবার কোরআন ও ইসলামকে টেনে আনা হয়? আর এই ধর্ম বিশ্বাসকে নিয়েই তর্ক বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে সবাই? অন্য ধর্ম কেন ব্লগে তেমন আলোচনা হয় না? আমাদের ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

দুলে উঠে

লিখেছেন সাইফুলসাইফসাই, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৫৬

দুলে উঠে
সাইফুল ইসলাম সাঈফ

মন খুশিতে দুলে দুলে ‍উঠে
যখনই শুনতে পাই ঈদ শীঘ্রই
আসছে সুখকর করতে দিন, মুহূর্ত
তা প্রায় সবাকে করে আনন্দিত!
নতুন রঙিন পোশাক আনে কিনে
তখন ঐশী বাণী সবাই শুনে।
যদি কারো মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

তরে নিয়ে এ ভাবনা

লিখেছেন মৌন পাঠক, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩০

তরে নিয়ে এ ভাবনা,
এর শুরু ঠিক আজ না

সেই কৈশোরে পা দেয়ার দিন
যখন পুরো দুনিয়া রঙীন
দিকে দিকে ফোটে ফুল বসন্ত বিহীন
চেনা সব মানুষগুলো, হয়ে ওঠে অচিন
জীবনের আবর্তে, জীবন নবীন

তোকে দেখেছিলাম,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আপনি কি পথখাবার খান? তাহলে এই লেখাটি আপনার জন্য

লিখেছেন মিশু মিলন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩৪

আগে যখন মাঝে মাঝে বিকেল-সন্ধ্যায় বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতাম, তখন খাবার নিয়ে আমার জন্য ওরা বেশ বিড়ম্বনায় পড়ত। আমি পথখাবার খাই না। ফলে সোরওয়ার্দী উদ্যানে আড্ডা দিতে দিতে ক্ষিধে পেলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

×