চিত্রঃ নিকাব বোরখা (গুগল)
এক ভাইয়ের সাথে আমার একটা কথোপকথন এখানে উল্লেখ করব। বক্তব্যটা থেকে কি বুঝতে পারলেন বা না পারলেন সেটা একান্ত আপনাদের বিষয়।
ভাইটির ভাষাতেই বলি......
"শুন মামুন! তুইতো জানিস কলেজ লাইফ থেকেই আমার অনেক মেয়ে বন্ধু ছিল। যেকোন পরিচিত, অপরিচিত মেয়ের সাথে আমার কথা বলা ছিল ডালভাতের মত। বন্ধুরা একসাথে থাকলে টুকটাক মেয়েদের পিছনে লাগতাম সেই কলেজ লাইফ থেকে। একে খান থেকে জি.ই.সি রুটতাতে ট্যাম্পুতে যাওয়া ছিল আমার কাছে নতুন নতুন মেয়ে দেখার অভিজ্ঞতা। স্কুল, কলেজ, ভার্সিটি পড়ুয়া খুব সুন্দর সুন্দর মেয়েদের ট্যাম্পুতে উঠতে দেখে সামান্য টোন করার লোভ সামলাতে পারতাম না আমরা বন্ধুরা।
সেরকমই একদিন একে খান থেকে উঠেছি জি.ই.সি যাব বলে, সেদিন অবশ্য আমি একা ছিলাম, বন্ধুরা ছিল না সাথে। ট্যাম্পুর একপাশের সিট ভর্তি আর আমি আরেকপাশের সিটে বসে আছি। সেদিন আকাশে কড়া রোদ। সিটে বসে আছি আর দরদর করে ঘামছি। আমার ডান পাশে দরজার দিকের দুইটা সিটা খালি। সিট ফিলআপ না হলে ট্যাম্পুও ছাড়বে না। ট্যাম্পু ছাড়বে ছাড়বে করছে ঠিক সেই সময় দুইটা মেয়ে আমার পাশে উঠে বসল। কাঁধে ব্যাগ দেখে আন্দাজ করলাম কলেজ বা স্কুলের ছাত্রী হবে। আড় চোখে দেখার চেষ্টা করলাম, সাথে বন্ধুরা থাকলে হয়তো কোন একটা মন্তব্য করে বসতাম মেয়ে দুইটা সম্বন্ধে। আড়চোখে যতটুকু দেখতে পেলাম, তাতেই অবাক হলাম। আমার পাশের মেয়েটা পুরো হালকা বিস্কুট কালারের একটা বোরখাতে আপাদমস্তক ঢাকা, শুধু তাই নয় হাতে কালো রঙের হাতমোজাও পড়ে আছে। চিন্তা করলাম যে গরম পড়েছে আজকে, এই মেয়ে কিভাবে এত মোটা কাপড় দিয়ে সমস্ত শরীর ঢেকে রেখেছে। কেমন যেন, শ্রদ্ধায় চোখটা নিচে নেমে গেল আমার। নিজেকে সরিয়ে নিয়ে বসলাম একটু বামে যাতে আমার মত নোংরা মনের মানুষের সাথে এরকম পূন্যবতী মেয়ের শরীর না লাগে। সেদিন হঠাৎ করে আল্লাহর কাছে দো'আ করলাম এই বলে যে, 'আল্লাহ তুমি এই মেয়ে দুইটাকে কখনও কঠিন পরীক্ষায় ফেলো না।'
বাসায় গিয়েও অনেক চিন্তা করলাম এরকম অনুভূতি হঠাৎ করে কিভাবে উদয় হল আমার মধ্যে। আমারতো আগে এদেরকে আনস্মার্ট, গেঁয়ো মনে হত। আগেতো ভাবতাম যারা পর্দা করে তারা হয়তোবা একপ্রকার বাধ্য হয়ে, কিংবা পরিবারের চাপে পড়ে করে। কিন্তু এই মেয়েগুলো কি কারনে এত গরমেও পুরো শরীর ঢেকে রেখেছে! "
হুবহু তুলে ধরার চেষ্টা করেছি কথোপকথনটি। একটু এদিক সেদিক হতে পারে তবে মুল বক্তব্য এটাই ছিল।
আমার একটু সংযোজন আছে।
আপনি কি পর্দা করছেন শুধুমাত্র কিছু দুষ্কৃতিকারীর হাত থেকে রক্ষা পেতে? তাহলে বলব আমাদের সমাজ এই গ্যারান্টি দিতে পারবে না যে, আপনি দুষ্কৃতিকারীদের হাত থেকে রক্ষা পাবেন। কিন্তু আপনি যদি পর্দা করা একটি ফরয বিধান হিসাবে পালন করেন তবে আল্লাহ আপনাকে গ্যারান্টি দিচ্ছে এর উত্তম প্রতিদান আপনি পাবেন। এবং সম্পূর্ণ আল্লাহর উপর ভরসা থাকলে আল্লাহ আপনাকে এদের হাত থেকে রক্ষা করবেন। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে ধৈর্য্যের পরীক্ষাও হয়ে থাকে আল্লাহর পক্ষ থেকে।
"যা কিছু ভাল সব আল্লাহর পক্ষ থেকে এবং যা কিছু খারাপ সব আমার বা শয়তানের পক্ষ থেকে। "
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১:১৯