অনেক কিছুই আমাদের কাঁদাতে পারে না। মানুষের কষ্ট আমাদের কাঁদাতে পারে না, নির্বিচারে নিরপরাধ মানুষ হত্যা আমাদের কাঁদাতে পারে না। এমনকি নিজের ভাইয়ের মৃত্যুও অনেক সময় আমাদের কাঁদাতে পারে না। যতটা আজকে কাঁদিয়েছে এই বাঙালী জাতিকে। তারা কেঁদেছে প্রিয় দলের বিদায় দেখে। আহ! আফসোস নিজেদের জন্য। এই কান্নাটা যদি আফ্রিকার ঐ শিশুটির জন্য হোত যে সারাজীবন জুতা কি জিনিস বুঝে নি! পরারতো প্রশ্নই আসে না।
আমার ফিলিস্তিনের জেনিন শহরের ছোট্ট গ্রাম আইনে হুজের সারার কথা মনে পড়ছে। যে তার ওয়েবসাইটে লিখেছিল," পৃথিবীর মানুষ কিভাবে বেঁচে আছে সুস্থ্য মস্তিষ্কে ফিলিস্তিনের এই মৃত্যুপুরী দেখেও। যেখানে ১৯৪৮ সাল থেকে ৪-৫ প্রজন্মের প্রায় ৫-৬ মিলিয়ন মানুষ হত্যা করা হয়েছে যার মধ্যে সিংহভাগই নিরপরাধ।[১] যাদের অপরাধ শুধু ফিলিস্তিনের আরব নাগরিক হওয়া।" [২]
আইনে হুজের এই মেয়েটার চোখে আমরা অসুস্থ্য জাতি। আমাদের কান্না প্রিয় দল হেরে যাওয়াতে সীমাবদ্ধ। আমাদের ক্ষুব্ধতা আর্জেন্টিনা কেন Jorge Sampaoli কে কোচ হিসাবে নিয়োগ দিল?
আরও কিছু মনে পড়ল। একটা পরিসংখ্যান দেখে আসি চলেন। মাত্র ১১ বছরের একটা হিসাব। রক্ত নিয়ে খেলার হিসাব। যেগুলো কদাচিৎ আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়ে গেলেও তৎক্ষনাৎ মুখ ঘুরিয়ে ফেলি। পরিসংখ্যানটা স্বর্গ কন্যা কাশ্মিরকে নিয়ে।
"১৯৮৮ সালের জুলাই থেকে ১৯৯৯ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ১১ বছর সময়কালের একটি চিত্র। এই এগার বছরে ভারতীয় বাহিনীর হাতে কাশ্মীরের সাধারন নাগরিক নিহত হয় ৪৫,৭৪৫ জন, আহত হয় ৮৯,৭২৬ জন। যুদ্ধরত অবস্থায় কাশ্মীরের সৈন্য নিহত হয় ১৩,০১০ জন, আহত হয় ৯৮০৩ জন। এই সময়ে ভারতীয় বাহিনী কর্তৃক ১৭,১২২ জন নারী-শিশু ধর্ষিত হয়। নির্বিচারে গ্রেফতার হয় ১১,৮২০ জন যোদ্ধা এবং ৮০,৪৩৭ জন সাধারন নাগরিক।" এটা শুধুমাত্র ১১ বছর ৫ মাসের হিসাব। যে হত্যাকান্ড এখনও বিদ্যমান আছে। [৩]
এদের কেন হত্যা করা হচ্ছে এ ব্যাপারে আমরা নিরব। সামান্য দুঃখবোধও আমাদের মধ্যে জাগ্রত হবে না। আমরাতো জানিই না এরা কারা? এরা হয়তোবা নেইমার কিংবা মেসি কিংবা রোনাল্ডোর আত্মীয় বা দেশের কেও হলে আমরা প্রতিবাদ জানাতাম। এদের সহমর্মিতা জ্ঞাপন করতাম। আফসোস নিজেদের সংষ্কৃতি, শিষ্ঠাচার, বিবেক বিকোতে বিকোতে নিজের অনুভুতিটাও বিকিয়ে দিলাম! এরচেয়ে একটা রোবট কি ভাল নয়? যার অনুভুতি প্রি-প্রোগামড অন্তত আমাদের অনুভুতির মত সস্তা দরে বিকোয় না।
Sources:
[১] Palestinian Genocide
Pakistan Defence Forum
[২] Mornings in Jenin
Abul hawa
[৩] --Asia watch (New york)
--Committee of initiative on human rights (New Delhi)
--J&K People basic rights movement (Srinagar)
--Voice of Germany
--Voice of America
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে জুন, ২০১৮ রাত ১১:৫৮