"এখানে শায়িত ডাইওফেন্টাস—আহ্, কী মনোরম দৃশ্য! গণিতের সুষমায় এই প্রস্তরখন্ডে উৎকীর্ণ আছে তাঁর কথা। স্রষ্টা দিয়েছিলেন তাঁকে বালকজীবন তাঁর জীবনের এক ষষ্ঠাংশ। তারপর এক দ্বাদশাংশ কাটে তাঁর তারূণ্যের উচ্ছ্বাসে যখন শ্মশ্রূমণ্ডিত হয় মুখ। আরও এক সপ্তাংশ পরে তাঁর শুভ পরিণয়, আর দাম্পত্যের পঞ্চম বর্ষশেষে সংসার আলো করে আসা ছেলে। কিন্তু হায়, দুর্ভাগা প্রিয় পুত্র—পৃথিবীর আলো নিভে আসে তার যখন সে উপনীত হয় পিতার অর্ধেক জীবন। হৃদয়ের কষ্ট ভোলেন ডাইওফেন্টাস সংখ্যার সৌন্দর্যে চারটি বছর। অতঃপর অবসান হয় তাঁর জীবনের খেলা”।"
ছন্দোময় এই ধাঁধাঁটিতে করূণ মূর্ত হয়ে আছে তৃতীয় শতকের মহান গণিতবিদ ডাইওফেন্টাসের জীবন। ধারণা করা হয়, এর রচয়িতা হাইপেশিয়া—ইতিহাসবেত্তাদের মতে পৃথিবীর প্রথম নারী, গণিত ও বিজ্ঞানে যিনি রেখে গিয়েছেন অসামান্য অবদান। শুধু তাই নয়, অন্ধকার যুগে ইউরোপের তলিয়ে যাবার পূর্বে পেরিক্লিসের সোনালী যুগের তিনি ছিলেন শেষ বিজ্ঞানী।
ভূমধ্যসাগরের কোলে নীলের পলল অববাহিকায় গড়ে উঠা প্রাচীন মিশরীয় নগরী আলেকজান্দ্রিয়া। এখানেই আনুমানিক ৩৭০ খ্রিস্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন হাইপেশিয়া, থমথমে এক সময়ে যখন মিশরের আত্মিক জগত ছিল বিপর্যস্ত। মেয়েদেরকে মনে করা হত মানুষের চেয়ে নীচু প্রজাতির—এরিস্টোটলের নারীবিদ্ধেষী শিক্ষার সুদূরপ্রসারী প্রভাব তখনো পুরোপুরি কাটেনি হেলেনীয় সভ্যতায়। ওদিকে শক্তিধর রোমান সাম্রাজ্য ধীরে ধীরে দীক্ষিত হচ্ছে খ্রিস্ট ধর্মে, ৩১২ খ্রিস্টাব্দে যার সুচনা করে যান সম্রাট কনস্ট্যান্টিন। কিন্তু নতুন এই ধর্মের ঊষালগ্নে প্রায়ই দাঙ্গা বেঁধে যেত পবিত্র তাওরাত ও ঈঞ্জিলের অনুসারী এবং প্রাচীন দেবদেবীর উপাসনাকারীদের মধ্যে, আর রক্তরঞ্জিত হত মিশরের রাজপথ।
হাইপেশিয়ার পিতা থিওন ছিলেন আলেকজান্দ্রিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিতের শিক্ষক, যিনি পরবর্তীতে এর অধ্যক্ষ নিযুক্ত হন। থিওন চেয়েছিলেন মেয়ে হয়ে উঠবে একজন পরিপূর্ণ নিখুঁত মানুষ হয়ে। তাই শৈশব থেকেই পরম মমতায় মেয়ের চারদিকে গড়ে তোলেন অনুসন্ধিৎসা, জিজ্ঞাসা এবং জ্ঞান অন্বেষণের এক আনন্দময় জগত। পিতার তত্ত্বাবধানে হাইপেশিয়া লাভ করেন সাহিত্য, বিজ্ঞান, দর্শন ও শিল্পের উপর প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা, অর্জন করেন কন্ঠের যথাযথ ব্যবহার এবং বাগ্মীতার দ্বারা মানুষের উপর প্রভাব বিস্তার করার ক্ষমতা। মনোজগত প্রসারিত করার সাথে সাথে আত্মজার শারীরিক শিক্ষার দিকেও যত্নশীল হন থিওন, যাতে কন্যার সুস্থ দেহ ও তীক্ষ্ণ মানস জগতের সুন্দর সমন্বয় গড়ে উঠে—মেয়েকে শিক্ষা দেন সন্তরণ, অশ্বচালণা এবং পর্বতারোহণ।
পিতার প্রচেষ্টা ব্যর্থ হতে দেননি হাইপেশিয়া— অতুলনীয় মেধার কারণে অল্প সময়েই তিনি এসব শিক্ষা যথেষ্ট আয়ত্ত্ব করেন এবং এমনকি পিতার জ্ঞানকেই ম্লান করে দেন একসময়; আজকে থিওন মূলত তাঁর মেয়ের জন্যই আমাদের কাছে বেশি পরিচিত। মাত্র উনিশ বছর বয়সে হাইপেশিয়া টলেমির Almagest উপর লেখা তাঁর পিতার বিশ্লেষণধর্মী একটি গ্রন্থের সম্পাদনা করেন। Almagest হচ্ছে তের খন্ডের সেই বিশাল গ্রন্থ যাতে টলেমি তাঁর সমসাময়িক যাবতীয় গণিত ও মহাকাশ জ্ঞান সংকলিত করেন এবং আরবীয় পণ্ডিতগন যার নামকরণ করেন Al-kitabul-mijisti বা মহান গ্রন্থ। একজন তরুণী হিসেবে সেই সময় তিনি এক অকল্পনীয় অভিযানে বেড়িয়ে পড়েন—উচ্চতর শিক্ষার জন্য চলে যান এথেন্সে, দার্শনিক কনিষ্ট প্লুটার্ক ও তাঁর মেয়ে এসলেপিজেনিয়া পরিচালিত গ্রিসের নিও-প্লেটোনিক বিদ্যালয়ে। এখানেই গণিতবিদ হিসেবে হাইপেশিয়ার সুনাম প্রতিষ্ঠিত হয় এবং তা ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়ে আনাতোলিয়ার উচ্চভূমি থেকে আইবেরীয় উপদ্বীপে, বসফোরাস থেকে সুদূর জীব্রাল্টার পর্যন্ত।
এথেন্স থেকে প্রত্যাবর্তনের পর হাইপেশিয়া আলেকজান্দ্রিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে গণিত ও দর্শনের উপর শিক্ষাদানের আমন্ত্রণ পান। ৪০০ খ্রিস্টাব্দে, আনুমানিক তিরিশ বছর বয়সে তিনি শিক্ষকতা শুরু করেন। এটি ছিল এক অনন্য ঘটনা, যা আরো বেশী তাৎপর্যপূর্ণ এ কারণে যে আলেকজান্দ্রিয়াতে তখন ছিল খ্রিস্টান শাসিত সরকার আর হাইপেশিয়া ছিলেন গ্রিসের প্রাচীন ধর্মের অনুসারী। হাইপেশিয়ার গৃহ ও শ্রেণীকক্ষ মুখরিত হত সেযুগের শ্রেষ্ঠ পণ্ডিতবর্গের পদচারণায়। তাঁকে মনে করা হত দৈবশাস্ত্রে পণ্ডিত, বলা হত আফ্রোদিতির দেহে প্লেটোর আত্মা। এশিয়া, ইউরোপ এবং আফ্রিকা থেকে আগত জ্ঞানোৎসাহীরা তাঁর কাছে শুনতেন ডাইওফেন্টাসের Arithmetica সম্পর্কে, শিখতেন ডাইওফেন্টাসের উদ্ভাবিত পদ্ধতি, অনির্ণেয় সমীকরণের সমাধান এবং সংকেতের ব্যবহার। প্যাগান হওয়া সত্ত্বেও হাইপেশিয়া বহু খ্রিস্টানের শ্রদ্ধা লাভ করেন এবং খ্রিস্টিয় লেখকদের কাছে তিনি ছিলেন গুণের আকর। সমসাময়িক খ্রিস্টান ঐতিহাসিক সক্রেটিস স্কলাস্টিকাস তাঁর চার্চের ইতিহাস গ্রন্থে বর্ণনা করেন-
একদা আলেকজান্দ্রিয়াতে ছিল এক নারী—দার্শনিক থিওনের কন্যা হাইপেশিয়া, যিনি সাহিত্য ও বিজ্ঞানে এরুপ পাণ্ডিত্য অর্জন করেন যা ছাড়িয়ে যায় তাঁর কালের সব দার্শনিকের জ্ঞান। প্লেটো এবং প্লুটোনিয়াসের উত্তরসূরী হিসেবে তিনি উন্মোচিত করতেন দর্শনের তত্ত্ব দূরদূরান্ত থেকে আগত তাঁর শ্রোতাদের সামনে। আত্মনিয়ন্ত্রণ এবং ব্যবহারের সাবলীলতায় প্রায়ই তিনি বের হতেন জনসমক্ষে, যা তিনি অর্জন করেছিলেন মনের উৎকর্ষে। এমনকি পুরুষের সমাবেশে তার অবস্থান ছিলনা মোটেও ব্রীড়াবনত। কারণ অনন্য আত্মমর্যাদা এবং গূণের দরূন তিনি ছিলেন সকল পুরুষের শ্রদ্ধার পাত্র।
হাইপেশিয়া গণিতের উপর বেশ কয়েকটি অভিসন্দর্ভ রচনা করেন, দশম শতাব্দীর বৃহদাকার বাইজ্যান্টীয়-গ্রিক অভিধান সুদা-তে যার উল্লেখ পাওয়া যায়। এসব রচনার অধিকাংশ সম্ভবত আলেকজান্দ্রিয়ার টলেমি (ইনি আলেকজান্ডারের সেনাপতি, মিশরের টলেমি রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা— গণিতবিদ টলেমি নন) গ্রন্থাগার কিংবা সেরাপিসের মন্দির ধ্বংস হওয়ার সাথে হারিয়ে যায়, এবং বর্তমানে তাদের কিছু খণ্ডাংশ পরিলক্ষিত হয় মাত্র। এদের মধ্যে ডাইওফেন্টাসের Arithmetica এর উপর লেখা হাইপেশিয়ার ব্যাখ্যামূলক গ্রন্থটির টিকে থাকার সপক্ষে যথেষ্ট প্রমান পাওয়া যায় গবেষকদের মতে এটি ডাইওফেন্টাসের মূল গ্রন্থটিতেই একীভূত হয়ে আছে।
এছাড়া তাঁর আরও একটি মূল রচনা On the Astronomical Canon of Diophantus এর কিয়দংশ পঞ্চদশ শতকে ভ্যাটিকান গ্রন্থাগারে আবিষ্কৃত হয়, ১৪৫৩ সালে ধর্মসহিষ্ণু অটোমান (উসমানী) সুলতান দ্বিতীয় মুহম্মদের কনস্ট্যান্টিনোপল তথা বাইজ্যান্টাইন সাম্রাজ্য বিজয়ের পর এটি সম্ভবত সেখানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। ডাইওফেন্টাসের গণিত মূলত একঘাত ও দ্বিঘাত সমীকরণ সংক্রান্ত সমস্যার উপর আলোকপাত করে যেখানে হাইপেশিয়া বেশ কিছু বিকল্প সমাধান এবং নতুন সমস্যাবলীর অবতারণা করেন।
এছাড়াও হাইপেশিয়া পার্গে'র বিখ্যাত গণিতবিদ এপোলোনিয়াসের কোণকসংক্রান্ত গ্রন্থের উপর রচনা করেন On the Conics of Apollonius, যার ফলে উপবৃত্ত, পরাবৃত্ত ও অধিবৃত্তের ধারণা সহজবোধ্য হয়ে উঠে শিক্ষার্থীদের কাছে আর গ্রন্থটি বেঁচে থাকে অনেক শতাব্দী, যদিও অন্ধকার যুগে চলে যাওয়ার পর ইউরোপীয়রা প্রাচীনতম এই বক্ররেখাগুলির উপর আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন। কিন্তু অষ্টম শতকেই আরবীয় গণিতবিদগন এদের অপার সৌন্দর্য আবিষ্কার করেন এবং তাঁরা মিলন ঘটিয়ে দেন বীজগাণিতিক সমীকরণ ও জ্যামিতির। পারস্যের কবি দার্শনিক গণিতবিদ ওমর খৈয়াম তৃতীয়মাত্রার সমীকরণ সমাধান করতে গিয়ে এদেরকে নিয়ে যান ধ্রুপদী উচ্চতায়—এটি ইয়োহান কেপলার কিংবা রেনে ডেকার্তের জন্মের প্রায় ছয়শো বছরের পূর্বের কথা।
হাইপেশিয়া সম্ভবত তাঁর পিতার সাথে যৌথভাবে ইউক্লিডের Elements গ্রন্থটির সম্পাদনা ও উন্নয়ন সাধন করেন। Elements এর এই সংস্করণটি আজও গণিতশাস্ত্রে ব্যবহৃত হয়।
ব্যবহারিক প্রযুক্তির উপর ছিল হাইপেশিয়ার মূল ঝোঁক। তাঁর ছাত্র বিশপ সাইনেসিয়াস, যিনি খ্রিস্টানদের ত্রিত্ববাদ গঠনে সহায়তা করেন, হাইপেশিয়াকে Astrolabe আবিষ্কারের জন্য অভিনন্দন জানান।
Astrolabe ব্যবহৃত হত সূর্য ও নক্ষত্রের অবস্থান নির্ণয়ে এবং রাশিচক্রের আরোহণকারী চিহ্ন হিসেব করতে। হাইপেশিয়া যন্ত্রটিকে এতই সূক্ষ্ম করেন যে এটি গোলীয় জোতির্বিদ্যার যথার্থ সমাধান দিত। এছাড়াও তিনি পরিস্রাবণ ও তরলতলের উচ্চতামাপক যন্ত্র উদ্ভাবন করেন এবং তরলের আপেক্ষিক গুরুত্ব নির্ণয়ের জন্য তৈরি করেন Hydroscope.
হাইপেশিয়ার সমসাময়িক পণ্ডিতগন প্রায় কাব্যময়ভাবে তাঁর কথা বলে গিয়েছেন। ধর্মতাত্ত্বিক ঐতিহাসিক সক্রেটিস, নিসেফোরাস এবং ফিলোস্তোরজিয়াস ভিন্ন মতবাদে বিশ্বাসী হলেও তাঁর প্রশংসা করেন উদারভাবে। তাঁর সুনাম ছিল ব্যাপক এবং অকৃত্রিম। হাইপেশিয়া কখনো বিয়ে করেননি; ধারণা করা হয় এমন কাউকে তিনি পাননি যিনি তাঁর মনন ও দর্শনের সমকক্ষ হতে পারেন।
যেহেতু হাইপেশিয়া ছিলেন নিও-প্লেটোনিক মতবাদে বিশ্বাসী এবং মিশরের ক্রমশ ঘোলাটে হওয়া রাজনীতিতে তিনি প্রভাব বিস্তার করতে থাকেন, খ্রিস্টান ধর্মীয় রাজপুরুষেরা তাঁর ব্যাপারে শঙ্কা অনুভব করতে শুরু করলেন। তাঁরা হাইপেশিয়ার দর্শনকে মনে করতেন চার্চদ্রোহী এবং ধর্মীয় সংঘাত সৃষ্টিকারী, এবং ৪১২ খ্রিস্টাব্দে সিরিল যখন আলেকজান্দ্রিয়ার প্যাট্রিয়ার্ক নিযুক্ত হন, তখন তিনি পরিকল্পিতভাবে এসব চার্চদ্রোহীদেরকে দমন শুরু করেন। তিনি ইহুদিদেরকেও আলেকজান্দ্রিয়া থেকে বিতাড়ন শুরু করেন। আলেকজান্দ্রিয়ার তৎকালীন খ্রিস্টিয় রোমান গভর্ণর ওরেস্টেসের সাথে বন্ধুত্ব এবং রাজনৈতিক জোট গঠন হাইপেশিয়ার জন্য ব্যাপারটি আরো জটিল করে তোলে কারণ চার্চ ও রাষ্ট্রের সংঘাত দ্বন্দ্বমুখর করে তুলেছিল ওরেস্টেস এবং সিরিলের সম্পর্ক। হাইপেশিয়ার প্রভাবকে সিরিল মনে করতেন চার্চের জন্য বড় হুমকি। প্রতিদ্বন্দ্বীদের বিরুদ্ধে সিরিল তাঁর অনুসারীদের ক্ষেপিয়ে তোলেন। এরই ফলশ্রুতিতে ৪১৫ খ্রীষ্টাব্দে লেন্টের পবিত্র মৌসুমে বিশ্ববিদ্যালয়ে যাবার পথে নিত্রীয় সন্যাসীদের হাতে আক্রান্ত হন হাইপেশিয়া। তারা তাঁকে নগ্ন করে হেঁচড়ে নিয়ে যায় চার্চ সিজারিয়ামে, ঝিনুকের খোল দিয়ে তাঁর দেহ টুকরো টুকরো করে ফেলে এবং তা পুড়িয়ে দেয়। ইষ্টান অর্থডক্স এবং রোমান ক্যাথলিক চার্চ পরে পৃথকভাবে সিরিলকে 'সন্ত' উপাধিতে ভূষিত করে।
মর্মন্তদ এই ঘটনা ছিল গণিত ও বিজ্ঞানের উপর এক ভয়ংকর আঘাত। মার্গারেট ওয়ের্থহেইম তাঁর পীথাগোরাসের ট্রাউজার গ্রন্থে বলেন—"গ্রীক গণিতবিজ্ঞানের মহান যুগ, যার সুচনা এক পুরুষের জন্মের মধ্য দিয়ে, তা সমাপ্ত হয় এক নারীর মৃত্যুতে।"
এবং সম্ভবত পরবর্তী ১৪০০ বছরে পৃথিবী বিজ্ঞান সাধনায় ব্রতী এমন বর্ণিল নারী আর পাবে না… যতক্ষণ না পর্যন্ত পোল্যান্ডের এক শিক্ষক দম্পতির ঘর আলো করে জন্ম নেয় এক মেয়ে-মেরি কুরি তাঁর নাম।
পরিশিষ্টঃ হাইপেশিয়ার মৃত্যুর মাত্র ষাট বছরের মধ্যে পশ্চিম রোমান সাম্রাজ্যের পতন ঘটে। ইউরোপে শুরু হয় অন্ধকারযুগ আর সেখানে ভীড় জমাতে থাকে দৈত্যদানো, রাক্ষস-খোক্ষস, ভুতপ্রেত, ভ্যাম্পায়ার আর ডাইনিদের দল। কিন্তু গণিত ও প্রকৃতি জ্ঞানের মুক্ত সমীরণ বইতে থাকে আরবের রুক্ষ্ম মরুময় উপদ্বীপে এবং তা ছড়িয়ে পড়ে মেসোপটেমিয়া, পারস্য, আনাতোলিয়া, আফ্রিকার উপকূল, আন্দালুসিয়া, মধ্যএশিয়া, ভারত মহাসাগর, ভলগা ধরে দূরদূরান্তে..
সময়রেখা
খ্রিস্টপূর্ব ৩২২ এরিস্টোটলের মৃত্যু
৩০০ ইউক্লিডের Elements রচনা
২৬৫ ইউক্লিডের মৃত্যু
২৬২ এপোলোনিয়াসের জন্ম
২৫০ এরাতোস্থেনিসের মানচিত্র অংকন
২২৫ এপোলোনিয়াসের Conics রচনা
১৯০ হাইপারকাসের জন্ম; এপোলোনিয়াসের মৃত্যু
খ্রিস্টাব্দ ৮৫ গণিতবিদ ক্লডিয়াস টলেমির জন্ম
২৯০ প্যাপাসের জন্ম
৩১২ রোমান সম্রাট কনস্ট্যান্টিনের খ্রিস্টধর্ম গ্রহণ
৩৭০ হাইপেশিয়ার জন্ম
৪১৫ নিত্রীয় সন্যাসীদের হাতে হাইপেশিয়ার মৃত্যু
৪৭৬ পশ্চিম রোমান সাম্রাজ্যের পতন
৭৮০ বীজগণিতের জনক আল-খোয়ারিজমি-এর জন্ম
৮১০ খোয়ারিজমি-এর Al-jabr wa’l muqabalah রচনা
১০৪৮ নিশাপুরের মরমী কবি, গণিতবিদ, দার্শনিক ও মহাকাশবিদ ওমর খৈয়ামের জন্ম