somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

"Is Hijab an insult or honour to women???" শিরোনামের সামনের গল্প

৩০ শে মার্চ, ২০১৮ দুপুর ১২:৫৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

হিজাব নারীদের জন্য অমর্যাদার নাকি সম্মানের??

(বোনদের জন্য একটি বার্তা)

অনেক বোনই বুঝতে পারেননা যে:

**কেন ইসলাম এই ধরনের অদ্ভুত হিজাব রীতির কথা বলল?**

**কেন নারীরা তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শনে স্বাধীন নয়?**

**এটা কি নারীজাতির প্রতি একটি অসম্মান নয়?**

প্রথমত, আপনারা আপনাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন করে কি পেতে পারেন? আমি মনে করি আপনি ইসলামি হিজাব পদ্ধতিকে অপছন্দ করেন, দু'টি জিনিস চিন্তা করে :

=> পরিতৃপ্তি
=> প্রশংসা

এটা দ্বারা কি বুঝায়?

আমি মনে করি, আপনি হয়ত এভাবে চিন্তা করেন:
"আমি খুবই খুশি হব যদি আমার পছন্দনীয় ফ্যাশানেবল স্টাইলে নিজেকে সাজাতে পারি"

অন্য কথায়, আপনি চিন্তা করেন যে, যদি আকর্ষনীয় প্রকাশভঙ্গি নিয়ে বাইরে যেতে পারেন, তবে আপনি মানসিক পরিতৃপ্তি লাভ করবেন। এর পরবর্তীতে যে চিন্তাটা আপনার মাথায় আসতে পারে সেটা হল,
"ওহ! মানুষ আমার দিকে তাকাবে, আমি কতই না ফ্যাশানেবল। আর তারা যদি আমার সৌন্দর্যের প্রশংসা করে..... ওহ! আমি আর ভাবতে পারছি না" ।

অন্য কথায়, আপনি হয়তো চিন্তা করতে পারেন যে, মানুষ আপনার সুন্দর প্রকাশভঙ্গি দেখবে আর যদি সম্ভব হয়, মাঝে মাঝে এর প্রশংসাও করবে।

এগুলো সবই আপনার মানসিক উদ্দীপনা। কিন্তু আপনি কি কখনও বাস্তবতাটা নিয়ে ভেবে দেখেছেন?

মনে করুন, আপনার হাতে একটা কমলা লেবু আছে। আপনি এটা দেখছেন এবং অনুভব করছেন; এটা এতই সুস্বাদু যে আপনি এই ফলটি খেতে চান। তাই আপনি কমলা লেবুটির ভেতরের অংশ বের করে নিলেন।

এখন এটা পূর্বের ঘটনার ক্ষেত্রে প্রয়োগ করুন। আপনি খুবই আকর্ষনীয় প্রকাশভঙ্গি নিয়ে বাইরে বের হলেন। একজন পুরুষ আপনাকে দেখল এবং তীব্রভাবে আপনার প্রতি আকৃষ্ট হল। (ধরুন) সে খুব বেশি ভাল চরিত্রের পুরুষ নয়। সে নিজের যৌন হরমোনাল প্রভাব নিয়ন্ত্রন করতে পারে না, আর তাই সে আপনাকে অনুসরণ করা শুরু করল। সে একটা নির্জন জায়গা পেয়ে আপনাকে জোর করে টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করল এবং তারপর পালিয়ে গেল।

এখন দয়া করে আমাকে বলুন, এটা কি আপনার জন্য অসম্মানের নয়? আমি মনে করি এটা অসম্মানজনক। কারন সে আপনাকে এরূপ পদ্ধতিতে উপভোগ করেছে।

এভাবে যদি কোনো পুরুষ আপনাকে ধর্ষন করার মাধ্যমে উপভোগ করে, এটা আপনার জন্য অপমানজনক হবে ; তাহলে কিভাবে আপনি বলতে পারেন যে, অন্য লোকেরা আপনাকে আকর্ষণীয় প্রকাশভঙ্গিতে দেখলে আপনার সম্মান বৃদ্ধি পাবে? তারাও কি আপনাকে উপভোগ করছে না??

আপনি হয়তো বলতে পারেন, 'আপনাদের (পুরুষদের) মনে এত নোংরা চিন্তাভাবনা কেন?'
আপনি যাই বলুন না কেন, আপনি কি প্রাকৃতিক যৌন হরমোনাল প্রভাবকে বন্ধ করতে পারবেন? পবিত্র চিন্তা-ভাবনা হয়তো মানসিক, কিন্তু যৌন হরমোনাল প্রভাব শারীরিক। আপনি কি এটা উপেক্ষা করতে পারবেন??

একটু চিন্তা করে দেখুন।

ইসলাম এই ধরনের বহিঃপ্রকাশের অনুমোদন দেয় না। যেখানে আপনি মনে করছেন যে, আপনি মানসিক তৃপ্তি পাচ্ছেন, সেখানে আসলে আপনি আপনার নাফ্সকে (নিজেকে বা নিজের ইচ্ছাকে) সন্তুষ্ট করছেন। যখন আপনি আপনার আকাঙ্ক্ষার পিছনে ছুটছেন, তখন আপনার প্রশান্ত মন প্রবৃত্তির অনুসরণ, দম্ভ এবং স্বেচ্ছাচারিতায় রুপান্তরিত হচ্ছে। এমনকি আপনার সৌন্দর্যের বহিঃপ্রকাশ যেন পরিণত হচ্ছে অপবিত্র যৌন আকর্ষনের উৎস হিসেবে যার ক্রিয়াশীলতা প্রকাশ পাচ্ছে ধ্বংসাত্মক আগুনের ন্যায়।
.
এটা আপনার জন্য কোনো প্রকার 'সম্মান' বলে গন্য হতে পারে না।
যদি আপনি বাজার থেকে একটা ডিম কিনে আনেন, তাহলে এটা আপনি রান্নাঘরে গিয়ে ভাঙবেন কারন এটাই উপযুক্ত স্থান।
একইভাবে আপনার সৌন্দর্য প্রদর্শনের প্রকৃত স্থান হল একমাত্র আপনার বিবাহিত স্বামীর নিকট, এখানে সেখানে নয় যাতে আপনি ভোগ্যপণ্যে পরিণত হন।

সুতরাং, হিজাব আপনাদের অসম্মান করে না, বরং আপনাদের শালীনতা বজায় রাখার রাস্তাটিই দেখিয়ে দেয় এবং নারীজাতির মর্যাদাকে সর্বোচ্চ সম্মানের স্থানে উপবিষ্ট করে। এটা এমনই একটি পন্থা যা আপনাকে ভিতর এবং বাইরে থেকে পবিত্র রাখে।
এছাড়া এটা এমন একটা পদ্ধতি যার মাধ্যমে আপনি জনগনের সহজলভ্য পন্য হওয়ার পরিবর্তে পাবেন সম্মান ও আত্মমর্যাদা ।

পুরুষকে সৃষ্টি করা হয়েছে নারীর প্রতি তীব্র কামনা দিয়ে; একইভাবে নারীকে সৃষ্টি করা হয়েছে পুরুষের প্রতি তীব্র কামনাস্বরূপ।

সুতরাং, পুরুষের দায়িত্ব নিজেকে পরিপূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রন করা। একইভাবে নারীর দায়িত্ব তার সৌন্দর্য পরিপূর্ণভাবে আবৃত করে রাখা।

সৌন্দর্যের পিছনে ছুটে বেড়ানো নিজের আকাঙ্ক্ষার পিছনে ছুটে বেড়ানোই নামান্তর। সৌন্দর্যের প্রতি আসক্তি অন্তরের ব্যাধি ছাড়া আর কিছুই নয়। তাই পুরুষ এবং নারী উভয়েরই দায়িত্ব তাদের হিজাব পরিপূর্ণভাবে পালন করা। কোরআন নারীদের পূর্বে পুরুষদের হিজাবের বিধান দিয়েছে ৷
.
"**মু’মিন পুরুষদের** বলো তাদের দৃষ্টি অবনমিত করতে আর তাদের লজ্জাস্থান সংরক্ষণ করতে, এটাই তাদের জন্য বেশি পবিত্র, তারা যা কিছু করে সে সম্পর্কে আল্লাহ খুব ভালভাবেই অবগত।

আর **ঈমানদার নারীদেরকে** বলে দাও তাদের দৃষ্টি অবনমিত করতে আর তাদের লজ্জাস্থান সংরক্ষণ করতে, আর তাদের শোভা সৌন্দর্য প্রকাশ না করতে যা এমনিতেই প্রকাশিত হয় তা ব্যতীত। ...."

--মহাগ্রন্থ কোর'আন ২৪:৩০-৩১


যদি এখনও আপনি চান আপনার সৌন্দর্য সর্ব সাধারনের সামনে প্রদর্শন করতে, তবে ইসলাম আপনাকে ভোগ্যপণ্য হওয়ারও অপশন দিচ্ছে। (তবে জেনে রাখুন) আপনার কর্মফল পরকালে (অবশ্যই) পরিপূর্ণভাবে বিচার করা হবে।

لَآ إِكْرَاهَ فِى ٱلدِّينِۖ قَد تَّبَيَّنَ ٱلرُّشْدُ مِنَ ٱلْغَىِّۚ فَمَن يَكْفُرْ بِٱلطَّٰغُوتِ وَيُؤْمِنۢ بِٱللَّهِ فَقَدِ ٱسْتَمْسَكَ بِٱلْعُرْوَةِ ٱلْوُثْقَىٰ لَا ٱنفِصَامَ لَهَاۗ وَٱللَّهُ سَمِيعٌ عَلِيمٌ

"দীনের(ইসলামের) ব্যাপারে **কোন জবরদস্তি কিংবা বাধ্যবাধকতা নেই**। নিশ্চয়ই ভ্রান্তি হতে সুপথ প্রকাশিত হয়েছে। অতএব যে তাগুতকে(অর্থাৎ, আল্লাহ ছাড়া অন্যান্য বাতিল উপাস্যসমূহকে) অবিশ্বাস করে এবং আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে সে দৃঢ়তর রজ্জুকে আঁকড়ে ধরলো যা কখনও ছিন্ন হবার নয় এবং আল্লাহ শ্রবণকারী, মহাজ্ঞানী।"

--মহাগ্রন্থ কোর'আন ২:২৫৬


লেখকঃ- আহমেদ আলি সিরিজ/ইসলামে হিজাব - পর্ব ১


("Is Hijab an insult or honour to women???" রচনাটি হতে অনুবাদকৃত ও কিছুটা সংযোজিত)
[অনুবাদ করেছেন - মামুন রেজওয়ান]
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে মার্চ, ২০১৮ দুপুর ১২:৫৫
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহমিকা পাগলা

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১৪


এক আবেগ অনুভূতি আর
উপলব্ধির গন্ধ নিলো না
কি পাষাণ ধর্মলয় মানুষ;
আশপাশ কবর দেখে না
কি মাটির প্রণয় ভাবে না-
এই হলো বাস্তবতা আর
আবেগ, তাই না শুধু বাতাস
গায়ে লাগে না, মন জুড়ায় না;
বলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩




তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×