"আমাকে সবচেয়ে বড় যে সমস্যায় পড়তে হত তা হল নামায পড়া নিয়ে। আমাদেরকে খুব কম পানি দেওয়া হোত। সেই কম পানি দিয়েই পুরো একদিনের খাওয়া, বাথরুম (বাথরুম বলতে সেলের কোনায় বালি ছিল কিছু সেখানেই) এবং অযু। এতেও সমস্যা ছিল না। সমস্যাটা হল অযু করতে দেখলে তারা মারধোর করত। অযু করতে বাধা প্রদান করত। তাই লুকিয়ে লুকিয়ে অযু করতে হোত। তারপরেও নামাযে বাধা দিচ্ছে না এই বলে প্রচন্ড শান্তি পেতাম।"
(হোসাইন আব্দুল কাদির গুয়ান্তানামো থেকে ফিরে আসার পর করা মন্তব্য)
"খুব বেশী অসুবিধা হোত নামায পড়তে গেলে। যেহেতু বারাসাতের হিন্দু এক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যায়নরত ছিলাম তাই সকলের মাঝে নামায পড়া ছিল অসম্ভব একটা ব্যপার। তাও লুকিয়ে চুরিয়ে যেখানে জায়গা পেতাম নামায পড়তাম। কখনও কখনও দীর্ঘক্ষণ নামায পড়তে পারিনি। শেষে মাঝরাতে উঠে একসাথে সব ওয়াক্ত আদায় করতাম। "
(রিভার্টেড মুসলিম আহম্মদ আলী ভাইয়ের কথা আমার ইনবক্স থেকে)
"বই পড়ার ভান করে, বালিশের উপর বই রেখে ঝুঁকে ঝুঁকে ইশারায় নামায পড়তাম। উপায় ছিল না কারন মা আশেপাশেই থাকত। তাও হঠাৎ করে জিজ্ঞাস করত কিরে এভাবে ঝুঁকে ঝুঁকে কি করছিস? "
(ফেরা বইয়ের লেখিকা)
এরকম হওয়ার কথা ছিল আমাদের প্রত্যেক মুসলিমের। নামায আবশ্যক করা হয়েছে আমাদের উপর সর্বাবস্থায়। যারা নামায পড়েন তাদের মধ্যে আযান হলেই একটা অস্থিরতা কাজ করে। অজ্ঞাত একজনের কথা বলি। "ট্রেনে যাচ্ছি ঢাকার উদ্দেশ্যে। যোহরের নামায রুমে পড়েই বেরিয়েছি। ট্রেনে ওঠার পর আসরের সময় হল। তখন ৫.৩০ বাজে। অযু করা নেই আর ট্রেনে প্রচন্ড পরিমানে ভির থাকায় ওয়াশ রুমে গিয়ে যে, অযু করে আসব তারও উপায় নেই। শেষে বাধ্য হয়ে পায়ের কাছের ধুলো নিয়ে তায়াম্মুম করে সিটে বসেই দুই রাকা'আত কসর সারতে হল। মাগরিবও এভাবেই গেল। ঠিক নামায পড়ার আগের মুহূর্ত আমার জন্য ছিল প্রচন্ড অস্থিরতার। বারবার এদিক ওদিক তাকাচ্ছি আর খুঁজছি কোন পাশ দিয়ে একটু ফাঁকা আছে। যাতে আমি ওয়াশরুমে যেতে পারি। এতটাই ছটফট করছিলাম। "
বিঃদ্রঃ- বক্তব্য দাঁড়ি কমা এদিক ওদিক হতে পারে কিন্তু মুল তথ্য হুবহু আছে। কি শিখতে পারলাম না পারলাম এটা নিজেরাই চিন্তা করি।
নিজেকে প্রশ্ন করি আমাদের কি আযান শুনলে এমন অস্থিরতা তৈরী হয় মনের মধ্যে? নাকি এসি চলছে, শরীর ফুরফুরে তখন নামায আর বাকী সময় না পড়লেও চলে।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই আগস্ট, ২০১৮ রাত ১১:৫৬